১
এই ঢাকা শহরে কোন একসময় রুহুল আর রাদিয়া বাস করতো। তারা দুজন একই সাথে এই শহরের কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। একই বিভাগ। সেই সূত্রে তারা ছিল সহপাঠী। শুধুই সহপাঠী। বন্ধু নয়। আবার শত্রুও নয়। এমন কেউ ছিল না যে দুজনেরই বন্ধু। তাই ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে কিম্বা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তারা কখনও একসাথে আড্ডা দেয়নি, ক্যাফেটেরিয়ায় চা পান করেনি, শর্ট-ফিল্ম দেখতে পাবলিক মিলনায়তনে একত্রে ঘুরতে বের হয়নি।
ভয়
পহেলা বৈশাখের বিকেল বেলা ।রোদ কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে । বন্ধুদের সাথে বেরিয়েছে তিয়ানা । স্থানীয় স্কুল মাঠে বসেছে বৈশাখী মেলা। মেলার ভেতর ঢুকতেই নজরে এল নাগরদোলা । হৈ হৈ করে ছুটল সবাই সেদিকে।দু’টো নাগরদোলা বনবন করে ঘুরছে।বন্ধুরা ভিড় ঠেলে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল সিরিয়াল ভেঙে সামনে যাওয়ার জন্য।
‘আমি উঠব না।’ গোমড়া মুখে বলল তিয়ানা।
‘কেন !’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে প্রিয়ম।
বিস্তারিত»“এ আলোয় তোমায় দেখিনা”
1.
ঝুম বৃষ্টির মাঝে রিকশা পাওয়াটা কষ্টের। ঢাকা শহরের রিকশাওয়ালা গুলো এম্নিতেই জমিদার। তারপর বৃষ্টি এলে এদের ভাব আকাশ চুম্বী হয়ে যায়। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজবে ঠিকই কিন্তু কেউ বললে যাবেনা। বিরক্ত মুখে আসিফ একজনকে বলে ফেলল,মামা তাহলে জাহান্নামে যাবা? শাহবাগ থেকে কলাভবন যদি না যাও তাহলে কোথায় যাবা? আসিফের কথা রিকশাওয়ালা ভ্রুক্ষেপ করলোনা। বেচারা আগের মতই বলিউড টানতে শুরু করল। কিছুদূরে একটা ফাঁকা রিকশা দেখতেই আসিফ ডাক দিল,
চিলড্রেন অব হ্যাভেন
<<সাদেক>>
বাসাটায় ঢোকার মুখে আমার পিচ্চি ছাত্রীর মায়ের ফোন এল। এক্ষেত্রে কখনও ফোন ধরি না, কেটে দেই। উনি বোঝেন যে হ্যা, আমি চলে এসেছি। কিন্তু কেন যে ধরেছিলাম, তবে ধরেছিলাম বলে ভালই হয়েছিল। “হ্যা আপা, আমি……” উনি আমার কথা কেড়ে বলেন, “হ্যা সাদেক, তোমাকে তো একটা কথা বলা দরকার ছিল…” কেমন জানি লাগল, “জ্বি আপা, বলেন…।।” উনি একটু থেমে থেকে তারপর বলতে লাগলেন,
বিস্তারিত»স্বয়ম্বর সভা ও কয়েকটি প্রেমের একটি গল্প
হাতের ক্যাপটা ডলে ডলে সমান করতে করতে চতুর্থবারের মতো ঘোষণা করে পারিসা,” আমার ভাল লাগছেনা।“ পাশে বসা তামান্না ওকে ফিসফিস করে বলে,” সারাক্ষন ভালো লাগে ভালো লাগেনা বলতে থাকলে ভালো লাগবেটা কি করে শুনি? আমার তো মজাই লাগছে।“ পারিসা হতাশ হয়ে কাধ ঝাঁকায় একবার, আড়চোখে চারপাশটা আরেকবার দেখে নেয়। অডিটোরিয়ামটা ভালোই লাগে ওর কাছে, এখনো মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়নি বলে চারপাশে একটা মৃদু গুঞ্জন। ICCLMM এ আসার অভিজ্ঞতাটা পারিসার জন্য নতুন,
