ছেলেটার নাম ছিল বকুল। রাতে সবার অগোচরে ফুটে, দিনভর সুগন্ধ ছড়িয়ে গাছতলায় নির্বিবাদে পড়ে থাকবে, এ ধর্ম যে ফুলের- অন্তত তার নামে এ ছেলের নাম রাখা উচিৎ হয় নি, এটা শালিকতলী গ্রামের লোকেরা দিনে দিনে টের পেতে থাকে। বকুল সমবয়সীদের চেয়ে আকারে বেশ খানিকটা ছোট ছিল। উচ্চতাজনিত ত্রুটি’টি পরবর্তীতে সে সাহস দিয়ে পূরণ করে নেয়ার কাজে বেশ আগ্রহী- এটা বোঝা যায় যখন আমাদের বকুলের বয়স ছয়ে গিয়ে পড়ে।
বিস্তারিত»প্রবাসের গল্প
অনুগল্প – ১ঃ পড়াশুনা আর টিকে থাকা
ইউরোপের উদ্দশ্যে উচ্চ শিক্ষার্থে দেশ ছেড়েছি ২০১২ সালে – তাও প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি হয়ে গেল। মোটেও সোজা ছিল না শুরুর সময়টা। নতুন দেশ, পরিবেশ, পড়ালেখার ধরণ, খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট, জন্মের ঠান্ডা, স্বর্ণকেশী/নীলনয়নাদের আনাগোনা – সব মিলিয়ে অনেক কঠিন মন বসানো। তারপরেও জীবন চলে যায় জীবনের নিয়মে।
ইউরোপীয়ানদের তুলনায় আমাদের ম্যাথের ব্যাকগ্রাউন্ড যথেষ্ট দুর্বল।
অপরাধী
চেয়ারম্যান বাড়ির কাছারিতে সালিশ বসেছে । আসামী গ্রামের সিরাজ শিকদারের ছেলে মন্টু ও হাসান মাস্টারের মেয়ে বকুল । আসামীদের অপরাধ ভয়ঙ্কর । দুজনকে একসাথে নদীর ধারে দেখা গেছে। শুধু তাই না, মন্টু নাকি বকুলের হাতও ধরেছিলো ! কি ভয়ানক নাজায়েজ কাজ_কারবার ! এদের উচিত সাজা হওয়া উচিত । তা না হলে গ্রামের যুব সমাজ রসাতলে যাবে ।
ঘরভর্তি মানুষ । এক কোনায় হাসান মাস্টার মাথা নিচু করে বসে আছেন ।
অডিও ব্লগঃ কার্সড ফর ইটার্নিটি
অন্ধকার হাতড়ে ফোন তুলে যখন তোমাকে কল করলাম তুমি জানতেও পারোনি আমি তখন কবরের আঁধারে ডুবে ছিলাম। আমার শোবার ঘরের কাঁচের জানালার বাইরে তখন নিশুতি রাত। সামনের হলি গ্রোভ রোডে শুনশান নিরবতা। দূরে কোথায় যেন একটা এ্যাম্বুলেন্স চলে গেলো সাইরেন বাজিয়ে বাজিয়ে।
চল্লিশ মাইল দূরের শহরটিতে তুমি তখন শুয়ে পরেছো লুসিকে নিয়ে। তোমার পায়ের কাছে ধূসর রঙা বেডে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে লুসি।
বিস্তারিত»কল্পপুরের গাড়ি আর একটা ইনটেক বার্থডে…
ক্লান্ত শরীর নিয়ে বসে, দুপুর একটা বাজে। হঠাৎ-ই কল্পপুরের এক গাড়ি এসে হাজির। আরে, আজ না ১৫ই এপ্রিল, টাইম তো ২টা ছিল, তাইনা?
