লেকচার হলে বসে আছি …
কিংবা ভাসছি বায়বীয় মাইলাম সাগরে।
প্রফেসর!
কুয়াশায় অস্পষ্ট হে মহাত্মন!
শীতাতপ কক্ষের হিমের সঙ্গে যখন
বিক্রিয়া ঘটে আপনার গমগম লেকচারের,
নিজের অজান্তেই মাকড়শার মত আপনি বুনে যান ঘুমের জাল।
হে সেপিয়া টোন প্রফেসর !
আপনি এক জলজ্যান্ত ডরমিকাম !
রিসার্চ মেথডোলজি, ইনডাকশন-ডিডাকশন,
অবজারভেশন-প্যাটার্ন-হাইপোথিসিস-থিওরী,
প্রফেসর, চেয়ার, টেবিল, রোস্ট্রাম, এসি……
সব এসে জমেছে এক বিন্দুতে। ঘুমবিন্দুতে।
বিগব্যাং-এর পূর্বাবস্থা !
যে কোন মাহেন্দ্রক্ষণে, ঘুমের বিস্ফোরণে,
মাথা ছিটকে প্রকম্পিত হবে
পার্শ্ববর্তী ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নানাইয়াক্কারার বাঁ কাঁধ।
প্রফেসর !
আপনার আইরিশ বাঁশির সম্মোহনী সুর
আমায় জেগে থাকতে দেয় না।
ক্লাস জুড়ে আপনার এলোপাথাড়ি পদচারণা, নৃত্যকলা-
এনিগমার নারী মডেলেরই নতুন রূপ ?
দু’চোখে ঝোলানো
অনিশ্চিত সুখ ভর্তি পাঁচ কেজি ঘুমের বাটখারা।
অকস্মাৎ আপনার প্রশ্ন, “Is executive success ….. ….. ….. ?”
(পরের শব্দগুলো কেবলই অবোধ্য প্রতিধ্বনি)
জড়ানো কন্ঠে জবাব দিইঃ “ই-য়ে-স স্যার !”
কলম হাতে নিয়েছি;
আজ নিদ্রা উপাখ্যান লিখেই নিদ্রা কাটাবো।
কলম লেখে না-
ব্রাউনীয় কণার মত, কাগজের বুকে ছোটাছুটি করে ইতস্তত !
খাতা জুড়ে কেবল অর্থহীন দাগ;
বেটা, তুই বরং ঘুমিয়েই থাক !
****************************************************
[এ বছরের ১২ই মে শ্রীলঙ্কায় রিসার্চ মেথোডলজির উপর এক ক্লাস করার সময় ঘুম তাড়াতে এই জিনিস লিখেছিলাম। মূল লেখার পাশাপাশি আসলেই বেশ কিছু অর্থহীন দাগে খাতা ভরে গিয়েছিল- যে দাগগুলো ঘুমজনিত অনিবার্য ঝাঁকুনি হতে সৃষ্ট। এই ব্লগে প্রকাশের পূর্বে লেখায় ঈষৎ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সকল শিক্ষকের প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি- আশা করি এই হালকা রসিকতায় তাঁরা কিছু মনে করবেন না।]
:)) =)) :khekz:
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
ভাই, তিনি একজন ইলিউশনিস্ট।
দুর্ঘটনাক্রমে অন্য এক প্রতিষ্ঠানে রিসার্চ মেথডোলজির ক্লাস* আমিও করছি,
কিন্তু সেটা নিয়া কবিতা লেখার মত দারুণ ইলিউশন আমরা পাই নাই! 🙁
(*যথারীতি ঘুমাইতে ঘুমাইতে)
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
ইশহাদ ভাই, আমাদের ওই প্রফেসরকে পেলে নি:সন্দেহে আপনার কাব্যস্রোত সেভাবেই প্রবাহিত হত, যেভাবে জলপ্রপাতে জলরাশি নির্দ্বিধায় নি:সঙ্কোচে গড়িয়ে পড়ে। সমস্ত ক্রেডিট উনার।
দারুণ। (সম্পাদিত)
ধন্যবাদ খালেক।
দুষ্টামি বাদ দিয়া লেখা দে। সবাই তোর লেখার জন্যে অপেক্ষা করে।
একদম, কঠিন। ফারাবী মানেই বসনেস।
তোমার লিখা কৈ?
