কুয়াশার দেশে, উৎসবের শেষে

শীতকাল সময়টা আমার খুব অপছন্দের ছিল ক্যাডেট কোচিং এর কারনে। ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে যখন শীতে কাঁপতে কাঁপতে পড়তে যেতাম, সদ্য শেখা সমস্ত গালি মনে মনে বাবা মায়ের উপর ঝাড়তাম। আমার শীতবিরক্তি কেটে গেল ক্লাস সেভেনে থাকতে। এসিস্ট্যান্ট হাউস প্রিফেক্ট তাহসিন ভাইয়ের বক্তব্য ছিল হাউসে কোন “পোল্ট্রি” ক্যাডেট থাকবে না। সেই সুবাদে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী প্রতিদিন পিটিতে ১৫ টা পুশআপ দিয়ে পার পেয়ে গেলেও সপ্তম,

বিস্তারিত»

অন্যরকম ডায়েরী

কলেজে থাকতে ডায়েরী লেখার অভ্যাস অনেকেরই থাকে, আমারও ছিল। তবে কখনোই নিয়মিত হতে পারিনি। একবার-দুবার নয়, চার-চারবার ডায়েরী লেখা শুরু করি। প্রথমটা ক্লাস সেভেনে। দ্বিতীয়টা মনে নেই, তৃতীয়টা ক্লাস নাইন-এর শেষ থেকে এস.এস.সি. পর্যন্ত। শেষবার ক্লাস টুয়েলভে।

প্রথমটায় ছিল ক্লাস সেভেন-এর এক বাচ্চা ক্যাডেট-এর সুখ(!)-দুঃখের কথা। এমনকি কোন সিনিয়রের কাছে কি পানিশমেন্ট খেয়েছি, পরিমাণসহ লেখা! তৃতীয়টা কিছুটা পরিপক্ক। তবে তৃতীয়টায় আর গতানুগতিক থাকতে ভালো লাগলো না,

বিস্তারিত»

ইস্তানবুলের ডায়েরি

সময়কে যদি বহমান এক নদীর সাথে তুলনা করি তাহলে জীবনের ওই দুঃখগুলোকে বলতে হবে বহমান ওই নদীতে ভেসে থাকা ছোট ছোট কচুরিপানা। প্রবাসী জীবনের কেটে যাওয়া ৪ টি বছরে পরিকল্পনার ছকে এসেছে নানা রকমের পরিবর্তন আর জীবন পেয়েছে বাস্তবতাকে মুখোমুখি করে দেখার সুযোগ। পরিচিতি লাভ করেছে সেই সব সংগ্রামী মানুষের যারা হয়তবা ছোট ছোট স্বপ্ন বুকে বেঁধে পাড়ি দিয়েছিল মাতৃভূমিকে ছেড়ে হাজার হাজার মাইলের পথ…দেখেছিল রঙিন এক স্বপ্ন আর যাদের বুকের আশায় ছিল মাতৃভূমিতে ফেলে আসা আত্মীয় স্বজন ও মা বাবা…উন্নয়নশীল দেশের কিছু খেটে খাওয়া মানুষজনের সেই স্বপ্নগুলোকে আমি হয়তবা আমার ডায়রিতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আবদ্ধ করতে পারব না কিন্তু হয়তবা আমি পরিচয় করিয়ে দিতে পারব তাদের আশা নিয়ে বেঁচে থাকার সেই সংগ্রামকে…

বিস্তারিত»

ঘটনাবলী-১

বিঃদ্রঃ নিচের প্রতিটি ঘটনার সকল চরিত্র বাস্তব এবং ঘটনা গুলো সত্য। এই ঐতিহাসিক ঘটনা গুলোর বর্ননা শুধু আমার। তাই ঘটনা গুলোর দায়িত্ব নিতে আমি অস্বীকৃতি জানাচ্ছি। শুধু বর্ননার হেরফেরের দায়িত্বটুকু আমার।

