১.
কৃষ্ণকান্দা গ্রামের উত্তর প্রান্তে আগুন লেগেছে। দখিন সমীরণে সে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। অগ্নিতে ঘৃত সংযোগ হয়েছে। অথচ এ গ্রামেরই কতিপয় বালক তার খুব কাছেই ডোবা সেচে মাছ ধরছে। তাদের এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা মাছ ধরছে বড় খাল সংলগ্ন সড়কটার পাশের ডোবায়। এলাকার সবচেয়ে বড় সড়ক এটাই, হাট হয়ে গঞ্জে গিয়ে মিশেছে। হাটের কিছু আগে মধ্য বিরতি হিসেবে রেল লাইনটাও বয়ে গিয়েছে এই সড়কের উপর দিয়েই।
ফিরে দেখা
গলায় ঝুলে থাকা গামছাটাকে কষে মাথায় বেঁধে ক্ষেতের আলের উপর বসে পড়েন আজিজ মিয়া। হাত বাড়িয়ে মাটিতে পড়ে থাকা হুক্কাটাকে তুলে সুড়ুক সুড়ুক করে টান দেন তিনি। এক গাল ধোঁয়া ছেড়ে ক্ষেতে হাল ধরে থাকা ছেলে রহমানের দিকে তাকিয়ে হাঁক দেন।
“চোখ কান খুইলা রাখিস রে রহমান, ওরা যে কোন সময় আয়া পড়তে পারে।”
ছেলেটার দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ কোমল হয়ে আসে তার।
বিস্তারিত»সনদবিহীন আত্মজ
-
ঙ.
…শশাঙ্ক নামে একটা ছেলে জন্মেছে একটু আগে। ম্যাটার্নিটি ওয়ার্ডের ঘোলাটে পর্দাঢাকা কেবিন থেকে তার চিল-চিৎকার ভেসে আসছে। ফিনাইলধোয়া ঘরে জীবাণুমুক্ত তোয়ালেতে সে জড়ানো। রোগ-জরা তাকে এখন ছুঁতে পারবে না। আরো অনেক অনেক দিন পরে সে পঙ্কিল হবে, তার আগে এখন অন্তত সে নিষ্পাপ, সরল, নির্মল আগমনের পরে কাঁদছে। শশাঙ্কের মা, একটু আগে প্রসবজনিত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন চুপচাপ। মৃত্যুর একটু আগে তিনি একবার শশাঙ্ককে কোলে নিয়ে তার নরোম মাথায় চুমু খেয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলেছেন।…
বিস্তারিত»রূপবিলাস- ৩,৪
৩.
এই মানুষটার মাথায় শিং, লেজও আছে একটা। মুখে ভুবনভোলানো হাসি। কিন্তু সে জানে লোকটা তার জন্যই অপেক্ষা করছে বছর ধরে, যুগ যুগ ধরে। হাসির মোহে আর পরবে না সে, উল্টা ঘুরে দৌড় দেয়। কিন্তু একি পায়ের নিচে মাটি কোথায়?!! সব ষড়যন্ত্র ঐ বুড়ো বদমাসটার। নিচে তাকায় না সে, যদি হাল ছেড়ে দেয় শরীরটা। হাল ছাড়া যাবে না, হারা যাবে না।
গল্পঃ দ্বিধা
সন্ধ্যা নেমে এসেছে বলেই মনে হয় এই হলুদ আলোয় ডিভাইডারে বসে রোমেলা দু’হাত মুঠো করে বেশ চিন্তায় মগ্ন হয়ে থাকে। একমুঠোয় সবুজ পাতা ঘিরে থাকা কতগুলো দোলনচাপা। বাদামি ময়লা ফ্রক-পরা রোমেলা তার হতবিহ্বল ভাব কাটাতে রুক্ষ্ণ তেলহীন চুল সরায় মুখের উপর থেকে। একটু আগে একটা গাড়ি-মহিলার কাছে সে পাঁচটা ফুল বিক্রি করেছে। তারপর থেকে ডিভাইডারেই বসে আছে থম্ মেরে। কী করবে বুঝতে পারছে না। সামনে দিয়ে হুশহাশ করে গাড়িগুলো বেরিয়ে যাচ্ছে বা সিগন্যালে পড়ে বুড়োটেগুলোর মতো বসে থাকছে রোমেলাকে না ছুঁয়েই।
বিস্তারিত»খাদ্য, ক্ষুধা এবং তৃপ্তি বিষয়ক গল্প-১
মাদুরের উপর আড়াআড়ি করে পলিথিন বিছানো। তার উপরে শাদা শাদা ভাত। ধোয়া উঠছে। বড় হাড়িতে ভাত হবার পর বাঁশের জালিতে ফেলে পানি দিয়ে ধুয়ে এই পলিথিনে রাখা হয়। মাড় গালার ঝামেলা থাকে না তখন। গরম ভাত পানির সাথে মিশে আরো পরিচ্ছন্ন হয়। ব্যস্ত হাতে এই মুহূর্তে সেই পরিচ্ছন্ন ভাত তুলে তুলে ক্যারিয়ার বন্দি করছে মজুর মা।
তার সহযোগী আলতা। গত বছর থেকে সে কাজে লেগেছে।
বিস্তারিত»রূপবিলাস
১.
