কুইনাইন।
আপনাদেরকে আমি আজ আমার জীবনে দেখা এমন কয়েকটি কাহিনী শোনাবো যা আমি এপর্যন্ত গল্প বা আড্ডার ছলেও খুব একটা কাউকে বলিনি। আমার এ বক্তব্যটা আবার একটু স্ববিরোধী হয়ে গেল না তো? বলতে পারেন, ‘খুব একটা কাউকে বলিনি’ এমন গোপন কাহিনী আবার এমন জনসমক্ষে বলার দরকারটা কি? না, বিষয়টা তেমন গোপন কিছু নয়, আমার বা আমাদের পরিচিত কারো একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারও না। ঘটনাগুলো এমন যে আমাদের চোখের সামনেই অনেক সময় ঘটে যাবার পরেও বা নিজের কানে শোনার পরেও ঠিক বিশ্বাস করতে মন চায় না। কিছুদিন আগে সমস্ত জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পাওয়া ঢাকার মোহম্মদপুরে ঘটা ‘মা কর্তৃক ভাড়া করা সন্ত্রাসী দ্বারা মাদকাসক্ত ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা’ শীর্ষক সংবাদটি যেমন ছিল অনেকটা সেরকম। এগুলো দেখে-শুনে-জেনে আমাদের মন বারবার ঘৃণায় বিষিয়ে ওঠে, প্রায়ই বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়, এমনকি মাঝে মাঝে মনুষ্যসমাজের সভ্য সদস্য হিসেবে নিজেকে খুব ধিকৃত মনে হয়। আমার বা আপনার মত রক্ত মাংসের তৈরী আরেকজন মানুষ এত খারাপও হতে পারে এটা সহসাই ভাবতে আমার ভালো লাগে না, তাই এগুলো কাউকে সচরাচর বলতেও ইচ্ছা করে না। তবুও আজ আপনাদেরকে আমি এগুলো বলব। কারন আমি চাই আমার দেখা এই ঘটনাগুলো শুনে আপনাদের বিবেকবান হৃদয়ও কাঁচা কুইনাইন চিবানোর মতো তিক্ত হয়ে উঠুক। তারপর আপনাদের ঘৃণায় কুঁচকানো মুখ ও মনের অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হবার পরে আপনারা সমাজের উঁচু উঁচু তলায় বসে এই বিষাক্ত সমাজের বিষক্ষয়ের জন্য কিছু ভাবুন।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ।
এই ঘটনাগুলো সত্য। আর এজন্যই বিশেষ কারনবশতঃ এগুলোর প্রকৃত স্থান-কাল-পাত্র আঁড়ালে রেখে শুধু কাহিনীটা আপনাদের শোনাবো। পারতপক্ষে সেটাই আমার উদ্দেশ্য বৈকি। কিন্তু এর মধ্যেও আবার কিছু বুদ্ধিমান পাঠক কিছুটা মাথা চুলকিয়েই এর অনেক প্রকৃত তথ্য পোস্টমর্টেম করে ফেলবেন। সেরকম হলে অবশ্য কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমি সবাইকে অনুরোধ করব শুধু গল্পের ঘটনার দিকেই নজর দিতে। আর আমাকে কেউ এবিষয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস না করলে বাধিত হব। এই গল্পের বিভিন্ন স্থানে সজ্ঞানে এবং সচেতনভাবেই কিছু আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এর সাথে প্রকৃত ঘটনার কোন সম্পর্ক নাই।
মূল গল্প
সময়টা ২০০৪ সাল। সন্ত্রাসী-রাহাজানিসহ সমাজের অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি ও দুর্গন্ধ-ময়লা-আবর্জনা সাফ করার ম—হা—ন দায়িত্ব নিয়ে আমি আমার লোকলস্কর সমেত একদিন গিয়ে হাজির হলাম বাংলাদেশের কোন এক দূরবর্তী জেলার মোহম্মদপুর নামক স্থানে। বাড়ির সবচেয়ে নাবালক ছোট ছেলে যেমন কথায় কথায় আমার বাড়ি, আমার গাড়ি, আমার ফ্রিজ ইত্যাদি বলে বলে বাইরের লোকের সামনে নিজের আমিত্ব জাহির করতে চায়, আমিও সেই সময় সীমাহীন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কথায় কথায় আমার দেশ, আমার সমাজ ইত্যাদি কথাবার্তা বলে অহেতুক লাফাতাম আর দেশ উদ্ধার করে বেড়াতাম। বাছুরের নতুন শিং গজানোর সময় সে যেমন কারনে অকারনে যেখানে সেখানে ঢুস মারে, আমিও তখন ঠিক তেমনি একে ধরি তো ওকে মারি; আমার ভয়ে চারিদিকে একেবারে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। সন্ত্রাসী তো দূরের কথা, ইব্লিশ শয়তানেরও বোধকরি ঐ এলাকায় যাতায়াত একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমার বিভিন্ন কাজে এবং অকাজে অতি অল্প সময়েই আমার জনপ্রিয়তা এমন আকাশচুম্বী পর্যায়ে পৌঁছে গেল যে, ঐ মুহুর্তে আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে চাকরী ছেড়ে দিয়ে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করে দিত। যাই হোক, খ্যাতির বিড়ম্বনা স্বরূপ শুরু হল প্রতিদিন হাজারে হাজারে দরখাস্ত আসা। দর্শনার্থীর ভীড় তো আছেই। আমি যেন একেবারে সকল মুশকিল আছানকারী পীরবাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলাম। এর মধ্যে একদিন এক শুক্রবার সকালে প্রায় ৭০/৭৫ বছর বয়েস হবে এরকম এক বৃদ্ধ লোক আসলেন। সাধারণ গ্রাম্য মানুষ, তবে একেবারে যে হতদরিদ্র না তা তার বেশ-ভূষা দেখেই বোঝা যায়। জুম্মার