মুড়িকথন

তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি,সম্ভবত থার্ড টার্মের কথা।ওইসময়ে ছুটি থেকে আসার সময় শুকনো খাবার আনা আমাদের কলেজে বৈধ ছিলো। আমরা ৪ রুমমেট একদিন লাঞ্চের পরে রুমে বসে বসে মুড়ি-চানাচুর খাচ্ছি।এমন সময় সপ্তম শ্রেণীর ক্যাডেটদের দেখতে আসলেন গণিতের রিয়াজউদ্দিন প্রামাণিক স্যার,সংক্ষেপে রূপলাল স্যার।উঠে দাঁড়ালাম।স্যার খাটের কাছে এসে বিছানায় মুড়ি দেখে নাক কুঁচকে বললেন,”ছিঃ,তোমরা মুড়ি খাও!!!!”স্যারের বলার ভঙ্গী আর কথা শুনে আমরা ভাবছিলাম ক্যাডেট কলেজে মুড়িকে মনে হয় ফকিরী খাবার মনে করা হয়,সবাই ঘেন্না করে।

বিস্তারিত»

ছবি ব্লগ ৫ – মার্কিন রাজধানীতে রথ দেখা ও কলা বেচা

গত ০৫ সেপ্টেম্বর গিয়েছিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী অর্থাৎ ওয়াশিংটন ডিসিতে। কিছু দাপ্তরিক কাজে জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশ দূতাবাস যেতে হয়েছিল। টিকেট কাটার আগে ভাবলাম, যাচ্ছি যখন সপ্তাহটা বন্ধু শামসুজ্জামানের ওখানে কাটিয়েই আসা যায়। দশম শ্রেণীতে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো এই বন্ধুর সাথে শেষ দেখা হয়েছিল সোহরাওয়ার্দী হাউজের সামনে। এছাড়া প্রায় দুইবছর পর দেখা হতে যাচ্ছিল মিসৌরী অবস্থানরত আপন বড় ভাই সুহৃদ (মোত্তাকী, মকক ৯৪-০০) এর সাথে।

বিস্তারিত»

ক্যাপ্টেন কারেজিয়াস

স্পেশাল ওয়ান। ক্যাডেট নম্বর ওয়ান ওয়ান ওয়ান ওয়ান। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে ক্লাশ সেভেনে এ ফরমে আমার ঠিক পরের ক্যাডেট নম্বর ১১১১।পোরশার ছেলে মোঃ ফিরোজ কবীর। ডাক নাম  সুজন । বাড়ি ২টা। একটা নিশ্চিন্তপুর আর একটা নিতপুর। আমাদের সবার চাইতে বয়স একটু বেশি আর উচ্চতাও। হয়তো সেজন্যই কাউকে কিছু মনে করতো না। গায়ের রং কালো আর সুপারী গাছের মতো লম্বা আর চিকন কিন্তু ভঙ্গুর নয়।  ক্লাশে এত কাছাকাছি থেকেও ওর কাছাকাছি হয়েছিলাম অনেক পরে।

বিস্তারিত»

স্মৃতিরা গানের ভাঁজে

দুটি মন আর নেই দুজনার। রাত বলে আমি পাখি হবো যে। গানটি মনে পড়লো খুব উদ্ভট এক সময়ে। কমোডে বসে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হঠাৎ একরকম গলা ছেড়েই কিছুটা ভুল হলেও গেয়ে উঠলাম। চার লাইন গেয়েই থেমে গেলাম। সুর বাদে আর কিছু মনে নেই। ২৩ বছর আগেকার কোন এক সকালে প্যানাসনিক ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজতে থাকা গানের কলি এভাবে মনে পড়ায় অনেকটাই হতহম্ভ আমি। ঘুরেফিরে চারলাইন বেশ কিছুক্ষণ গাইবার চেষ্টা করলাম।

বিস্তারিত»

লেসন ফ্রম ক্যাডেট কলেজ

১) মোজা না ধুয়ে এক সপ্তাহ পরলে বাজে গন্ধ ছড়ায়। না ধুয়ে এক মাস পরলে গন্ধ থাকে না। প্রায় প্লাস্টিক হয়ে যাওয়া সেই মোজা ব্যবহার করে খুব আরাম। এতে পোলাও এর হালকা সুবাস থাকে।

২) সাদা কাপড় থেকে সব ধরণের ময়লা দাগ দূর করা সম্ভব, শুধু সবুজ ঘাসের ঘষটে যাওয়া দাগ তুলে ফেলা সম্ভব না।

