মিলন হবে কতো দিনে …


ক্লাসে মেয়েদের অলিখিত দলনেত্রীর পদটি বাগে রাখার জন্য ভেতরে ভেতরে আমাকে অনেক রাজনীতির হিসেবনিকেশ কশে চলতে হতো। তাই তিথির সৌন্দর্য নিয়ে কেউ যাতে বেশি উচ্ছ্বসিত প্রসংশায় মেতে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে ছিল আমার কড়া নজরদারী। মসনদ – তা সে ময়ূর সিংহাসনেরই হোক কিম্বা পদ্মপাতার উপর দু’ফোঁটা পানিরই হোক – কব্জা করা আর তা ধরে রাখা এতো সহজ নয়। প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কথার যন্তর-মন্তরে আমার শিষ্যানুসদকে বশ করে রাখতে হতো।

বিস্তারিত»

টাগ অব ওয়্যার

দু’ঘন্টার বিরতিহীন ক্লায়েন্ট মিটিং । বেরোবার পর নোমানের মাথাটা নিরেট পাথর হয়ে থাকে। স্যাভিটেক কর্পোরেশনের ঝানু জেনারেল ম্যানেজারের সাথে পেরে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আজ । কিউবিকলে ঢুকে অবসন্ন শরীরটা চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে পিওনকে কড়া এক কাপ কফির অর্ডার দেয় । সেলফোনে ফেসবুক খুলে বসে হোমপেজে ঘোরাঘুরি করে অলস আঙুলে । অমুকের রেস্টুরেন্টে চেক-ইন, তমুকের চোখ ড্যাবড্যাবে ডাক-ফেস সেলফি দেখতে দেখতে একটা অনলাইন নিউজ পোর্টালের হেড লাইনে দৃষ্টি সেঁটে যায় ।

বিস্তারিত»

তেপান্তর

আমরা ভার্সিটিতে ওঠার আগেই সমবয়েসী নীলাঞ্জনারা বড় হয়ে যেতে লাগল দ্রুত। আমাদের চেয়ে বড় বড় বিদেশফেরত ভাইদের হাতে মেহেদীরাঙা হাত তুলে দিয়ে সোনিয়া, টুম্পারা যখন মিন মিন করে কবুল বলছে, তখন চায়ের দোকানে বসে আমরা পান্থদার কাছে মিতুলের ঝাড়ি খাওয়া দেখছি। কৈশোরের পনের আনা সময় যে বালিকার কথা ভেবে কাটিয়ে দেয়া হয় তাকে সময়মত বলে ফেলার সাহস অর্জন করতে না পারায়, বাবার পরিবর্তে মামা হয়ে যাওয়ার করুণ ট্র‍্যাজেডি স্বচক্ষে দেখার সেই চিরায়ত বৃত্ত থেকে বের হতে পারে নাই আমার বাবা,

বিস্তারিত»

নীল অশ্রু

আহ্‌…… কি যে ভালো লাগছে। কত দিন ধরে অপেক্ষা করেছি এই একটা খবরের জন্য। আনন্দে লাফাতে ইচ্ছা করছে। শেষ পর্‍যন্ত তা হলে রেসিডেনসিটা হোল। অনু অবরয় …… কনগ্রেসুলেসন ..অবশেষে তুমি পারলে,  নিজেকে নিজেই ধন্যবাদ দিল অনু। নিজের যোগ্যতায় যতটুকু না হয়েছে তার চেয়ে মনে হয় বেশি কাজ হয়েছে মুরুব্বিদের দোয়ায়। গ্যাস ইস্টিসনে কাজ করার ফাঁকে কম্পিউটারে ইমেল চেক করে মাত্রই ইরেস (ইলেক্টনিক রেসিডেনসি এপ্লিকেশ্‌ন সিস্টেম) থেকে ইমেলটা পেলাম।

বিস্তারিত»

উপন্যাসের খোঁজে

আনন্দ হলের সামনে বাস থেকে নামতেই আবার রিংটোন বেজে ওঠে ফাগুনের। রিতা ফোন দিয়েছে। এই নিয়ে গত বিশ মিনিটে পঞ্চম ফোন।
– আরে এসে গেছি তো। এইত হলের সামনে। তুমি পার্কে থাকো। আমি আসছি।
– গিফট গুলো এনেছ তো?
– হ্যা রে বাবা। বললাম তো এনেছি।
ফোনটা কেটে যায়।
রিতার সাথে সম্পর্ক দুই সপ্তাহের।মাস ছয়েক আগে কাজলের সাথে ব্রেক আপ হবার পর প্রায় দুই মাস ফাগুন সিঙ্গেল ছিল।

