প্রথম কোন শিক্ষকের বিদায়ঃ
যে শিক্ষক আমাদের প্রথম পাক্ষিক পরীক্ষাটি নিয়েছিলেন এবং যাঁর পরীক্ষায় আমি আমাদের সেকশনে প্রথম পরীক্ষাতেই সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলাম, তিনিই দুর্ভাগ্যক্রমে সবার আগে আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন জনাব হাফিজ উদ্দিন খান। মূলতঃ পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক হলেও তিনি সপ্তম শ্রেণীতে আমাদের অঙ্ক ও জ্যামিতির ক্লাসগুলো নিতেন। তিনি অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মানুষ ছিলেন। ঐ অল্প ক’দিনেই আমরা তাঁর কাছ থেকে অনেক ভালো ভালো উপদেশ পেয়েছিলাম।
রাগ
কথায় কথায় আসো তুমি,
জাপটে ধরো মনটাকে,
উস্কে দিয়ে বাধ্য করো,
কঠিন পণে আটকাতে।
একটু পরেই একটুখানি
মিষ্টি কথায় যাও ভিজে,
সব ভুলে যাও এক নিমেষে
একটু আদর আহ্লাদে!
বরফ যেমন গলে তাপে,
তেমন গলো অশ্রুতে,
কঠিন তোমার বাহিরখানি
তরল ভেতর দিকটিতে।
গলেই যদি যাবে তুমি,
আর এসোনা ক্ষণে ক্ষণে,
জীবনের জার্নাল – ১৯
চলনে বলনে, পোষাক পরিচ্ছদে, কথা বার্তায়, সব কিছুতেই উইং কমান্ডার কীয়ানির একটা সফিস্টিকেশন ছিলো। অত্যন্ত সুদর্শন এই এয়ারফোর্স অফিসার চিত্রজগতে প্রবেশ করলেও যে তিনি বক্স অফিস তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতেন, সে কথা প্রায় নিঃসন্দেহে বলা যায়। ঐ সময়ে দেশের সিনেমাহল গুলোতে একটা জনপ্রিয় ইংরেজী ছায়াছবি The Night Of The Generals চলছিলো। সেই ছবির অন্যতম নায়ক Peter O’ Toole এর সাথে তাঁর চেহারা, চালচলন এবং স্বভাবের অনেক মিল ছিলো।
বিস্তারিত»ঘুম দিয়েছে আড়ি
এলোমেলো ভাবনাগুলো মাথায় খাবি খায়,
যখন যেথায় ইচ্ছেমত কাঁপন দিয়ে যায়।
গান গেতে চাই, সুর আসেনা,
ঘুম গেলো কই, ঘুম আসেনা,
এমনি করে চুপিচাপি ঘুম গেলো কার বাড়ী?
ঘুমকাতুরে আমার সাথে ঘুম দিয়েছে আড়ি!
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর খালে এলো বান,
বৃষ্টি পড়া শুরু হলেই মন করে আনচান।
বন্ধুরা সব অফিস করে সকাল সন্ধ্যা ধরে,
আমার আয়েশ দেখে তারা ঈর্ষা জ্বরে পোড়ে।
জীবনের জার্নাল – ১৮
এমসিসি’র তৃতীয় (আমাদের দেখা দ্বিতীয়) প্রিন্সিপাল উইং কমান্ডার সুলেমান হায়দার কাইয়ানিঃ
১৯৬৯ সালের শেষের দিকে কর্ণেল আনসারী আমাদের কলেজে চাকুরী শেষ করে পাকিস্তানে ফিরে যান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ (আরসিসি) এর তৎকালীন অধ্যক্ষ উইং কমান্ডার সুলেমান হায়দার কাইয়ানি। উল্লেখ্য, ‘কাইয়ানি’কে ‘কীয়ানি’ উচ্চারণ করা হয়ে থাকে। আমাদের পাড়ার একজন সিনিয়র ভাই তখন আরসিসিতে পড়তেন। কলেজ ছুটির সময়ে আমরা কখনো কখনো একত্র হয়ে গল্পগুজব করতাম।
বিউগলের ধ্বনি শুনি
আমি প্রত্যহ বিউগলের ধ্বনি শুনি,
প্রত্যুষে শুনি, আসন্ন সন্ধ্যায় শুনি,
বিউগল বাজায় কে, সেটা দেখিনি,
প্রত্যহ তবু আমি সেই ধ্বনি শুনি।
চলে যাওয়া অতীত বিউগল শোনায়,
অন্তর্হিত সুহৃদগণ বিউগল শোনায়,
জানিনা তারা আজ কে বা কোথায়
অতীত নিয়ত তবু বিউগল শোনায়
আমরা যারা আছি, খুবই হাসিখুশী,
জগত সংসার নিয়ে সারা দিবানিশি,
তাদের কথা দিনে ক’বারই বা ভাবি,
উপায় নেই
কবিতা না লিখে কোন উপায় নেই,
কেন? আমার যে কোন শ্রোতা নেই!
