শেষ বিকেলের ক্লান্ত রৌদ্রের চুম্বনে একটু একটু করে চোখ মেলার চেষ্টা করি। শীর্ণ গলির জীর্ণ দালান ঘেরা আমার কামরাটিতে সূর্যের আলো আসার এই একটাই সময়। উঁকি মেরে রবি সাহেবের চেহারা দেখে সময় বুঝার চেষ্টা করি। ক্লান্ত রবিবাবু তেজ কমিয়ে দিয়েছেন কিন্তু অন্ধকারের কাছে আত্মসমর্পণের আগে যে রাঙা হয়ে যান তার আভাস মেলেনি এখনও। মটকা মেরে পড়ে থাকার চেষ্টা করি ঘাড় ঘুরিয়ে। তারপরে বসে গাঢ় করে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করি।
বিস্তারিত»কোলবালিশ
১.
মুরাদ আজ সারাদিন তার ড্রয়িং রুমে টেলিফোনের পাশে বসে আছে, একটা কল পাবার আশায়। কলটা, তার বউ নাজমার। সে সম্প্রতি মুরাদকে অনেক দোষে দুষ্ট করে বাপের বাড়ি গিয়ে উঠেছে। চার বছরের বিবাহিত জীবনে এটাই তাদের বিচ্ছেদের প্রথম বিশেষ দিন। আজ তাদের চতুর্থ বিবাহবার্ষিকী।
এবং মুরাদ নাজমাকে অসম্ভব ভালবাসে।
নাজমাও যে মুরাদকে ভালবাসে না এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যাবে না। কারণ না ভালবেসে,
বিস্তারিত»একটি আদর্শ মন্দ দিন
দিনের শুরু দুইভাবে হতে পারে। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অথবা রাত বারোটার পর থেকে। যেহেতু খারাপ দিনের সূচনার পিছনে আগের রাতের বিষয়টা জড়িত, তাই এখানে নতুন দিন বলতে রাত বারোটার পর বুঝাবো।
এশার নামাযের পর পরই কাছের কোন এক মসজিদ বা মাজার থেকে ওয়াজ মাহফিল শুরু হলো। শুরু হলো তো হলো, শেষ হওয়ার নাম নেই। অবশেষে রাত বারোটার দিকে ওয়াজ শেষ হলো। এবার ঘুমানো যাবে ভেবে বিছানায় গেলাম।
বিস্তারিত»নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকঃ পর্ব ৪
[দু’টি কথাঃ এই লেখাটি আমি খুব একটা গুছিয়ে বা ভেবেচিন্তে লিখতে শুরু করিনি। দীর্ঘ লেখা এবং সময় নিয়ে লেখার অনভ্যাসে কোনোকিছুতে অনেকদিন একনাগাড়ে মনোযোগ রাখা আমার জন্যে দুরূহ। এখন পর্যন্ত এই লেখার পর্বগুলো লেখার পেছনে আপনাদের সকলের উৎসাহই সব! আমি কেবল লিখছি, আসল গল্প আপনারাই, আসল উৎস! আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ!]
নিয়ন্তি,
আপনার “ইন্নালিল্লাহ” পড়ে তো আমারো হাসি পাইলো!
বিস্তারিত»শিমুলের ফেব্রুয়ারী
এই গল্পটা আমার মায়ের লেখা… যখন আমার মায়ের বয়স ঠিক আমার এখনকার সমান…তাই অনেকদিন পর খুঁজে পেয়ে মনে হোল, ব্লগে দিয়েই দেখিনা!
পড়ার টেবিলে মিছেই সময় নষ্ট হতে থাকে।পড়া আর হয়না শিমুলের।
কেন বার বার ফিরে আসে ঐ অলক্ষুণে ফেব্রুয়ারী?ভীষণ রাগ হয় তার নিজের উপরেই।ভাবে, যদি পারতাম ক্যালেন্ডার থেকে ঐ মাসটাকে একেবারে মুছে ফেলতে…নিজের উপরে রাগ ক্রমশঃ বেড়েই চলে তার। ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে ওঠে ওর মুখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকঃ পর্ব ৩
ওয়াও রাইন! আপনার বর্ণনা এত্তো ভিভিড। আমি মনে হলো দেখলাম আমার সামনে, আপনাকে, মেয়েটাকে… বৃষ্টি!