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ পাঁচ

“এই যে আসেন!” কঠিন অথচ কৌতুক মেশানো গলায় ডাক এলো পেছন থেকে।
ঘুরে তাকালাম, বিক্রেতা দুই হাতে কী সব একত্রে মাখাচ্ছেন আর হাঁক দিচ্ছেন, “এই যে আসেন, বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা বাড়ি লিয়া যায়! ধনী-গরিব ছবায় খায়, মজা পাইয়া লিয়া যায়! দাদায় খায়, দাদি তৃপ্তি পায়!”
বুট, মুরগি, ডিম, কিমা, গিলা, কলিজা, মগজ, ঘি, চিড়াসহ অসংখ্য পদ দিয়ে তৈরি হয় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামের এই অদ্ভুত ইফতার আইটেম;

বিস্তারিত»

বালিকা

‘ পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমের মত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই। প্রথম যৌবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মত সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারাজীবন পোড়ায়।”

আমাদের এই বালিকাও আজ ক’দিন তীব্র যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে যাচ্ছ। নিজেও সে সেটা বুঝে কি? তবে কিছু একটা যে হয়েছে, বয়:সন্ধিজনিত অনুভূতির প্রগাড় অনুভবে বিদীর্ণ হবার চেয়েও বেশ তীব্র এই নতুন অনুভব।

বিস্তারিত»

ফুল:অণুগল্প

হুমায়রার সাথে প্রথম কোথায় দেখা হয়েছিল? লাইব্রেরীর সামনে? ক্যাফেটেরিয়ায়, জারুলতলায়- ঝুপড়ি দোকানগুলোর একটাতে? আসার সময় শাটল ট্রেনে- পাশাপাশি, ভীড়ে চিরে চ্যাপ্টা, তারুণ্যের উদ্দামতায়, অবহেলায়-অনুভবে-হঠাৎ বড্ড নরম লেগেছিল কি ওকে?
নরম। কোমল। ফুল!
ওটা কি কদম ছিল না, ওর হাতে? তিনটি পাতায় ছাওয়া দৃশ্যমান বর্ণীল – বৃত্তাকার জীবন! ঠিক হুমায়রার নিজের মতন। হুমায়রা কি জীবন ছিল। আমার? হতে পারতো। ও আমার ‘ফুল’ ছিল। কদম ফুল।

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ চার

পথ হাঁটতে হাঁটতে রিকশায় চড়া প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। নিউমার্কেট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, মহাখালি কিংবা গুলশান থেকে আজিমপুর অথবা লালবাগ, সদরঘাট হতে এলিফ্যান্ট রোড, রায়ের বাজার থেকে শাহবাগ, আর রাতে সব কাজ শেষে লালবাগ থেকে শংকর হেঁটেই যাতায়াত করতাম। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
এর মধ্যে রিকশা ভাড়াও অনেক বেড়ে গিয়েছিল টের পাইনি। ধাক্কাটা খেলাম এক সন্ধ্যায়। লালবাগ চৌরাস্তায় পথের ক্লান্তি নিয়ে চলতে থাকা একজন এখানকার স্থানীয় এক রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেছেন,

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ তিন

লোডশেডিং শুরু হল। ঠিক একঘন্টা বিদ্যুৎ থাকবে না। অন্ধকার পথ ধরে ফিরছি।
ঘন ঘন লোডশেডিং হয় বলে সন্ধ্যার পর রোগীও আসে কম! লালবাগ আর আজিমপুর জুড়ে লোডশেডিং-এর প্রাবল্য খুব বেশি, বলতে গেলে সুষম সবিরাম। গলির ভেতরটায় রিকশাগুলো জ্যাম লাগিয়ে ফেলেছে। এরা কিভাবে যেন জ্যাম বাধায়, আবার কিভাবে কিভাবে যেন জ্যাম ছুটে যায়! সারি সারি রিকশা কেউই কোনদিকে যেতে পারছে না। আমি শরীরটাকে কায়দা করে বাঁকিয়ে দুই রিকশার মধ্যে দিয়ে পার হবার সময় কানে এলো রিকশায় বসা ছেলেটি বলছে,

