প্রজাপতি, তোমার রঙিন হাতে
ভাত খাবে বলে
মুখিয়ে আছে সারা বাগান —

বেগানা আঙুলে
আচার তুলে দেবে সবার মুখে মুখে
এমন মুখরোচক গুজব
রটে গেছে সর্বত্র

তারপর এলো জোনাকি
সবুজ চায়ের কাপ নিয়ে,
ইনিয়ে বিনিয়ে চাইলো কি
চোখের তারার মত
মদির কিছু ভেষজ –
সুঘ্রাণ মুখশুদ্ধি

আর এক বিটকেল কবি!

লাল টি শার্টে
হাওয়ায় উড়িয়ে চুল
উদ্দাম গানে তেতে
শ্বেত মেঘ আর
নীল রোদ্দুর
উদযাপন
করবে বলে
পাহাড়ী পথ
ঘুরে ঘুরে
প্রেমের ভেতরে
নেমে
যেতে
যেতে
টের কি পাচ্ছো
স্টিয়ারিং হাতে
কনভার্টিবল নয়
ঢালের দিকে
গড়িয়ে
চলা
এক
পাথরই চালাচ্ছো?

~ চাই খুব অথচ যাই না ~

জীবনের ট্রেনটাকে ধরি, ছুঁই, চড়ি না।
চড়লেই যদি সে টেনে নেয় কোনো গন্তব্যে !
যাওয়ার শখটাই এতো বেশী
যাত্রা শেষ হোক কিছুতেই চাই না।

০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

~ এমনতরো নীল নয় স্বপ্নীল ~

জীবন এমনতরো কেন হয় !
যাপনের ছাই চাপা তূষ
জ্বলে জ্বলে কেন শুধু এঁকে যায় ক্ষয় !

অথচ চুম্বন নামে কোন দেশ নেই
যেখানে পরিখাঘেরা দুর্গ
আর অনুগত সৈন্যদল নিয়ে
শত্রুঠোঁটের আক্রমণ রুখে দিয়ে
বিজয়নিশান ওড়াতে পারো পতপত,
শান্তির কপোত উড়িয়েও
সন্ধিপ্রস্তাব ছিঁড়ে ফেলতে পারো
কপট হেলায়

ছিলোই না অমন কোন দেশ,
নইলে এ অবেলায়
জনহীন করিডোরে
প্রতিরোধ নেই;
একাকী ঠোঁটে
প্রতিকারবিহীন
কেন মুছে চলো
লালিমার একগুচ্ছ রেশ!

তিলের অধিক তিমির হয় না বুঝি!

তেরো নদী
সাত সমুদ্র খুঁজি
বরিশালের কবি শেষে
আকাশের ওপারে
আকাশ পেয়ে গেলে
ট্রে হাতে মেয়েটি
গ্রীন টি হয়ে আসে

অঘ্রানের আলতো বিকেল
সহসা অন্ধকার হলে
সাতটি তিলের
নিবিড় আশ্বাসে,
‘বরং নিজেই তুমি
আঁকোনাকো একটি তিল’!
সুজাতা হতবাক।
ভেতরে পালিয়েছে রুদ্ধশ্বাসে

~ হিজিবিজি ~

জীবনটা চাইলেই হতে পারতো
শ্লেট পেনসিল ।
চাইলেই …
চাইলেই …

চেয়েছি কি !

আঁকের ওপর আঁকে, এঁকে গেছি
যতোসব !
জীবন তো হিজিবিজি মন্তাজের
জোনাকী !
নাকি !

০৩ জুন ২০১৫ ~ বিকেল

~ মেঘরাত ~

ছিলো চাঁদ, পূর্ণিমাও ।
দৃষ্টিসখ্য পায়নি
শুধু চন্দ্রালোক !