নামাজের তাড়া থাকায় আমি ঐদিন একটু তাড়াতাড়ি সবার কথা শুনে লোকজনকে বিদায় করে দিচ্ছি। বৃদ্ধের সিরিয়াল আসার পরে সে আমার অফিসে ঢুকেই আকস্মিক আমার দুই পা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল, “ছার, আমারে বাছান”। আমি প্রচন্ড রকম বিব্রত হলাম। এত বয়স্ক একজন দাঁড়িওয়ালা লোক আমার মত এক চ্যাংড়ার পা যদি বলা নাই কওয়া নাই এভাবে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে তবে বিব্রত হওয়ারই কথা। আমি তার বয়েস এবং ঘটনার এই আকস্মিকতার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে খুব মনোযোগের সাথে সময় নিয়ে তার কথা শুনলাম। বৃদ্ধের নাম রহমতুল্লাহ্, বাড়ি মাঝাইল গ্রামে। তার অভিযোগ বেশ গুরুতর, যদিও এই ঘটনা আমাদের দেশে হরহামেশাই ঘটে থাকে। সংক্ষেপে বলি। রহমতুল্লাহ্র অবিবাহিতা ছোট মেয়ে অষ্টাদশবর্ষীয়া আতা বানুর মাস’দুই আগে গর্ভসঞ্চার হয়েছে। রহমত মিয়ার অভিযোগ অনুসারে এই কীর্তির জন্য দায়ী ঐ একই গ্রামের আব্বাসউদ্দিন মেম্বারের বড় ছেলে রাসেল। এবং যথারীতি সে খেয়ে মুখ মুছেই বলতেছে, ‘আমি খাই নাই’। অর্থাৎ এখন সব কুকর্মের কথা বেমালুল অস্বীকার যাচ্ছে। আমি জানতে চাইলাম, মেয়ের এবরশান করাচ্ছেন না কেন? রহমত মিয়া বলল যে, তার এই মেয়েটার কিছুদিন আগে কি একটা রোগের কারনে পেটে অপারেশান করতে হয়েছিল। এখন এবরশান করালে মেয়ে মারা যেতে পারে বা চীরদিনের মত সন্তান ধারন ক্ষমতা হারাতে পারে। তাই কোন ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না।
এই মেম্বার-চেয়ারম্যানদেরকে আমি প্রথম থেকেই দুই চোখে দেখতে পারতাম না। বিভিন্ন সংবাদপত্র, গল্প-উপন্যাস পড়ে আগে থেকেই আমার একটা ধারণা হয়েছিল যে, মেম্বার চেয়ারম্যান মানেই হল পয়লা নম্বরের জালিম এবং চোর। সুতরাং এদের ছেলে-পুলে যে বিরাট বজ্জাত হবে তা বলাই বাহুল্য। তবে কেউ অভিযোগ করলেই তো আর সাথে সাথে একশান নেওয়া যায় না। তাই লোক লাগালাম খোঁজ খবর করার জন্য আর সমন জারি করলাম, “ডেকে আন্ হারামজাদা মেম্বার আর তার ছেলেকে”। মেম্বারকে বেশী ডাকাডাকি করতে হল না, সে ঐদিনই এল। কিন্তু তার কুলাঙ্গার ছেলে ঐদিন সকাল থেকেই হাওয়া। আমি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেলাম যে এইটা ঐ পোলারই কাজ, নাহলে পালাবে কেন? যদিও থানার ওসি আমাকে বলতেছিল যে ছেলেটা নাকি এত খারাপ না আর মেম্বার নিজেও ভালো মানুষ। কিন্তু ওদের কথা কি আর বিশ্বাস করা যায়? যা হোক মেম্বার দেখলাম বিরাট দাড়িওয়ালা এক হুজুর। সে আমাকে বলল যে তার ছেলে যদি একাজ করে থাকে তবে সে অবশ্যই ঐ মেয়ের সাথে তার ছেলের বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবে। বাহ্ বাহ্, কি সুন্দর সমাধান! কিন্তু ওই পোলা কি আর আমি থাকা অবস্থায় এলাকার ত্রিসীমানায় আসবে?
রাগে আমি হুঙ্কার দিলাম, “যদিটা আবার কোথা থেকে আসলো? আপনার পোলাই তো এই কাম করছে”।
মেম্বার ভয়ে জড়সড় হয়ে জবাব দিল, “জ্বে ছার, জ্বে ছার”।
আপাতত আমার আর কিছু করার নাই। মেম্বারকে আরো কিছু ঝাড়ি-পট্টি দিয়ে বিদায় করলাম। রহমতুল্লাহ্কে আগেই জিডি করতে বলেছিলাম, এইবার বললাম নারী নির্যাতন আইনে মামলা করে দিতে। লোকজনকে একটু বিশেষভাবে বলে দিলাম রাসেলের খোঁজ বের করতে। এইসব সামাজিক সমস্যা আমার এত গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা না, অন্য কাজ-কর্মেরও অভাব নাই। তারপরেও কেন জানি বেচারা রহমতুল্লাহ্র জন্য আমার মনে কিছুটা সহানুভূতি তৈরী হল।
এর পরে কিছুদিন ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। এই ঘটনার কথা আমার মনেই থাকল না। দিন সাতেক পরে হঠাৎ এক ছুটির দিনে বেশ সকালে আমার ঘুম ভাংলো খুন-খুনানি টাইপের মেয়েলি কান্নার আওয়াজে। জানালা দিয়ে গলা বাড়িয়ে দেখলাম এক গ্রাম্য মহিলা একটা বাচ্চা কোলে নিয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর সেন্ট্রি তাকে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। কিন্তু সে মনে হয় ফিরে যেতে নারাজ। মহিলা মানুষ, তাকে বেশী কিছু বলাও যাচ্ছে না। হাত মুখ ধুয়ে নীচে এলাম। উনিশ কি বিশ বছর বয়েসী একটি মেয়ে। তার সাথে কথা বলে এই প্রথমবারের মত জানলাম রাসেল বিবাহিত এবং এই মেয়েটি রাসেলের স্ত্রী। কোলের বাচ্চাটিও রাসেলের। হারামজাদার উপরে আমার আবার মেজাজ খারাপ হল।
ঝাঁঝের সাথে বললাম, “নিজের স্বামীরে সামলাই রাখবার পার না?”
