এই আশা নিয়েই বেঁচে থাকা ভাল –
স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট অনেক বেশি ।
জানি সত্যের মুখোমুখি হতে হবে একদিন –
হোক সে প্রতিকূল, কিংবা অনুকূল ।
তবু দুঃখের সত্যকে বিলম্বিত করলেই
সত্য থেকে পলায়ন বলা যায় না –
প্রার্থনা
আমার হৃদয়ে বয়ে চলে
ক্ষুব্ধ জলপ্রপাত,
ঝলসে ওঠে এক টুকরো স্মৃতি;
আমি ডুবে যাই অন্য সময়ে।
অসহায় পরে থাকে
ভুল শব্দের গাঁথুনি;
আজ সেই দিন…
পিস্তলটা রেখে ড্রয়ার বন্ধ করে দিলেন তিনি।
না… এভাবে তাকে ভোগানো যাবে না। মেরে ফেলা যাবে, তাতে সব কিছুর অবসান ঘটলেও সে ভুগবে না। তাকে কষ্ট দিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী অকল্পনীয় কষ্ট…
তিনি বেডরুমের আয়নার দিয়ে তাকিয়ে ধীরে ধীরে কলার এর বোতাম লাগানো শুরু করলেন। খুব ধীরে, অনাবশ্যক সতর্কতায়। বাড়ির পাশের রাস্তায় ততক্ষনে ছোট বাচ্চাদের দৌড় ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছে।
বাচ্চাদের মধুর কলকাকলির শব্দে তিনি আরেকবার ক্যালেন্ডারের দিকে তাকান।
বিস্তারিত»ছেড়া-খোড়া মেঘের পদ্য
বুক পকেটে ছেড়া-খোড়া মেঘের পদ্য
বুকের বাম পাশের
হৃদয়ের ক্ষরিত রক্তের দোলায় দোলে
এক আকাশ ভরা স্বপ্ন নিয়ে রাস্তায়,
বারেবারে ছুটি সম্পাদকের অফিসে,
চোখে জ্বলজ্বলে তারা,ছাপা হয় না,ব্যর্থ চেষ্টায়
পায়ের তলায় দুমড়ে মোচড়ে ফেলা কবিতার পাতা,
আবার কোন এক ব্যর্থ কবিতা লিখব,কোন আড্ডায় বসে
শুভাকাঙ্খির নির্ভেজাল প্রসংশার উত্তফুল্ল ধ্বনি,
সেই পত্রিকা অফিস;
হয়ত এবার রুমালের বদলে ঘামই মুছব আমি
কবিতা দিয়ে,তবু ব্যর্থ হতে দিবনা
আমার ছেড়া-খোড়া মেঘের পদ্য।
স্বপ্নের বাসর
(বাসর রাতে কী হবে, এটা নিয়ে কমবেশি চিন্তা হয়ত সবার মাথায়ই উঁকি দেয়। আমরা যারা এখন ‘কুমার’, এই চিন্তাটা আমাদেরই বেশি। বাসর রাতে বৌয়ের সাথে আমার কী কথা হবে, সেটাই উঠে এসেছে এই কবিতায়। প্রথমে স্বামী, এরপর স্ত্রী এভাবে নিচে নিচে কথোপকথন হিসেবে পড়ে যেতে হবে এটা। কবিতাটা তাইফুর ভাইকে গিফট করা হলো। :gulti: )
-অবশেষে এলো এই রাত
সহস্র প্রতীক্ষার প্রহর পেরিয়ে এলো এই রাত।
শীতের চাদর
ছেঁড়া ছালা গায়ে দিয়ে
ঠাণ্ডা মেঝেতে শুয়ে আছে সে,
গায়ে বিঁধছে সূঁচের মতো
বরফ শীতল ঠাণ্ডা বাতাস
– তবু শিশু শুয়ে থাকে
অভ্যস্ত ভঙ্গীতে, কাঁপতে কাঁপতে ঠক ঠক;
সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার দু’বছর পর
এই বেশ ভালো আছি –
শেষ হয়ে যাওয়া ভালোবাসার চর্বিত চর্বন নিয়ে
জাবর কাটছি শেষ হওয়া বলদের মতো।
যে যাই বলুক, ভালোবাসাহীনতার এক চরম আনন্দ আছে –
আর তা হলো দায়বদ্ধতাহীনতার সুখ, উপরি হিসেবে নতুন গাভীর স্বপ্ন।
আমার দীর্ঘ প্রেমময় জীবনের সুখস্মৃতিগুলো
কালের ধূলোয় হারিয়ে যাচ্ছে, যাবে;
দগদগে ঘা-এর মতো আরো উজ্জ্বল হবে
সেই সময়ের কষ্টগুলো – বর্তমানে সেগুলোই বেশী মনে পড়ছে।
তুমি যা হতে চেয়েছিলে একবার, সেরকম হয়ে ওঠা হয়নি তোমার
ছাইদানির মানচিত্রে খয়েরিদাগেরা বলে তুমি সেখানে শুয়েছিলে পরতে পরতে
তুমি যা হতে চেয়েছিলে একবার, সেরকম হয়ে ওঠা হয়নি তোমার
বিছানায় ফিরে যাবার সময়ে তোমার চোখেও কয়েকটি মৃত্যু জমে থাকে
তুমি যা হতে চেয়েছিলে একবার, সেরকম হয়ে ওঠা হয়নি তোমার