৩) ব্যাচেলর জীবনে সবচেয়ে অনাদরের জিনিসের নাম হ্যাঙ্গার।

বিস্তারিত»

আলোর জাফরি

গ্লাসের পানি একটু একটু কাঁপছে। কেঁপেই যাচ্ছে।
ইতু দু’হাতে শক্ত করে ধরেও থামাতে পারছে না।এক ঢোক খেয়ে গ্লাসটা নামিয়ে রাখে পাশে।
এই আতাগাছের ছায়া টুকু বাদ দিলে সারা বাড়ি ঝকঝক করছে রোদে আর সেই বিহানবেলা থেকে ছুটতে শুরু করা মায়ের যত্নে।
পিড়িতে জুবুথুবু ইতু হাটুতে থুতনি ঠেকায় সাবধানে, অনুভব করে নাসিমা বেগমের ব্যাস্ততা।
উঠান জুড়ে কত কি যে শুকাতে দেয়া!মুড়ির ধান,আতপ চাল,কুমড়ার বড়ি,ট্যাংরা চান্দার শুটকি,ইতুর বিছানা বালিশ,আধভেজা পাতার রাশ,ধঞ্চে কাঠি আরো কত কি !

বিস্তারিত»

আমাদের ভূগোল স্যার

আমাদের ভূগোল স্যার ছিলেন হিসেবি। শুধু হিসেবি নয় ভয়াবহ হিসেবি। কতটা
হিসেবি বলি, তিনি ছিলেন আমাদের ক্লাস টীচার। ক্লাস টীচারের দায়িত্ব ছিল
অনেক। ক্লাসের কোন জিনিসপত্র নষ্ট হলে তা ঠিক করার দায়িত্ব ছিল স্যারের।
একবার হঠাত্‍ করেই ক্লাসের ঘড়ির ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেল। যেহেতু আমাদের
ক্যাডেট কলেজে অনেক নিয়ম কানুন ছিল তাই চাইলেও ব্যাটারি পরিবর্তন করার
সুযোগ ছিলনা। এদিকে পরীক্ষাও খুব কাছে চলে এসেছে।

বিস্তারিত»

হারানো শৈশব

সে ছিল এক আজব সময়। ছিল ঘুম থেকে না উঠতে চাওয়া সকাল, দুরন্ত দুপুর, অবাধ বিকেল, ঘরে ফেরা সন্ধ্যা, ঘুমানোর রাত। সবকিছুর জন্য, মনে হয় ছিল আলাদা আলাদা সময়। বাবা-মার ডাকে, আদরে-বকাতে “আজ স্কুলে যাব না, আজ স্কুলে যাব না” অনুরোধ, শেষমেশ পাষাণ বাবা-মার দয়া-হীনতায় মুদিত চক্ষু ডলতে ডলতে কলপাড়ে দাঁড়ানো, হিম শীতল পানিতে গোসল করে মাঘ মাসের কাপাকাপি করতে করতে বাবা-মাকে মনে মনে গালমন্দ।

বিস্তারিত»

অধিকার তত্ত্ব

শিউলি নিতান্তই গ্রামের এক সাধারন বাড়ির বউ। জয়ন্ত, শিউলির স্বামী। দিন মজুরী করে সংসার চলে। একটা ৬ বছরের ছেলে আছে তাদের। দেখতে শিউলি একেবারে অসুন্দর না, শ্যামলা রঙের ছিপছিপে দেহ। বাড়ির কাজের পাশাপাশি মাঝে মাঝে নিজেদের খুব ছোট এক খন্ড জমিতে স্বামির সাথে কাজ ও করে। অন্যের জমিতে কাজ করে দিলে ও নিজের জমির জন্য অন্যকে মজুরী দেওয়ার সামর্থ্য বা ইচ্ছা নাই জয়ন্তর। শিউলি নিজে থেকে ই এটা বুঝে স্বামীকে সাহায্য করে।

বিস্তারিত»

প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণা এবং তেঁতুল তত্ত্ব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সরকারি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করছেন এবং সাথে সাথে ভোট প্রার্থনা করছেন। নির্বাচনী আইনে এটা আচরন বিধি ভঙ্গ হয়না ঠিকই কিন্তু সরকারী কাজে যেয়ে সরকারী সুযোগ সুবিধা,নিরাপত্তা গ্রহন করে ভোটের ক্যাম্পেইন করা কতটা নৈতিক? যেখানে জাতীয় নির্বাচন অতি নিকটে।

