সাপ
অষ্টম শ্রেনীর শেষের দিকের ঘটনা। আসাদ ভাই তখন জুনিয়র প্রিফেক্ট।
আমার প্রিয় বন্ধু নাঈম আমাকে মজার এক তথ্য দিল। তথ্য চমকপ্রদ কিছু নয় কেবল ভেড়ার আচরন সম্পর্কিত, ভেড়ার পালে পশ্চাদগামী ভেড়া তার অগ্রগামী ভ্রাতাকে যথাযথ অনুসরণ করে থাকে। উক্ত তথ্য জেনে আমি ভেড়া, বড়ই আশ্চার্যান্বিত হলাম। বন্ধু আমাকে একটা উদাহরন দিয়ে ব্যাপারটা খুব ভালভাবে বুঝিয়ে দিল।
এই পর্বটা আমাদের ইসলাম(১৯৯৬-১০০২) ভাইয়ের একটি পোষ্ট (ঘুম) http://www.cadetcollegeblog.com/islam1060/15846থেকে ইনফ্লুয়েন্স হয়েছে। ক্যাডেটদের সবচেয়ে প্রিয় বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ঘুম। তারা একটু সুযোগ পেলেই ঘুমিয়ে নিতে পারে। সাধারণ ঘুমের স্থান ছাড়া ক্যাডেটদের প্রিয় ঘুমের জায়গা হচ্ছে ক্লাসরুম। আমার একটা খসড়া হিসাবে একজন মোটামুটি ঘুমপ্রিয় ক্যাডেট তার ছয় বছরের ক্যাডেট জীবনের প্রায় ৬ মাস ঘুমিয়ে কাটায় শুধু মাত্র একাডেমিক ব্লকে ক্লাস ও প্রেপটাইমে ঘুমিয়ে।
হিসাবঃ
ক্লাসের ৭ পিরিয়ডের কমপক্ষে ৩ পিরিয়ড × ৪০ মিনিট = ১২০ মিনিট
প্রেপটাইমের কমপক্ষে ১ ঘন্টা = ৬০ মিনিট
দৈনিক সর্বমোট = ১৮০ মিনিট
এই হিসাবে ১ বছরে ২০০ দিন ক্লাসে ঘুমালে মোট হবে = ৩৬০০০ মিনিট বা
= ৬০০ ঘন্টা বা
= ২৫ দিন বা ১ মাস*
তাহলে ৬ বছরে ক্লাসে মোট ঘুমানোর পরিমান হবে = ১মাস × ৬
= ৬ মাস
*(২৫ দিনে একমাস হিসাবে কারণ শুক্রবারগুলো বাদ দিয়ে)
বিঃ দ্রঃ এই হিসাবে কারও চোখে কোন ত্রুটি পড়লে লেখককে কোনভাবে দায়ী করা যাবে না।
মেডিটেশন
নবম শ্রেনীর কোন এক টার্মে, আমাদের মাহ্দী বিদ্যুৎ মিত্রের বই নিয়ে হাজির। মেডিটেশনের উপকারিতা বর্ননা করতে করতে অস্থির। ইতিমধ্যে খায়ের মেডিটেশনে পুরোপুরি উস্তাদ বনে গেল। সে নাকি চোখের ইশারায় চামচ বাকা করে ফেলেছে। চোখ না যেন হাতের ইশারায় বেডের উপর হতে তালা বন্ধ রুমের চাবি উদ্ধার করেছে। মাহ্দীর কাছে জানলাম, মেডিটেশন করে নাকি দেহের ওজন শূন্য করে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। পুরো ব্যাপারটাতে আমারো একটু আগ্রহ জন্মালো।
এই বছর কলেজ ছেড়েছি। বুকের ভেতরে ঘা টা এখনো দগদগে,আনকোরা নতুন। একটু খোঁচা লাগলেই যন্ত্রনা হয়। কিছু দেখলেই কলেজের সাথে তুলনা করি। খালি মনে হয় কলেজ কত ভাল ছিল। ডাইনিং হলে কত চিল্লাইছি ‘বাদল ভাই গ্লাসে ময়লা ক্যান?’ এখন নিজের রান্না নিজে করতে হয়! কিছুদিন আগে কলেজে গেলাম,আমি একা না,আমার সাথে আরো ৩২ জন ছিল! রিইউিনয়ন টাইপ অবস্থা। সবার মুখে এক কথা,চল বুয়েটে পরীক্ষা না দিয়ে ক্যাডেট কলেজ ইনটেক পরীক্ষা দেই!