সেখানে বিষন্ন বালিশ কেঁদেছিল তিনযুগ জেগে থাকা বিনিদ্রতায়
শীত রাতের কুয়াশা শাল গায়ে খুব মোলায়েম ব’সা ছিল রোদে
সূর্যে আগুন ধরে গেলে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো
বই-মলাটের ভাঁজে ভাঁজে তখনও জেগে থাকে অলস জন্ম-কোষ
তুমি যা হতে চেয়েছিলে একবার,
বিস্তারিত»বৃষ্টির আনন্দ
আজ সকালে সবুজ টিপ পরবে বলে –
খুঁজে দেখ সব টিপ আছে, তবে সবুজটা নেই।
খোঁপা বাঁধবে বলে ধরে রাখছ চুলের গোছা –
অথচ কেন যেন খোঁপাটা বাঁধছে না কিছুতেই।
আজ সারাটা রাস্তা নিস্তব্ধ, নেই কোন রিক্সা
রোদে পুড়ে ঘামছ তুমি, আর জ্বলছ রাগে –
দিনের শুরুতে সবকিছুতে না, শঙ্কা জাগে মনে
শেখ আলীমের হাইকু -১
শেখ আলীমের হাইকু -১
সাকুরার দেশে শেখ আলীমের হাইকু
পাঁচ সাত পাঁচ শব্দে সূচিত বর্ণ মালা
তিন পঙক্তিতে অবলোকনের বিশ্ব জানালা।
বর্ষায় ধোয়া একটি কদম কলি
আনত আঙ্গুল মেহেদী লতানো করপুটে দেই তুলি
শ্রাবণে এ কোন অমোঘ নিমজ্জন।
প্রেমিকার ঠোঁটে নিউইয়ার উদযাপন
সবুজ নিবিড় বনের মাঝে
তুমি আমি এতো কাছে,
ক্যাম্পফায়ারের আগুন আঁচে
তোমার মায়াবী মুখ, আরো মোহনীয় লাগে
যেন এমন রহস্যময়ী কেউ দেখেনি আগে।
তুমি আমি আরো ঘন হয়ে বসি
দুজনে মিলে বিগত বছরের,
ভালোবাসার হিসেব কষি।
শীত
- রেনেসাঁ পর্ব
(জীবনানন্দ দাশ স্মরণে)
বিম্বিসার নগরে উঠেছে ঘোলাটে ময়লা চাঁদ
অরূপাক্ষ নদীতে পড়ে বালুচর। প্রিয়তমার মিথ্যা শরীরে
ডোবে কুহক-পুরুষ, প্রেমিক হতে পারে সে যদিও,
চুপ!- দেখো কুৎসিত কালো জলে ভাসে প্রণয়ের লাশ।
যাবতীয় ব্যর্থতাবাদী-বিধাতা-পূজারী সকল
ঘেটেঘেটে কাদাপাঁক রণে ভঙ্গ দেয় সেই রাতে
বিক্ষোভ মিছিল চলে অবিরাম গতিতে
দেবতাবিহীন রাজার স্বৈরাচারী সাম্রাজ্যে।
একটিবার এসো তুমি
(উত্সর্গ পর্বঃ সঙ্গত কারণে এই কবিতাটি গিফট করা হলো আমাদের প্রিয় কমান্ডো আহসান ভাইকে। সাথে সবার জন্যে FREE হিসেবে থাকছে নিচের ছবিটা।)
আঁধার পেরিয়ে এসো তুমি মেয়ে
দ্বিধার পর্দা গলে এসো
গোধূলি লগনে অবারিত দিগন্ত জুড়ে এসো
কিংবা হাসনাহেনার গন্ধ নিয়ে এসো
নতুবা হেলেনের সাজে এসো।
শপথ
ডিসেম্বর মাস, আমাদের বিজয়ের মাস, স্বাধীনতা অর্জনের মাস। তাই বিজয় কিংবা স্বাধীনতা নিয়ে কিছু লিখতে খুব ইচ্ছা করছিল। কিন্তু মাথার মধ্যে কিছুই গোছাতে পারলাম না। ২০০১ সালে বি এম এ তে থাকাকালীন ম্যাগাজিনে একটা কবিতা দিয়েছিলাম। ওটা ছাপাও হয়েছিল। আসলে কবিতা বললেও ভুল হবে। বস্তুত এটা একটা ছড়া। এখন হঠাৎ মনে পড়ে গেল। এখানে সবার সাথে সেটা শেয়ার করতে ইচ্ছা করছে। সামান্য পরিবর্তন করে ওটাই এখানে তুলে দিলামঃ
শপথ
বহুদিন পর হঠাৎ যে আজ
মনে হলো এক করুন কথা,
অনন্যার চোখ
…ক্রমশ কীটচলনের ফলে আমার মাথার ভিতরে নাগাসাকি ঝরে পড়তে থাকে বলে আমি চোখ মেলে নির্লিপ্ত মনিটরে ফোটন খুঁজি, পিক্সেল ভেঙে ভেঙে দুইশছাপ্পান্ন রং ঢুকে পড়ে ইন্দ্রিয়পথে; সেখানে তাদের ইগলু-ঘরের পাশে রোম রোম পেতে ধূসর জর্নাল পৃষ্ঠা উন্মোচনের গাঢ়বিষাদের আয়নার ওপাশে অনন্যার চোখে ঝিলিক বুলায়। রুঝ মুছে গেলো কিনা বুঝে ওঠার জন্যে অনন্যা একবার তাকিয়েছিল পারদলেপা তলে, সেজন্যেই ফ্রেমের মাঝখানে তার গোলাপি ঠোঁট তিরতিরিয়ে গোপন কথাগুলো বলে ফেলে অকপটে।
বিস্তারিত»