মেয়েটা বড় অদ্ভুত কথা বলল, “ছার আমি নিচ্চিত আমার স্বামীর কোন দোষ নেই। আপনি এট্টু ভালোমত তদন্ত কইরে দেহেন। কিন্তু তার আগেই যদি আপনি তারে জোর কইরে ঐ মাইয়ের সাথে বিয়ে দেন তালি আমি কলাম ছার ঐদিনই বিষ খায়ে মরবানে। আমি সতীনের ঘর করতি পারবনানে”। আমি অবাক হলাম, কারন আমি আরো ভাবছিলাম যে এই মেয়ে হয়তো রাসেলের বিরুদ্ধে নালিশ করার জন্যই আমার কাছে আসছে। কিন্তু তা তো না, সে দেখি উপরন্তু স্বামীর পক্ষে সাফাই গাইছে।
“ভালো ল্যাঠা হল দেখি! তোমার স্বামী কই?”
“সে ছার আশপাশেই ঘুরতিছে। আপনার কাছে ভয়ে আসতি পারতিছে না। আপনি যদি আমারে কতা দেন যে তারে ধরবেন না তালি আমি তারে নিয়ে আসব। সে পালাবিনানে। কিন্তু আপনারে তার কতা ভালো কইরে শুনতি হোবেনে।”
আমি ভাবলাম, আগে শালারে পেয়ে নিই, তারপর দেখা যাবে। বললাম, “ডাকো তারে”।
বেশী দূরে ছিল না। মেয়েটা হাত ইশারা করতেই মোড়ের চা’র দোকানের পিছন থেকে চোরের মত বেরিয়ে এল। আরেকটু হলেই আবার সেই রহমতুল্লাহ্র ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়ে যেত। ছেলেটা সোজা এসে আমার পা জড়িয়ে ধরার আগেই আমি লাফ দিয়ে সরে গেলাম। কোনরকম ভনিতা না করে তার কি বলার আছে তা বলতে বললাম। সে যা বলল তাতে পুরা ঘটনা আবার এক অন্য ডাইমেনশনে প্যাঁচ খেয়ে গেল।
তার কথা হল, “ছার, ভালোমত খোঁজ নিয়ে দেহেন। এই কাজ জিন্দিগীতিও আমি করিনি। এই মাইয়েরা দুই বুন। ওর বড় বুনের জামাই বশির মিয়া এই কাম ঘটাইছে। বশির মিয়ার বউ পুয়াতি হলি পরে ওগের বাড়ির পাশে হারুনের ঘরে যাইয়ে শালী-দুলাভাই মিলে এই আকাম কইরত। আপনার বিশ্বেস না হলি আপনি হারুনরে ডাইকে জিজ্ঞেস করেন। আর বশিররে ধইরে একটু চিপা দিলি পরে ওইতিও সরসরায়ে সব সত্যি কথা কয়ে দিবেনে। আমার ছার বউ-ছেলে আছে, আমি মইরে গেলিও ঐ মাইয়ের সাথে বিয়ে বসব না। আমারে জোর কইরে ধইরে বিয়ে দিলি আমিও কলাম ছার গলায় দড়ি দেব। আমার বাজানের সাথে ঐ রহমতুল্লাহ্র জমি জিরেত নিয়ে গ্যাঞ্জাম ছিল। তাই এহন সুযোগ বুইঝে ওর নষ্ট মাইয়েডারে আমার সাথে ঝুলোয়ে দিতি চায়ছে। আপনি ছার ভালো কইরে খোঁজ নিয়ে দেহেন”। কথার এই পর্যায়ে এসে আমার বিরক্তি’র লেভেল আরো বাড়িয়ে দেবার জন্য ও আর ওর বউ একসাথে চিঁ-চিঁ সুরে নাকিকান্না জুড়ে দিল, খানিক বাদে ওদের দুই বছরের মাসুম বাচ্চাও বাপের সাপোর্টে ওদের কান্নায় যোগ দিল।
“ধুরো বাড়া! (যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, আমার বাড়ি কিন্তু খুলনায়), ভালো ঝামেলায় পড়া গেল দেখি। রহমতুল্লাহ্ কি জানে যে ওর জামাই নিজেই ওর মেয়েরে নষ্ট করছে? তোমার বাপও তো ওইদিন এইসব কিছুই বলল না”।
“আমার বাপ ছার সরল-সুজা মানুষ। উনি আপনার সামনে আসলি ভয়ে কথা কতি পারে না। আর রহমতুল্লাহ্ সবি জানে। কিন্তু ইচ্ছে কইরে ওর মাইয়েডারে আমার কান্দে ঝুলোয়ে দিয়ার জন্যি এই পলিটিস করতিছে”।
ভালোই প্যাঁচ লাগল দেখি! এই বিষয়টা নিয়ে একটু ভালোমত খোঁজ-খবর করতে হয় তাহলে। আর রাসেল যে পথ বাতলে দিল তাও মন্দ না। দেখি কি করা যায়।
ওদেরকে বললাম, “ঠিক আছে তোমরা যাও। পালাবার চেষ্টা করবা না। সেরকম কিছু করলে কিন্তু খবর আছে। আর এখানে আসা বা কি কথা হইছে না হইছে এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বলবা না”।
থানায় খোঁজ নিয়ে দেখলাম, রহমতুল্লাহ্ তখনো রাসেলের নামে কোন মামলা করেনি। সম্ভবত মামলাতে আব্বাসউদ্দিনের সাথে টাকায় পেরে উঠবে না বলে মামলা করছে না অথবা অন্য কোন কারনও থাকতে পারে। আমি কাউকে কিছু না বলে চুপে চাপে লোক পাঠিয়ে রাত্রে বাড়ি ফেরার পথে বশির মিয়াকে তুলে নিয়ে আসলাম। হারুনকে অবশ্য বাজারের মধ্যেই পাওয়া গেল কারন তার একটা মনোহারি দোকান আছে বাজারে। সেটা বন্ধ করে ফিরতে ফিরতে তার বেশ রাত হয়। এদের দুজনকে আলাদা জায়গায় রেখে এবং একজনের কথা আরেকজনকে জানতে না দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলাম। হারুন সবকিছু সহজেই স্বীকার গেল। বশির প্রথমে তার শ্বশুরের মতোই বিভিন্ন কাহিনী বানানোর চেষ্টা করলেও পরে হারুনের মুখোমুখি যখন দাঁড় করানো হল তখন সবই স্বীকার করল।
