নিয়ন্তি,
মেইল করতে বলেছিলেন। মাঝে কী মেইল করবো বুঝে উঠি নাই বলে, করা হয় নাই।
খবর কি আপনার? রাতে ঝিমাচ্ছিলাম পিসি’র সামনে বসে। হঠাৎ ডিং করে একটা মেইল আসলোঃ পিচ্চিদের নোট!
অথচ দেখি অফলাইন, তাই বুঝলাম না কি হইলো (?)
যাক ভালো থেকেন। বিলাইয়ের খবর কি জানায়েন।
রাইন
-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-
রাইন,
আপনি কেমন আছেন? ঝিমান কেনো?
আমি জিমেইলে নাই। এটা আমার অফিসের ইমেইল অ্যাড্রেস। ঐ জন্যেই অফলাইন।
ভালোই আছি, কালকে অবশ্য অনেক জ্বর ছিল, অফিসেই আসি নাই। জ্বর হলে মন টন খারাপ হয়ে যায়। তাই অনেক গজল শুনলাম। 🙂
বিলাই ভালো আছে। আসার সময় দেখে আসলাম আরামসে ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমার বিলাই হতে ইচ্ছা করে… কী ভালো হতো! সবচেয়ে ভালো হতো- ইফ আই ওয়্যার এ ক্যাট ইউথ এ হিউম্যান মাইন্ড….
কী করেন আপনি?
নিয়ন্তি
-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-
নিয়ন্তি,
ঝিমাই কারণ রাত দুইটা। ঢাকার মানুষ নিশাচর, এতো রাতেও নেটের স্পিড খারাপ। আজকালকার যুগে যদি “বেসিক এইচটিএমএল ভিউ” খুলে মেইল করতে হয় তাইলে মেজাজ খিঁচড়ে যায়। অবশ্য নেগেটিভ ঘটনার লাভ থাকে। আজকের লাভ, এখন ঘুম একটু কম!
পরে খেয়াল করলাম (আগে ঝিমুনির কারণে খেয়াল করি নাই) যে আপনি অফিসে। এখন নয়টা বাজে এবং শুক্রবারে বিদেশে লোকজন কাজ করে! 😛
সবারই জ্বর হচ্ছে। আমাদের এখানেও। আমার প্রিয় মানুষটারও জ্বর! আজকে সারাদিন আমিও ব্যস্ত ছিলাম, সে আমাকে অনেক মিস করে, কিন্তু কথা বলারও সময় করতে পারি নাই। রাতে বাসায় ফিরে কথা হলো, খারাপ লাগলো তখন। সে ঘুমিয়ে পড়েছে এখন। আর আমি মন খারাপের ঠেলায় ঘুমাতে পারছি না!
সীজনটা খুব বাজে। বাতাসে মনে হয় ফ্লু-এর রেণু/জীবাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে!! আমি মন খারাপ হলে, জ্বরে পড়লে পিঙ্ক ফ্লয়েড শুনি! ওরা আমার মন আরো বিষণ্ণ করে দেয়!! হা হা :-))
আমার মাঝে মাঝে চেয়ার টেবিল হয়ে যেতে ইচ্ছা করে। জড়বস্তু হতে ইচ্ছা করাটা মনে হয় মাথা খারাপের লক্ষণ!
বকবকাচ্ছিলাম। অফিসে কাজ ফাঁকি দিয়ে পড়বেন! টাইপ করতে কষ্ট হইসে! 😉
রাইন
-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-
রাইন,
বাহ! আপনার চিঠি কতো সুন্দর!