তড়িঘড়ি করে কল্পপুরের গাড়িতে চেপে বসলাম। গন্তব্য সেই ৬বছরের সম্পর্কে আঁটকে পড়া সবগুলো মুখের সাথে দেখা করা। আসলেই, আমার সেই ৬বছরের বন্ধুগুলো যেন ঐঠিক সেরকমই রয়ে গেছে আমার কাছে। এখন যতই ডিএসএলআর-এ ছবি তুলে ফাটিয়ে দিক, আমার কাছে আশিক সেই তব্দা খেয়ে তাকিয়ে থাকা গোবেচারা আশিক-ই আছে।
বিস্তারিত»নূর মোহাম্মাদ
নূর মোহাম্মাদ
সকাল থেকেই তোঁতাবিবির কথা মনে হচ্ছিল নুর মোহাম্মাদের। সে মহেষখোলা ছেড়েছে এপ্রিলে আর এখন সেপ্টেম্বর। বঊএর সাথে অনেক দিন দেখা নাই। অসুখ বিসুখ মানুষের মন নরম করে দেয়। সাতদিন আগে টাইফয়েড শুইয়ে দিয়েছে তাঁকে। জ্বর জারির সাথে খুব একটা পরিচয় ছিলো না তার। এই জ্বর তাকে অকম্মা বানিয়ে ছেড়েছে। স্ট্যান্ড টু’র (সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের আগে নিয়ম করে সতর্ক অবস্থান নেওয়া) মত নিয়ম করে সকাল বিকাল কাঁপিয়ে জ্বর আসে।
বিস্তারিত»অণু গল্পঃ সামাজিক/অসামাজিক
দিনের কমপক্ষে ১২-১৩ ঘন্টা আমি অনলাইনেই কাটাই। নিজের গুণগান গাইবো না, তবে সামাজিক মিডিয়াতে আমি মোটামুটি একজন সেলিব্রিটি। আমার ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা ১০ হাজারের উপরে। টুইটারেও আমাকে ফলো করার লোক কম নয়। জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ, কাগজের প্লেন থেকে শুরু করে রকেট সাইন্স- যা নিয়েই লিখি না কেন- মুহুর্তের মধ্যে হাজার হাজার লাইক, কমেন্ট শুরু হয়ে যায়! এমনকি ‘কী সুন্দর সকাল’ টাইপ স্ট্যাটাস বা টুইট করলেও তা ছোটখাট আলোড়ন তোলে!
বিস্তারিত»অণু ব্লগঃ হারলী ডেভিডসনের ঈগল
ফ্ল্যাট ক্রিক কান্ট্রি ক্লাবের ঝিমনো বিকেল। কাছেই লেকের পাশ দিয়ে লম্বা ওয়াকিং ট্রেইল ধরে হাঁটছে গুটিকয় ছেলেমেয়ে। দু’ চারজন হ্যান্ডসাম বুড়ো রঙচঙ্গা টি-শার্ট পরে অলস ভঙ্গীতে গলফ খেলছেন অদূরে। লিটল ওল্ড লেডিরা ডেকে বসে কফির মগে চুমুক দিচ্ছেন অথবা কুরুশ কাঁটায় মোজা বানাচ্ছেন নাতনীর জন্য। গোলাপী রুজ আর লাল লিপস্টিকে বয়স ঢাকবার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা তাদের কারো কারো। মিস ডরোথির সোনালী ঘড়িতে থমকে আছে সময়। বান্ধবী রুথ কে তিনি কুইল্ট বানাবার জন্য উৎসাহিত করছেন আসছে সামারে।
বিস্তারিত»সিমি আপু, ক্ষমা করবেন…
আমিঃ হ্যালো, এটা কি ০ ০০০০ ০০০…?
ফেরেশতাঃ হ্যাঁ, আপনি এই নাম্বার কীভাবে পেলেন?
আমিঃ আহ, আলহামদুলিল্লাহ্! ভাই, আপনি কি কোন মানুষ, নাকি ফেরেশতা?
ফেরেশতাঃ আমি ফেরেশতা! কিন্তু আপনি কীভাবে নাম্বারটি পেলেন তাতো বললেন না!
আমিঃ ভাই, বলছি। তবে, আগে একটি কথা বলে রাখি, আমার সিমি আপুর সাথে কথা বলা খুব জরুরী। দয়া করে কেন জরুরী, কি বলব,
বিস্তারিত»তিন চাকায় দুই গল্প
-এই রিকশা যাবেন?
-কই যাইবেন?
-খিলগাঁও
-চলেন, ৬০ ট্যাকা।
-কী?? ৪০ টাকায় যাবেন?
– না।
রিকশাটা রেখে এগিয়ে যায় রাশেদ। আরেকটা রিকশা সামনে। রিকশাওয়ালা একটু পরপর আশেপাশে তাকাচ্ছে। খুব তাড়া আছে দেখে মনে হচ্ছে।
– খিলগাঁও যাবেন?
– যামু, খিলগাঁও কই?
– গোড়ান, কত?
