দাঁড়িয়ে আছি রান্নাঘরে। ধোয়ামোছার কাজটা শেষ করে এনেছি, এমন সময় দেখি তুষার পড়া শুরু হয়েছে। তুলার ন্যায় ভাসতে ভাসতে নেমে আসছে শুভ্র তুষারকণা। আলোয় ঝলমল করছে রাস্তাটা। ক্রিসমাস ট্রিটা জানালার পাশে রেখেছে তারা, সোনালী আর লালে সুন্দর করে সাজানো। ম্যারিয়ানকে দেখতে পাচ্ছি। ক্রিসমাসের আলোয় এক মূহুর্তের জন্য যেন ঝলসে উঠল তার চেহারা। আমাকে দেখতে পেয়ে হাত নাড়াল।
উপহারটার কথা এখনও জানে না সে।
এ বছর গাছ নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাইনি।
একটি অসম্পূর্ণ গল্পের গল্প
(সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ দৈর্ঘে একটু বড়। পড়ার মাঝে ধৈর্যচ্যূতি ঘটতে পারে, পড়া শেষে সময়ের অপচয় হয়েছে বলে আফসোস হতে পারে)
সেদিন সন্ধ্যায় মাগরিবের আযানের ঠিক আগে আগে হক সাহেবের দাফন প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হলো। তার ছোট ছেলে ক্ববরের উপর শেষ কয়েকটা মাটির ঢেলা ছিটিয়ে দিয়ে মাওলানা সাহেবের সাথে কন্ঠ মেলালো… “মিনহা খালাক নাকুম, ওয়া ফিহা নুয়িদুকুম, ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম, তা’রাতান উখরা” – “মাটি দিয়ে আমি সৃষ্টি করেছি,
বিস্তারিত»উর্ধতন কর্মকর্তার পাইপজীবন: উপন্যাস
এক.
মধ্য আষাঢ় । ঝুম বৃষ্টি। বাইরে আঁধার। যদিও শিহাব যেখানে এখন শুয়ে আছে, সেটার দুই প্রান্ত ছালার চট দিয়ে ঘেরা, তাই ভেতরে সবসময়েই অন্ধকার থাকে। তারপরও ভেতরের অন্ধকার ছাপিয়েও কিছুটা আলো থেকেই যায়। আজ বাইরে আকাশের মন খারাপ। তাই আঁধারের মাঝে আরো কিছুটা আঁধারে ঢেকে আছে এক অন্ধকারের মানুষ, যার ভেতরটা আলোয় ভরা।
এখন দিন-রাত্রির কোনো প্রভেদ নাই। সবকিছু-ই একইরকম। কালো।
বিস্তারিত»~ স্মৃতিশকট : প্রজন্মের দৃশ্যপট ~
[ গল্প অথবা গল্পের ছায়া ]
বাসাটার সামনে টানা তিনশ ফুটের রাস্তা। সেই পত্তনি থেকে দিনে দিনে বেড়ে এতোদূর এসেছে। এটাই শেষ সীমান্ত আজ অব্দি। আদপে ঠিক শহরের প্রান্ত বলে না মানলেও জনবসতির এখানেই শেষ। তিনশ ফুট রাস্তার পরে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ। মাঠ ঠিক নয় পরিত্যাক্ত বিরান ভূমি। প্রস্থে প্রায় এক কিলোমিটারের কাছাকাছি, দৈর্ঘ্যে সাতের বেশী। খুব বেশীদিন অবশ্য এর আয়ু বোধ করি আর নেই।
বিস্তারিত»★★আকাশের নীলে★★
চারিদিকে কেউ নেই। বাতাসের মন মাতাল। সবুজ পাতায় ভালোলাগার ভ্রমরগুঞ্জন। দূরে মিশে যাওয়া মেঠো পথটি বামে যেখানে বাঁক নিয়েছে, একটা বাঁশঝাড় ওখানে। যত্ন করে ছাটা। বুঝাই যায়। ছনে ছাওয়া একটা গ্রাম্য চায়ের দোকান। এই ভরদুপুর বেলায় দোকান বন্ধ। এখন পাতাঝরার দিন। ঝরছে.. অবিরাম।
লম্বা বেঞ্চটাতে বসে আছে মেয়েটি। পাতায় পাতায় সবুজে ছায়া যুবতীর শরীর বেয়ে যৌবন উপচে পড়ছে যেন!