আমি কখনো এইরকম ফ্লুইড কথা লিখতে পারি না। আমার সব কিছু কেমন ছাড়া ছাড়া থাকে। আজকে জানেন, একদম মেঘলা বাইরে। আর আমার অফিসে চারপাশে কাচ। আর কাচের বাইরে টানা বারান্দা। চার তলার উপরে। আমার কেমন সুররিয়্যেল মতো লাগছে। মনে হচ্ছে আমি আছি কিন্তু নাই। এটা একটা ওপেন প্ল্যান অফিস, চারপাশে সবাইকে দেখা যায়, কথা শোনা যায়… সবার কথা মিলে মিশে আসলে কোনো কথা হয় না, শুধু একটা ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজের মতোন… একটা গুঞ্জন… অনেক সময় ঢাকার দুপুরের কথা মনে পড়ে।
আসলে আমার যে সময়কার কথা মনে পড়ে, ঐ সময়টা তো নাই এখন। এখনকার দুপুর নিশ্চয়ই অনেক আলাদা। তো, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আম্মা আর বাড়ির সবাই দুপুরে ঘুমাতো। আমি কোনোদিন ঘুমাতাম না। আমাদের বাসা ছিলো ফুলার রোডের সামনে, ইউনিভার্সিটি কোয়ার্টার্সে। বারান্দা থেকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল দেখা যেতো আর ঠিক দেয়ালের পাশে একটা বিশাল গাছ ছিলো। তো, ঐ দুপুরগুলা অনেক স্লো আর ঝিম ধরা থাকতো, আর একটা কেমন… ধূলার গন্ধ… সাথে ঐ রকম ঝাঁ ঝাঁ ধরনের একটা শব্দ… এখন প্রায় ঐ রকম এখানে। যদিও এখন দুপুর না, যদিও এখন রোদ নাই… আর যদিও সময়টাও অন্য।
আপনার প্রিয়মানুষের নাম জানা হয় নাই। কেনো মন খারাপ আপনার? তার সাথে কথা হয় নাই, তাই? তার জ্বর আর আপনি ছিলেন না, এই জন্য?
জড়বস্তু আমারো হতে ইচ্ছা করে। অবশ্য আমার তো মাথা খারাপই! আমার আসলে অনেক কিছুই হতে ইচ্ছা করে… মাঝে মাঝে… আমার আমি হতে ইচ্ছা করে…
আরো অনেক লিখেন, আমার কাজ করতে ভালো লাগে না…
নিয়ন্তি
-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-
নিয়ন্তি,
ভালো লিখেন না, ছাড়া ছাড়া, এসব বলে যা লিখলেন তাতে আমি আবার তিন বছর আগের সময়টায় চলে গেলাম!
আমি তো হলে থাকতাম, ফুলার রোডের কাছেই, দুইটা রাস্তা পেরোলেই। আমিও ঐ গাছটা চিনেছি। এখন অবশ্য আরো গাছ হইসে ওখানে। হয়তো কোলাহলও আরো অনেক বেড়ে গেছে, যাওয়া হয় না আমারও অনেকদিন।
কী তাজ্জব! আপনি যেভাবে বললেন, আমি একটা টাইমে যশোরে থাকতে ওরকম অনুভব করতাম। স্তব্ধ দুপুর, মা ঘুমে। আমি ঘুমাইতাম না। বই পড়তাম। সুকুমার, শিবরাম, নয়তো বাংলা হাসির গল্প! পড়তাম, আর কল্পনা করতাম। চারপাশের পরিবেশটা আমাকে আরো মগ্ন করে দিতো। কখন আঁধার হয়ে যেতো! আম্মা এসে ঝাড়ি লাগাইতো, আন্ধারের মধ্যে বইসা পড়তেছিস, চোখের মাথা খাবি!! আমি পরের দিনও ওভাবেই পড়তাম। চোখের মাথা খেয়ে চশমা নেয়ার শখ ছিলো।
শখ অবশ্য মিটে নাই, কারণ চোখ খারাপ করতেই পারলাম না!
প্রিয় মানুষটা আজকে একটু আক্ষেপ করে বলেছে যে তার আমাকে অনেক মনে পড়তেছিলো। কিন্তু ভাবসে যে আমি ব্যস্ত, অফিসে,তাই ফোন করে নাই। আমি ভাবসি সে অসুস্থ, রেস্ট নিচ্ছে, তাই ফোন দেই নাই। সব মিলায়ে প্রায়ই ডিসকানেক্টেড!