ছেলেপেলের কামকাজতো কিছু হয় না খালি অকাম কইরা বেড়ায়, কয়ডা অকামের কাহিনী কই,

১) আমার বাসায় কিছু পোলাপাইন আসছে। সবাই আমার ব্যাচের ক্যাডেট। তো আমাদের তানজিল যখন আমার বাসায় পৌছাইছে যে সময় আমার বাপ আমাদের বর্তমান কাম-কাজ ও আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে বিশদ জ্ঞান দিচ্ছিল।

বিস্তারিত»

তরমুজ

শৈশবেই ছিঁচকে চুরিতে হাত পাকায়নি এমন ক্যাডেটের সংখ্যা বিরল। যদিও ক্যাডেটদের কাছে এগুলো কখনোই চুরি নয় বরং নিজেদের প্রাপ্য হক আদায় করা। সেভেন/এইটে খুব বেশি সুযোগ না থাকলেও  প্রতিভাবান ছেলেদের কখনোই দাবায়ে রাখা যায়না। আর ক্লাস নাইনে উঠে যাবার পর তো চুরির অঢেল সুযোগ। শুধু চোখ কান খোলা রাখলেই চলে।

আমার সমসাময়িক বেশিরভাগ ক্যাডেটের চুরির হাতেখড়ি পেয়ারা দিয়ে। সেভেনের শিশুরা কথায় কথায় হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে( একবার এক জুনিয়রকে  মন ভালো না থাকার কারণে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকতে দেখেছিলাম )।

বিস্তারিত»

হ্যালো, স্লামলিকুম! দৈনিক উন্মাদ থেকে বলছিলাম।

Prank – শব্দটির সাথে পরিচয় ছিলোনা সে সময়। কিন্তু এর পিছনে সময় না দেওয়াটা অসম্ভব একটা ব্যাপার ছিলো। কিন্তূু আমি ছিলাম নেহাতেই চুনোপুটি। এ লাইনে পি এইচ ডি করা বড় বড় ওস্তাদ লোকজনের অভাব ছিলোনা। এরকম একজন ছিলো মোতাকাব্বের ওরফে মোবারক।

উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষার রেজাল্ট দিছে সেদিন। পরিক্ষায় সেই রকম ডাইল মারছি। উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরিক্ষার নম্বরের পার্থক্য হোলো ১৭২ নম্বর। সূতরাং ১ ঘন্টার মধ্যে বাপের প্যাদানির ভয়ে এক বস্ত্রে বাসা ছাড়লাম।

বিস্তারিত»

আজব ক্যাডেট লাইফ এর গজব কাহিনী – ১

ক্যাডেটদের জীবনের (এবং কলেজে ক্যাডেটদের নিখাদ বিনোদনের)এক অবিচ্ছেদ্য অংশ আমাদের স্যার-ম্যাডামরা । এই দুইয়ের মধ্যে চলে এক চোর-পুলিশ কিংবা ইঁদুর-বিড়াল খেলা । ক্যাডেট যত সিনিয়র হয় খেলাগুলোও জমে ওঠে তত বেশি । ক্যাডেট জীবনের তেমন কিছু স্মৃতিই আজ লেখার বিষয়(স্যার-ম্যাডামরা ক্ষমা করে দেবেন প্লিজ)…

একজন মেস ও.আই.সি, কিছু চাষাভুষা ক্যাডেট ও ব্যা-ব্যা ডাক :
ঘটনা-১ : ক্যাডেটরা সাধারণত খুব ভোজন-রসিক প্রকৃতির হয় ।

বিস্তারিত»

টম ক্রুজ

 

অতি সাম্প্রতিক সময়ে এই পরিচিত নামটি আমাদের কানে  কিংবা নজরে এসেছে আলোচিত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব অনন্ত জলিল এর সুবাদে। আরো একটু পেছনে গেলে পাওয়া যাবে ‘মিশন ইম্পসিবল ৪’ এর দুর্দান্ত অ্যাকশন। সোজা কথায় বললে আমাদের আশেপাশেরই বহু রমণী- তরুণী- বালিকার অতি আপনজন এই টম ক্রুজ।