মোদ্দা ঘটনা এরকম দাঁড়ালো যে, বশির মিয়া রহমতুল্লাহ্র ঘর জামাই। বশিরের স্ত্রী অর্থাৎ রহমতুল্লাহ্র বড় মেয়ে পাতা বানু গেল বছরের শেষের দিকে যখন অন্তঃস্বত্তা হয়, তখন লুচ্চা-লম্পট বশির মিয়া তার স্ত্রীর উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে যুবতী শালীর সাথে ফস্টি-নষ্টি’তে লিপ্ত হয়। ঘরে বসে সবকিছু করা সম্ভব না বলে পাশের বাড়ির হারুনের ঘরটাকেই তারা তাদের লীলা-খেলার বৃন্দাবন হিসাবে ব্যবহার করত। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বশির মিয়া অসাবধানতাবশতঃ তার শালীকেও খুব সহজেই গর্ভবতী করে ফেলে। এই সময় সে কিছুদিনের জন্য গা ঢাকা দেয়। এদিকে গর্ভধারণের আলামত টের পেয়ে রহমতুল্লাহ্ তার ছোট মেয়েকে ধরে একটু চিপা দিতেই সে সব কিছু স্বীকার করে। তখন সে চিন্তা করে দেখল, ছোট মেয়েটাতো গেলই। এখন নিজের বড় জামাইয়ের দ্বারা অবিবাহিত ছোট মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে এই খবর প্রচার হয়ে গেলে বা সে নিজেও জামাইয়ের বিরুদ্ধে কোন কিছু করলে বড় মেয়েটারও সংসার করা হবে না। আমাদের সমাজ বা ধর্মে তো একই পুরুষের সাথে সহোদর দুই বোনের বিয়ে করাও জায়েজ নাই। তাইলে এখন উপায় কি? এদিকে একই গ্রামের তার চাইতে ক্ষমতাবান ও ধনবান আব্বাস মেম্বারের সাথে তার বহুদিনের পুরোনো কয়েকটা জমির মোকদ্দমা আছে যেগুলোতে সে কিছুতেই পেরে উঠছে না। সুতরাং এই সুযোগে আব্বাসের একটা ছেলেকে এই কেসে ফাসায় দিতে পারলে সে একইসাথে বহুদিকে লাভবান হয়ে যাবে। একে তো তার ছোট মেয়েটার একটা হিল্লে হবে, বড় মেয়েটার সংসারটাও বাঁচবে। উপরন্তু আব্বাসউদ্দিন সম্পর্কে আত্মীয় হয়ে গেলে পুরান জমির মামলাগুলোরও কিছু একটা সুরাহা হওয়ার চান্স থাকে। লাভের উপরে লাভ। এক্কেরে এক ঢিলে তিন পাখী। তাই আর দেরী না করে রহমত মিয়া তাড়াতাড়ি তার জামাইকে বাড়িতে ফেরত আনার ব্যবস্থা করল। নাইলে আবার বাইরের লোকজনও তার জামাইকেই সন্দেহ করা শুরু করবে। দেখলেন, বুড়া ঘাটের মড়া রহমত মিয়ার টাক্লা মাথায় কি মারাত্মক সিরিকাস বুদ্ধির প্যাঁচ! মারহাবা! একেই বলে ভিলেজ পলিটিক্স।
সব শুনে ও বুঝে আমি কিছুক্ষণ থম্ মেরে থাকলাম। ঠিক হজম করতে পারছিলাম না। যাই হোক, দুই জনের কাছ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে লিখিত স্বীকারোক্তি নিলাম। তারপর আবার ঐ একই স্বীকারোক্তি দেড়শ টাকার স্ট্যাম্পের উপরেও নিলাম এবং দুই জনের মৌখিক স্বীকারোক্তির একটা ভিডিও রেকর্ডও রাখলাম। এরপরে দুই জনকেই ছেড়ে দিলাম। ছাড়ার সময় বলে দিলাম যে কাউকে এ ব্যাপারে কিছু না বলতে আর এলাকা ছেড়ে না যেতে। অবশ্য এমনিতেও ওরা কাউকেই কিছু বলতো না, কিন্তু সুস্থ শরীরে ছাড়া পাওয়াতে বশির খুবই অবাক হল।
আমি এর পরে এই বিষয় নিয়ে আর কাউকেই কিছু বললাম না। শুধু আব্বাস মেম্বারকে ডেকে বললাম যে তাকে তার ছেলের ব্যাপারে যে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম তা আপাতত স্থগিত রাখতে আর রাসেলকে ডেকে বলে দিলাম যে, এলাকায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে আর দরকারে ডাকলে হাজির হতে। আমি এর মধ্যে কি করেছি না করেছি সে বিষয়ে ওদেরকেও কিছুই জানালাম না। ওদেরকেও বলে দিলাম এসব বিষয়ে কারো সাথে কোনরকম আলাপ না করতে। তারপর অন্যান্য কাজে মনোযোগ দিলাম আর রহমতুল্লাহ্র আসার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
দিন সাতেক পরেই রহমতুল্লাহ্ আবার আসল। মুখভর্তি পান আর কান অবধি হাসি নিয়ে গদগদ স্বরে বলল, “ছার আমার যে উপকার করিছেন তা কোন ভাইও ভাইয়ের জন্যি করতি পারে না। এখন যদি ছার ওগের বিয়ের জন্যি এট্টু প্রিসার দিতেন তালি কাজডা তারাতারি হয়ে যাতো। আব্বাসের ছেলে তো দেক্লাম ইলাকায় ঘুরাফিরা করতিছে। আমি আব্বাসেরে একবার দুইবার কইছি। কিন্তু সে আমারে কিরম ইড়ায় যাতিছে”।
“আপনার মেয়ের গর্ভ কত মাস হল?”
