একে একে খুলে ফেলো সমস্ত মুখোশগুলো !
উন্মোচিত হোক তবে পুরোটাই আজ
নিখাদ উন্মিলনী মগ্নতায়,
সহজ পূর্ণিমা সমান নগ্নতায় ।
কার্পাস বা সিনথেটিকের কোনো
প্রহসন বিহীন । যেনো বুঝি সূতাও
সেখানে না তোলে আড়াল দেয়াল
কোনো কিয়দ আচ্ছাদনে, আমার
নতুবা তোমার, কোনোই খেয়াল
গোপন কথার হিস্যা বা ধরো
ভাবনার কারুকাজে, না তা ও না ।
শুভ জন্মদিন কবি
সেই সুদূর শৈশব থেকে শুরু করে আজ অবধি যাদের কবিতার আবেদন আজো ম্লান হয়ে যায়নি আমার কাছে তাদের অন্যতম নির্মলেন্দু গুণ।
আজ প্রিয় কবির জন্মদিন। শুভ জন্মদিন কবিকে।
কবির পুরো নাম নির্মলেন্দু প্রকাশ গুণ চৌধুরী। ১৯৪৫ সালের ২১ শে জুন তারিখে কাশবন, বারহাট্টা, নেত্রকোণায় সুখেন্দু প্রকাশ গুণ এর ঔরসে বিনাপানির গর্ভে কবির জন্ম হয়।
আমি তোমার নই (অনুবাদ কবিতা)
আমি তো তোমার নই, হারাইনি তোমাতে,
হারিয়ে যাইনি, যদিও চাই নিঃশেষ হতে
দ্বিপ্রহরে জ্বালিয়ে রাখা মোমের মত,
সাগরে বিলীন হওয়া স্নোফ্লেক উদ্ভিদের মত।
তুমি আমায় ভালোবাসো, তাই আমি এখনো
তোমাতে দেখি এক উজ্জ্বল উচ্ছ্বাস অনুপম।
তথাপি আমিতো আমিই, হারাতে যে চায়,
আলোর মাঝে আলো যেভাবে হারিয়ে যায়।
আহ, আমাকে ডুবিয়ে দাও প্রেমের গভীরে,
আমার চেতনাগুলো নিভিয়ে দাও তিমিরে,
তোমার কবিতাগুলো
তোমার কবিতাগুলো,
কোন মোহিনী নারীর নাকে বসে থাকা
অমূল্য হীরক কণার ন্যায় প্রতিভাত হয়।
ঝলসে ওঠা দ্যূতি হঠাৎ হঠাৎ বিচ্ছুরিত হয়,
আবার কখনো ছেয়ে যায়, ম্লান পেলবতায়।
তোমার কবিতাগুলো,
পড়ে ফেলার পরেও আমার অগভীর কর্ণকুহরে
দিকভ্রান্ত পাগলিনীর ন্যায় অবলীলায় কথা বলে,
কখনো তা অর্থহীন মনে হয়, কখনো বাঙময়।
কিভাবে ওসব লেখা হয়, তা এক অজানা বিস্ময়।
ক্যাডেট জীবন
১
যেখানে শৈশব হারায় বেদনায়
সে ও কি জীবন ভ্রম হয়?
সেই যে বাছা মা’র কোলছাড়া
বুক ফাটা বেদনায়।
হল কি ফেরা এত লেথাপড়া
সেই কোলে কোনদিন ?
আজো কাঁদে মন বড় অনাদরে
মাকে খুঁজে সারাক্ষন।
নদী ঘাট পুকুর রয়ে গেল দুর
বন্দী হল যে ভুবন,
নেই সে খেলার সাথী ভাইবোন
হারিয় গেল আপন।
~ তুমি যদি মায়া হও আমি হই মোহ ~
যে মায়ায় নিজেই জড়ায় মানুষ নিজেকে
সে মায়া ছাড়াবে কে ?
ভালোবাসার কষ্ট বুঝে কষ্টকেই ভালোবাসে যে
তাকে আর কষ্ট দেবে কে ?
এ মায়ার মোহো কাটেনা কখনো
কাটবে না কোনো দিন ।
তোমাকে মায়া ভালোবেসে কোনো একদিন
আমি মোহ হয়ে গেছি আজ বহুদিন ।
বুঝলে মায়া
এ মোহ কাটবে না কোনো দিন ।
রচনাকাল ~ ০৯ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৭
[ প্রথম কাব্যগ্রন্থ “বাঁধন ছিঁড়ে যাই”-এ প্রকাশিত ]
~ গাং শালিখ ~
লোকালয়ে রেখে গেছো কতোটা অভিমান !
শহর-নগর ভরা সব মানুষ সমান !
দরাজ দালান আর লাইটপোস্টের
বাগান তোমার কাড়ে নাই একটুও
মন, কাড়ে নাই কারখানা, শ্রমিকের দল,
পার্কের জোড়ামুখ, সাজানো লেকের
পাড়, গ্রীলের গেটে বোনা বোগেনভেলিয়া, নীল
অপরাজিতা, ছাদে ও বারান্দায়
গহনার মতো রাখা দুষ্প্রাপ্য ফুল,
ক্যাকটাস কিংবা সেই সব নাগরিক
সভাসদ, গেলো বছর যারা আইল্যান্ড
মুখর করে লাগিয়েছিলো কৃত্রিম
মার্বেলে আঁকা রংগীন লতা পাতা কুল ।
অন্য আয়োজন
তুমি আমি মিলে কত না হৈ হুল্লোরে আর
কতনা আয়োজন করে সাজালাম এ জীবন!