কিন্তু আমি হলিউডের কারো কথা আজ বলছিনা। অনন্ত জলিল কে নিয়েও কিছু বলছিনা।

বিস্তারিত»

“ক্যাডেট” শব্দটা আমার কাছে “স্পেশাল ওয়ান” কিংবা “অনলি ওয়ান”

“ক্যাডেট” এই শব্দটাকে আমার কাছে মনে হয় – “স্পেশাল ওয়ান” কিংবা “অনলি ওয়ান”। ১১/১২ বছরের একটি কিশোর এর কাছে ক্যাডেট কলেজে চান্স পাওয়াটা যেন আনন্দের এক বঙ্গোপসাগর । বাবা-মা’র হাসিমাখা মুখ, পাড়া-প্রতিবেশী সবার অগনিত প্রশংসা, বন্ধুমহলের সবার কাছে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তির স্থানলাভ কিন্তু এত আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই চলে আসে কলেজে যাবার ডাক। মনের মাঝে হাজারো স্বপ্ন সাজিয়ে কোন এক সকালে ব্যাগ-পত্র গুছিয়ে বাবা-মা-ভাই/বোন’কে সাথে নিয়ে সেই কিশোরের যাত্রা শুরু হয় ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্যে ।

বিস্তারিত»

আমি একজন ক্যাডেট

ক্লাস সেভেনে থাকাকালীন ঘটনাটা বলি। কলেজ হাসপাতালে আমরা কয়েকজন মিলে ধরাধরি করে আমার এক বন্ধুকে নিয়ে এলাম। বেচারার অবস্থা আজ বড়ই খারাপ। বেশ টানা কয়েকদিন ধরে আমাদের নভিসেস্‌ প্যারেডের প্র্যাকটিস চলছে। কড়া রোদের নিচে থাকতে থাকতে গায়ের রঙ তো কালো হয়েছেই তার সাথে সাথে আবার গেঞ্জিটা খুললে রোদে না পোড়া অংশটুকু আর একটা সাদা গেঞ্জির মতো লাগে। যাইহোক, আমার বন্ধুটা আজ সকালের প্যারেড প্র্যাকটিস শেষে বাথরুমে গোসলের জন্য লাইন রাখবে বলে দৌঁড়ে আসার সময় পিচের রাস্তায় পড়ে যায়।

বিস্তারিত»

“আগে নাম, তারপর কাম”

কারও নাম না জানা, ভুলে যাওয়া, ভুল বলা অথবা ভুল লেখা, একটি বড় ধরনের অপরাধ। নাম না জেনে কারও সাথে কথা বলতে যাওয়াটাও, মাঝে মধ্যে বিপদজনক হতে পারে। মানুষের নাম নিয়ে আমাকে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আবার নাম না জানার জন্যেও পড়তে হয়েছে নানান ঝামেলায়। ক্যাডেট কলেজে থাকতে নাম নিয়ে একবার এক বড় ধরনের বিপদে পড়ি।

আমি তখন দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। কলেজের ডাইনিংহলে আমি তিননম্বর টেবিলের টেবিললিডার ছিলাম।

বিস্তারিত»

