বেপরোয়া নাবিক

 

কলেজের প্রথম দিন জড়সড় ভাবে বাতাসের সাথে মিশে থাকার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় নাজেহাল হচ্ছি। বাবা মায়ের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসছে, অডিটোরিয়ামের কোনায় বসে নিজেকে আড়াল করে মায়ের আঁচল ভেজাচ্ছি।এভাবে কেঁদেও সুখ নেই!  চারপাশে অনেকেই শরমের তোয়াক্কা না করে প্রাণ খুলে কাঁদছে।

এমন শোকসন্তপ্ত পরিবেশে উচ্ছল হাঁসির শব্দে চমকিত হয়ে অদূরে বসা ছেলেটিকে দেখলাম। আর সবার থেকে আধা হাত লম্বা, কাল লিকলিকে গড়নে জীবন্ত কংকাল।

বিস্তারিত»

রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ

রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ বাংলাদেশের ৪র্থ ক্যাডেট কলেজ।১৭৩৩ সালে বার্লিনে প্রথম ক্যাডেট স্কুল স্থাপন করেন জার্মান সামরিক শাসক দ্বিতীয় ফ্রেড্রিক উইলিয়াম। জার্মান সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবার (জাংকার) এর সন্তানরা যাতে বিদেশী সেনাবাহিনীতে যোগ না দেয় এবং একই সাথে জাংকারদের সমর্থন পাবার জন্য এই ক্যাডেট স্কুলের শুরু।পরবর্তীতে সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ফ্রান্সে এই ব্যবস্থা চালু করেন।কিন্তু ক্যাডেট কলেজ শব্দটি প্রথম আসে জার্মানীর চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক এর সময়ে ।

বিস্তারিত»

নয় মিছে প্রলাপ

আমায় বারুদ এর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই
সভ্যতাকে পোড়াতে ,ছাই ভস্ম করতে যে হিংসার বারুদ ছড়ানো ছিটানো ছিল
আরব সাগরের পাড়ে, দজলা ফোরাতের তীরে
সেই বারুদ কে আমি পুড়িয়েছি নিজের হাতে নিজের মত করে আপন খেয়ালে আপন ধ্যানে
এক্টুও ভয় পাইনি
সুকান্তের দেশ্লাই দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি লাখ লাখ টন বারুদ

আমাকে দাবানলের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই
আমি অনেক দাবানল দেখেছি
এশিয়া থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ,আফ্রিকা থেকে ইউরোপে
শীতল প্রশান্ত করে দিয়েছি সেইসব দাবানল কে

আমাকে আগুনের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই
পুড়তে পুড়তে আমি নিজেই জ্বলে উঠেছি
পুড়িয়ে দিয়েছি চিতার আগুন কেও

আমাকে হিংসার ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই
আমি হিংসাকে ভালোবেসে নিজেই কখন জানি হয়ে উঠেছি অহিংস
আমাকে মানুষের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই
আমি মানুষ খেকো মানুষ কে বধ করে অমানুষ কেও বানিয়েছি মানুষ

আমাকে হৃদয়ের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই
আমি হৃদয়ের পাথুরে জমিন খুড়ে
সে জমিনে ফুটিয়েছি ্লাল টুকটুকে রক্তগোলাপ

ভেবোনা তুমি আবার –

বিস্তারিত»

ছবিব্লগ ৪ – গত এক বছরের মার্কিনি ফিরিস্তিঃ এখন গ্রীষ্মকাল

এখানকার এলাকাবাসীরা বেশীরভাগ ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত। এদের বেশিরভাগ আমেরিকান নামের শেষে দাঁত ভাঙ্গা কোন ইউরোপীয় শেষ নাম থাকেই। আগেই বলেছিলাম ১৮৮৫ সালে মাইনিং কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই সময় ফিনল্যান্ড, সুইডেন, পোল্যান্ড, থেকে প্রচুর শ্রমিক কাজ করতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। যাই হোক পুরনো এই অধিবাসীরা পর্যন্ত এবারের শীতের উপর চটে গিয়েছিল। গত নভেম্বরে তুষার পড়া শুরু হয়ে সর্বশেষ তুষারপাত হয়েছে এই বছর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত।