তুমি আমি মিলে…
তুমি আমি মিলে যেদিন ‘আমরা’ হয়ে গেলাম,
কতনা সহজে ভুলে গেলাম,
একদিন আমরা তো শুধু আমিই ছিলাম।
তুমি আমি মিলে একসাথে কত দৌড়ঝাঁপ করে
একসাথে হাঁপিয়েও উঠলাম,
হৃদস্পন্দন একটু থিতু হতেই আবার দৌড়ালাম!
তুমি আমি মিলে ঘাটে বাটে থেমে তুলে নিলাম
জীবনের কত না সোনালী সঞ্চয়,
ধোঁয়া ও স্বপ্ন
চায়ের কাপের ধোঁয়াগুলো
শূন্যে মিলিয়ে যায়, তবে-
তারা আকাশ ছুঁতে পারেনা।
বাকরুদ্ধ মনের কষ্টগুলো
যদিও ঊর্ধ্বপানে ধায়, তবুও-
তারা আকাশ খুঁজে পায় না।
শুধু অবুঝ মনের স্বপ্নগুলো
ধোঁয়া হয়ে যায় অভ্র ফুঁড়ে,
কোন নিশীথ রাতের বৃষ্টিপাতে
আবার স্বপ্ন ফেরায় নয়ন জুড়ে।
ঢাকা
১৪ জুন ২০১৫
স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আমার এ কবিতাটার ভাবানুসরণে “Dreams And Smoke”
বিস্তারিত»স্মৃতিচারণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
বাংলার শিক্ষক জনাব সাইফুল ইসলামের হাত ধরে আধুনিক বাংলা কবিতার সাথে আমার প্রথম সখ্যতা। দুর্বোধ্যতার কন্টকমুকুট শোভিত হয়ে, রক্ত-ঝরানো পথ হেঁটে আধুনিক বাংলা কবিতা শতদল মেলেছে তখন। আমার কিশোর বুদ্ধি ও মনন তখনও সেই মদিরা পানের জন্য ঠিক পরিপক্ব হয়ে উঠেনি। অথচ সীমাহীন আগ্রহ ও এক ধরণের মোহন ঘোরের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাই। কলেজ লাইব্রেরীর নীরব কিউবিকলে গোপন প্রেমপত্রের মতো করে চুপিসারে উল্টে যাই সুধীন কিম্বা বিষ্ণু দে।
বিস্তারিত»এক বিস্ময় বালকের গল্প
তুমি তো তা জানলে না
জানলেনা আকাশের মত বিশাল-
এক বেদনাময় ভঙ্গুর হৃদয়ের
তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়ার গল্প।
তোমার এখনও জানা হয়নি-
রোমান্টিকতায় রোমিও কে হার মানানো
এক চঞ্চল বালকের
ধীরে ধীরে মলিন হয়ে যাওয়ার গল্প।
সেই বালকের অনেক কথা-
তোমার অজানাই রয়ে গেছে।
চোখের জলকে সঙ্গী করে যে কাটায় –
রাতের পর রাত।
দু’খানা না-গদ্য, না-কবিতা…
এক : দূরত্ব
অনিতা শারমিন নিতা।
আমার ব্যাচমেট আবার আমার এক বন্ধুর ছোটবোন
এবং ডাকসাইটের সেলিব্রিটিও বটে।
টুকটাক যোগাযোগ আছে মুখবই-এ
সেই সুবাদে মাঝে-সাঝে তাঁকে নিউজ-ফিডে পাই।
তার আজকের একটা স্ট্যাটাসে দেখলাম সে লিখেছে:
[স্ট্যাটাস শুরু]
\\ক্রীং ক্রীং ক্রীং
বন্ধু: কি খবর?
আমি: দোস্ত এই weatherএ মন টিকে না রে
বন্ধু: কি চাও?
অসভ্যতা
দেখব জগত যেইনা বাহির পা ফেলেছি
নামলো দেওয়া হঠাৎ করে
আকাশ যেন করল পেশাব মুখের পরে
ভিজিয়ে দিল সবর্ শরীর
কেউ কি করে এমন তরো অসভ্যতা ?
করে করে নিতুই করে
আকাশ করে ,
তাইতো সবাই চলতে পথ
নামলে দেওয়া
মাথার পরে ছাতা ধরে।
ভ্রম
শুধুই উচ্চারিত শব্দে
‘ভালবাসি’ কে বলেছে কবে?
যতটুকু বলেছে মুখে
চোখদুটি বলেনি কি
শতগুণ বেশি?
শুধুই বৃষ্টিতে কি ভিজেছে এ তনু
হৃদয়ের ঝড়-জলে ভেজেনি কি কিছু?
মেঘ কেটে এই বুকে
জাগেনি কি নীলাকাশ?
বাজেনি কি মেঠো পথে নূপুরের ঝঙ্কার?
খোলাচুলে এই পথে যায়নি কি সেইজন?
বিস্তারিত»তোমার শখের পসরা
আমার ঘরের নিভৃত একটি কোণে
রয়েছে তোমার এক নিজস্ব ভূবন।
সেখানে কখনো প্রবেশ করিনি আমি।
তবে বাহির থেকে দেখেছি কি সুন্দর করে,
সাজিয়ে রেখেছো তোমার শখের পসরা
একটি আলমারীর ক্ষুদ্র পরিসরে, থরে থরে।
কতনা যতন করে রেখেছো সেখানে,
ছোট ছোট সব শখের পজেশনগুলো,
শাড়ীর পরতে পরতে, এভাঁজে ওভাঁজে,
গোপন কুঠুরির কোন গোপনতম স্থানে।
আর পরখ করে দেখ সেসব অমূল্য রতন
যখনি সময় পাও,