ছায়া কিংবা ছবিঃ আট

মেয়েটি সবটুকু দিয়ে ছেলেটিকে ভালই বেসেছিল। ছেলেটি শুধু শরীরটুকু নিয়ে কেটে পড়ল। মেয়েটি শরীর জুড়ে কামড়ের দাগ, নখের আচড়, কালশিটে ছাপ, তলপেটে ব্যথা, ভারী বুক আর জলে ভেজা চোখ নিয়ে লুকিয়ে থাকে।

হুজুরের কাছে আরবী পড়তে এসে এ কী হল মেয়েটির … কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, “হুজুর, ব্যথা পাই।” হুজুর উত্তেজনায়, ব্যস্ততায় উত্তর দিয়েছিল, “আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌, কর!”

রাস্তার বোবা অর্ধ-উলঙ্গ পাগল মহিলাকেও একদিন দলবেঁধে জাপটে ধরল ওরা।

বিস্তারিত»

গল্পঃ ব্যতিক্রমী ঘুষ

তাজুল হক আর নূরুল হক এক পাড়ায় থাকতো। বয়সে নূরুল হক ওরফে নূর ভাই তাজুলের চেয়ে কয়েক বছরের বড়। বয়সের ঐটুকু পার্থক্য তখন কোন ব্যাপার ছিল না। ৫/৬ বছরের ব্যবধানের মধ্যে পাড়ার ছেলেপুলেরা একসাথেই ঘোরাফিরা করতো, খেলাধুলা করতো, পাখি ধরতো, লাট্টূ-ডাংগুলি খেলতো, আবার দুষ্টামিও করতো। এমনকি ঐ পার্থক্য সত্তেও তাদের সবার মাঝে তুই তুকারি সম্পর্কও ছিল। ওরা সবাই নিম্ন মধ্যবিত্ত/মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে ছিল, তবে আর্থিক স্বচ্ছলতার দিক দিয়ে তাজুলদের অবস্থা অন্যান্যদের চেয়ে একটু বেশীই খারাপ ছিল।

বিস্তারিত»

ছায়া কিংবা ছবিঃ সাত

এক দেশের এক সাদা মেয়ে একটু বেশি চিনি আর দুধ দিয়ে চা খেতে খেতে বইয়ের পাতা উল্টায় – দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেইন। বই পড়তে পড়তে মনে হয় কাল রাতে সে কোন খদ্দের পায়নি। আজকের দিন-রাতও যদি এভাবে যায়। না ভাবতে পারে না – আশঙ্কা, অনিশ্চয়তা আর অম্বলের ব্যথাটা একসাথে চাড়া দিয়ে ওঠে। আরেকটু চিনি নেবার জন্য কাউন্টারে আসতেই পরিচিত এক খদ্দেরের সাথে দেখা হয়ে যায়।

বিস্তারিত»

পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ সাত

ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে, ল্যাম্পপোস্টের আলোতে হেঁটে যাই একা। চেম্বার থেকে হেঁটে ফিরব বাসায়। লালবাগ থেকে শঙ্কর। মাঝের পথটুকু – আজিমপুর, ইডেন কলেজ, নিউ মার্কেট, সাইন্স ল্যাবরেটরি, জিগাতলা, ধানমন্ডি ১৫ নম্বর, স্টার কাবাব, আবাহনী মাঠ – কখনো দুনিয়াবি চিন্তা, কখনো বাজার-সদাই, কখনো লালনের গানের সাথে কেটে যায়।

হঠাৎ মনে পড়ে যায় সেই হাসিমুখ মানুষটিকে। সুগন্ধি পান খেয়ে, মিঠে গলায় হারিয়ে যাওয়া দিনের কথা বলতেন। “বুজলেন নি বাজান?

বিস্তারিত»

শিরোনামহীন ফ্যান্টাসি । পর্ব ১ : “অন্তর্ধান”

পুরো কলেজে থমথমে অবস্থা। পিটির ফলইন, পিটি হচ্ছে না। এমনটা না যে বৃষ্টি পড়ছে, অথবা ওয়াকিং দেওয়া হয়েছে। জাস্ট পিটি হচ্ছে না। কলেজের ৩০০ জন ক্যাডেট পিটির ফলইনে এই ভোর ৫ টায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে জবুথবু ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। কারন, ক্লাস সেভেনের একটা ক্যাডেটকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এই শীতেও স্টাফদের শরীর ঘামে ভিজে গেছে। সিএসএম স্টাফ এডজুটেন্ড স্যারের সামনে তোতলাচ্ছেন। বাকি স্টাফরা নজরুল হাউসের ফলইনের সামনে দাঁড়িয়ে।