বিস্তারিত»

সুইসাইড পয়েন্ট

আমার বান্ধবীরা,যারা আত্মহত্যা করতে চায়,অথবা চায় না
সবাইকে নিয়ে এবার আটতলার ছাঁদে বেড়াতে এসেছি
নিচে কংক্রীটের কী মসৃণ মজবুত সারফেস!
সাথে ব্লেড,রশি,আর তিনশত ঘুমের বড়ি

এদের সবারই বয়ফ্রেন্ড ছিলো,প্রেমিক ছিলো না
যার যার কাজ শেষ করে সকলেই বাড়িতে গেছে গা ধুতে
শুধু মেয়েগুলো পড়েছিলো বিছানায়-
~একা,বিধ্বস্ত,আতঙ্কিত,লজ্জিত এবং একা~
অবশ্য শীৎকারে কেউ কার্পন্য করে নি
অন্তত বয়ফ্রেন্ডদের তাই মনে হয়েছিলো
(অবশ্য তাড়াহুড়োর মধ্যে কে শুনতে যায়)

আর আজকে যখন ছাদে নিয়ে এলাম
একজন বলছিলো,কেউ তো জানে না!

বিস্তারিত»

দৈনিক ধারাবাহিক অভিনয়…

রাত ৯.১৫। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল। জহির বসে আছে বিছানায়।
তার মোবাইলটা বেজে ওঠে হঠাৎ। হাতে নিয়ে দেখে মা কল দিয়েছে গ্রাম থেকে। সে কলটা কেটে দিয়ে নিজেই কলব্যাক করে।

– হ্যালো, মা।
– হ্যালো বাবা কেমন আছিস রে?
– আমি খুব ভাল আছি মা। তোমার শরীর এখন কেমন? রাশেদ আর মিলি কেমন আছে?
– আমার শরীর এখন একটু ভাল। রাশেদ আর মিলি পড়ছে।

বিস্তারিত»

রেলগাড়ী

তোমার জন্য মরীয়া হয়ে ছুটছে সারা শহর
তারপরও তুমি কাঁচঘরে একা জানালায় বসে থাকো
সামনে রঙিন স্বপ্ন সাজিয়ে দুই চোখ বেধে রাখো
চাঁদ চুঁয়ে চুঁয়ে নেমে আসা জল
ভাঙা রেলগাড়ী, শিশিরের দল
দুই হাতে গালে মাখো!
কাঁচঘরে বসে থাকো
তোমার জন্য মরীয়া হয়ে ছুটছে সারা শহর
তারপরও তুমি কাঁচঘরে একা জানালায় বসে থাকো

তোমার জন্য হঠাৎ সাহসী রোদেপোড়া রাজধানী
তারপরও তুমি প্রাণ নিয়ে গেছো চেনা রাজপথ থেকে
ভেঙে দিয়ে গেছো প্রিয় মনুমেন্ট রাস্তার মোড় থেকে
গুপ্তধনের ছেড়া খোড়া ম্যাপ
ভাঙা কাঁচে মাখা রূপোর প্রলেপ
রাস্তা পেরুনো বোকা ছেলেটাও আড়চোখে চেয়ে দেখে
তোমার জন্য মরীয়া হয়ে ছুটছে সারা শহর
তুমি নিয়ে গেছো প্রিয় নীল রঙ রাস্তার মোড় থেকে

বিস্তারিত»