বিকেলের সময়টায় কোন কাজ থাকে না সৌরভের। প্রায়ই হাঁটতে হাঁটতে ধানমন্ডি লেকে চলে যায়। তারপর একটা জুতসই জায়গা দেখে বসে পড়ে। আমোদপ্রবণ মানুষগুলোর ছুটে চলা দেখে , আর দেখে প্রেমিক যুগলের খিলখিল শব্দে লুটোপুটি খাওয়া। বিচিত্র মানুষের সমাগম ঘটে, কেউ আসে মজা করতে কেউ আসে লুটতে। সৌরভ আসে মানুষ দেখতে। এক একটা মানুষের মুখ দেখে গল্প খুঁজে বেড়ায় সে, জীবনের গল্প। মানুষকে বিভিন্ন শ্রেনীতে ফেলে,
আরো একটি অনু গল্প
১.
রাত দ্বিপ্রহর প্রায়। শহর থেকে মাইলখানেক দূরে পাহাড়ী রাস্তা। অন্ধকার চিরে হেডলাইট দু’টি এগিয়ে চলছে। প্রকৃতির নিস্তব্ধতা আরো বেশি রহস্যময় করে তুলেছে এই পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথটাকে। একটু পরেই এখানে একটা খুন হবে, এ সবই যেন তার আয়োজন।
এসব নিয়ে অবশ্য তাদের কোন চিন্তা নেই। তারা কেবল শিখেছে পরস্পরের সাথে জুড়ে থেকে কাজ করে যেতে। এ ছাড়া অন্য কোন চিন্তা তাদের মাথায় খেলে না।
বিস্তারিত»সুগন্ধির খোঁজে…
দরজাটা খুলে বাইরে বেরুতেই ঠান্ডায় হি হি করে উঠল রনি। এখনো নভেম্বর মাস শেষ হয়নি, জাঁকানো শীত পড়ে গেছে এর মধ্যে। আজ অনলাইনে পত্রিকা পড়তে গিয়ে হালকা মেজাজ খারাপ হয়ছে, ৩৫ সেমি তুষার নিয়ে মৌসুমের প্রথম ঝড় আসলো বলে। জ্যাকেটের কলার উপরে তুলে দিয়ে তাড়াতাড়ি হাঁটা শুরু করল ও স্টুডেন্টস’ রেসিডেন্টের দিকে। হাঁটার সময় এই এক অভ্যাস রনির, দুনিয়ার হাবিজাবি জিনিস নিয়ে আকাশ পাতাল চিন্তা করা চাই।
বিস্তারিত»আমার চলে যাওয়া!!!
কয়টা বাজে দেখতে পারলে খুব ভাল হত-ভাবলাম আমি। বেশ কিছুক্ষণ আগে কে জানি বলে গেল আর দেড় ঘণ্টা বাকি। কতক্ষণ আগের কথা সেটা, আধা ঘণ্টা? বিশ মিনিট? আমি হাঁক ছেড়ে ডাক দিলাম,
-‘আনিস ভাই, এই আনিস ভাই…’
-‘জ্বি ভাইয়া, কিছু বলবেন?’
-‘আর কতক্ষণ বাকি?’
-‘উম্…আর পঁচিশ মিনিট বাকি…কিছু এনে দেব??’
-‘না থাক, থ্যাংক ইউ!’