গতকাল কক্সবাজারের উখিয়ায় গিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে নৌকায় ভোট দিতে বললেন। ভাষণের এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা বলেন,

বিস্তারিত»

কেঁদেই ওদের সুখ

২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের কথা। একটি সাধারন মহিলা। তার স্বামী মারা গেছে ১৯৭৭ সালের এই সেপ্টেম্বর মাসে ই। একটা ছেলে রেখে।মহিলাটি আর বিয়ে করেন নি আর। একটা মেয়ের শখ ছিল। ভেবেছেন ছেলেকে বড় করে বিয়ে দিয়ে একটা টুকটুকে বউ আনবে, যে হবে তার মেয়ে। ছেলে বড় হল, বিয়ে করল। বাড়ির সামনে খালার কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ছোট্ট একটি দোকানে লোহার পাত ঝালাই করে গ্রিল বানিয়ে বেচে ছেলে টা ।

বিস্তারিত»

অভাগারা

জীবনে অনেক মানুষের সাথেই মিশেছি হয়েছে বন্ধুত্ব। তবে এই স্বল্প পরিসরে কিছু মানুষ পেয়েছি যারা আসলেই অভাগা। মানে তারা যাই করতে যায় না কেন সব সময় বিপরীতটাই ঘটে থাকে। তবে এই কথাটি সব সময় আবার প্রযোজ্য নয়। আর আমার এই লেখাটিকে আশা করবো সবাই Fun হিসাবেই নিবে, এটা কাউকে ছোট করার জন্য যেমন নয় তেমনি কাউকে অপমান করার জন্য নয়ই। শুধুই মজা করার জন্য।
এই পর্যন্ত যতগুলো বন্ধু পেয়েছি তার মাঝে সব চেয়ে অভাগা আমার মনে হয়েছে অয়নকে।

বিস্তারিত»

২০১২ সালে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া অনেক স্টুডেন্ট ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি!!!!!

গত ২৮শে আগস্ট প্রথম আলোর একটি অনুসন্ধানি রিপোর্ট থেকে এই ভয়ঙ্কর তথ্য বের হয়ে এসেছে।২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া ২৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ভর্তি পরীক্ষায় ৩০ নম্বরের কম পেয়েছিলেন। দেশের ৫৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ১৬টির তথ্য বিশ্লেষণ করে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে। ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১০ পেয়েও মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার নজির পাওয়া গেছে। অথচ এমনও একজন কে পাওয়া গেছে যে ১০০তে ৫৪ নম্বর পেয়েও ভর্তি হতে পারেনি কারন তার কাছে অনেক বেশি টাকা চাওয়া হয়েছিল।

বিস্তারিত»

দুটি তারার “মৃত্যু”…

আপনাদেরকে দুজন মানুষের ছোট্ট গল্প শোনাব আজ।

প্রথম জন দিয়েই শুরু করি।বন্ধুমহলে এই ভদ্রলোক ইন্টেলেকচুয়াল বা জ্ঞানী বলে পরিচিত।কর্মক্ষেত্রেও এই উপাধির পরিবর্তন ঘটেনি এবং তা সঙ্গত কারণেই।চোখে চশমা, হাতে বই আর বুকে পান্ডিত্যের ঝলকানি-এই সব মিলিয়ে মানুষটিকে আলাদা করে চিনে নিতে খুব একটা কষ্ট হয়না।কখনো তিনি বাংলার আকাশের একমাত্র সুপারহিরো স্যার অনন্ত জলিলের “খোঁজ- দ্য সার্চ” নিয়ে অসামান্য বিশ্লেষণধর্মী পোস্ট দেন, কখনো “আমার প্রেমিকারা”

বিস্তারিত»

বাৎসরিক ফিরে দেখা

(১)
সকাল থেকেই মেজাজ বিগড়ে আছে জামানের। টাকা নাই বলে বাপ স্কুলে যেতে মানা করে দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ভোর সকালে উঠে ধান লাগানোর জন্য চকে আসে বাপ-বেটা। “আর যহন ফড়াইলাম না ত্যা কাইলহা থেইকা সবারে উইঠ্যা আমার লগে লইবি ক্ষ্যাত লাগাইতে।” সপ্তাহখানেক আগের এক রাতের বাপের বলা কথা গুলো চিন্তা করেই রাগে এলোপাতাড়ি ধানের চারা লাগানো শুরু করলো। নিজের কাজের ফাঁকে ফায়েজুল ইসলাম ছেলের বেজার মুখে ধান লাগানো নিয়মিত বিরতিতে খেয়াল করছিলেন।

বিস্তারিত»