দূর থেকে মোড় ঘুরবার সময়ে চোখে এমনই লাগলো।
বিস্তারিত»সিনেমা অথবা জীবন
সিঁড়ির নিচে নিজের ছোট্ট খোপের ভেতর হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে মোবাইলে গান শুনছিল মিলন। আগে যদি জানতাম, মন ফিরা চাইতাম, এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না । গায়িকার আবেগ ওর বুকেও ধাক্কা মারে। চোখ বুঁজে মাথা নেড়েচেড়ে সেও গুনগুন করতে থাকে, মন রে, এই জ্বালা আর… হিলের খট খট শব্দে ওর গান থেমে যায়। চোখ খুলে গলা বাঁকিয়ে দেখে একটা অচেনা মেয়ে ঢুকে পড়েছে। নাকে এসে লাগে পারফিউমের ঝাপটা।
বিস্তারিত»★★ধূসর পান্ডুলিপি★★
জানালার পাশ ঘেষে দু’সারি গ্রিল। মাঝখানে এক চিলতে ব্যালকনি। তার ওপাশে আয়তাকার জমাট আঁধার বুকে নিয়ে এক মহানগর। তবে নাগরিক জীবনের পথ চলায় যাতে ছন্দপতন না ঘটে, দিগন্তব্যাপী ‘সুপারস্ট্রাকচার’ গুলো বিভিন্ন বর্ণচ্ছটায় মায়াবী নরম আলোয় মোমের মতন রুপালী তরল!
ক্যানাবিসের মিষ্টি অনুভবে চিন্তাভাবনার জগতে সুস্থির শিহাবের সবসময় এমনই মনে হয়।
আজ বিকেলে লেকের পাড় ধরে হেঁটে আসার সময় ওদেরকে দেখেছে সে। এই সময়ে প্রতিদিন এই গ্রুপটিকে দেখা যায়।
বিস্তারিত»অশান্ত শহরটি যেভাবে বশ মেনেছিল
( বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান লেখক পাওলো কোয়েলহোর How the city was pacified গল্পের মর্মানুবাদ এটি।)
অনেককাল আগের কথা। পিরিনীজ পর্বতমালার পাদদেশে ছিল এক শহর। কিংবদন্তি অনুসারে, শহরটা নাকি গুণ্ডা-বদমাশদের জন্যে ছিল রীতিমতো অভয়ারণ্য। আর দুষ্টের শিরোমণি ছিল আহাব নামের এক আরব। এহেন দুষ্কৃতিকারীর জীবন পুরোপুরি বদলে গেল স্থানীয় পাদ্রীর কাছে ধর্মবাণী শোনার পর। তার বোধোদয় হলো যে, শহরের পরিস্থিতি বিশৃঙ্খলভাবে চলতে দেওয়া উচিত হচ্ছে না।
বিস্তারিত»টিটি’র একদিন
বিমান বন্দর স্টেশন ছেড়ে ট্রেন খুলনা অভিমুখী। ধীরে ধীরে গতি বাড়ছে। সময়ের বুক থেকে বের হওয়া আরো অনেক কু-ঝিকঝিকের সাথে ট্রেনের গুলোও মিলায়.. বাতাসে.. শব্দ তরংগ।
যুবক ওরা চারজন। এক টেবিল মাঝে রেখে সামনাসামনি। টুয়েন্টি নাইন খেলছে। অপর পাশে ভিন্ন বয়সের নারী- পুরুষ শিশু। একেবারে শেষ মাথায় দুজন দুপাশের বন্ধ দরোজার ওপরের খোলা অংশ দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। সেদিকের অপর বগি থেকেই আসলেন টিটি।
বিস্তারিত»বদসুরত
ক্লাসে ঢুকল সোহানা । ও একবার আমার দিকে তাকাল ।তারপর ফারিয়ার পাশে গিয়ে বসে পড়ল ।সোহানা যে আহামরি সুন্দরী টাইপের কিছু তা কিন্তু না ।ও খুব ভালো মেয়ে ।আমাদের ক্লাসের ছেলেরাও আমার সাথে কথা বলে না ,মেয়েরা তো দূরের কথা ।কারণ কাছে এর । ছোটবেলায় মার হাত থেকে গরম দুধ ছলকে পড়ে আমার মুখে । পুড়ে গিয়েছিল বেশীর ভাগ অংশ । সেই পোড়া দাগ আমার মুখটাকে করে দিয়েছে ভয়ংকর ।সবার কাছে আমি বদসুরত ।