লিখায় ভেসে আরেকবার জয়পুরহাট ভ্রমনে যেতে চাই।
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
আমিও একসময় রিসার্চ মেথডলজি পড়াতাম।
তবে পড়েছি অনেক বেশি বার।
তোমার মনের অবস্থা ভালই বুঝতে পারছি.........
(গোপন কথা হলো, এই ব্লগস্ফেয়ারেও আমার কাছে রিসার্চ মেথডলজি পড়া দু'একজন স্টুডেন্ট আছে / আছেন... 😀 😀 😀 )
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ভাই, আমি বাজি লেগে বলতে পারি, আপনার হিপনোটিজম সক্ষমতা ওই শ্রীলঙ্কান প্রফেসরের তুলিনায় নস্যি। তাঁর প্রতিটি মুভমেন্ট যেন কোন অদৃশ্য লকেটের সরল দোলন। তাঁর মুখনি:সৃত প্রতিটি শব্দ এক-একটি কারেন্ট জালের ডেপ্লয়মেন্ট- জাটকা আটকা পড়বেই।
"রিসার্চ মেথোডলজির উপর এক ক্লাস করার সময় ঘুম তাড়াতে এই জিনিস লিখেছিলাম" - ঘুম তাড়াবার একটা ভালো উপায় যেন বের হলো।
ভাই, ঘুম তাড়ানোর উপায় বের হয়েছে তা বলবো না। তবে তন্দ্রাচ্ছন্নতাকে আরেকটু উপভোগ করা গেছে।
ক্লাসের মধ্যে ঘুমাক্রান্ত হবার প্রবণতা আমার মাঝেও প্রবল ছিলো। এনডিসি করার সময় বেশীরভাগ বোরিং ক্লাসেই আমি ঘুমিয়ে পড়তাম। তবে আমি একটা টেকনিক ফলো করতাম। কোন গেস্ট স্পীকার এলে প্রথম দশ পনের মিনিট আমি তার কথা গভীর মনযোগ সহকারে শুনতাম। ঐ টুকু সময়ের মধ্যেই ক্লাস শেষে তাকে কী প্রশ্ন করা যায়, তা নোটবুকে গুছিয়ে লিখে রাখতাম। তারপর নির্দ্বিধায় ঘুমিয়ে যেতাম। প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বাভাবিক ভাবেই ঘুম ভেঙ্গে যেত। তখন হাত তুলে লিখে রাখা প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিয়ে আবার বিশ্রামে যেতাম, উত্তরের প্রতি কোন আগ্রহ না রেখেই। ধরা যে কখনো পড়িনি, তা নয়। একবার এক প্রফেসরের ক্লাসে এমন গভীর ঘুমের জন্য কাতর হচ্ছিলাম যে নিজের নাক ডাকার শব্দ নিজ কানেই শুনতে পাচ্ছিলাম। ক্লাস শেষে যথারীতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বসে পড়তেই প্রফেসর আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন, সারা ক্লাস ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাটিয়েও আমি কি করে এমন সুন্দর একটা প্রশ্ন করতে পারলাম, তা তিনি জানতে চাইলেন। সারা ক্লাসে হাসির রোল পড়ে গেলো।
হা হা হা
😀 😀 😀
:boss: :boss: :boss:
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
ধন্যবাদ! 🙂 🙂
স্যাল্যুট, স্যার। ::salute::
:thumbup: 🙂 🙂 🙂
সৃজনশীল প্রশ্নঃ এইখানে বর্ণিত কাঁধের মালিক কি পুরুষ না নারী ছিল? ;)) ;))
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
🙁 দু:খের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে মোকা ভাই, সে পুরুষ। সংক্ষেপে পুরো নাম: নালাকা সঞ্জীবা নানাইয়াক্কারা। প্রকৃত নাম ৭-৮ শব্দের।
আসলটা জানা কি খুব জরুরী?
লেখক যখন বলে নাই, ধরে নিতে হবে যে তিনি চাচ্ছেন পাঠক তাদের সুবিধানুযায়ী ভেবে নিতে পারে।
আমি তো আমার সুবিধানুযায়ী ভেবে নিয়েছি, তুমিও নাও না কেন?
আসল কথা জানার পর মজা উবে গেলে তখন কে দায়ী হবে???