বিস্তারিত»পাগলের মেঘ, পাগলের বৃষ্টি
দুপুর ৩টা ১০, খুলনা রেলওয়ে স্টেশন। সাগর দাঁড়ি এক্সপ্রেস প্ল্যাটফর্মকে নির্জন করে ছেড়ে গেল রাজশাহীর দিকে। হঠাৎই নির্জন হয়ে পড়ার একটা সৌন্দর্য্য আছে। তবে এটা খুব অদ্ভুত, আধার থেকে হঠাৎ তীব্র আলোয় বের হলে যেমন হয় আর কি। দূরে অপসৃয়মান ট্রেনের ঝিক ঝিক আর সাইরেন কে ছাপিয়ে ওভার ব্রীজ থেকে হঠাৎ প্রবল অট্টহাসি হেসে উঠে হাবা পাগলা। খুলনা স্টেশনে হাবা পাগলা যে কত বছর ধরে আছে তা বোধহয় একমাত্র বলতে পারবে “আলী রেলওয়ে টি স্টল” এর বৃদ্ধ আহমেদ আলী।
বিস্তারিত»অসাড়তা
বার্থডে উইশ
রাত ১২ টা বাজার মাত্র ১৫ মিনিট বাকি। মাত্র ১৫ মিনিট পরেই সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটি শুরু হবে। ২রা জুলাই, প্রিয়তির জন্মদিন।কিন্তু প্রিয়তির মনটা খুব অস্থির হয়ে আছে। ঘনঘন মোবাইলে টাইম দেখছে সে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। আচ্ছা, এবার সবার আগে প্রত্যয় উইশ করতে পারবে তো? ওর খুব ইচ্ছা জন্মদিনের প্রথম উইশটা ওর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাই করুক। এর জন্য ফেসবুকে বার্থডে রিমুভ করে রেখেছে সে।জিনিসটা হয়ত অনেকের কাছে ছেলেমানুষি মনে হবে,কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রে অনেক সময় এইসব তুচ্ছ জিনিসও অনেক বেশি আকাঙ্খিত হয়ে যায়।
বিস্তারিত»লোডশেডিং ও একটি ভূতের গল্প
প্রায় একমাস ছুটি কাটিয়ে কলেজে পৌঁছাবার পর রাতেরবেলা আমাদের গল্প যেন আর ফুরাতেই চাইতোনা! একেজনের পেটে কত কথা! কার চুল কতো সে.মি বড় হলো এই ব্যপারে নিরীক্ষামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন থেকে শুরু করে ছুটিতে টিভিতে দেখে আসা বিজ্ঞাপনের মডেলদের অঙ্গভঙ্গি অনুকরণ- নানারকম আলোচনায় গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকি আমরা। সেবারও ব্যতিক্রম হয়নি, ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র বের করে লকারে গুছিয়ে রাখতে রাখতে অনর্গল বকে যাচ্ছি। তখনই মৌসুমি ব্যাগ থেকে একটা কি যেন ক্রিমের টিউব বের করে আমাদের সবাইকে দেখিয়ে সেটার গুণকীর্তন করতে লাগলো,
বিস্তারিত»আঁচল
১.”কিন্তু মা সবাই শাড়ী পরবে। ভার্সিটির প্রথম পহেলা বৈশাখ। তুমি প্লিজ একটা শাড়ী ম্যানেজ করে পাঠাওনা।” অয়নীর কথা শুনে রাহেলা বেগম ছোট নিঃশ্বাস ফেললেন। চাপা কন্ঠে বললেন, মাগো সবাই শাড়ী পরবে আর তোর ও পরতে হবে এমন কোন কথা আছে? এবছর ই তোর বাবা মারা গেল। অনেক কষ্টে তোকে পড়া খরচ পাঠাই। একটু বোঝার চেষ্টা কর।”
মায়ের কথা শুনে অয়নীর কান্না এল। কোনমতে নিজেকে সংবরন করে বলল,
ঘৃণা
আমি তোমাকে ঘৃণা করি………হ্যাঁ, আমি তোমাকেই ঘৃণা করি……।। ঘৃণা করি তোমাকে………কারন তুমি আমার জীবনে এসেছ। ঘৃণা করি তোমাকে………কেননা আমার জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে চেয়েছ তুমি।
