এক দুই তিন
চার
ফেরার পথে সারা পৃথিবী চষা সুমন লন্ডনে একবার তার পুলিশের হাতে পরে নাস্তানাবুদ হওয়ার গল্প বলছিল।
স্বপ্নাতুর চোখে লাবনী জিজ্ঞেস করলো,
-লন্ডন শহরটা কেমন?
-শহরটা অনেক পুরনো তো তাই একটু ঘিঞ্জি ধরনের। রাস্তাঘাট ছোট ছোট, বাড়িঘর দোকানপাট খুব লাগোয়া। ব্যস্ত মানুষজন পেভমেন্ট দিয়ে হাঁটছে। পথে ঘাটে সব সময় গাড়ি, বাস,
চিকিৎসা – ২, ৩
দুই
লাবনীর আজকে সুমনের সাথে আশুলিয়াতে লং ড্রাইভে যাওয়ার কথা। কথা আছে এগারটার সময় গাড়ির মধ্যে থেকেই সুমন মিস কল দিবে আর সে নীচে নেমে যাবে। এখন প্রায় বারটা বেজে যেতে চললো অথচ সুমনের কোন খবর নেই। এদিকে হাসানকে বলে রেখেছে আজকে সাড়ে এগারটা থেকে তার দুটো কোচিং ক্লাস। হাসান তো ঠিকই তিনটা চারটার দিকে ফোন করে খোঁজ নেবে লাবনী বাসায় ফিরেছে কি না।
চিকিৎসা-১
(গল্পটি পুরানো এবং আগে একটি ব্লগে ছাপানো হয়েছিলো।)
এক
ইন্দিরা রোডের একেবারে মাঝামাঝি দাড়ালে কামাল সাহেবের সুদৃশ্য সিরামিক ইটের চারতলা বাড়িটা নজর কাড়ে। নাগরিক জীবনের শর্ত মেনে বিলডিংএর ভাড়াটিয়া মোট সাতটা পরিবার দৈর্ঘ্যের বিচারে যতটা না নৈকট্যে, নিজেদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্কে ঠিক ততটাই দূরত্বে। একেকটা ফçাট যেন একেকটা দ্বীপ। প্রায় প্রতিদিনই দোতলার বাসিন্দা হিয়ার সাথে তারই সমবয়সী চারতলার বাসিন্দা লাবনীর সাথে সিড়িতে উঠানামার পথে দেখা হয়।
কোন এক মিলনের বড় হবার স্বপ্ন ছিল
এক
আজকের দিনটা তার কাছে বিশেষ কিছু। এই দিনের মাহাত্ম্য আরো বেড়ে যাওয়ার কথা আর ঘন্টা দুই পরে।
কিঞ্চিত উত্তেজনা বোধ করছে নিজের অজান্তেই- তার কপাল বেয়ে নেমে যাওয়া ঘামের নোনতা স্বাদ ঠোঁটে লাগতেই সে চাপটা অনুভব করে। চাপ কমাতেই সে সিগারেট ধরায়। আনাড়ি হাতে ঠিকমত ধরাতে বেগ পেতে হয়। সিগারেট সে খায় খুব বেশিদিন না, যতটা না খাওয়ার জন্য তারচেয়ে বেশি নিজের পরিপক্কতার সার্টিফিকেটের জন্য।
অনুরোধ, না বলুন … … না, না, না … …
১.
এসএসসি, এইচএসসি-তে দুইবার বোর্ডে স্ট্যান্ড করার পর ভর্তি হয়েছিলাম ভার্সিটিতে। বেশ ভালই কাটছিল দিনগুলো। পড়াশুনাটা খুব ভালই চলছিল প্রথম দিকে। কিন্তু আজ? হায়, এ আমি কি করলাম!!!
২.