“তা তো পিরাই তিন মাস হতি চইল্ল ছার। এখনি বিয়েডা সারতি না পারলি পরে আপনি যখন চইলে যাবেন্নে তখন ওরা আমার কতা শুনবিনানে”।
“রহমত মিয়া, আমি তো আপনার মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে কিছু করতে পারব না” খুব ভাবলেশহীন মুখে বললাম।
আমার কথা শুনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, “তালি ছার আপনি যে বিচার কইরে দিলেন তার কি হবি?”
“বিচার, না? হ্যা, সে ব্যবস্থা আমি করে রাখছি। আপনি একটু বসেন, আপনারে দেখাই”। আমি রহমতুল্লাহ্ কে বসিয়ে রেখে ভেতর থেকে ভিডিও ক্যামেরা আর মুচ্লেকানামা গুলো নিয়ে আসলাম। প্রথমেই সাদা কাগজের মুচ্লেকা দুটো তাকে পড়তে দিলাম। পড়তে গিয়ে রহমতের মুখ আলগা হয়ে মুখ দিয়ে গলগল করে পানের কশ পাঞ্জাবীর উপরে পড়তে লাগল। পাগলের মত মাথা নাড়তে নাড়তে সে বলতে লাগল, “ছার এ মিথ্যে কতা, এ হতি পারে না। ইডা নিচ্চই ওরা আপনারে জাল কাগজ কইরে আইনে দিছে। এর কোন দাম নেই ছার”।
এরকম একটা মুহুর্তেও রহমত মিয়ার এই নিঁখুত অভিনয় দেখে আমার হাসি পেতে লাগল। এবার আমি স্ট্যাম্পের কাগজদুটো উঁচু করে তাকে দেখালাম। “এই যে দেখেন, এক পাতায় আপনার জামাই আর আরেক পাতায় আপনার ভাতিজার সই আছে। এই কাগজ কোর্টে পর্যন্ত সত্যি কথা বলবে। আর এইটাই শেষ না। আরো আছে, দেখেন…” আমি এইবার ভিডিও রেকর্ডিং’টা চালু করে তাকে দেখালাম। এই পর্যায়ে ওর বিধ্বস্ত চেহারা দেখে আমার নিজেরও একটু মায়া লাগতে লাগল। আমি রেকর্ডিং বন্ধ করে বললাম, “শোনেন, আপনি আমার কাছে বিচার চাইছিলেন না? আপনার জন্য বিচার হল এইটাই যে, ‘আমি এই ব্যাপারে কোন বিচার করব না আর আমার আগের বিচারও আমি ফেরত নিলাম’। বিচার করার মালিক আল্লাহ্। আমি এই সমস্ত কাগজপত্র, স্ট্যাম্প, ভিডিও সবকিছু আব্বাস মেম্বারের কাছে দিয়ে দেব, যাতে আপনি তাকে কোনভাবে আর এবিষয়ে কোন চাপ না দিতে পারেন। উপরন্তু ইচ্ছা করলে এই কাগজের বলে আব্বাস মেম্বারই আপনার নামে এখন একটা মামলা করতে পারবে। আপনার অবিবাহিত মেয়ে গর্ভবতী হওয়ার খবর এখন এলাকার সবাই জানে। এরপরে সবাই জানতে পারবে আসল কাহিনী। আপনার ছোটমেয়ের গর্ভে অবৈধ সন্তান জন্মাবে। সাথে সাথে বড় মেয়ের ঘর ভাংবে। আপনার মান-ইজ্জত, সমাজ-সংসারের কথা আর নাই বললাম। আপনি নিজের স্বার্থে একজন নির্দোষ লোককে ফাসানোর জন্য আমার সাথে যে মিথ্যা কথা বলছেন তার এর চাইতে বড় বিচার আর কি হতে পারে? এ বিচার আল্লাহ্র বিচার। যান ভাই, বাড়ি যান”।
(এই গল্পের প্রধান শিরোনাম ‘নরকবাস’ দেওয়ার কারন হল আমাকে বেশ দীর্ঘ একটা সময় বিশেষ কাজে এমন এক কিছু জায়গায় অবস্থান করতে হয়েছে যেখানে প্রায়শঃই এই ধরণের অনেক নাটকীয় (নাকি নারকীয়?) ঘটনার সম্মুখীন হতে হত আর প্রত্যেকবারই মনে হত এটা পৃথিবীর কোন অংশ না, হয়তো নরকের কোন অন্ধকূপ। ‘মানুষেরি মাঝে স্বর্গ নরক, মানুষেতে সুরাসুর’ স্বর্গ-নরক কবিতার এই লাইনটি তখন খুব বেশী সত্যি বলে মনে হত। আমার স্মৃতিতে এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে যার প্রত্যেকটি দিয়ে ছোট-খাট একেকটি গল্প রচনা করা যায়। তাই ‘নরকবাস’ শিরোনামের অধীনে বিভিন্ন উপশিরোনামে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে চাচ্ছি আমার সেই নরকবাসের বিচিত্র অভিজ্ঞতাগুলো। অনেকেরই ভায়োলেন্স বা এই ধরণের গল্প পড়তে ভালো লাগেনা। আবার অনেকেরই আমাদের সমাজের এই অন্ধকার অলিগলির কাহিনী শুনতে ইচ্ছা করে। তাই এবিষয়ে আপনাদের মন্তব্য/প্রতিক্রিয়া জানালে খুশী হব।)
🙂
হা হা হা... দীহান ভাবী রিটার্নস্।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
আপনার লেখা পেয়ে রিটার্ন করতেই হলো ভাইয়া। 🙂
থেঙ্কু ভাবী... 😀
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