বিস্তারিত»শেষ অণুগল্প
হাসপাতাল তা সে যতই ‘নিট এন্ড ক্লিন’ থাকুক না কেন, মৃত্যুর এক ঘ্রাণে এর আবহ সবসময়েই উদ্দীপ্ত থাকে। বিভিন্ন ধরণের ঔষধ, ডিটারজেন্ট-ফিনাইল সহযোগে ঘ্রাণেরা নিজেদের ভেতরে এক ‘ফ্রি-স্টাইল’ কুস্তির মহড়া দিতে থাকে… দর্শণার্থীদের নাসারন্ধ্রে থেকে থেকে নিজেদের জাহির করার দ্বারা।
খুশবু কেবিন নাম্বার ৩২১ এর সামনে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলি-ই ভাবছিল। একটা বদ্ধ দরোজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে অতি প্রিয় একজন মানুষ। যে ওকে এই পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখিয়েছে।।
বিস্তারিত»ছবি থেকে শোনা দু’টি অনুগল্প
এক ছোট বোনের আঁকা এই ছবিটা চোখে পড়লো সকাল।
লিখলাম “ছবি দেখার সময়, অনেক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই সেটা দেখি।
এই যেমন: শিল্পির হার্ডওয়ার্ক, ক্রিয়েটিভিটি, কালার কম্বিনেশন, টেক্সচার, ইত্যাদি।
এর যে কোনোটাই দর্শক হিসাবে আমাকে আকৃষ্ট করলে, ছবিটা দীর্ঘক্ষন নিয়ে দেখে যাই।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি আন্দোলিত হই, যখন প্রথম দর্শনেই ছবিটা একটা গল্প শোনায়।
তখন শুধু ছবিটা দেখেই ক্ষান্ত হই না,
চিন্তা খেলা করে ৩
সম্পর্কের রসায়ন
কি জটিল প্রক্রিয়ায় নারী ও পুরুষের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে জানা নেই। জানি না এই শহরে কেমন করে প্রেম হয়। গড়ে ওঠে সম্পর্কের বীজ। চারদিকে অজস্র সম্পর্ক গড়ে ওঠার মিছিল দেখে মাঝেমাঝে ইচ্ছে হয় ভীড়ের মাঝে আমিও ঢুকে পড়ি। কিন্তু এইসব মিছিলে নিজেকে ‘ফিশ আউট অফ ওয়াটার’ মনে হয়। ভাবি, গড়পরতা এইসব সম্পর্কের শেষটা আসলে কোথায়?
কলাভবনের সামনে তেঁতুলের আচার চাটতে দেখে যে নারীকে অপার্থিব সৌন্দর্যের দেবী মনে হয়েছিল,
বিস্তারিত»পুরনো ঢাকা’র গল্পঃ ছয়
“চাঁন রাইতে চাঁদনী চক যাইবি না কিলা? এক্কেরে আসল মজা পাইবি।”
পুরনো ঢাকার এই সংলাপ মিথ্যা নয় প্রমাণ পেলাম। একবার ঈদের আগের রাতে মা’র ব্লাউজ আনতে গেলাম। দর্জি ডেলিভারি দিতে দেরি করছে। পরে বুঝেছিলাম সে আসলে বানায়নি সেই ব্লাউজ, শুধু কাপড় কেটে রেখে দিয়েছে, সেলাই বাকি! অথচ দু’দিন আগে ডেলিভারির ডেট ছিল।
আমি রাগে, ক্ষোভে গড়গড় করছি, পায়চারি করছি, আর আশেপাশের ঘটনা দেখছি।
কিন্নরকণ্ঠী নদী – ১৪
(পিলখানার শহীদদের স্মরণে আমার প্রথম উপন্যাসের এই অধ্যায়টি এখানে দিলাম। পিলখানা বিষয়ক অনেক তথ্য আমি এখানকার ব্লগার সাইফের ব্লগ থেকে নিয়েছিলাম।)
চৌদ্দ
হিয়া ভেবেছিলো বয়স্ক কোন ড্রাইভার আর অফিসের পিয়নের সাথে বোধহয় তাকে বান্দর বনে যেতে হবে। কিন্তু হোটেল লাউঞ্জ থেকে ফোন পেয়ে ভোর ছয়টায় যখন নিচে নেমে এল তখন দেখল যে তার অপেক্ষায় অল্পবয়সী এক আর্মি অফিসার একটা জীপের মধ্যে বসে আছে।