আমরা যদি এ বিশ্বের নৃতত্ব পুনরায় ঘাটি
আর তালিকাবদ্ধ করি সমাজের উন্মেষ নৈর্বত্তিক দৃষ্টিতে
তবে উপেক্ষায় কাদবে সাদামেঘসমুহের আকাশে নীলের সঙ্গম।
কিভাবে লাল সুর্যোদয় হয়ে উঠে প্রেমিকার ঠোটে চুম্বন
পৃথিবী কোন দিক হতে সবুজ হয়ে ঊঠল আর কিভাবে বিমুর্ত সঙ্গীত
পটভুমিকায় বেজেই চলল,
বৃষ্টি-৩
কোন দূরদূরান্তে পড়ে রয়েছো
বৃষ্টি দ্যাখোনা কতকাল,
কতকাল শোনোনা ঝমঝম বরিষণ
আজ তোমার বাড়ি যাবার পথে তাই
কিনে নিয়েছি
এক বাক্স উৎকৃষ্ট বৃষ্টি।
ভেজার একটা উপলক্ষ আজ
জননিরাপত্তা
দিনকে দিন কেমন যেন
বদ্ধ হয়ে যাচ্ছে বাতাস,
চারদিকেতে শুনতে পাই
মৃত্যুশীতল হা-হুতাশ।
সকালবেলা ঘর থেকে সব
মানুষগুলো বের হয়ে যায়,
বৃষ্টি-২
একটুখানি শুকনো মাটি-প্রধান উঠোনমত জায়গা — ঘাস নেই, পরিধি ঘিরে কয়েকটি গাছ — ক’দিনের বিষ্টিতে-পিছল-কালো শরীর নিয়ে বিষণ্ণ ঝুঁকে। আজো, আকাশের সাদাটে ক্যানভাসে ৩B পেন্সিলের মোটা মোটা শেড লেগে আছে — যখন তখন শুরু হয়ে যাবে জলীয় সূঁচের অনবরত পতন; বৃক্ষেরা ঘিরে আছে যে জায়গাটুকুন,তাকে চকিতে ভীষণ সম্ভাবনাময় মনে হয়– মনে হয়, প্রকৃতির ইংগিতে আজ পাল্টে যাবে তার পুরনো পরিচয়।
বলতে না বলতে প্লাটুন-সেনানীর মতো বর্ষার বাহিনী আসে ধেয়ে–
বিস্তারিত»বৃষ্টি-১
এবং এইমাত্র
চৌরাস্তার মোড়ে এসে
দাঁড়াতে’
সমস্ত ট্রাফিক
ছবির মতো জমে গিয়ে
পলকহীন হেডলাইটে
ড্যাবড্যাব তাকিয়ে দ্যাখে
অচেনা আবরণ
ভুলে যাও জীবনের দুঃখগুলো
খুঁজে নাও সুখ-
বেরিয়ে এস কষ্টের বৃত্ত থেকে।
কেঁদো না নিজে,কাঁদিওনা কাউকে
উদ্ভাসিত হও স্বর্গীয় হাসিতে।
হয়ত কেউ দেখছে তোমায়,
বহুদূর থেকে,সঙ্গোপনে।
মন খারাপ গল্প
জলে ভেজা একখন্ড কাগজ। তার কীবা দাম এই জীবন-সংসারে? কাগজটির গায়ে লিখে থাকা এককালের বিখ্যাত কোনো কাব্য-গল্প কেউ এখন তুলে দেখে না। পথিকের পদভারে দলিত হয়, অবহেলায় মুষড়ে পড়ে। দক্ষিনা হাওয়া এসে যদিবা উড়িয়ে নিয়ে যায়- এ প্রত্যাশায় বুক বাঁধে সে, কিন্তু তার ডাকে বন্ধুবেশে আসেনা কেউই। রোদের ঝলকে কিছুটা শুকিয়ে আসতেই আবার বৃষ্টির বৈরিতা নেমে আসে তার উপর। আবারো সে জলে ভেজা কাগজ, আবারো বর্জ্যের জীবন।
বিস্তারিত»দ্বিধাবিভক্ত আমি
স্নানপর্ব
কারেন্ট-ছিলোনা-সন্ধ্যায়
অগত্যা ছিলো মোম
দেয়াল জুড়ে কাঁপতেছিলো ছায়া
জলের শব্দ পড়ে অবিরল….