বিস্তারিত»

দত্তক

আমি অনেক ছোট । আমার বয়স তিন বছর। কিন্তু আমার মাথায় অনেক বুদ্ধি। আমরা থাকি শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি বহুতল ভবনের তিন তলায়। শহরে থাকলেও আমাদের পরিবার কিন্তু যৌথ পরিবার। সকালের আলো ফুটতেই কাজিনরা সবাই চলে আসে বড় হলরুমটাতে। বসে খেলাধুলা আর চিৎকার চেঁচামেচির আসর। রীতা খালামনিই আমাদের সবচেয়ে বেশী আদর করে। আমাদের খাইয়ে দেয়, ঘুম পাড়ায় আবার শাসনও করে। সারাটা দিন স্বপ্নের মধ্য দিয়ে কেটে যায়।

বিস্তারিত»

একটা শব্দ….

কল আসল নাকি এলার্ম বাজল।

ঘুমটা ভাঙ্গার পর এই প্রশ্নটাই প্রথমে মাথায় এলো।

এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙার রেকর্ড খুবই কম। অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে গেছে এর মধ্যে। একবার ফোন অনেক দূরে রেখেছিলাম। হয়ত এলার্ম বন্ধ করার জন্য বিছানা থেকে উঠা লাগবে। এতেও যদি একটু ঘুমটা ভাঙ্গে। কিন্তু বিধিবাম! সাউন্ডই শুনতে পেলামনা। অন্যান্য দিনের চেয়েও দেরীতে উঠতে হয়েছে সেদিন।

আরেকবার ফোনটাকে সাউন্ডবক্সের সাথে কানেক্ট করে ঘুমালাম।

বিস্তারিত»

কতিপয় কথার কোলাজ

রজনীগন্ধার ঘ্রাণ

রজনীগন্ধা নিয়ে মাতম ছিলো একদা। আমাদের কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে বাগানের দু’ধারে ফুটে থাকতো সারিসারি রজনীগন্ধা। বাজারি রজনীগন্ধার সাথে এই রজনীগন্ধার তফাত ছিলো বেশ। মূলত এর গন্ধ আচ্ছন্ন করে রাখতো আমাকে। আধাসামরিক আবাসিক বিদ্যাপিঠে বিবিধ নিয়মের ভেতরে ছিল আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রা। একটু সিনিয়র হবার পর প্রায়ই রাতের ডিনার শেষে রজনীগন্ধার গন্ধযুক্ত হাসপাতালের পথে হাঁটতাম। শরতের রাতে আকাশে যখন ঝুলে থাকতো শারদীয় জোছনা,

বিস্তারিত»

বোবার কান্না

‘রাজা, তোমার বাবা এখন কোথায়’?

ছোট ফুপির এ কথাটা শোনার সাথে সাথে রাজার দু’চোখ বেয়ে প্রথমে নীরবে ফোঁটা ফোঁটায়, পরে ঝর ঝর করে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। ও কী বুঝলো, কী ভাবলো, কে জানে! ফুপি যখন এ প্রশ্নটা করেছিলো, তখন কেবলমাত্র ও ছাড়া ওদের বাড়ীর এবং আশে পাশের সব বাড়ীর পুরুষ লোকেরা গিয়েছে স্থানীয় মাসজিদে, জুম্মার নামাযে। তবে অন্যান্য দিনে জুম্মার নামাযের সময় এরকমভাবে সবার বাড়ী পুরুষ শূন্য থাকেনা বা হয়না।

বিস্তারিত»

বৃত্তস্থ ত্রিভুজ

জেবা আফরোজ। বিজনেস ম্যাথের কোর্স টিচারের নামটা চোখের সামনে ঘুরঘুর করলেও আর দশটা সাধারণ সাদামাটা নামের মতই একে আমলে নিইনি। ক্লাসের কেউ কেউ বিশেষত্বহীন জেবা থেকে জেব্রা বের করে হাসাহাসি করতে থাকলে তাতে দু’একবার তাল দিয়েছি, ব্যাস। নতুন শিক্ষক; তাই যাবতীয় প্রাথমিক কৌতূহলসমেত প্রস্তুত আমরা। তা সত্ত্বেও জেবা বা জেব্রা ম্যাম যখন ক্লাসে ঢুকলেন, তার চেনাচেনা চেহারায় ‘জেবা আফরোজ’ খাপে খাপ মিলে যেতেই চমকে উঠলাম!