আমার জীবনটা কখনই খুব সুন্দর ছিল না। আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি নিজের একগাদা দুঃখ-কষ্ট নিজের মাঝে জমিয়ে রেখে। নিজের সব কষ্টগুলো সবসময় নিজের মাঝেই রাখতাম আমি। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হলে একা একা অন্ধকার ঘরে বসে কাঁদি।
বিস্তারিত»অপরাহ্ণের ভ্রান্তি
ঘরের জানালা দিয়ে দিনের প্রথম আলোটুকু আমার চোখের উপর পড়ে আমার ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে দিলো। জানালা বলা ঠিক হবে না। বলা যায় একটা ফাঁকা জায়গা। জেলে তো আর জানালা থাকে না। আমি অন্যদিনের মতো আলস্য না দেখিয়ে উঠে পড়লাম, সূর্যোদয়টা দেখা দরকার। ফুটোটা দিয়ে যতটুকু পারা যায় দেখে নিলাম। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে সূর্যটা তখন অনেক উপরে উঠে গেছে। মানে বেলা অনেক গড়িয়ে গেছে। মনের অজান্তেই একটা দীর্ঘনিশ্বাস বের হয়ে এলো।
বিস্তারিত»স্বপ্নচূড়া-২
গত দুই দিনে অনুপমার সাথে একটা কথা বলারও সুযোগ হয়ে উঠেনি দিলীপের।প্রথম কাজ যেটা করতে হয়েছে সেটা মাকে মামার বাড়ি রেখে আসতে হয়েছে।স্থানীয় যারা বন্ধু আছে,তাদের সাথে কথা বলে সব ঠিক করতে হয়েছে।সব করতে হয়েছে গোপনে এবং সময় নিয়ে।কয়েকজনকে পুরো ব্যাপারটা বুঝানোও খুব সহজ হয়ে উঠছিল না।এসব করতে করতে অনুপমার সাথে কথা বলার সুযোগই হয়ে উঠেনি।শুধু স্যারের সাথে দেখা করতে যেয়ে একবার চোখে চোখ হয়েছিল একবার,কিছুক্ষণের জন্য।রাতে রওনা দেবার আগে যেভাবেই হোক দেখা করতে হবে।সন্ধ্যার পরে নাট মন্দিরের সামনে দেখা হবার কথা।
বিস্তারিত»রক্তস্নান
নাহ, মেয়েটা তো বিরক্ত করে মারল। কত আর সহ্য করা যায়। বেশী বাড়াবাড়ি করলে………………
– এই মেয়ে, তোমার ধানাইপানাই থামাইবা? নাইলে কিন্তু এক্কেবারে পেটের মধ্যে ঢুকাইয়া দিলাম।
আমার হাতের চকচকে, ধারাল ছুরিটা দেখে মেয়েটা একটু থামল। কিন্তু তার চোখে-মুখে অবর্ণনীয় এক আতঙ্ক যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে। ভয়ের শীতল স্পর্শে তার মুখ ফ্যাকাশে। গতকাল পর্যন্তও সে আমার প্রেমে মশগুল ছিল। তার বিন্দু মাত্র ধারনা ছিলনা আমার সম্পর্কে।
বিস্তারিত»স্বপ্নচূড়া-১
চায়ে চুমুক দিতেই ভুলটা ধরা পড়ে।সিগারেট আনা হয় নি।বালিশের পাশে যে দু’টা সিগারেট রাখা ছিল,সেগুলো সেখানেই গড়াগড়ি খাচ্ছে অথবা কে জানে এতক্ষণে মনসুর অথবা প্রকাশের ঠোঁটে শোভা পেয়ে রক্তে নিকোটিন ছড়াতে ছড়াতে নিজেকে ভষ্ম করে দিয়েছে কিনা!চায়ের সাথে সিগারেটের অনুপস্থিতি ব্যাপারটাকে অনেকটা তরকারীতে লবণ না দেওয়ার মতই মনে হয় দিলীপের।আর সেটা যদি হয় দুধ চা,চিনি বেশী, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।পুরোপুরি অত্যাচার বলেই মনে হয় তখন।এক কাঠি সিগারেট যে কিনে নিবে সেই যোও নেই।কি আর করা?উদাস মনে চায়ের কাপে চুমুক দেয় দিলীপ।
বিস্তারিত»