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
মজা নষ্ট করে দিলাম ভাই। মোকাব্বির ভাই দায়ী।
ওয়াও। এই এঙ্গেল থেকে আসতে পারে কথাটা চিন্তা করি নাই। অন্যদের মজা নষ্ট করার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী! 🙂
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
শেষ পর্যন্ত আলোচনাটা মজারই হলো।
নিশ্চিন্তে একটা ধন্যবাদ প্রস্তাব দাবী করতে পারো.........
Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.
সম্পূরক প্রশ্নঃ প্রুষহৈলেসমিস্যাকি, হুমম? B-)
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
আছে আছে! 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
গত ৮ মাস ধরে নিয়মিত এই স্কুবা ডাইভিং চালিয়ে যাচ্ছি, তবে আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল উলটো। এক ঘেয়েমি ক্লাস করতে করতে মাঝে রিসার্চ ম্যাথোলোডোজি ক্লাস নিতে এসেছিলেন চিটাগং ভার্সিটির একজন প্রফেসর, উনার ক্লাসটাই সবচেয়ে আগ্রহ ভরে ফলো করা হয়েছিল।
লেখা দারুন হয়েছে :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
অনেক ধন্যবাদ আহসান ভাই।
পুরা ফাটায়ে ফেলসিসরে ফারাবী। ব্রাউনীয় গতির কথা এখনো মনে রাখসিস, কীভাবে পারিস।
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
মনে রাখার কারণ আছে ভাই। কেমিস্ট্রিতে আমি ছিলাম নমুনা টাইপের, ক্লাস ইলেভেনের ইয়ার ফাইনালে ফেলও করেছিলাম। যেসব জিনিসের সাথে ভয়াবহ স্মৃতি অধিক জড়িত, সেগুলোই কেন যেন বেশী বেশী মনে থাকে। (সম্পাদিত)
জিহাদ দুস্ত, তোর এখনও ব্রাউনীয় গতি মনে আছে ক্যান? কই আমাদের তো মনে নাই! :-B
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
আরে বেটা, ফারাবী কইলো দেখেই না মনে পড়লো x-(
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
আমরা তো কবিতা পইড়াও মনে করতে পারি নাই, কেবল তোরই কমন পড়ছে 😛
এমন মানব জনম, আর কি হবে? মন যা কর, ত্বরায় কর এ ভবে...
এক সাগর মাইলাম
জলজ্যান্ত ডরমিকাম ।
পাঁচ কেজি ঘুম প্রমত্ত
ছোটাছুটি করে ইতস্তত,
বাঁশী ফুঁকে
কাগজের বুকে ...
ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে সহসা
দেখি আপনার কবিতা-
হয়েছে খাসা, ফুটেছে দারুণ
প্রকৃত ঘুমের ছবিটা।
:salute:
ভালো লাগলো
যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান
ধন্যবাদ সাইদুল ভাই 🙂 ।
:clap: :clap: :clap: :clap:
টিচারদের মতো লালাবাই সত্যি কেউ গাইতে পারেনা 😀
:thumbup:
চমৎকার কথা!
জ্বী আপা। সম্রাট নেপোলিয়নের ভাষায়: "তোমরা আমায় একটি ক্লাস রুম দাও, আমি তোমাদের একটি ক্লাস ঘুম উপহার দেব।"
আচ্ছা, তুমি কি সেই ফারাবী, হেলিকপ্টার থেকে যার তোলা আমাদের কলেজের (এমসিসি) ছবি (প্যানোরমিক ভিউ) দারুণ হিট হয়েছিলো, এবং এখনো ক্ষণে ক্ষণে ফেইসবুকে ভেসে ওঠে?
জ্বী স্যার, এই অধমেরই সেই সৌভাগ্য হয়েছিল।
:clap: :clap: :clap:
হা হা...ভাল ছিল! 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
😀 😀
ফারাবী,
খুব ভালো লেগেছে। অন্যরকম একদম।
অসংখ্য ধন্যবাদ, নূপুর ভাই। তন্দ্রা অবস্থাটা আমার খুব প্রিয় আসলে.... আধো-ঘুম অবস্থাতে এমন কিছু অনুভূতি/ভাবনার সাথে মাঝে মাঝে পরিচিত হই, যেটা জেগে থাকা অবস্থায় হওয়া সম্ভব না (এই লেখা অবশ্যই তার সেরা উদাহরণ নয়)। সবারই এমন হয় নিশ্চয়!