তুমি যখন খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে,
চোখের কাজল লেপ্টে ফেল,
কিংবা মেজেন্ডা রঙের জামার সাথে,
ভুল করে পড়ে ফেল নীল চুরী।
অথবা তোমার টিপ পয়তাল্লিশ ডিগ্রী কোণ করে,
সরে যায় কপাল থেকে।
তখন মনে হয় এই অগোছালো তুমিই বুঝি,
আমার অসমাপ্ত পৃথিবীর অবিন্যস্ত দেবী।
আচ্ছা,
তখন কেমন লাগে বলবে?
যখন তুমি আমার কনিষ্ঠা আঙুল ধরতে গিয়ে,
একুশে ফেব্রুয়ারি- রাত বারটার পরে
হঠাৎ থেমে গেছে বাতাস
গুমোট হয়ে গেছে চারদিক,
হিজল তমাল সুন্দরি গরান নুয়ে পড়েছে,
রাতচরা পশুপাখির ডাক
অথবা ঝি ঝি পোকার একটানা শব্দ এখন নেই,
একটু আগের উজ্জ্বল চাঁদের আলো
এখন অনুজ্জ্বল হয়ে শুধু উপস্থিতি জানান দিচ্ছে,
ঝিরি ঝিরি বাতাসে কৃষকের ধানক্ষেতে –
কম্পিত সবুজ পাতগুলো এখন আর নড়ছে না,
সমুদ্রের ফনিল ঢেউয়ের উদ্দামতা এখন আর চোখে পড়ে না,
জাপানী মামার সনেট
আহা কি সুন্দর দেখো, পূর্ণিমার রাতি
আকাশেতে উড়িতেছে একপাল হাতি।
শরীরেতে নেই কোনো উড়িবার পাখা
পদগুলো নীচে থেকে মেলে দেয় শাখা॥
পদের শাখার দ্বারা জুড়িয়া আঘাত্
হাতি গুলো উড়ে যায় মেলে দিয়ে হাত॥
গগনে দেখিয়া হাতি তেলাপোকা ভাবে,
আমি কি পারিব কভু এভাবে উড়িতে?
হাতিদের আছে মুখে শুঁড় একখানা,
দুইখানা শুঁড় মোর, সাথে আছে ডানা॥
যেই ভাবা সেই কাজ,
“তেলাপোকা কেন উল্টে মরে ”
অনিন্দ্য ইমতিয়াজঃ
চিঠিটা খুলে বার বার দেখি
আরও একবার-
লেখাগুলোর উপর হাত বুলোই,
নিস্প্রান এই লেখাগুলো এত সজীব কেন?
কি মায়ায় এরা আমাকে ডাকে-
বারেবার; জানিনা।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন করে
কখনও বা উপদেশ, আবার হঠাৎ হঠাৎ –
খুচরো কিছু ভালোবাসার আবেশ।
খাটের পাশে রাখা গিটারটা তুলে নেই
“টুং টাং” কিছু অচেনা সুর –
ভোরের আলো
আমি দুঃস্বপ্ন দেখে চিৎকার করতাম
রক্ত মাখা শরীর , ছিন্ন বসন
বোবা চোখের চাহনি,
আমার ঘুম হয়নি হাজারো রাত
রক্ত মাখা শরীর , ছিন্ন বসন
বোবা চোখের চাহনি,
আমাকে তাড়া করে ফেরে।
আমি রাস্তাই হাঁটতাম ভীত হয়ে
আমার চারপাশে পিশাচের দল পতাকা নিয়া উল্লাস করে,
আমি ঘরে বন্দি ছিলাম।
আমি চিৎকার করে বলতে পারিনা
ওরা আমার কণ্ঠ চেপে ধরে
আমি কথা বলা ভুলে গেছিলাম।
বর্ণমালার আর্তি
‘ঘ’ ছিটকে পালালো ঘাসের সঙ্গী হবে বলে,
জ্যামুক্ত ছুটে গেলো তৃণের মূর্ধণ্য ণ
‘আমি কি ভুলিতে পারি’ কণ্ঠে তুলে
নিয়েছে “আ’-কার —
করজোড়ে ঋ-ফলা এসেছে কাছে
অনুনয়ে বলেছে
‘ঘৃণা’ শব্দেরও যোগ্য নয়
কোন রাজাকার।
(গতকালের ফেসবুক স্ট্যাটাস)
বিস্তারিত»শাহবাগ শাহবাগ!
মোড় ঘুরতেই জ্বলজ্বলে চোখে এ কে?
ভড়কে গেছি তার ডোরাকাটা বেশ দেখে।
মৃদু হেসে বলেছে টাইগার,
‘ডরাস ক্যান, নস তো রাজাকার,
বেজন্মাদের টুঁটি ছিঁড়বো বলে
এবেলা রাজপথে এলাম চলে;
ততক্ষণ বিনিদ্র বসে থাক
রুদ্র আর বিস্ফোরিত শাহবাগ
ততক্ষণ ঠহল দিতে যাক
বাংলার যত দুর্বীনিত বাঘ’।
(দু’দিন আগের ফেসবুক স্ট্যাটাস)
বিস্তারিত»কাক-কবি-চিল
১.
অতঃপর ভোর হবে,
আমি হাততালি দিয়ে বলবো,”পায়রা ওড়ো!”