নতুন হোস্টেলে ওঠার অনেকদিন পর সুপার ম্যাডামের সতর্কবাণী শুনে সুটকেস খুলে মশারিটা বের করলাম।বের করে দেখি মা আমাকে ভুলে ডাবল মশারি দিয়ে দিয়েছে(যার জন্য আমার রুমমেট খুব খুশি, তারটা বের করতে হচ্ছেনা দেখে),তাও আবার ছোটবেলার স্মৃতিময় মশারি। ভাঁজ খুলে দেখি তাতে আমার ক্লাস ফোরের হাতে লেখা “মশারি নং ৪২০,১ম মশা পিনি ও পরিবারবর্গ”…আমার ও আমার বোনের প্রিয় “হুমায়ুন আহমেদের কিশোর উপন্যাস সমগ্র”- র একটা চরিত্র থেকে লেখা।১ম মশার সাথে আমাদের টেলিপেথিক যোগাযোগ ছিল কিনা!দেখে ইমোশনাল হয়ে গিয়ে টাঙ্গালাম একদিন।কিন্তু ক্যাডেট কলেজেই এইটের পর আর টাঙ্গাইনি।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাতে কোন রকম ঢাক-ঢোলের মাতম ছাড়াই শুরু হয়ে গেল মাত্র ছয় বছরের মধ্যে ৪র্থ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ বরাবরের মত এবারও ‘ডেথ গ্রুপ’এর সদস্য। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশেও বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিলো। আমাদের দেশের মত এত ক্রিকেট পাগল মনে হয় শ্রীলংকানরা নয়। নইলে এই যুগে আলোর ঝলকানি, নাচ-গান অনুষ্ঠান ছাড়া বিশ্বকাপ শুরু হবার কথা না। যাই হোক, বাংলাদেশ দলকে শুভকামনা জানানোর জন্যই এই লেখা। জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনদিন ক্রিকেট থেকে পাওয়া কোন উপলক্ষ ছাড়া পুরো বাংলাদেশীদের এক সাথে আনন্দ করতে দেখিনি।
প্রেম সবার জীবনেই একবার না একবার আসেই। আজকে আরেকটা প্রেমের গল্প। গল্পের নায়ক আমার বন্ধু প্রথি। প্রথি ছোট বলা থেকেই পাড়ার সবচাইতে ভদ্র ছেলে। বাংলা সিনেমার নায়করা যেমন নম্র ভদ্র ক্লাসের ফার্স্ট বয় হয়, গল্পের নায়ক প্রথিও তাদের থেকে কম যায় না, উপরন্তু মাকে বলা ছাড়া বাসা থেকেও বের হয় না।
প্রথির মা এর আবার আমার উপর অগাধ বিশ্বাস যে, আমি একটা ভালো ছেলে।
“পেয়ারা! ঝাল-মশলা দিয়ে পেয়ারা!” আজ সকালে অফিসে যাবার সময় রাস্তায় ফেরিওয়ালা এভাবেই ডাকছিল। পেয়ারা আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত ফল। এই ফল নিয়ে অনেক সুখস্মৃতি আমার মনে এখনও গেথে আছে। তখন আমি এক ঝটকায় ১০ বছর পেছনে চলে গেলাম।
আমাদের ক্যাডেট কলেজগুলোর বিশাল আয়তনের কারণে প্রায় সবগুলো কলেজেই প্রচুর ফল গাছ বিদ্যমান। উদাহরণঃ আম, কাঠাল, জামরুল,পেয়ারা, আমলকী, জাম, ডাব, গাব ইত্যাদি।
(এই লেখাটি আগে অন্য একটি ব্লগে ছাপা হয়েছিলো। নীতিমালা বিরুদ্ধ হলে মডআরেটর লেখাটি সরিয়ে দিতে পারেন।)
১
প্রথম যখন আমেরিকায় আসি, সেই ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসের কথা, মনে হচ্ছিল চারপাশের সবকিছু দেখে খুব বিস্ময়াভূত হবো। কিন্তু না, তেমন কিছু ঘটছিলো না। দেশ আর বিদেশের পার্থক্য তো আছেই। যানজটহীন মসৃণ আর প্রশস্ত রাস্তায় তরতর করে সব ফিটফাট গাড়ি ছুটছিল। এ আর নতুন কি?