– যা ভাড়া হয়, দিয়েন মামা।
– ৪০ টাকা।
অণু গল্পঃ শনিবারের দুপুর
প্যাটেল প্লাজায় শনিবারের উৎসবমুখর মধ্যাহ্ন। কুমড়োর ছক্কা রাঁধবেন বলে বাতের ব্যাথা শিকেয় তুলে প্রতিবেশীর সাথে বাজারে এসেছেন চাটুয্যে গিন্নী। কুমড়ো কেনার বাহানায় এলেও নারকোল, মামড়া, মেথি শাক আর বাসমতী চাল কিনলেন তিনি। মেয়েটা ইডলি খেতে বড় ভালবাসে তাই একটা ইডলি মেকারও নিলেন মনে করে। মিশিগান থেকে মেয়ে জামাই আর টোপলা গালের নাতনীটা আসছে যে কাল রাতের ফ্লাইটে।
মায়ের পাশে কুলফি হাতে কিশোরীটির কানে হেডফোন।
বিস্তারিত»মেয়েটি হৃদয়বতী ছিল না (চার পর্বের ধারাবাহিক গল্পঃ পর্ব-এক )
অফিসের কাজে শাহবাগে আসতে হয়েছিল।
কাজ শেষে কি মনে করে বই মেলার ভিড়ে নিজেকে হারাতে ইচ্ছে হল রেজার। তাই বাংলা একাডেমীর ভিতরে এখন সে। কত মানুষ। নানা রঙের মানুষ। উচ্ছল প্রানবন্ত এক একজনের আনন্দিত মুখগুলোকে দেখছে। নিজেও ভালোলাগার আবেশে ভেসে যাচ্ছে।
কয়েকজন বন্ধুর সাথে দেখা হল।
এরা নবীন লেখক। এদের সবার বই বের হয়েছে। ওদের থেকে একটি করে বই কিনলো। খুশী মনেই।
জবানবন্দি
মেয়ে তিনটির পরনে নামী ফ্যাশন হাউসের এক্সক্লুসিভ সালোয়ার-কামিজ । পায়ে ফ্যাশনেবল জুতো । হাতে বিদেশী ব্র্যান্ডের ব্যাগ । মেক আপে আঁকা নিখুঁত মুখশ্রী । ঈশ্বরপ্রদত্ত গায়ের রঙ,চোখের রঙ, চুলের ধরণ কিছুই আর বুঝবার উপায় নেই । তিনজনের পারফিউমের ককটেলে আশপাশের কয়েক গজ মাতোয়ারা ।
ওদের মুখ ফুটে বলতে হয়না নিজেদের সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে । শেখ সাদীর সেই গল্পের মত পোশাক-পরিচ্ছদই জোরগলায় তা ঘোষণা করে ।
বিস্তারিত»না-গল্প পাঁচ(ঘ) – তোড়ার কথা: ফেরা
প্রথম কিস্তি
না-গল্প পাঁচ(ক) – তোড়ার কথা: ফ্ল্যাশব্যাক
দ্বিতীয় কিস্তি
না-গল্প পাঁচ(খ) – তোড়ার কথা: শাওন-রিটা অধ্যায়
তৃতীয় কিস্তি
না-গল্প পাঁচ(গ) – তোড়ার কথা: নেপাল অধ্যায়
চতুর্থ ও শেষ কিস্তি
মায়ের বাসায় ফেসবুকের স্ট্যাটাস চেক করছে তোড়া। ঘুরেফিরে ইচ্ছা, রাশেদ কিছু দিল কিনা, সেটা জানার।
নাহ্ তেমন কোন কিছু চোখে পড়ে না।
না-গল্প পাঁচ(গ) – তোড়ার কথা: নেপাল অধ্যায়
প্রথম কিস্তি
না-গল্প পাঁচ(ক) – তোড়ার কথা: ফ্ল্যাশব্যাক
দ্বিতীয় কিস্তি
না-গল্প পাঁচ(খ) – তোড়ার কথা: শাওন-রিটা অধ্যায়
তৃতীয় কিস্তি
নিজেকে আসলেই দারুন স্মার্ট হিসাবে প্রমান করেছে রিটা।
এক সন্ধ্যার পরিচয়কে পুঁজি করেই শুধু ইন্টার্নশিপই না, রাশেদের আন্ডারে বিজনেস ডেভেলাপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-এ কাজ করার সুযোগও পেয়ে গেছে সে।
সবার সামনে রাশেদকে স্যার বলে এবং পূর্ণ অফিস ডেকোরাম মেনে চলে কিন্তু একা থাকলে রাশেদ ভাই-কে কফি বানিয়ে খাওয়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।