কী সুন্দর সব।
অনেক আগে আমি একটা গল্প লেখা শুরু করেছিলাম। ঐখানে বৃষ্টিতে একজনের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার বর্ণনা ছিলো। আপনার কথা শুনে মনে পড়ে গেলো। ঐটাও ছাতা বিষয়ক… দেখি মনে হয় পুরানো ডায়েরিতে আছে এখনও, আজকে বাসায় যাওয়ার পরে পাঠাবো আপনাকে।
বিস্তারিত»নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকঃ পর্ব ২
পূর্ব প্রকাশের পর…
রাইন!
ইশ! কতো কিছু মনে করায় দিচ্ছেন!
আরেকটা গাছ ছিলো। ফুলার রোডের ঐ পাড়া। ভিসির বাড়ি আর ইউনিভার্সিটির মাঝখানে একটা আইল্যান্ড ছিলো, তিনকোনা। সেই আইল্যান্ডের মাঝখানে… মাঝখানেই তো।
একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ। আমি ল্যাবরেটরি স্কুলের যেতাম আর উইক-এন্ডে ঐ খানেই ছায়ানট, নাচ শিখতাম। কখন ফোটে কৃষ্ণচূড়া? গ্রীষ্মকালে?
পুরা রাস্তায় পাঁপড়ি ছড়িয়ে থাকতো আর আমি মাঝে মাঝে তুলতাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকঃ পর্ব ১
নিয়ন্তি,
মেইল করতে বলেছিলেন। মাঝে কী মেইল করবো বুঝে উঠি নাই বলে, করা হয় নাই।
খবর কি আপনার? রাতে ঝিমাচ্ছিলাম পিসি’র সামনে বসে। হঠাৎ ডিং করে একটা মেইল আসলোঃ পিচ্চিদের নোট!
অথচ দেখি অফলাইন, তাই বুঝলাম না কি হইলো (?)
যাক ভালো থেকেন। বিলাইয়ের খবর কি জানায়েন।
রাইন
-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-
রাইন,
আপনি কেমন আছেন?
বিস্তারিত»একুশের পাঠশালায় একজন বৃষ্টি … …
১.
সে অনেক কাল আগের কথা। আজ অনেক দিন পরে যৌবনের সেই টকটকে দিনগুলোর কথা মনে পড়ছে। ইস্ , কী দূর্দান্ত ছিল সেই দিনগুলো!!! আমরা ৬/৭ জন বন্ধু ছিলাম একে অন্যের জানের জান। আর আজ? কে কোথায় আছে, কে জানে! “বৃষ্টি”র জন্যে আজও খুব খারাপ লাগে; না জানি, কেমন আছে বেচারী! রাতুলকে ভালবাসতো ও, খুব ভাল ছেলে ছিল রাতুল। যেমনি চেহারা ,
লাল সবুজের দেশে
মফস্বলের একটি প্রাইমারি স্কুল। সামনের বিশাল সবুজ মাঠটায় শিশুদের একত্রিত করা হয়েছে একটা দায়িত্ব দেয়ার জন্য। দায়িত্বটা খুব সাধারণ। জাতীয় পতাকাটা ধুয়ে ইস্ত্রি করে আনতে হবে। কারণ পরশু বিজয় দিবস। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সামনে সেটার উত্তোলন হবে। সে উপলক্ষ্যে স্কুল ধোয়া-মোছার জন্য আগামীকাল ছুটি। বাচ্চাদের জোরালো করতালী তাই হেডমাস্টারের পুরো বক্তব্যকে আরো অর্থবহ করে তোলে।
এদের মধ্যে পদ্ম ও শাপলা যমজ ভাইবোন। দু’জন একই ক্লাসে পড়ে।
বিস্তারিত»একজন অখ্যাত মুক্তিযোদ্ধার গল্প