ক্যাডেট কলেজ কড়চা-২

২০০২ থেকে ২০০৮।আমার ক্যাডেট লাইফ।ভালোয় মন্দে মিশিয়ে কেটেছে জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এই ছয়টি বছর।যেকোন ক্যাডেটের এই ছয়টি বছর কাটে অনেক ঘটনাবহুল।আমিও ব্যাতিক্রম না,মাঝে মাঝে মনে হয় আমার ক্যাডেট লাইফ একটু বেশিই উরা-ধুরা।কলেজের গল্প করতে কার না ভালো লাগে?ছয় বছরের ছোট ছোট ঘটনা নিয়ে আমার এই সিরিজ ‘ক্যাডেট কলেজ কড়চা’।আগেই বলে নেই ঘটনাগুলো ক্রমানুসারে সাজানো নয়।যেটা আগে মনে আসবে সেটাই লিখবো আগে।

(ডিসক্লেইমারঃধূমপান ক্যানসার সহ নানা প্রকারের দুরারোগ্য ব্যাধির কারণ হতে পারে)

বয়স তখন ১৩ কি ১৪।ক্লাস এইটের কোন এক ছুটি।দুই দুষ্টু (ক্যাডেট)বন্ধুর প্ররোচনায় সিগারেটে হাতেখড়ি।আমার ভাব তখন দেখে কে?২ দিনে মনে হলো অনেক বড় হয়ে গেছি।অসম্ভব(!)স্মার্ট লাগতে লাগলো নিজেকে।তার উপর বিলবোর্ডে নেভির প্যাকেট সামনে রেখে জাহিদ হাসানের ছবি,লেখা “শেষ পর্যন্ত সিগারেটটা ধরেই ফেললাম”।ভ্যাকেশনে লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খেতাম বাথরুমে,অনেক রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে।মাঝে মাঝে মিসটাইমিং হয়ে যেত।আম্মা বলতো রাতদুপুরে নাকি বিড়ির গন্ধ পায়।নানী এগিয়ে আসতো আমাকে বাঁচাতে,বলতো পাশের বাসার আঙ্কেল রাতে বিড়ি খায়।

বিস্তারিত»

জিসান এর মত চাই না মুহিব ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যাক

২১ ডিসেম্বর ২০১১ , দিনটা ছিল আমার জীবনে অন্যতম বেদনাদায়ক একটা দিন । এই দিনে আমার কলেজের বন্ধু জিসান ব্লাড ক্যান্সারে মারা যায় । জিসান ছিল আমার কলেজের ভাসানী হাউস এর । ২-৩ দিন আগে ব্যাচ গ্রুপে হঠাৎ নাফিজের পোস্ট দেখে স্তব্ধ হয়েছিলাম অনেক ক্ষণ, কোন কমেন্ট করতে পারিনি । পোস্টটা ছিল আমাদের গাইড ব্যাচ এর মুহিব  ভাই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত । আবার এই ক্যান্সার এর আক্রমণ !

বিস্তারিত»

পাঠকের ডায়েরিঃ স্মৃতি উসকে দেওয়া বই- খাকি চত্বরের খোয়ারি

ফেসবুকে বইপড়ুয়া বলে একটা গ্রুপ আছে। শাহাদুজ্জামানের বইয়ের খবরটা সেখান থেকেই পাই। লেখক হিসেবে শাহাদুজ্জামান এমনিতেই পছন্দের তালিকায় আছেন তার উপরে বইটা যখন ক্যাডেট কলেজ নিয়ে লেখা তখন আর তার উপর নজর না দিয়ে পারি নাই। ক্যাডেট কলেজ নিয়ে যেখানে যা পাই পড়ি, নিজের অভিজ্ঞতার সাথে অন্যদেরটা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করি। তাই আজিজে বইটা চোখে পড়তেই কিনে ফেললাম। এরপর শুধু চুপচাপ পাতা উলটে যাওয়া।

শুরু টা একটু জড়সড়।

বিস্তারিত»