আমার মুখেও তো কোন ভাষা নেই।
অথচ ভেতরে অনেক কথা আছে,
যেগুলো বলা খুব সহজ কথা নয়
যেগুলো শোনার কারো সময় নেই।
আমার অনেক বিমূর্ত ভাবনা আছে।
ভাবনাগুলো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে,
করোটির গভীরে জমাটবদ্ধ মস্তিষ্কে।
আমার অনেক বদ্ধ দীর্ঘশ্বাস আছে,
যেগুলো বাঁধা আছে বুকের হাপরে।
জীবনের জার্নাল – ১৭
তৃতীয় এ্যাডজুট্যান্ট ক্যাপ্টেন এ কাইয়ুম মালিক, আর্টিলারীঃ
ক্যাপ্টেন আনোয়ার আমাদের কলেজের এ্যাডজুট্যান্ট থাকা অবস্থাতেই মেজর পদবীতে উন্নীত হয়েছিলেন। পদোন্নতির পর তাঁর বদলির আদেশ আসে। আর্টিলারী কোর এর ক্যাপ্টেন এ, কাইয়ুম মালিক তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। নতুন এ্যাডজুট্যান্ট দেখতে খুব ইয়ং লুকিং ও সুদর্শন ছিলেন, নম্রতা ভব্যতার দিকেও একটু এগিয়েই ছিলেন বলতে হয়। তার তুলনায় আমার মনে হয় ক্যাপ্টেন আনোয়ার একটু বেশী রাফ এ্যান্ড টাফ ছিলেন হয়তো এ কারণে যে তিনি আমাদের সিনিয়র ভাইদেরকে কাকুলস্থ পাকিস্তান মিলিটারী একাডেমীর কঠোর প্রশিক্ষণ পরিবেশের সাথে এখান থেকেই কিছুটা ধাতস্থ করে তুলতে চেয়েছিলেন।
হেই জ্যুড!, তোমার এপিটাফে দ্যাখো Ode to Joy!
সো ফ্রেন্ডস, কালকে যেমনটি বলেছিলাম, আমার মাথার উপর পাহাড়সম কাজ উঠে বসে আছে। সেই ব্যাটা আজকেও বসে আছে আগের মত পা ঝুলিয়ে। আর আজকেও তাকে ঘাড় ধরে কিছুক্ষণের জন্য নামিয়ে রাখলাম। তবে আজকে আর ব্লগ লিখার বেদনা না, রেকর্ডানোর বেদনা উঠেছে। ভুলেভালে তিনটি গান হারমোনিকা বাজিয়ে রেকর্ড করে ফেললাম। ১০০তম পোস্ট হোক ভুলেভালে ভরা গান ডেডিকেট করে। To err is Human. মানুষ মাত্রই মরণশীল।
বিস্তারিত»হযবরল
আমি মানুষ। অন্যান্য মানুষদের মতই আমারও দুইখান হাত, দুইখান পা ইত্যাদি ইত্যদি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পাশাপাশি স্বাভাবিক নিয়মে একখান মাথাও আছে। আর সেই মাথার উপর বর্তমানে একখানা বড়সড় আকৃতির পাহাড় উঠে বসে আছে। পাহাড়খানা কাজ দ্বারা নির্মিত । বড়ই নাছোড়বান্দা সেই পাহাড়। তবে আমিও কি কম যাই। পাহাড়টারে ঘাড় ধরে মাথা থেকে নামায়ে ব্লগ লিখতে বসলাম। কারণ হঠাৎ মনে হইলো আমার একখান ব্লগ লিখতে হবে। কেন লিখতে হবে সেই ব্যাপারে আমার একমাত্র মাথাকে জিজ্ঞেস করেও তেমন কোন সদুত্তর পাওয়া গেলোনা।
বিস্তারিত»জীবনের জার্নাল – ১৬
ভাইস প্রিন্সিপাল জনাব এম এ ওয়াহাবঃ