বিস্তারিত»

বালিকা

‘ পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমের মত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই। প্রথম যৌবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মত সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারাজীবন পোড়ায়।”

আমাদের এই বালিকাও আজ ক’দিন তীব্র যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে যাচ্ছ। নিজেও সে সেটা বুঝে কি? তবে কিছু একটা যে হয়েছে, বয়:সন্ধিজনিত অনুভূতির প্রগাড় অনুভবে বিদীর্ণ হবার চেয়েও বেশ তীব্র এই নতুন অনুভব।

বিস্তারিত»

টুকরো টুকরো গল্পেরা…

জীবন এই মতো

তুমি শুটকি ভালোবাসো জানিয়েছিলে একদিন। আমি সমুদ্র উপকূলের মানুষ। শুটকি খেতে অভ্যস্ত নই। তবুও বাজার তালিকায় শুটকি রাখলাম। আমি বললাম, শুটকি খাওয়া অমানবিক। কিভাবে মাছের লাশগুলোকে রোদে পোড়া হয়েছে দেখেছ। তুমি বললে, মৃত মাছের আবার কি অনুভূতি? তুমি যে আস্ত কই তেলে ভেজে খাও। কই মাছের ছটফটানি দেখে দুঃখ জাগে না?
আমি আর কথায় পারলাম কই। বললাম, শুটকি কখনো রাঁধতে দেখিনি মা কে।

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ দুই

ডিম পাড়া মুরগির মত লাবণ্য ঘিরে থাকে কারুর চেহারায় – কবিতায় পড়ি আর বাস্তবে মেলানোর চেষ্টা করি। কাপ্তান বাজার হয়ে হেঁটে বাসায় ফিরি সান্ধ্য অফিস শেষে। জীবনের প্রথম চাকুরি বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা আটটা। দু’দিন হল পাল্লা দিয়ে বাজারের দুই প্রান্তে রাতে ওয়াজ মাহফিল আর কাওয়ালি চলেছে। উৎসব শেষে প্যান্ডেল খোলার কাজ চলছে।
বাজারে প্রায়ই বেশি আয়ের কিংবা স্বল্প আয়ের মানুষদের কাজকারবার মনে দাগ কাটে।

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ এক

ওয়ারির এই ছায়াঘেরা স্থানটি বাইরের কোলাহলের সাথে মানাচ্ছে না। শুনেছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার এখানে অবকাশ যাপন করতে এসেছিলেন, জয় হাউজে থেকেছেন। এই বলধা গার্ডেন দেখতে এসে অনেক বৃক্ষের বাংলা নামকরণ করেছিলেন। ‘ক্যামেলিয়া’ রচনার পেছনের ইতিহাস এখানকার ক্যামেলিয়া বাগানটি!

তন্ময় হয়ে ভাবতে ভাবতে হাঁটছি। বড় অশোক গাছটির পেছন থেকে এক পুরুষ কন্ঠ ভেসে এল, “আল্লার কছম! তুমারে ক্যামনে বুঝাই? আমি বুড়া হইবার পারি, মাগার আমার দিলডা এক্কেরে কচি,

বিস্তারিত»

সেইসব গল্পঃ তিন

পড়ন্ত বিকেলে উড়াল হাওয়া মনটাকে উড়িয়ে নিয়ে গেল।
মেপল পাতাগুলো উড়ে চলে তার পাশে পাশে। কানাডার ৪২তম সাধারণ নির্বাচন।
টানটান উত্তেজনা। নেতৃত্বের পরিবর্তন চায় বেশিরভাগ মানুষ!

পাগলা হাওয়া আজ। মনে জেগেছে ভাব।
দেবী আজ ভীষণ মানবী। দেবতাও বুঝি একদিন ছিলেন কবি।
দূর থেকে ভেসে আসে কানেঃ
যা দেবী সর্বভুতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা!
লিখে দিলে নাম ‘দুর্গতিনাশিনী’ হেসে
তবু সে তোমারেই আজ দুর্গতির কারণ মানে!

বিস্তারিত»