আর পঁচিশ মিনিট! তারপরই সব কিছুর উর্ধ্বে চলে যাব আমি।
বিস্তারিত»একটু শুনবেন গল্পটা
আচ্ছা আপনার কি একটু সময় হবে আমাকে দেবার? আমার কাছে একটা গল্প আছে আপনাকে বলার জন্য। গল্পটা আমি একটু খুলে বলতে চাই, “মন খুলে বলা” যাকে বলে। আর এই কাজটা তো এক তরফা জমে না, বুঝতেই পারছেন, তাই আপনাকেও “একটু মন খুলে” শুনতে হবে। তা না হলে তো আমি বলে ঠিক তৃপ্তি পাব না। আর একটা ছোট্ট শর্ত আছে আমার, গল্প শুনে আপনার মন একটু “ক্যামন ক্যামন” করলে আমাকে কিন্তু কিছু বলতে পারবেন না।
বিস্তারিত»বিজ্ঞানী চাচার কীর্তি
বাবা চিৎকার করে উঠলেন, টিভি চলছে না কেন? কে কোথায় আছিস?
কোনো সমস্যা হলেই বাবা বাড়ির সবাইকে ডেকে সমবেত করে ফেলেন। সবাই এসে তার সমস্যাটা শুনে যেতেই হবে। কিছু করুক না করুক তাতে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু শুনতে হবে। এবং সবাইকে না শোনানো পর্যন্ত তিনি থামবেন না।
বিস্তারিত»ইচ্ছেমত উড়াব আমার ইচ্ছেঘুড়ি…!!!
(তাইফুর ভাই যথার্থই বলেছেন, “এই ব্লগের একটা লেখা নতুন আরো কয়েকটা লেখার উপজীব্য বলেই বোধহয় ব্লগটি মন্ত্রমূগ্ধতায় পুর্ণ।” ফয়েজ ভাইএর ‘ঘাই’ গল্পটা পড়ার পর এই পোস্টটা লিখতে গিয়ে বারবার আমারও তাই মনে হচ্ছিল…ফয়েজ ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!)
এক।
পুরনো বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারা আমার বহুদিনের অভ্যাস। এটা অনেকটা গুপ্তধন খোঁজার নেশার মতন…হাবিজাবি নানান বই ঘাটাঘাটি করে মাঝে মাঝে দেশি বা বিদেশী দুর্লভ বই পেলে যে আনন্দ হয় তার সাথে বুঝি একমাত্র গুপ্তধন পাবার আনন্দের তুলনাই চলে…তাছাড়া পুরনো বইয়ের একটা অন্যরকম গন্ধ আছে…পাতা উল্টাবার সময় গন্ধটা যখন নাকে বাড়ি দেয়…কেমন জানি একটা অনুভুতি হয়…!!!
বিস্তারিত»ঘাই
শেখেরটেক হাট থেকে আকাবাকা হয়ে পুব দিকে যে রাস্তাটা চলে গ্যাছে, পদ্দাপদ্দি নদীর ধার ঘেষে, ওটা ধরে মাইল চারেক সামনে গেলে যে গ্রামটা চোখে পড়ে তার নাম তালুকদার বাড়ি। গ্রামটা চিনা খুব সহজ, কারন ইংরেজ আমলে শাহ তালুকদার জমিদার ছিলেন, সেই আমলের বিরাট আলিশান প্রাসাদের মত বাড়ি অত্র এলাকা তো বটেই, জেলাতে আছে কিনা এই নিয়ে দারুন সন্দিহান এলাকার মানুষ। আর একটা সহজ চিনার উপায় আছে তালুকদার বাড়ি।
বিস্তারিত»সহজ ভাষায় ইংরেজী- পর্ব তিন (ক্রিকেট পর্ব)!!!
টুয়েন্টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ চলছে। আজকের খেলা ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে, দি ফাইনাল…। ইরফান আর আমি আমাদের বাসায় বসে খেলা দেখছি। প্রথমে ব্যাট করে ভারত ভাল একটা স্কোর করে ফেলল। পাকিস্তান ব্যাটিং করতে নেমে দ্রুত কয়েকটা উইকেট পড়ে যাবার পর আমি ওকে বললাম, ‘তুই দেখতে থাক, আমি একটু নেট-এ বসি…’ ইরফান আবার পাকিস্তানের অন্ধ ভক্ত। বলল, ‘আচ্ছা যা, আমি দেখতে থাকি…’
আমি মেইলটা চেক করে,
বিস্তারিত»