এইটা কি সাজিদ ভাই নাকি? :dreamy:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
সঠিক... আমি সেই লোক... B-)
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
বস, আপনার ক্যাডেট নাম্বারটা ক্যামুঞ্জানি! এইরকম ক্যাডেট নাম্বার সচরাচর দেখা যায় না। :grr:
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
যাক আরেকজন রে পাইলাম, :grr:
😀 😀 :)) =)) =))
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
নীলপদ্ম দেইখা প্রথমে ভাবছিলাম আমাদের নীলোৎপল ভাই, পরে দেখি আগেও অনেক লেখা, এর পরে দেখি এ তো আমাদের সাজিদ।
হঠাৎ নীলপদ্ম হয়া গ্যালা ক্যালা ব্রাদার!
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আপনাদের সাজিদ কোথায়? উনি তো ঝিনাইদাহ'র নীলু ভাই! 😛
প্রোফাইল দেখেন। 😉
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ঝিনাইদহের নীলু ভাই কেডা রে ভাই... আমি কিন্তু এই নাম হালে নিছি।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
কাইয়ুম ভাই... সালাম। আমি ঝিনাইদহের ৯৩ ব্যাচের সাজিদ। তবে আমারে অনেকেই তার নিজের কলেজের মনে করাতে আমার খুব মজা লাগতেছে। মনে হইতেছে আমারে সবাই কত ভালো পায়! মনে হয় ছদ্মনামটা নেয়া সার্থক হইছে।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
সাম্প্রদায়িক কমেন্টঃ জেসিসির সবাই এত্ত বস ক্যান? B-)
অফ টপিক-সাজিদ ভাই, ডর্ম ফাইভে গেলেই আমারে ডাকতেন-"ওই রোবোকপ এইদিকে আয়" 😀
হা হা হা... মনে পড়ছে রে... আহা হা ! সেইসব দিনগুলান কতই না মজার ছিল!
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
সাইকো সাজি...খিকয্ 😛
ইতা কিতা কইলেন বা। কিছু বুইজলাম না তো!!!
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
শুরুতেই এমন একটি সিরিজ লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি সাজিদ ভাই। তবে, "আজাইরা প্যাচাল" টার্মটা ভালো লাগল না। কারণ কাহিনীটা এত ভালোভাবে উপস্থাপন করেছেন যে তা পড়ে মনে হয়েছে বিখ্যাত কোনো লেখকের উপন্যাস পড়ছি। সমাজের এইসব ঘটনা শুনে মন খুব খারাপ হয়। কিন্তু তারপরও আশার আলো দেখতে পাই যখন ভাবি আপনার মত কেউ না কেউ এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পরিশেষে বলি, আপনার বিচার আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছে। মহান আল্লাহ আপনাকে আরো আরো জ্ঞান দিন যাতে সফলভাবে এসব সামাল দিতে পারেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন।
ভাই... আমি অনেকবার খেয়াল করছি, আমি কোন গল্প শুরু করার আগে যেই পরিমাণ ভূমিকা দেই তাতেই মানুষ হাই তুলতে শুরু করে। তাই ভূমিকাটারে আজাইরা প্যাঁচাল নাম দিয়া নিজের দোষ কাটার একটা সুক্ষ ট্রাই দিলাম আর কি।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
সাজিদ ভাই,
এই সিরিজ চালিয়ে নেবার তীব্র দাবী জানাই।ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন-এই কথা মনে হয় এরকম কাহিনীর আমি খুবই একনিষ্ঠ পাঠক।তবে বস আপনি খুব ঠান্ডা মাথার লোক-আমি হলে ওই বুইড়ারে কয়েক ঘা অন্তত দিতাম x-( x-( x-(
অফ টপিকঃ ধুরো বাড়া! (যারা জানেন না তাদের জন্য বলছি, আমার বাড়ি কিন্তু খুলনায়)
আমারো বাড়ি খুলনায় :shy: ধুর ৩৩ ব্যাচ জেসিসির ফরিদ ভাইকে মিস করতেছি :((
মাসরুফ, যথার্থ কইয়াছো... :khekz: :khekz:
ফরিদ তো উড়াল দিছে......
খুব ভাল লাগল পড়ে। খুব তাড়াতাড়ি বাকি কাহিনী চাই 🙂
ইনশা আল্লাহ চলে আসবে নেক্সট পার্ট শিগগিরি।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
মোটেও আজাইরা প্যাচাল না কিন্তু।
এই জাতীয় লেখা অভিজ্ঞতা ছাড়া লেখা সম্ভব নয়।
আবার শুধু অভিজ্ঞতায় কি হয়?