তুমি চা আনতে আনতে বারান্দার রকে বসে একবার দেখবো
ডিগবাজী খেতে খেতে নেমে আসছে আমাদের প্রিয় গিরিবাজ
আমিও বৃদ্ধ হবো একদিন,যেমন তুমিও…আমাদের ধূসর চুলে
হাত রেখে সময়ের ওল বুনে যাবে,
রঙচঙে সুয়েটার গায়ে আমাদের সন্তানেরা রোদ্দুরে দাঁড়াবে
শুধু ভাঁড়ার ঘরের খোলে পড়ে থাকবে পুরোনো মেসেজ,
আর আজকের মতই দুরত্ব- ২৯৩ মাইল মাত্র
আর ইঁদুরের থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৩ হাজার ইনবক্স!
তোমার হাতটা ধরতে দেবে তো?
আজ ভোরের সূর্যটা দেখেছিলে নিশ্চয়ই?
শীতবুড়ির কুয়াশার চাদরের আড়াল থেকে বেড়িয়ে কেমন রঙ্গিন হয়ে উঠেছিলো!
কিন্তু সেই রাঙা রোদ নয়, তোমার রাতজাগা চোখের তারায় ঝিকমিকিয়ে উঠা
দেশপ্রেম আর চেতনা আমার ঘুম ভাঙিয়েছে আজ!
ভোরের প্রথম আলোকরশ্মি মেখে মিটমিটিয়ে হাসছিল জড়াজড়ি করে দাঁড়ানো
রংধনু রঙ ডালিয়া, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকারা-
কিন্তু তোমাদের তুলির আঁচড়ে জ্বলজ্বল করতে থাকা প্রাণের বর্ণমালা যখন
ব্যানার,
বিস্তারিত»দাউ দাউ করে জ্বলুক পাপ মোচনের এই খান্ডব দাহন
দাউ দাউ করে জ্বলুক পাপ মোচনের এই খান্ডব দাহন
(৭১ এর হায়েনা, হিংস্র রাজাকারদের ফাঁসি বাস্তবায়নের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা তরুণ মুক্তিসেনাদের উদ্দেশ্যে, জয় হোক নতুন প্রজন্মের)
কাদের-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী আর গোলাম আযমদের রক্ত চাই- মৃত্যু চাই
মৃত্যু চাই- বিচার চাই, বিচার চাই- বিচার চাই দাবিতে
চীৎকার করে করে মায়েদের চীৎকার বোনদের চীৎকার-
ক্ষীণ হয়ে আসে সব শহীদের চীৎকার !
অপূর্ণতা ( নামটি কিন্তু হতে পারত রেড কার্ড)
অপূর্ণতা ( নামটি কিন্তু হতে পারত রেড কার্ড)
অনিন্দ্য ইমতিয়াজ–
না! হলনা।
এবারও হলনা।
ছুটতে ছুটতে এবারও তার কাছে পৌছেছিলাম-
কিন্তু কি লাভ ?
তাকে তো পাওয়া হলনা।
তাকে দেখলাম, অনুভব করলাম
এমনকি মাড়িয়ে এলাম – তার ছায়াও
কিন্তু সে এবারও হেসে গেল বিদ্রুপের হাসি।
বিদ্রুপ ! উপহাস !
এগুলোই কি কেবল বরাদ্দ আমার জন্যে ?
হয়ত হ্যাঁ ।
ভাগ্যবিধাতা হয়ত আমায় দেখে শুধুই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন…
খেলাঘর
খেলাঘর
অনিন্দ্য ইমতিয়াজ
(………………………………………… this is dedicated to all cadets of 53rd batch of fcc)
আমি কোন বিতর্ক করতে আসিনি,
আসিনি কোন উপদেশ দিতে
শুধু একটি গল্প বলতে এসেছি,
শুধু একটি গল্প।
নাহ! এ কোন ইতিহাস নয়,
রূপকথা? তাও নয়,
শুধুই গল্প, শুধুই কল্পনা –
“একটা ঘর ছিল, খেলাঘর,
খেলার জন্য কিছু পুতুল, সুতো আরও কত কি!
পুতুলগুলো যেন ঠিক লজ্জাবতীর পাতা,
একে অন্যকে আড়াল করে ফেলত পরম মায়ায়
যেন কেউ ছুঁতে না পারে।
দুঃস্বপ্ন
সবইতো সরলরেখা ছিল
অথচ প্রতিনিয়ত কত কি ভাবি ;
চারদিকে অসভ্যতার মাত্রা বেড়েই চলেছে
মাঝে মাঝে নিজেকেও অসভ্য বোধ হয়
কখনো কখনো মনে হয় আমি বোধ হয় মানুষ নই।
মানুষ হলে
শকুনের যৌনাঙ্গ খুবলে খাওয়ার গল্প
কিভাবে এতো নিরুত্তাপ হয়ে শুনি ?
মসজিদ মন্দির আর গির্জায় একাকার সমাজ
তারপরেও প্রশ্ন জাগে
প্রভাতে কেন দেখি শিরোনাম
হিংস্র পিশাচ মানুষ যম
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দরতম ।
আমার পঞ্চসত্ত্বা
আমার পাঁচটি ইন্দ্রিয় বহুদিন ধরেই অক্ষম
আমার দৃষ্টি,আমার শ্রবণ,আমার স্পর্শ,
আমার স্বাদ,আমার ঘ্রাণেরা সহস্র শতাব্দী ধরে বিমর্ষ।
যেদিন আমায় প্রথম কবিতা শুনিয়েছিলে
সেদিন থেকেই আমি বধির। তারপর কত তানসেনের গান,
রবিশঙ্করের সেতার,টিনের চালে বৃষ্টি,চুড়ির টুং টাং।কেউই
কাঁপাতে পারেনি আমার বধির কানের পর্দা।
একবার তোমার কাঁধে পড়ে থাকা নাতিদীর্ঘ ভেজা চুলে
নাক ডুবিয়েছিলাম।তারপর কি যে হলো আমার ?