আমরা যখন ক্লাস টেনে পড়ি (১৯৯৪) তখন হঠাত ক্যাডেট কলেজ গভর্নিং কাউন্সিল হতে নির্দেশনা এলো এখন হতে সব ক্যাডেট কলেজে ইংরেজি কথোপকথন চালু করতে হবে৷ কিছু শিক্ষক এটাকে তাঁদের ইংরেজি জ্ঞান প্রদর্শনের উত্তম সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করলেন এবং সর্বত্র ইংরেজি প্রয়োগ করতে লাগলেন৷ এর এক একটির নমুনা ছিল আরেকটির চাইতে সাংঘাতিক৷ আজ একটির কথা হঠাত মনে পড়ে গেল৷ তাই লিখতে বসা৷
FCC তে লান্চের শেষে সিনিয়র ক্যাডেটদের কল্যানে ডাইনিং হলে মাঝে মাঝেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটা মহড়া শুরু হয়ে যেত যেখানে মূল ক্ষেপনাস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হত কলার খোসা,
আজকে আবারও হটাৎ করেই লিখতে বসা। আসলে গণহারে এক্সামগুলোতে কাঁচা কাঁচা সব বাঁশ খেতে খেতে লেখতে বসার সময়ই হয় না। সেই সাত সকালে উঠে কাঁধে এক ঝোলা নিয়ে সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে যেতে হয় ইউনিভার্সিটিতে। সারাটা দিন কানের পাশে তুর্কী ভাষায় প্যাঁচাল শুনতে শুনতে যখন দেখি কানটা প্রায় ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে তখন ঘড়ির কাঁটায় প্রায় ৬ টা বাজে। এটা হল আমার নিত্ত নৈমিক ব্যাপার।
জামান স্যারের সঙ্গে আমার পরিচয় ক্যাডেট কলেজে। সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়মতান্ত্রিক এ প্রতিষ্ঠানে যখন প্রথম ভর্তি হই, তখন থেকেই বাবা-মাকে ছাড়া থাকার কষ্ট অনুভব করতাম। সেই কষ্ট কিছুটা হলেও কমে গেল, যখন জামান স্যারকে কাছে পেলাম। ক্যাডেট কলেজে আবাসিক থাকতে হয়। এক রাতে মায়ের চিঠি পড়ে কাঁদতেই পেছন থেকে মাথার ওপর একটা হাত অনুভব করি। তাকিয়ে দেখি জামান স্যার। আমার দিকে তাকিয়ে মমতামাখা কণ্ঠে বলেন, ‘ক্যাডেট কলেজে সবাইকেই বাবা-মা ছাড়া থাকতে হয়।
সঙ্গত কারনে পোস্ট সরিয়ে নেয়া হইল। লেখক অনেক মাইর খেয়েছেন তার ক্লাসমেট দের হাতে :duel: :duel: :gulli: :gulli: :gulli2: :gulli2: :chup: :chup: :brick: :brick: :brick:
ক্যাডেট কলেজের প্রথম দিন। বাবা-মা, খালা-খালু, নানা-নানি, মামা-চাচা সবাইকে নিয়ে ক্যাডেট কলেজে হাজির। কেমন যেন ভয় ভয় লাগছিল। আমার খালাতো ভাই আর চাচা ক্যাডেট কলেজে পড়ার সুবাদে ক্যাডেট কলেজের অনেক গল্প শুনেছি। আর আমরা সবাই যেমন একটু বাড়িয়ে বলতে ভালবাসি নিজের বীরত্ত দেখাতে, আমার চাচা বা ভাই ব্যতিক্রম ছিলেন না। তারাও নিজের বীরত্ত দেখাতে বা শোনাতে ক্যাডেট কলেজের সিনিয়র ভাইদের সম্পরকে এমন গল্প শুনিয়েছেন যে আমি ক্যাডেট কলেজে ঢোকার আগেই ভয়ে মরে যাচ্ছিলাম।