শিক্ষকের ডায়রি‌‌: পর্ব-১৩

ডিসক্লেইমার: আমার এই লেখার সাথে সংযুক্ত ছবি এবং লেখাটাতে ব্যবহৃত ভাষাতাত্বিক উদাহরণসমূহ মৌলিক নয়, সংগৃহীত। এই লেখার সাথে সঙ্গতি বজায় রেখে সংযুক্ত সংগৃহীত ছবিটা আবার কিছুটা ক্রপ করা হয়েছে। ছবিটা মনে হচ্ছে হালের একটা ট্রল-টপিক; আমি এটা প্রথম দেখি রংপুর ওল্ড ক্যাডেটস এ্যাসোসিয়েশন (রকা)-র মেম্বারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে; কেউ একজন ফান করার জন্যই পোস্ট দিয়েছেন। বেশ মজার মজার মন্তব্য-পাল্টা-মন্তব্য চলছিল। তবে ভাষাতত্ব নিয়ে নাড়াচাড়া করা ছাত্র-কাম-শিক্ষক হিসেবে আমিও দুচারটা কথা লিখতে গিয়ে একটু বেশিই লিখে ফেলেছিলাম (অনেকটা ক্যাডেট কলেজের নাদান ক্লাস সেভেনের সিনিয়িরের কমান্ডে ফ্রন্টরোল দেবার সময় মোমেন্টামের ঠ্যালায় দুচারটা বেশি দিয়ে ফেলার মতন আর কি)। লেখাটা বাংলা ইংরেজি মিলেই লিখেছিলাম। নিচে সেভাবেই তুলে দিলাম। তবে লেখাটা পড়ার আগে সংযুক্ত (সংগৃহীত) ছবিটা একবার দেখে নেয়া যেতে পারে; জাস্ট লেখার ফ্লো-এর সাথে থাকার জন্য।

এখান থেকে লেখাটার শুরু: Here, a few factors like contextual knowledge, information, etc., shared by both the speaker and the listener in a particular/given situation obviously contribute to the coding and decoding of the linguistic expressions.

For further clarification, the next two statements/expressions in the same context of the picture may be followed:
১. তিনটা শুন্য, তিনটা চার
২. তিন শুন্য তিন চার

প্রথমটাতে, কমা একটা এক্সট্রা ভার্বাল পজ দেবে, এবং সেটাও কন্টেক্সচুয়াল মিনিং নেগোসিয়েশনে কন্ট্রিবিউট করবে।

আর দ্বিতীয়টাতে, ধরে নেয়া যেতে পারে যে, এখানে প্রতিটা ক্ষেত্রে ইকুয়ালি ভার্বাল পজ আসবে, এবং সেভাবেই শ্রোতা সেই ম্যাসেজটা ডিকোড করবে।

যেমন: ফোন নম্বরের ক্ষেত্রে আমরা সচরাচর ধারাবাহিক ভাবে বলি: ০৪০৬ শুন্য চার শুন্য ছয়। আবার ০০০০-কে আমরা চার শুন্য বলি না, বলি চারটা শুন্য।

এখন কি আর সঠিক উত্তরটা (সংযুক্ত ছবির প্রশ্নের) বলে দেবার দরকার আছে? আসলে এমন ট্রিকি বিষয়গুলো ফান করার জন্যই করা হয়। কিন্তু প্রয়োগিক ক্ষেত্রে ভাষা আবার নিজস্ব গতিতেই চলে। সেখানে কিছু ক্ষেত্রে অরাল কমিউনিকেশনে গ্রামার/ব্যাকরণ ইগ্নোর্ড হয়ে থাকে, এবং সেটাও একটা প্র‍্যাক্টিসের অন্তর্ভুক্ত হয়েই যায়।

যেমন:
১. চার হালি মুরগির ডিম
২. খাঁটি গরুর দুধ

এই কন্সট্রাক্সন (ফ্রেজ) দুটিকে ব্যাকরেণের মারপ্যাঁচে ফেলে অনেক কিছুই করা যায়। কিন্তু কমিউনিকেশনে এখানে “মুরগির ডিম” আর “গরুর দুধ” দুটোই নাউন ফ্রেজ, যেখানে “ডিম” এবং “দুধ” দুটোই হলো হেড ওয়ার্ড।

আর, “চার হালি” এবং “খাঁটি” এদুটো আবার প্রিমডিফায়ার, যা/যেগুলো কিনা প্রচলিত ভার্বাল কমিউনিকেশনে পরের নাউন ফ্রেজের হেড ওয়ার্ড-কেই ইন্ডিকেট/মডিফাই করে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে, “মুরগি” এবং “গরু”-কে নয়, বরং “ডিম” এবং “দুধ”-কে।

আমরা আসলে মাঝে মাঝেই “ব্যাকরণ” এবং “ভাষাবিজ্ঞান/ভাষাতত্ব”, এই দুটোকে গুলিয়ে ফেলি। কট্টর ফর্মাল এপ্রোচে, ব্যাকরণ সামনে বেশি আসবে, সেটাই স্বাভাবিক। আবার একটা সমাজে প্রচলিত/মৌখিক ভাষার প্রয়োগে ব্যাকরণ (গ্রামার)-এর চেয়েও অনেক বেশি মাত্রায় অন্যান্য বিষয়গুলোকে মুলত: ভাষাতত্ব/ভাষাবিজ্ঞান (লিঙ্গুইস্টিক্স) ব্যাখ্যা করতে পারে।

বেশ ইন্টারেস্টিং! তাই না?

আবার এই যে, উপরে (এবং নিচের অংশেও) আমার লেখায় বা টেক্সটে আমি বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে লিখেছি/লিখছি, এটাও ভাষার একটা প্রয়োগ। কমিউনিকেশনে একাধিক ভাষার এমন মিশ্রণকে ভাষাতত্ব/ভাষাবিজ্ঞান আবার পজেটিভলি (বা নিউট্রালি) দেখে, দোষ দেয় না। এটাকে/এগুলোকে বলা হয়, “কোড মিক্সিং” এবং “কোড সুইচিং”।

যেমন: “বেবিটা অনেক কিউট না!” 🤣🤣🤣🤣

আসলেই বিষয়টা ইন্টারেস্টিং! তবে, আমাদের ছোটবেলায় “ব্যাকরণ” এবং “ভাষা” (বাংলা এবং ইংরেজি – দুটোই) কেন যে আমাদেরকে এত জটিল করে পড়ানো হয়েছে, তা আমার মাথায় কিছুতেই ঢুকে না।

২৩ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।