পথ হাঁটতে হাঁটতে রিকশায় চড়া প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। নিউমার্কেট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, মহাখালি কিংবা গুলশান থেকে আজিমপুর অথবা লালবাগ, সদরঘাট হতে এলিফ্যান্ট রোড, রায়ের বাজার থেকে শাহবাগ, আর রাতে সব কাজ শেষে লালবাগ থেকে শংকর হেঁটেই যাতায়াত করতাম। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
এর মধ্যে রিকশা ভাড়াও অনেক বেড়ে গিয়েছিল টের পাইনি। ধাক্কাটা খেলাম এক সন্ধ্যায়। লালবাগ চৌরাস্তায় পথের ক্লান্তি নিয়ে চলতে থাকা একজন এখানকার স্থানীয় এক রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করেছেন, “ছদরঘাট যাইতে কত লইবা মিয়া?” জবাব এল, “দিয়েন চল্লিছ ট্যাকা।” ভদ্রলোক ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন, “কী যে কইবার লাগছ মিয়া, ছদরঘাট তো এইহান থেইকা দেখা যাইতাছে, চল্লিছ ট্যাকা ভাড়া হয় কেমতে?” পাল্টা উত্তর এল, “মুরুব্বি, আসমানের চান ভি এইহান থেইকা দেহন যায়!”
আমি আকাশপানে চেয়ে দেখি বড় গোল চাঁদ বাড়তে বাড়তে আলোয় ভরে দিয়েছে প্রিয় পুরনো ঢাকার আকাশটাকে।
পুনশ্চঃ যারা পথ হাঁটেন তাদের বৃষ্টির দিনে কিংবা প্রচন্ড গরমে অনেক বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তারা হয়তো স্বস্তি পান এইভেবে অন্যদিন যে দূরত্ব হাটলে কুড়ি টাকা বেঁচে যেত, বৃষ্টি কিংবা প্রচন্ড গরমের দিনে বা হরতালে অন্তত দ্বিগুণ সাশ্রয় হয়! তারা কি মনে মনে একটা পৈশাচিক হাসি দেন ওপরের দিকে তাকিয়ে?
জুলাই ৩০, ২০১৫
টরন্টো, কানাডা।
:clap:
ভাবছি, আমি এ যাবত কত টাকা সেইভ করছি।
সৈয়দ সাফী