সবাই আমাদের ব্লগ পড়ে হয়ত ভাবছে আমরা স্যার-ম্যাডাম দের দেখতেই পারিনা। কলেজে এমন কিছু স্যার-ম্যাডাম পেয়েছি যা পেয়ে আমি গর্ব করি। এদের একজন হালিমা ম্যাডাম। ওনার আলাদা কোন টিজ নেম ছিলনা। ওনার টিজ নেম একটাই ছিল হালি মা। কোথা থেকে যেন শুনেছিলাম ওনার ৪ কন্যা ।৪ কন্যার মা হিসেবেই হালি মা নাম এর উৎপত্তি। তারা সবাই নাকি গার্লস ক্যাডেটে পড়ে। ওনারা যদি এই লিখা পড়ে তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

ইন্টার পরীক্ষার আর বেশি বাকি নাই। আমরা তখন সারাদিন ব্লকে থাকি। কোথাও যাইনা। সারাদিন নাইটড্রেস পড়ে ঘুরে বেড়াই ঘুম ঘুম চোখে। সবাই ভাবে দিন রাত পড়তে পড়তে আমাদের ঘুমেরও সময় নাই। ঘুম ঠিকই হয়না তবে শুধু যে পড়ি তা না। অনেকে পড়েনা ঠিকই কিন্তু ঘুমায় না। candidate ঘুমাইলে প্রেস্টিজ থাকে না। আমার আবার একটা নির্দিষ্ট রুটিন আছে। সব কিছু ভাগ করে রাখি। রাতের বেলা লাইটস অফ এর পর পড়তে বসি।

এই ব্লগে যারা লিখছে তাদের পরিচয় পাওয়ার জন্য আমাদের কথায় গেলাম। গিয়ে দেখি আমিই এই ব্লগের সিনিয়র মোস্ট রাইটার। বেশির ভাগই ৯৯ ব্যাচ। এরপর রাতে শুয়ে ভাবছি ৯৯ ব্যাচ কোনটা আমাদের কলেজের। সাথে সাথে আমার সেই দুঃস্বপ্নের দিনের কথাটা মনে পড়ে গেল। এতদিন যা লিখেছি সবই মজার কাহিনী। আজ তাই সেই দিনের কাহিনী লিখার চেষ্টা করি। আমি কোনদিন কাউকে এই কাহিনী ভালো করে বলতে পারিনি।

ক্যাডেট কলেজের ব্লগে রোমান্টিকতা নেই এই আক্ষেপ যাদের তাদের আক্ষেপ ঘুচানোর একটা দায়িত্ব নিলাম। আমাদের কলেজের খুবই একটা জম্পেশ কাহিনী। স্পর্শকাতর বলে কিছু নাম গোপন রাখা হইল কেবল নায়কের নাম ব্যতিত।
ইউসুফ হল নায়কের নাম। সেই হিসেবে নায়িকার নাম জুলেখা দেওয়াই উচিত।

মাহবুব স্যার, বোটানি। চরম তার ব্যক্তিত্ব। সারাক্ষণ একটা ভাব নিয়েই থাকেন কিন্তু কথা বলার সময় বেশ মজা করে কথা বলেন। ওনার একটা কাহিনী। হাউস ফাংশানে ছেলেকে নিয়ে এসেছে উনি। (প্রসংগত উনি সিলেটি এবং কথাবার্তায় সিলেটি টান বিদ্যমান)। হাউস ফাংশান গুলাতে প্রায়সময়ই একই ধরণের মেনু থাকে। টি এর সবচেয়ে ভালো মেনু পেটিস হয়তবা একটা মিষ্টি আর চা। সাথে হয়তবা কোক। স্যার ছোট ছেলে কিছুক্ষণ ধরেই ফাংশানের অপরিহার্য অংশ বক্তৃতা শুনছে।

ক্লাস এইটে উঠেছি তখনো নতুন জুনিয়র আসেনি। প্রায় প্রতি ব্যাপারেই এইটের সাথে লাগে লাগে অবস্থা। আমরা হয়ত কোন বড় ভাইকে পটিয়ে ডাইনিং টেবিলে হাত তুলে খাওয়ার পারমিশন পেয়ে গেছি। কিন্তু ওরাও কম যায়না অন্য প্রিফেক্টের কাছে চলে গেছে ওইটা নাকচ করে দেবার জন্য। আবার আমরা সালাম দিচ্ছিনা ওইটাও তাদের মহা মাথাব্যাথার কারণ। আরো হাবিজাবি কত কিছু তো আছেই। তার ই মধ্যে অনেক এর সাথেই ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠছে।

সিলেট ক্যাডেট কলেজের ডায়ালগ এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু ঘটনা । সব যে আমার সামনেই হয়েছে তা নয়। অনেকগুলা আমার শোনা। তেমন একটা দিয়ে শুরু করি। রাখাল স্যার কে অনেকেই চিনে ফেলেছে। এক রাখাল স্যার কে দিয়েই একটা ব্লগ সাইট বানানো যাবে বলে তাকে যারা দেখেছে তাদের ধারণা। আমার সেই সৌভাগ্য (?) হয়নি। আমার ছোটভাই (রায়হান, স.ক.ক) রা পেয়েছিল ওনাকে। তার মুখে শোনা…

ক্যাডেট কলেজের সবচেয়ে অবিচ্ছেদ্য অংশ টিজ নেম। ক্লাস সেভেনের প্রথম কয়েকদিন বাদ দিলে বাকি ৬ বছরের প্রতিটা সময় মনে হয় টিজ নেম বানান ওইটার modification আর নতুন নতুন শানে নুযূল সহ নাম এ ছাড়া ক্যাডেট দের ভাত হজম হয়না। এখানে সিলেটের কিছু টিজ নেম এবং যতটা মনে আছে শানে নুযূল দিলাম।

যেহেতু এটা আমার প্রথম লিখা তাই লিখার আগে একটু কথা বলে নেই। এক সিনিয়র ভাইয়ার কাছ থেকে এটার খবর পেয়ে এসে পরীক্ষার মাঝে এসেও ৩ ঘন্টা লাগিয়ে দিলাম পুরান ব্লগ গুলো পড়তে। সত্যি কথা এদের কে বলতে ইচ্ছা করছিল গেমস এর পর ক্যান্টিন এ আসিস একটা কোক খাইয়ে দিব। (ক্যাডেট মাত্রই জানার কথা গেমস এর ১ ঘন্টা কাটিয়ে ক্যান্টিন এর বরফ হয়ে যাওয়ার একটু আগের কোক কি জিনিস) ।