শহরের আগুন আজ আর
কিছুতেই দেবালয় ছোঁয় না।
মানুষকে যতোটা সে বাসে ভালো
দেবতাকে ঠিক ততোটা না।

দেবতার শাদা কিংবা নীল
রক্ত – দাহ্য ততোটা
নয়, যতোটুকু কামলার বা
শ্রমিকের, খেটে খাওয়া মানুষের,
নগন্য সাধারণ লাল
রক্ত হয়। অনায়াস বহ্নুতসবে
যারে সহজে পোড়ানো যায়।

স্বস্তা আবেগে কথার
খই ফোটায় যারা, সেই সব
বোকা সাধারণ কেরানী ও
কর্মী,

দমকা হাওয়া হঠাৎ এসেই
জানালা পেরিয়ে কাগজ উড়িয়ে,
করলো যতনে টেবিলে জমানো
কথার অযুত বাহানা গুলোকে সাফ্ ।

বেহায়া আলোক মুখটা লুকিয়ে
সন্ ধি ভাঙার সুযোগ মিলতে
সহসা সকল আঁধার উড়িয়ে
পুরোটা ঘরেই জাগিয়ে তুললো রাত ।

আষাঢ় শ্রাবণ মাসেরা কিযেনো
কুটিল গোপন ফন্ দি ফিকিরে
মরিয়া মেতেছে, যেনোবা কবির
ভাবনা তাড়ানো মহিমা মাখানো কাজ ।

আবার বছর কুড়ি পরে
মেঘের মতন শহরে
আমাদের দেখা হলে
মনে রেখো
কফিমগ কিংবা রক্তে
চিনির সঙ্গত পরিমাপ নিয়ে
কথা বলা যেতে পারে

ভিজে ভিজে পথ
এবং ছাতার মিছিলে
মিছেমিছি তাকাবার নাম করে
আমাদের বুড়ো দু’চোখ
পরস্পর ফাঁকি দেবার কথা ভেবে’
‘কী লাভ!’ বলে হেসে দেবে

তারপর ক’ইঞ্চি কাছে’
এই হাত ওই আঙুল
সোনাঠোঁট রূপোলি চুল;

মোহন হাসির মন্ত্র
চোখের তারায়,
নিপূণ বক্র ওষ্ঠ
আতস পোড়ায় ।

বুকের সকল মাদল,
আবেগ কথার
আগুন, শিরায় শিরায়
মরন ডাকার ।

রহস্যের মন্ত্রণায়
সাগর জল নীলে
বলো, যন্ত্রণার দ্যোতনায়
আঁচড় কেনো দিলে !

বুকের ব্যাকুল কথাটার
খাঁচায় মরন,
হৃদয় গভীর ক্ষতটার
তীব্র ক্ষরণ,

চেয়েছো বলে কী ওড়ালে
মোহিনী আঁচল !

প্রাগ থেকে পায়ে হেঁটে যেতে চাই
ভিয়েনা কিংবা ভেনিস,
নিকারাগুয়ার মেঠো পথ
থেকে উগান্ডা-কাম্পালা,
সেন্টপিটার্সবার্গ শহর
ঘুরে রিগা অথবা মিনস্ক !
গন্ডোলায় চড়বার শখ
টানেনি আমাকে তেমন ।
শুধু এক অচেনা শহর
ঘুরে, পথে পথে, খুব শখ ছিলো,
হারাবো দিব্যি আমাকে ।
লস এঞ্জেলেস কিংবা
লাস ভেগাসের নিয়ন রাত,
ঘুমকাতুরে বিরহে ফেলে
ডেনভার কলোরাডো ওহাইও,

“উনকি নজরোঁ নে কুছ এয়সা জাদু কিয়া
লুট গয়ে হাম তো পেহলি মোলাকাত মেঁ”

আপনাকে শুনে শুনে সারাদিন
প্রণয়ের বাঁধ ভেঙে
গলগল শরাবে
হেডফোন ল্যাপটপ যথেচ্ছ ভেসে যায়

বেহেড কলম ফুঁড়ে ও জি
কেবলি আঁসু ঝরে হায়,
বিরহের মতো মধু

একা হারমোনিয়ম আ হা
তেরছা দেখে প্রেম, ভাঙে
আড়মোড়া শুধু

আসবার কথা ছিল
এই পথে,
সোনালী রথে?
জলের নীল বেয়ে
তরী কি আসে
ধীরে,সঘন উদ্ভাসে
দূরের গান হয়ে!

আ হা
দিনগুলি কেবলি
দিন গুনে যায়;
কী বলি?
কী যে বলি!
কাঁচেরো মন ভেঙ্গে যায়
প্রার্থনার
মৌনতায়
জানলা কাঁপে,
সুরেলা দ্বিধায়
দরোজায়
প্রবল জ্বর

মাঝি আইলা?