আমাদের সময় এমসিসি’র ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন জনাব এম এ ওয়াহাব। তিনি ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স মাস্টার্স করেছিলেন। তবে অন্যান্য কারিশমাটিক স্যারদের তুলনায় তাকে বেশ ম্লান মনে হতো। তাকে যতদিন কলেজে পেয়েছিলাম, ততদিন তার কোন উজ্জ্বল বা উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ড আমরা প্রত্যক্ষ করিনি। তিনি ভালো ইংরেজী জানতেন, তবে তা ছিল নিতান্তই বুকিশ। মাঝে মাঝে তিনি আমাদের দুই একটা ইংরেজী ক্লাস নিতেন,
ভালোবাসা
সবুজ পাতারা হেসে হেসে সূর্যের কাছে
কিছু আলো চেয়েছিলো,
কিছু তাপ চেয়েছিলো,
আর কিছু ভালোবাসা চেয়েছিলো।
সূর্য মেঘের আড়ালে লুকিয়ে গেলে
পাতাগুলো হলুদ হয়ে ঝরে পড়েছিলো।
সাতরঙা রঙধনুটা ঝিলিমিলি হেসে হেসে
রৌদ্রের কাছে কিছু রঙ চেয়েছিলো।
মেঘের কাছে জলকণা চেয়েছিলো।
রৌদ্র নিমেষে হারিয়ে গেলে,
মেঘ নিমেষে জলশুন্য হলে,
রঙিন আকাশটা ধূসর হয়ে গিয়েছিলো।
স্কুবা ডাইভিং ইন দ্য ক্লাসরুম
লেকচার হলে বসে আছি …
কিংবা ভাসছি বায়বীয় মাইলাম সাগরে।
প্রফেসর!
কুয়াশায় অস্পষ্ট হে মহাত্মন!
শীতাতপ কক্ষের হিমের সঙ্গে যখন
বিক্রিয়া ঘটে আপনার গমগম লেকচারের,
নিজের অজান্তেই মাকড়শার মত আপনি বুনে যান ঘুমের জাল।
হে সেপিয়া টোন প্রফেসর !
আপনি এক জলজ্যান্ত ডরমিকাম !
রিসার্চ মেথডোলজি, ইনডাকশন-ডিডাকশন,
অবজারভেশন-প্যাটার্ন-হাইপোথিসিস-থিওরী,
প্রফেসর, চেয়ার, টেবিল, রোস্ট্রাম, এসি……
জীবনের জার্নাল – ১৫
আন্তঃহাউস গার্ডেনিং প্রতিযোগিতাঃ
আন্তঃহাউস আর্টস এ্যন্ড ক্র্যাফ্টস প্রতিযোগিতার মত আরেকটা প্রতিযোগিতা যেটাতে দক্ষতা নির্বিশেষে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হতো, সেটা ছিলো আন্তঃহাউস গার্ডেনিং প্রতিযোগিতা। বাগান করার জন্য আমাদের হাউসের সামনে যে জমিটুকু বরাদ্দ করা হয়েছিলো, সে্খানে ছিল ইমারত নির্মাণকালীন সময়ে ইট সুরকি ইত্যাদির ভাগাড় আর পানি ধরে রাখার আধার। প্রতিদিন আমাদেরকে গেমস পিরিয়ডের পরে ঘন্টাখানেক সেখানে শারীরিক শ্রম দিতে হতো। মাটি ভীষণ শক্ত ছিলো, কোদাল চালালে শুধু ইট পাথর আর সুরকির কণা বেরিয়ে আসতো।
জিজ্ঞাসা
কখনো আধো ঘুমে কখনো আধো জেগে
তুমি চোখ মেলে আইফোনে দেখো খুঁজে
কেউ জানালো কিনা কোন কোমল কথা
যা আর্দ্র করে দেয় দেহ মন চোখ, অযথা।
যদি কোন বাণী থাকে তবে চোখ খুলে যায়,
অঙুলি চলে যায় কী বোর্ডের ছোট্ট লেখায়,
লিখে যাও কত চিরকুট রোমান্টিক আবেশে
কখনো ভারী মনে, কখনো বা মুচকি হেসে।
যদি কোন নতুন বাণী জ্বলজ্বল করে না ভাসে,
বিস্তারিত»