স্কুলজীবন থেকে চলে আসা আমার আর নিনতার প্রেমটা ততদিনে বিশালত্বের রূপ নিয়েছে। ইস, দুজনের কত স্বপ্ন! জীবনটাকে তখনো খুব রঙিন মনে হত। ভার্সিটির এক-একটা দিন মনে হত এক-একটা স্বপ্নের মত। কিন্তু হঠাৎই এক হরতালে,
নরকবাস-৪
মিতাপু
এক।
‘আমার আপন কোন বোন নাই’, বাল্যকালে বুকের মধ্যে এই চাঁপা দুঃখটা ক্ষণে ক্ষণে জানান দিয়ে উঠতো; বিশেষ করে যখন ছোটভাইটাকে দিয়ে রাতে আমাদের শোয়ার খাটের মশারী টাঙ্গানো এবং সকালে বিছানা গোছানো এই দুইটা দুঃসাধ্য কাজ করিয়ে নেবার জন্য আমাকে বিস্তর ফন্দিফিকির করতে হত; অতঃপর সব ছলচাতুরী ব্যর্থ হবার পর কাজগুলো নিজেকেই করতে হত। আদর্শবান শিক্ষক পিতা-মাতার সন্তান হওয়ায় এবং মা-বাবা দুজনেই চাকুরীজীবি হওয়ায় অনেক ছোট থেকেই নিজের সব কাজ আমাকে নিজের হাতে করতে হত।
জীবনের গল্প – ৫
এইসব মানুষদের কথা এত অল্প করে লেখা যায় না। আর আমার কেন জানি মনে হয় এভাবে তাদের গল্প বলাও যায় না, তাদেরকে ছোট করা হয়। এরা হচ্ছে আমাদের চোখের সামনে থাকা জ্বলন্ত উদাহরন। ভেঙ্গে পড়া মানুষ যে কিভাবে উঠে দাঁড়াতে পারে তা আমি এদের কাছ থেকেই শিখেছি। বন্ধু তোদের লাল সালাম…… :salute:
ফাহিম
আমি যখন ক্লাস ৫ এ পড়ি তখন ফাহিমের মা মারা যান।
বিস্তারিত»নরকবাস-৩
ইব্লিশের সাগ্রেদ।
রমজান মাস আসতে না আসতেই চারিদিকে কেমন একটা পুতপবিত্র ভাব চলে আসল। মসজিদে মুসল্লীদের ভীড় বেড়ে গেল রাতারাতি। দিনে-রাতে পাড়ার ঘরবাড়ি-মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে সুর করে কোরান তেলাওয়াত শোনা যেতে লাগল। বিশেষ করে যখন রমজানের আগের শেষ জুম্মার বয়ানে সুর করে ইমাম সাহেব বললেন, “পিরিয় মুছল্লী ভায়েরা, এই রুমজান মাস, অইথ্যান্ত ফজিলতের মাস। আমরা কেউই কতি পারি নে, কোনো নিচ্চয়তা নেই, আইজগে এই মজলিশি হাজির সবাই এর পরের রুমজানে বাইচে থাক্বানে কিনা।
বিস্তারিত»গল্পের খোঁজে
খটখট-খটাখট, কী-বোর্ডে আঙ্গুল চলছে বারবার। চারিদিকে আর কোন শব্দ নেই, আর কেউ নেই। সব ঘুম,
জেগে আছি শুধু আমি। লেখাটা আজকেই শেষ করতে হবে। কিন্তু সামনে এগোচ্ছে না কিছুই। যতই কী-বোর্ডে ঝড় তুলছি ততই বেকস্পেসে চাপ পরছে। কালকেই ম্যাগজিনের জন্য গল্প জমা দেবার শেষ তারিখ। বুঝে উঠতে পারছি না কিছুই কারণ রাত শেষ হতে বেশী বাকী নেই কিন্তু গল্পের এখনো অনেক বাকী।
সন্ধ্যায় মাথায় আসা গল্পের প্লটটা দারুন।
বিস্তারিত»রূপবিলাস (শেষ)
৭.
টেবিলটা খালি পরে আছে, সাথে চেয়ারটাও। মানুষটা নেই। সকাল থেকে ফোনগুলো সৌরভ-ই
ধরছে। বিরক্তিকর কাজ। বারকয়েক তার ইচ্ছে হয়েছে ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিতে কিংবা তার ছিঁড়ে
ফেলতে। দীঘি এত ধৈর্য্য কোথায় পায় বুঝে না সৌরভ। দীঘি আজ আসেনি, ফোন করেছিল অসুস্থ । সেদিনও কত চটপটে ছিল, এক রাতের মধ্যেই কি এমন হয়ে গেল!