ম্যান প্রপোজেস,গড ডিসপোজেস

লং কোর্স অফিসারদের জন্য বিসিসি এক আতংকের নাম।বরিশাল ক্যাডেট কলেজ নয়,বেসিক কমান্ডো কোর্স ।শরীর ও মনে সাত সপ্তাহের এই কোর্সের ছাপ থেকে যায় বহু দিন পর্যন্ত।কৃতিত্বের সাথে কোনমতে কোর্স শেষ করা অফিসারদের নাকি পূর্ণিমা অমাবশ্যার রাতে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা করে বহু দিন,টাইগার চেজের খুঁজে না পাওয়া বাঘ দুঃস্বপ্নে হানা দিয়ে রাতঘুমের আয়ু কমিয়ে দেয়।তবে সুখের বিষয় হাজার বছর পর পর এই কোর্সের মেয়াদ কমে পাঁচ সপ্তাহে নেমে আসে।স্বর্গীয় আশীর্বাদ প্রাপ্ত কিছু অফিসার সে কোর্স করার সুযোগ পায়।পরম সৌভাগ্যবান আমার এক ইউনিট অফিসার পাঁচ সপ্তাহের এই কোর্স করার সুযোগ লাভ করেছিলেন।সে গল্প করার সময় স্যারের চোখে খুশির ঝিলিক দেখে আমার মনের গহীনে কিসের যেন একটা চিনচিন ব্যথা উঠত।ঠিক তার দুবছরের মাথায় বিসিসি আবারো পাঁচ সপ্তাহ এবং সে কোর্সে আমার নাম বের হয়েছে।অন্যদিকে নাম না আসাদের মাঝে আমার জানের দুশমন আওলাদ রয়েছে।প্রতিদিন একবার করে ফোনে ব্যাটাকে মনে করিয়ে দেই আমি পাঁচ সপ্তাহের বিসিসি করব।মর্ত্যের পৃথিবীতে ব্যাটা আমার চেয়ে দুই সপ্তাহ বেশি নরক যন্ত্রণা ভোগ করবে।এটা যে তার করা কোন মহাপাপের ফসল সেটা জানাতেও ভুলিনা।বিধাতা বোধ হয় সেদিন আড়াল থেকে হেসে উঠেছিলেন।তবে আমি সেটা শুনতে পাইনি।

বিস্তারিত»

ঈদের চাঁদের হাসি

অণুগল্প লিখবো বলে অনেক আয়োজন করে বসেও থেমে যেতে হয় শুরুতেই। ট্রেনের হুইসেল শুনে কানপাতি আমি, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে আপনমনেই বলি,” মহানগর এক্সপ্রেস! ট্রেন এসে গেছে!” নৈঃশব্দের রাজ্য ক্যাডেট কলেজের নীরব-নিশ্চুপ বাতাস কেটে ট্রেনের হুইসেল থেকে থেকে কানে আসে অনেকক্ষণ। স্পষ্ট শুনতে পাই, হেলেদুলে যেতে যেতে ট্রেনটা আমাকে বলছে,” ভালো থেকো খেয়াসোনা!” শ’কিলোমিটার দূরে বসে এই ট্রেনের জন্যে যে আরেকজন অপেক্ষা করে থাকে।

বিস্তারিত»

১০ টাকা,১টি ফোন নাম্বার এবং অন্যান্য

পরদিন পরীক্ষা। এই চিন্তায় কিনা জানি না,রাত ১২ টায় যখন ফেসবুক ব্রাউজ করছিলাম দেখলাম-পরীক্ষার হলে অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াও যাবতীয় অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে হবে এবং তাও সত্যায়িত করে। মাথায় যথারীতি আকাশ ভেঙ্গে পড়ল এবং নিজে পরীক্ষার নোটিশ না দেখলেও সমস্ত দোষ প্রথমেই আর্মির প্রতিষ্ঠান (BUP) কে দিলাম তারপর মার সাথে রাগারাগি করে বাসা থেকে বের হলাম যদি কাগজ গুলার ফটোকপি করা যায়। বাসা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেয়ে (জানি যে সব বন্ধ) ক্ষীণ আশা টা দূর হোলে বাসায় ফিরলাম।

বিস্তারিত»

গাবদা

শেষ রাতের দিকে বৃষ্টি নামল। ঝুম বৃষ্টি। করিডরে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি ছোঁয়ার চেষ্টা করলাম। চোখের পাতা ক্রমেই ঝাপসা হয়ে এল। গাবদাকে মনে পড়ে। গাবদা মানে ওয়াহেদ। আদর করে নাম দিয়েছিলাম গাবদা। একটু মোটা ছিল। ক্যাডেট কলেজের সামরিক পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়তো একটু কষ্টও হয়েছিল। এক সন্ধ্যার কথা। সেনাবাহিনীর এক সদস্য গাবদাকে প্যারেড শেখাচ্ছে। গাবদার মোটা দেহ বেয়ে দরদর করে ঘাম নামছে। ততক্ষণে খেলার সময় শেষ।

বিস্তারিত»