পরে ‘আফসুস’ করলাম একটু। হা হা! সন্ধ্যায় তার জ্বর ঠিক হইসিলো, ভালো লাগতেসিলো শুনে। পরে রাতে আবার জ্বর আসলো! আমারও মন খারাপ হলো! ও কিছুদিন ধরে ভুগতেসে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ খুবই খারাপ। পারলে বকাঝকা করে যত্ন নিতাম, কিন্তু সেই অধিকারটা এখনও জন্মায় নাই। কিন্তু অধিকারবোধটা জন্মায় গেসে। আমার সঙ্গী এখন খালি দুশ্চিন্তা আর উৎকণ্ঠা!
আপনার অফিসরুম নিয়ে একটা কল্পনা মাথায় চলে আসছে। আপনি একটা বাব্লে বসে আছেন, কাচের বাব্ল- এজন্য গোলাকার না হয়ে চৌকোনা, এটা করা হইসে শুধুই আপনাকে ধোঁকা দেয়ার জন্য। বাব্লে আটকে সবাইকে বসিয়ে রাখছে, আমার অফিসটাও চারিদিকে কাচ। পিছনে দেয়াল, তার মাঝেও একটা বড় জানালা! বাইরে আমি দিন শেষ হওয়া দেখি রোজ। বিকাল ভাঙা দেখি। আগে কতো বাইরে বাইরে ঘুরতাম ঐ সময়টা, বাসায় ফিরে আসতে ইচ্ছা করতো, বিপন্ন লাগতো, সবাই দুদ্দাড় করে বাড়ি ফিরছে আর আমি পথ খুঁজে বেড়াচ্ছি এমন বোধ হতো! আর এখন, একটা কিউবিক্লে বসে মাথা গুঁজে কাটায়ে দেই বিপন্নতা। আসলেই চেয়ার টেবিল হয়ে গেছি… বাসায় ফিরতে ফিরতে যখন রাত হয়, তখন টের পাই, আমি বহুদিন বিকাল দেখি না!!
রাইন
(চলবে)
ভাল্লাগসে। অন্যরকম স্বাদ পাইলাম 😀
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
😀 😀
থেংকু।
আজকাল এরকম লিখতে ইচ্ছা করে খালি। 😛
মাঝে মাঝে মুরুব্বিদের (কাইয়ুম ভাই না কিন্তু) আলাপ করতে শুনি বিয়ের আগে আগে নাকি ছেলেদের এমন অনেক কিছুই লিখতে ইচ্ছা হয় ;;;
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
হ! 😛
তোমারে যে বলছে সে পুরাই ধাপ্পা দিছে। এই লেখা সেই ক্যাটাগরিতে পড়ে না। বড়ো কিছু লেখার আগে (মাহমুদ ভাই একটা এসাইনমেন্ট দিছেন) হাল্কা জিনিশ লিখতে ইচ্ছা করে। যেটা হুট করে লেখা হয়ে যাবে। হুট করে পড়েও ফেলা যাবে। 😀
লেখাটা পড়ে মজা পাইছি খুব :thumbup:
মনে আছে তাইলে? - লেখাটা শেষ হলে আমার এখানে এসে লাঞ্চ করে যেও 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
ওহ! কী দারুণ অফার! 😀
জোর লাগাকে লিখতে হয় তাইলে! :grr:
শেষ কর তারপর বলব ।ওপেনিং ভাল হইছে 😀
শেষ হবে মনে হয় তিন পর্বে। আজকে রাতে আরেক পর্ব দিবো। কালকে শেষটা। সিরিজ বেশিদিন ধরে রাখা ঠিক না। 😀
:thumbup:
খালি এইটায় কমেন্টানোর জন্য লগইন করলাম। হুট লেখা ভাল্লাগসে.....'অন্তহীন' সিনেমাটা'র কথা মনে পড়ল ...
থ্যাঙ্কু বস, খালি এইটায় কমেন্টানোর জন্যে আপনাকে লগইন করাইতে পারছি!
আমার অন্তহীন দেখা হয় নাই। কম্পুতে অবশ্য আছে। সময় করে দেখে ফেলবো! 🙂
টুম্পা আপু, ভাল আছেন?
অন্তহীন :just: :gulli2: :gulli2:
নিয়ন্তি এবং রাইন, তোমরা মেইলামেইলি করতে থাকো, আমরা দেখি 🙁
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
আইচ্ছা ওদের বইলা দিবোনে, কাইয়ূম ভাই কি বলেছেন।
বাহ...