বিস্তারিত»

দাগ

১।
লোকটা মুচী না হয়ে, কোনো মাসাজ পার্লারেও কাজ করতে পারতেন! এমন সুনিপুণ হাতে জুতার উপর ব্রাশ ঘষছেন যে, আরামে জুতা যখন তখনই ঘুমিয়ে যেতে পারে। মুচী জনার্দন হলের কাছের ক্যাম্পাসের এ পাশটায় বেশ পরিচিত মুখ। তার হাতে পালিশ করা জুতা পরে, কত পদযুগলের মালিক আজ সমাজে উঁচু পদে অসিন হয়েছেন!
আজও যেমন একজনের ইন্টার্ভিউ। তার কাছেই জুতা পালিশ করাচ্ছে।
জনার্দনের বুট পালিশের সুগন্ধে একটা মাছি সেই তখন থেকেই পেরেক ঠোকার হাতুড়িটার উপর বসার চেষ্টা করছে।

বিস্তারিত»

ছায়া কিংবা ছবিঃ ছয়

পরীক্ষার হল একমাত্র জায়গা যেখানে একটি ছেলে একটি মেয়েকে নির্ভয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারে, “তোমারটা একটু দেখি, দেখাবা?”
গল্পটার শুরু এখানেই।
মেয়েটি’র খুব রাগ হয়েছিল। ছেলেরা এত্ত খারাপ!

অনেক অনেক দিনের পরে মেয়েটি একদিন বলেছিল, “দেখবা?”
চাঁদ তখন ভীষণ ছুটছে মনকে নিয়ে যেন ডুরি ছেঁড়া ঘুড়ি।
পূর্ণিমার আলো-আঁধারিতে মেয়েটি কী এক হাসি হেসেছিল,
সেই থেকে ছেলেটি অন্ধ-কালা-বোবা!

কোন এক ভরা পূর্ণিমাতে দূরের এক সাঁওতাল পল্লীতে কালো এক ছোঁড়ার কাঁকাল ধ’রে মাতাল এক ছুঁড়ির নাচার বড় ইচ্ছে জমা হয়েছিল অনেক অনেক দিন ধ’রে,

বিস্তারিত»

ছায়া কিংবা ছবিঃ চার

একটা ছেলে দেশ থেকে অনেক দূরে, খানিকটা অভিমান, খানিকটা অহং আর খানিকটা ভাগ্য মিলিয়ে। মাঝে মাঝে ভাত খেতে বসলে দেশের খাবারের সেই স্বাদের কথা মনে পড়ে যায়। এখনো সে দেশ নিয়ে ভাবে, দেশের প্রকৃতির ছবি, দেশের মানুষের হাসিমুখ কিংবা দেশের জয় দেখলে পুলকিত হয়।
মনে মনে কে যেন বলে, “বুঝি, এত পচা একটা দেশ, তবু কেন জানি তাকে না ভালবেসে থাকা যায় না।”

একটা মেয়ে জানে আরেকটা মানুষ বড্ড খামখেয়ালিতে পূর্ণ;

বিস্তারিত»

ছায়া কিংবা ছবিঃ এক

মানুষটা আকাশের পানে চেয়ে থাকে। চকচকে শহরের ঝকঝকে আলোর ফাঁকে মেঘের আড়ালে আছে ঠান্ডা গোল চাঁদ। বেরিয়ে আসে, আবার ঢাকা পড়ে। জীবনে একবার প্রকাশিত হওয়া, আবার লুকিয়ে থাকার যুগপৎ চেষ্টা – লোকটি মনে মনে হাসে – হাসতে হাসতে চোখে জলের ধারা নামে। কেন কে জানে?

অনেক দূরে আরেকজন চেয়ে ছিল আরও বেশি তন্ময় হয়ে চাঁদের পানে। জোছনা গলে গলে নেমে আসছে যেন নদীর জল হয়ে।

বিস্তারিত»

ছায়া কিংবা ছবিঃ পাঁচ

এই দেশে কালো লোকটি ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে কিছু ফেলে দেয়া খাবার খুঁজে নিয়ে ক্ষুধা মেটায়। প্রথম কয়েক লোকমা গোগ্রাসে গিলে নেয়। স্বাদ, গন্ধ কোন কিছুই তো কমতি লাগে না তার কাছে! পেটের কোণে একটু ভুটভাট হয় এই যা। ক্ষুধা কমে এলে একটু আরাম ক’রে মেহগিনি গাছটার সাথে হেলান দিয়ে বাকিটুকু ধীরে ধীরে গিলতে থাকে। তারপরে উজ্জ্বল, খোলা আকাশের পানে চেয়ে একটু হেসে দেয়।

আরেক দেশে সাদা মেয়েটি শেষ রাতে এক কাপ কফির পয়সা জোগাড় করে ব্লোজব-এর বিনিময়ে।

বিস্তারিত»