নরকবাস ২ – পুরুষ মানুষ
একটি কৌতুকের মতো।
ক্লাস নাইনের গরমের ছুটিতে আক্লিমা গেল তার ছোট খালার বাড়িতে বেড়াতে। ছোট খালা-খালু দুজনই তাকে নিজের মেয়ের মত আদর করে। বিশেষ করে খালুজান তো তার সাথে ‘মা’ ছাড়া কোন কথাই বলে না। খালার বিশাল বাড়িতে আক্লিমা একা এক ঘরেই ঘুমাতো। একদিন ঘুমের ঘোরে আক্লিমা স্বপ্ন দেখলো যে একটা গোখ্রা সাপ কিলবিল করে তার শরীর বেয়ে উঠে গলায় পেঁচাতে চাইছে। এরকম বিশ্রী একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ে ঘুম ভেঙ্গে ধড়ফড় করে উঠতে যেতেই সে টের পেল যে স্বপ্নে নয়,
গল্পঃ অবলম্বন
“চোখে পানি আসলে কী দিয়ে মুছেন?”
এ প্রশ্ন শুনলে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকাতে হয়। প্রায় বৃদ্ধ একজন মানুষ। পরনে আধ ছেঁড়া পাঞ্জাবী, ঢোলা পায়জামা। শীত নেই তবুও কানে মাফলারের মতন করে একটা গামছা জড়ানো। গায়ে এলোমেলো ভাবে নেতিয়ে যাওয়া একটা চাদর বিছানো রয়েছে। কাঁধে বাজারের থলির মতন একটা ব্যাগ। বৃদ্ধ রয়ে যাওয়া কয়েকটা দাঁত সম্বল করে আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন। যাবো যাবো বিকেলের আলোয়,
বিস্তারিত»নরকবাস ১ – আল্লাহর বিচার

কুইনাইন।
আপনাদেরকে আমি আজ আমার জীবনে দেখা এমন কয়েকটি কাহিনী শোনাবো যা আমি এপর্যন্ত গল্প বা আড্ডার ছলেও খুব একটা কাউকে বলিনি। আমার এ বক্তব্যটা আবার একটু স্ববিরোধী হয়ে গেল না তো? বলতে পারেন, ‘খুব একটা কাউকে বলিনি’ এমন গোপন কাহিনী আবার এমন জনসমক্ষে বলার দরকারটা কি? না, বিষয়টা তেমন গোপন কিছু নয়, আমার বা আমাদের পরিচিত কারো একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারও না। ঘটনাগুলো এমন যে আমাদের চোখের সামনেই অনেক সময় ঘটে যাবার পরেও বা নিজের কানে শোনার পরেও ঠিক বিশ্বাস করতে মন চায় না।
শৈশব
১.
বাসা থেকে এক দৌড়ে বের হয় সাজিদ। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই অপেক্ষা করছিল কখন আব্বু অফিস যাবে। স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি চলছে। আম্মুকে সে থোড়াই পাত্তা দেয়। শুধু আব্বু যখন বাসায় থাকে তখন একটু বাঁদরামিতে লাগাম থাকে। নইলে সারাদিন খালি টো টো করে ঘোরা। মফস্বলে থাকা বলে ঘোরার যায়গার অভাব নেই। বাসা থেকে দু’পা বেরোলেই অজানার হাতছানি।
আজকে বেশি দূরে যাবার ইচ্ছে নেই।
বিস্তারিত»রূপবিলাস (৫,৬)
৫.
জুতোর ভিতরে পায়ের আঙ্গুলগুলো যেন ফুটবল খেলছে। অনেকদিন জুতো পরা হয়নি সৌরভের, তাই কেনার সময় বেখেয়ালে কিভাবে যেন পায়ের মাপের চেয়ে বড় হয়ে গেল জুতোটা। বেশিক্ষণ হাঁটে না সে, বারকয়েক হোঁচটও খেল। সৌরভের টেবিলটা ঠিক দীঘিরটার সামনে। কিন্তু এই পর্যন্ত্য একবারও চোখাচোখি হল না। এই-ই ভাল; কেউ তাকিয়ে থাকলে অস্বস্থি বোধ হয় তার। কিন্তু কিছু একটা করা দরকার।