আপনাকে অনেকদিন বাদে দেখলাম/পাইলাম।
চমৎকার হচ্ছে ...... পরবর্তি পর্বের অপেক্ষাতে থাকলাম ......
ধন্যবাদ মাইনুল ভাই। রাতেই পরের পর্ব আসবে আশা করি! 😀
ভালো লাগল।
চলুক তবে মেইলামেইলি 🙂
ওক্কে বস, চলুক। :boss:
সৌন্দর্য্য হয়েছে... পুরাটাই বুঝেছি... 😀 😀
আহ! কি শান্তি! 😀 =))
এটা নিশ্চয় হাতে বেল্ট পরে লেখা
আন্দা,
মেইলা-মেইলি অংশটুকু বুঝলাম না ... :-B
নিয়ন্তি মেইল করলে রাইনের উচিত ফি-মেইল করা ... :-B
ক্যামনে কি ??
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
মেইলামাইলি বাদে কোনটুকু বুঝলেন! হা হা হা! =))
রাইন বড়ো বদ পুলা। যেটা করা উচিত সেইটা করে না! ধইরা একটু ড়্যাবের ট্রিটমেন্ট দেন তো বস! 😀
😮 😮 😮 😮 😮 😮 😮 😮 :-B :-B :-B
কিডা ........তাইফুর ভাই নাকি?
আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই
পড়ছি 🙂
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ওক্কে! রাইতে পরেরটা দিমু। ঐটাও পইড়ো! 😀
:clap: :clap: :clap:
বস,ভাল লাগতেসে...চালায়ে জান...
জাহিদ ভাই, মাঝেমধ্যে নিজেও লিখলে কি এমন ক্ষতি হয়!!
:clap: :clap:
:hatsoff: :hatsoff:
পাঁচ তারা 🙂
থেংকু দোস্ত
ভালো লাগল।
চলুক তবে মেইলামেইলি 🙂
চলুক তবে মেইলামেইলি!
:thumbup: :thumbup:
ব্যাস্ত মানুষ তো, কাল সন্ধ্যায় পরের পর্ব পড়বো। অপেক্ষায় আছি।
হুম, আজকে সন্ধ্যায় তাহলে একবারে দুইপর্ব পড়ে ফেলো।
অন্যের মেইল পড়ার মজাই আলাদা 😉
নয়া স্বাদ, ভাল্লাগসে 🙂
ওহহহ আন্দা, পুরাটা বুঝছি 😀
অন্যের মেইল পড়ার মজটা হইলো "ভয়ারিজম" (ভয়ের কিসু না) এর মজা। ;;;
আন্দলিব ভাই, খুব্বি জোস হইসে। :clap: তাড়াতাড়ি পরেরটা ছাড়েন......
পরেরটা আসিতেছে...
আন্দা ভাইয়া কি বেল্ট পইড়া লিখসো??? 😛
অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের, শেষ হোক, তখন একসাথেই বলব। 🙂
কাহিনী কি??? সব ভালো??? ;))
উফ! কিয়ের বেল্ট। চিঠিপাতি লিখতেও বেল্ট! :((
জ্বি বস, কাহিনী সব ভালো। আপনার কাহিনী কেমন? পিচ্চি দুইটা কেমন আছে??
'সবিনয় নিবেদন' এর আধুনিক সংস্করন। খুব ভালো লাগছে, চলতে থাকুক।
সামি ভাই, লেখার সময় ভাবছিলাম 'সবিনয় নিবেদন'-এর কথা। ভাবছিলাম যে ওটা থেকে কতটা আলাদা হওয়া যায়, ভিন্নভাবে নতুন ভাবে লেখা যায়...
পরের মেইল পড়ুম কিনা ভাবতেছি... :dreamy:
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
পইড়েন না। এইভাবে পড়নটা ঠিক নহে :-B :-B
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
:thumbup:
থ্যাঙ্কু রাফাত ও জেরিন 🙂
আপনার লিখা প্রথম পড়লাম, ভাল লাগলো!
বই হিসেবে খারাপ হবে নাহ!