মুহিব বাঁচবেই

কৃতজ্ঞতা: রেজা শাওন, পিসিসি, ২০০১-২০০৭

মুহিবদের ব্যাচের একজন হাসান যখন আমাকে বলল, ভাই মুহিবের জন্য ফান্ড রেইজের কাজ শুরু হয়েছে। সম্ভব হলে একটা লেখা রেডি করেন। বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়াগুলোতে লেখাটা ছাপানো প্রয়োজন। হাতে সময় একেবারেই নেই। হাসানের মেসেজটা পাওয়ার পর আমি আমার বয়স হিসেব শুরু করলাম। পহেলা সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ এর হিসেবে আমার বয়স চব্বিশ হতে আরও দুই মাস বাকী। জীবনে এখনও আমার কী কী করা বাকী সেই লিস্টটা যখন আমি বের করি,

বিস্তারিত»

নতুন সূচনা

– এই ছেলে এই……………………।
কিছুটা অবাক রাত ২টা বাজে এমন সময় এইভাবে কোন মেয়েলী স্বরের ডাক নিশ্চয়ই কেউ আশা করবে না। ঘুরে তাকাতেই দেখলাম হলুদ কামিজ আর সবুজ সালোয়ার পরিহিতা আমাকে তার কাছে এগিয়ে যেতে অনুরোধ করছেন না ঠিক আদেশ দিচ্ছেন। কিছুটা ভয় পাওয়া স্বাভাবিক একে রাত তার উপর কমলাপুর রেলস্টেশন আশে পাশে আর কাউকে দেখা যাচ্ছেনা। তবে যে ধারণাটা মনে আসছিল তা সত্যি হবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

বিস্তারিত»

নতুন শহর

কিছু কিছু দিন থাকে যেদিন চন্দ্রবিন্দু বাজতে থাকে ঘরে। ছিমছাম আবহাওয়া। এই দিনগুলোতে ছিমছাম জীবন, ছিমছাম গুছানো চিন্তা আর ভালবাসা জড়ানো মন পেতে ভাল লাগে, আর ভাল লাগে বারবার অবাক হতে, চন্দ্রবিন্দু কেন এত অছাম। একই ঘটনা ঘটে মহীনের ঘোড়াগুলি কিংবা অঞ্জন…কিংবা আরও অনেকের সাথে। এই সময়গুলোতে আক্ষরিক অর্থেই একটা প্রশ্ন বারবার ঘোরাফেরা করে, তবে শাহরুখ খান নয় কেন? কিংবা বাপ্পি লাহিড়ী? আনুশেহ আস্তে করে উত্তর দিয়ে যায়,

বিস্তারিত»

পাঁচ মিনিট বিরহের গল্প/ ৪

– তোমার নতুন রুমমেটের সমস্যা কী?
– হার্টের সমস্যা মনে হয়
– নাফিস, ঠিকমতো কথা বলো
– জি, অবশ্যই অবশ্যই
– তোমার সমস্যা কী?
– বিরাট সমস্যা
– মাইর চিনো?
– জি, চিনি
– খামচি চিনো?
– জি, চিনি। যাদের নখ বড় তারা খামচি দেয়, যেমন বাঘ, সিংহ, বিড়াল ইত্যাদি
– আমি বাঘ নাকি সিংহ?

বিস্তারিত»

খঞ্জনী

আমাদের গল্পটা শীতের শেষের দিকে এক বিকেলের। ম্যাড়মেড়ে, ক্লান্ত কিংবা ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে বসে থাকার কোন বিকেল নয় সেটা। ঝরা পাতার মর্মর শব্দ আর ঠান্ডা বাতাসের শো-শো আওয়াজের সাথে উজ্জ্বল হলদে রোদে ভরা সে বিকেল। এমন সময়ে মনে হয় না কারো ইচ্ছে করে লেপ-কম্বল গায়ে ঘরে বসে থাকতে। বরং ইচ্ছে হয় গরম কাপড় গায়ে চড়িয়ে পকেটে দু’হাত ঢুকিয়ে একলা পথে হাঁটতে। আমি তাই পথে বেড়িয়ে পড়ি।

বিস্তারিত»