চারু মিয়া সর্দারের তিন মেয়ে, দুই ছেলে। বড় ছেলে মোঃ সুলতান মিয়া সর্দার আর ছোট ছেলে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। ছোট ছেলের নামের শেষে ‘সর্দার’ না রাখার কারন পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সর্দারীটা যেন বড় ছেলে পায়। শুধু তাই নয়, বড় ছেলের জন্য সব ভাল ভাল খাবার, জামা কাপড়, আর অন্যান্য যত্নের যেন কোন ত্রুটি না হয় সে বিষয়ে স্ত্রীকে সবসময় মনে করিয়ে দেন। বড় ছেলেকে তো সর্দার বানাতে হবে।
বিস্তারিত»আমার ফেরা
গত কয়েকটাদিন ধরে আমার মাথা ঠিকমতো কাজ করছেনা। হয়তো এর কারন আমি সারাক্ষণ কেনাকাটা আর গোছগাছ নিয়েই বেশি ভাবছি। ফ্লোরিডার সুদীর্ঘ
৫ বছরের পড়াশোনা আমার শেষ হয়ে এলো প্রায়। আর একটি মাত্র মাস, এরপর আমি ফিরে যাব আমার দেশে, আমার ভালবাসার দেশ, বাংলাদেশে! ও আমার মা,
আমার আমার প্রিয় জন্মভূমি, কবে আবার তোমার দেখা পাবো, পাবো তোমার স্নেহের স্পর্শ! কবে তমার বুকের শিশিরভেজা ঘাসের মাঝে হেঁটে বেড়াবো।
গল্প: ক্ষুধা
এলার্মের শব্দে চোখ খুলে উপরে ঝুলে থাকা সিলিংটাকে খুব অপরিচিত মনে হল আফসানা রশীদের। ঘুমের ক্রমবর্ধমান সান্দ্রতা তাকে টেনে বিছানায় ফেরৎ নেবার অপচেষ্টায় মত্ত তখন। আফসানার মনে একটি লোভনীয় আশা উঁকি ঝুঁকি মারার চেষ্টা করল। কোনদিন যদি এলার্মের শব্দটাকে পিছমোড়া বেধে ফেলে দেয়া যেত প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতম খাতে। কি যেন নাম খাতটার, মিন্দানাও খাত সম্ভবত। যে শিডিউল গুলো ব্ল্যাকবেরীর ভেতরে অঘোরে ঘুমাচ্ছে একটি সদ্যজাতের তারস্বর চিৎকারের অপেক্ষায়,
বিস্তারিত»গল্প: দানব
ইকরাম মিয়া সিগারেট শেষ করে সশব্দে পাশের রাস্তায় থুতু ফেলল। গলার ভেতরটা শুকিয়ে আমসি। একটু পানি খাওয়ার জন্যে এদিক ওদিক তাকালো সে। মোড়ে চায়ের দোকানের পাশে বড় একটা ফিল্টারের গায়ে হেমন্তের নাতিশীতোষ্ণ রোদ প্রতিফলিত হচ্ছে। রোদের কারুকার্য দেখে সময় নষ্ট না করে সেদিকে হাটা দিল সে। ডিউটি শুরু হতে এখনও কিছুটা বাকী আছে। তাই কি করবে সে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না। ময়লা ড্রেনের পাশে নাম না জানা পোকাগুলোর অবিরাম অত্যাচারী সঙ্গীতে কটকটে রোদের আবহাওয়া অসহনীয় লাগছে তার কাছে।
বিস্তারিত»সিঙ্গেল লাইন
১.
আচ্ছা মানুষ কি পিঁপড়ে? নাকি মানুষদের পিঁপড়ে হতে এখানে পাঠানো হয়? ব্যাপারটা ঠিক বুঝে ঊঠতে পারে না তাশফিন। এখানকার সবকিছুই কেমন পিঁপড়ে পিঁপড়ে! দল বেঁধে থাকা, খাওয়া, পড়া খেলা ঘুমানো এমনকি বাথরুম অবধি ! সবখানেই লাইন, সিঙ্গেল লাইন।
দুপুরের খাবারের জন্য ক্লাসরুম থেকে বেড়িয়ে খাবার ঘরের দিকে যাচ্ছিলো তাশফিনরা। মানে তাশফিন, নাঈম, মুকুল এমন অনেক, প্রায় শ’দুয়েক ক্ষুধার্ত মুখ। সারি সারি পিঁপড়ের মতো,