সংবেদনশীলতাও চাই। এ দুটোরই দু্র্লভ সমন্বয় দেখতে পাচ্ছি তোমার মধ্যে।
চালিয়ে যাও ব্রাদার।
গল্পটাই আসল, তার শিক্ষাটাও।
মানুষগুলো তো আমরাই, তার আর পরিচয় কি জানবো নতুন করে।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
সুন্দর কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ নুপুর ভাই। দোয়া করবেন।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
অসাধারণ লাগলো পড়ে দারুণ কিন্তু নিষ্ঠুর কাহিনী x-(
বুড়ারে ধইরা পিটানো উচিত x-(
ভাইয়া অসাধারণ লাগলো আপনার লেখার ষ্টাইল :clap: :clap:
আসলেই অসাধারন...
:hug: নাজমুল
পাবনা 😕
কিরে তোর উপ্রে পিসিসির নজর পড়ছে ক্যান?ও বুজসি তুই তো আবার বিসিসি 😛
থেঙ্কু ভাইয়া... দোয়া কইরো।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
x-( আমি এত্ত এত্ত কমেন্ট করি নিজের কলেজ ভাইয়া হইয়া আমারে বেইল দেন না আর পিসিসি বিসিসির পোলাপাইন কমেন্টাইলেই থেঙ্কু? নাহ দুইন্না থিকা ইন্সাফ উইঠা দিহান ভাবীর বাড়ি বেড়াইতে গেছে x-( x-(
অফ টপিক-সাজিদ ভাই, আপনার লেখার স্টাইলটা পুরা মারদাঙ্গা-এক্কেবারে ডায়রেক্ট কলিজায় এসে চাক্কু মারে।এরকম ঘটনা হরহামেশাই হয়তো ঘটে কিন্তু এভাবে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ আপনার।স্যালুট!
ভাইরে... মাস্ফ্যু... তুই কি হাছা হাছাই মাইন্ড খাইলি নাকি? আমি কিন্তুক তোরডার নীচেই কমেন্ট দিলাম, কিন্তুক নীচে নাইমে গেল ঘটনাডা কি? তুই কই রে ভাইডি? কিরাম আছিস রে?
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
মাস্ফু ভাইয়া কি মাইন্ড খাওনের পাব্লিক নাকি? 😀
অফটপিকঃ নাহ দুইন্না থিকা ইন্সাফ উইঠা দিহান ভাবীর বাড়ি বেড়াইতে গেছে
কইরে মাস্ফু, পেলাম না তো? মনে হয় চায়না বেড়াতে গেসে। :grr:
মনে হয় চায়না বেড়াতে গেসে
😮 😮 😮
ইর মদ্যিখানি চায়না কোত্থিকি আইলো
বিসমিল্লাহ :duel: :grr:
x-( মাহমুইদ্যা,আর আগাবিনা কইলাম,এক্কেরে "রান্তা যোগী" বানায় দিমু(কপিরাইট-"তাল" সিনেমায় অনীল কাপুর)
ইহহহ......
আপনের মন আমাগো কাউরে না কইয়া চায়না বেড়াইতে যাইবো...
আর কইলেই দোষ হয়া যায়... :grr: :grr:
যা হোক, নিশ্চিত হইলাম চায়না'র সাথে আপনার একটা রিলেশন আছে । কী সেইটা, তা পরে বাহির করা যাইবো 😛
x-( x-( x-( আর এক ইঞ্চি আগাইলে কইলাম রক্তারক্তি হইয়া যাইবো x-( x-( x-(
😮 😮 😮 ভাবী আপনের পায়ে পড়ি মুখ ফসকাইয়া বেফাঁস কিছু কইয়া ফেইলেন না।
অফ টপিক- গ্রেট ওয়াল থেকে এস এম এস পাইছি গতকাল :shy: :shy:
তা আমরাও শুনি, কি লিখেছে গ্রেট ওয়াল? :grr:
বস কি কন আমি খামু মাইন্ড?তাও কলেজ বড় ভাইয়ের উপ্রে??যা াড়া তা কি হয় নাকি?(আমার বাড়িও খুলনার বাগেরহাটে :shy: ) তয় এট্টু অভিমান করছিলাম আমারে এইরাম বেল না দেওয়ায় B-)
সাজিদ ভাই আপনের পাসিং আউটে কিন্তু আমি গেছিলাম- আপনের কোর্সমেট এ এস সির ক্যাপ্টেন আজম আমার আপন খালাত ভাই(আল্লাহই জানে আপনের সাথে উনার রিলেশান কেমুন- উনি যুদি গান্ধাগিরি করে সেইটার এফেক্ট আবার আমার উপ্রে ফেইলেন না)।
বস আমি আছি নসুতে, টেকাপয়সানীতিতে পড়াল্যাকা কর্তাছি :duel: :duel:
আজম তোমার কাজিন =)) =)) :khekz: :khekz: ?????
Life is Mad.
:bash: :bash: :bash:
:(( :(( :(( যা আশঙ্কা করছিলাম সেইটাই সত্যি হইল
কিরে মাস্ফ্যু, নিজের পায়ে( গোড়ায়) নিজেই :duel: ক্যান?
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
নাহ্, আজম ছেলে ভালো... আমার লগে ভালা খাতির আছে।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
তার মানে কি আমাগো দেন নাই থেঙ্কু ? :(( :((
🙁 😕 আমি তো হগলেরেই থেঙ্কু দিছিলাম...
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
সাজিদ ভাইয়া খুব সুন্দর করে লিখেছেন। ভাইরে, এত সুন্দর করে গুছিয়ে কিভাবে লিখেন?