বালতিসমেত জল তুলে ওই কায়া
বিস্তারিত»কূলধারার গল্প
[প্রাক-কথন: ২০০৬ এ বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলাম ভারতের রাজস্থান প্রদেশটিতে। সেখানকার জয়সলমীর অঞ্চলটির নাম নিশ্চয়ই অনেকেরই জানা।
সত্যজিত রায় খ্যাত সোনার কেল্লা এখানেই অবস্থিত। তো জয়সলমীর থেকে প্রায় কুড়ি কি.মি. পশ্চিমে রয়েছে কূলধারা নামে একটি পরিত্যক্ত জনপদ। প্রায় দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে সেখানে কেউ থাকেনা, অথচ এক-ইটের আনুমানিক পাঁচ হাজার ঘর দাঁড়িয়ে আছে মাথা তুলে। প্রচলিত ইতিহাস বলে,পঁচাশিটি গ্রাম জুড়ে এখানে বাস করতেন কৃষিজীবী ব্রাহ্মণদের একটি গোষ্ঠী।
হাইকু জগতে আমি : প্রথম পর্ব
আলিমুজ্জামান ভাই (জেসিসি) এর কল্যাণে হাইকুর সাথে দেখলাম সিসিবির পরিচয় হয়েছে। তাই আমার কিছু হাইকু শেয়ার করার দুঃসাহস দেখাচ্ছি। 😕 আরেকটা ব্যাপার হল নেটে পঁচা ডিম ছুঁড়ে মারার কোনো চান্স (পড়ুন ইমো) নাই। :grr:
যেভাবে শুরু
তখন নিউ এজ সবে প্রকাশিত হয়েছে, লিটেরারী এডিটর নিয়াজ জামান ম্যাডাম। আমি তখনো ফার্স্ট ইয়ার এর গন্ডি পেরোই নি। একদিন ডিপার্টমেন্টের নোটিশ বোর্ডে দেখলাম নিউ এজ এবং জাপানীজ দূতাবাস একটা হাইকু প্রতিযোগিতার জন্যে হাইকু চেয়েছে।
বিস্তারিত»রক্তাক্ত উল্লাস (রক্তাক্ত সুখ-এর ২য় পত্র)
গীর্জাটি এখনো পড়ে আছে
নির্জন,স্পন্দনহীন কোন স্থানে
পরিচর্যার কেউ নেই
ছোঁয়াও হয় না বাইবেলটি
দেয়ালে আশ্রয় নিয়েছে গাছ
আগাছা আগলে রেখেছে পথটি।
ছোট কবিতা – ২
উৎসর্গ: ফয়েজ (৮৭-৯৩) এর সর্বশেষ ব্লগ।
১.
কই সব,
শৈশবের
সই সব?
২.
সই ছি!
সখ করে এত
নিপীড়ন সইছি?
কৈফিয়ত
কৈফিয়ত
মাঝে মাঝে তোমার চোখে থমকে তাকাই কেন?
বোঝনা তা! জানিও বুঝবে না।
কারন কবিদের চোখে বিশাল আকাশ,
যার আসমানী বুকে পেঁজা পেঁজা মেঘ; হঠাত কখনো,
গোধুলী আলোয় তাতে অনেক অচেনা রঙ।
কবিরা উলুখড়, যেন বিদেশী হাওয়ার প্রেমে
চিরচেনা ঘাস-মাটি ছেড়ে-ছুঁড়ে চলে যেতে চায়।
তারা প্রেমিকাকে পাশে রেখে তার পানে চায়নাকো!
বরং উদাত্ত আকাশ বা শিরীষ গাছের দিকে চেয়ে
কি উদাস কল্পনায় তার ঠোঁটে রাখে ঠোঁট!
ফুটপাত পর্ব
তোতাপাখি কুতকুত খাম থেকে খামে
তোতাপাখি পায়পায় কোনখানে থামে!
লালঠোঁটে ঝুলে দ্যাখো ললাটের লেখা
রত্নগুণে মুছে যাবে অলক্ষুণে রেখা
তাহাকেও পেয়ে যাবে না পাইতে যারে
এই শ্লোক গাঁথো যদি হৃদয়-মাজারে;
খাম তুমি যাও উড়ে রজকিনী-ঘাটে
চণ্ডীদাসের বারোবর্ষ যেইখানে কাটে
লালঠোঁটে নীলকথা কও কানেকানে
নয়নেরা ভেসে যাক নয়নের পানে
পাখি তুমি সন্তর্পণে দৃশ্য ফ্রিজ করো
ফুটপাতে চণ্ডীদাস জ্বরে মরোমরো।।