ভাইয়া লেখার বিষয়ে মন্তব্য/প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন, পাঠক হিসেবে দাবী করলাম,
আরো লেখা নামিয়ে ফেলেন, ঘরে বসে জানা হবে অনেক কিছু। বাইরের পৃথিবীও দেখা হবে।
ইয়ে, আজ্যাইরা প্যাচাল খুঁজলাম অনেক, পেলাম নাতো। 😕
আপনাদের অনেকের আপত্তিতেই আমি আজাইরা প্যাঁচাল কথাটা চেঞ্জ করে দিচ্ছি। আপনার মত পাঠিকা পাওয়াও ভাবী যেকোন লেখকের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
ধন্যবাদ ভাইয়া, অনেক অনেক। 🙂
সাজিদ নাম থেইকা নীলপদ্ম হয়া গেলা, কেউ আপত্তি করছিলো নাকি? দিহান ভাবী অবজেকশন দিছিলো নাকি সাজিদ নাম নিয়া ;;;
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
হ, আপনারে কইসে? x-(
খুবই চমৎকার লাগলো সাজিদ :boss: :boss: :boss:
থেঙ্কু ভাইয়া
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
নীলু ভাই,
আপনি যে খুলনার লোক, তা আর কেউ না বুঝলেও আমি শুরুতেই বুঝছি... 😛 😛
কুয়েটে পড়তে এসে খুলনার ভাষাকে রপ্ত করে ফেলেছি... বলতে হয়ত এখনো পারবোনানে, কিন্তু শোনা মাত্রই ধরতে পারবো...
এইরকম জটিল পরিস্থিতি যদি জীবনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের সাথে শেয়ার করলে বরং কিছু জানতে পারবো...
প্রয়োজন...
সুন্দর পোস্ট ভাইয়া 🙂
কিরে াড়া মাহমুইদ্যা,তুইও খুলনার ভাষা শিখি ফেলছিস?তাইলে তো তোর সাথে াড়া জমায়ে আড্ডা দেওয়া যাবেনে 😛 😛
:))
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
জামাই ভাই,
এই শব্দটার সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কে আপনাকে শিখতে হবে...
প্রতি সপ্তাহে ২ দিন ক্লাসের এক মাসের একটা কোর্স আপনি আমার কাছে করতে পারেন...
সম্মানী নিব খুশি হয়ে যা দিবেন। 😛 😛
x-( x-( x-( আমাগো এডজুটেন্ট স্যারের একটা ঝাড়ি দিতে মঞ্চায়- "Dont try to teach your grandpa how to bring a child" x-( x-( x-(
হা হা হা দোস্ত, এটা জব্বর আছিল।
এট্টু ধৈর্য ধর... আমি তুমাগেরে আরো মেলা গল্প কবানে।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
এইবার একটা কথা বলি সিরিয়াসলি-সাজিদ ভাই,আপনার লেখা আমার কাছে অত্যন্ত বলিষ্ঠ বলে মনে হয়েছে।আমার ধারণাই ছিলনা আপনার এই দিকটাও এতটা শক্তিশালী।নরকবাস সিরিজ চাই-দিতে হবে x-( x-(
নরকবাস সিরিজ চাই-দিতে হবে
নরকবাস সিরিজ না দিলে
জ্বলবে আগুণ ঘরে ঘরে...
আমার লেখা তোমার লেখা
নরকবাস নরকবাস... ......
(সৌজন্যেঃ মাস্রুপ ভাই, সিসিবি নেতা)
পড়ুন,সিসিবির মজলুম নেতা.. ;)) ;))
সারাদিন লংআপ হইয়া থাকে তো তাই কইলাম :duel: :duel: :duel:
পুলাপাইন তোরা আমারে পড়াল্যাকা করতে দিবি না নাকি?খাড়া পরীক্ষাডা দিয়া লই তার পর :gulli2: :gulli2:
পড়ুন,সিসিবির মজলুম নেতা
:gulti:
ওরে মাস্ফ্যু... আমি এমনিতিই আরো মেলা গল্প কবানে... আন্দোলন করতি হবিনানে...
ইয়ে মানে আমারো একটা সিরিয়াস কথা আছে... আমার আর কোন কোন দিক শক্তিশালী বলে তোর ধারনা???
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
খুব ভালো লাগছে :clap: :clap: :hatsoff: :hatsoff: ।
হিন্দী মুভি "সরকার রাজ" এর কথা মনে পড়ে গেল।
Life is Mad.
থেঙ্কু বস্
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
আমি ভাল লিখিতে পারিনা :(( :(( ... ভাল লিখতে চাই... :(( :((
আমিও ভালো লিখতে চাই 🙁
লেখাটা পড়ে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলাম। মানুষ যে এমন কেন করে বুঝিনা!
লেখাটা চমৎকার লাগল ভাইয়া। আশা করি সিরিজের পরের পর্বগুলো তাড়াতাড়ি পাব।
ইনশা আল্লাহ্... দোয়া রাইখো...
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
জীবনের কাহিনী গল্প-উপন্যাসের চেয়েও কঠিন! সাজিদ ভালো লাগলো লেখা। ভিন্নরকম বিষয়- ভিলেজ পলিটিক্সই তো কয় নাকি? লিখতে থাকো। :hatsoff:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
ধন্যবাদ ভাইয়া।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
খুব ভালো লাগলো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
থ্যাঙ্ক ইউ আপু।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
Carry on
ভিজেল পলিটিক্স বড়ই জটিল জিনিস, জিলাপীর প্যাচের চেয়েও জটিল
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভিলেজ প্লিটিকেসের মধ্যে স্থূল নোংরামি বেশী।
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।
পড়ে পুরা তাব্দা খেয়ে গেলাম । সাজিদ ভাই লেখাতো দারুণ হয়েছেই । আরা আমাদের দেশের বাড়ির ভাষাও কিছুটা খুলনার মতো । আমার দেশের বাড়ি মাগুরা ।
থেঙ্কু রে ভাইডি
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক,
জ্যোস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই,
কিছুটাতো চাই, কিছুটাতো চাই।