ছায়া কিংবা ছবিঃ সাত

এক দেশের এক সাদা মেয়ে একটু বেশি চিনি আর দুধ দিয়ে চা খেতে খেতে বইয়ের পাতা উল্টায় – দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেইন। বই পড়তে পড়তে মনে হয় কাল রাতে সে কোন খদ্দের পায়নি। আজকের দিন-রাতও যদি এভাবে যায়। না ভাবতে পারে না – আশঙ্কা, অনিশ্চয়তা আর অম্বলের ব্যথাটা একসাথে চাড়া দিয়ে ওঠে। আরেকটু চিনি নেবার জন্য কাউন্টারে আসতেই পরিচিত এক খদ্দেরের সাথে দেখা হয়ে যায়। দু’এক শব্দেই দফা-রফা হয়ে যায়। লোকটি ১০ ডলারের একটি বিল মেয়েটির হাতে গুঁজে দেয়। মেয়েটি ব্যাগে বই ঢুকিয়ে অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়। তারপর লোকটির পেছনে পেছনে হাঁটতে থাকে। জীবন জুড়ে মনের সাথে শরীরের এই প্রতারণার খেলা আর কি সাঙ্গ হবে? মন তবুও বলে, সকালটা কি এর চেয়ে বেশি মিষ্টি হতে পারতো?

আরেকটা দেশে রাত পার হয়ে ভোর আসে। সারারাত মানুষটা মরার মত পড়ে রইল। মদ খেলো না, বিরিয়ানি আনিয়ে দিতে চাইলেও মানা করলো, কাছে গিয়ে আদর দিতে চাইলেও শরীর ছুঁয়ে দেখলো না। থেকে থেকে যে কী হয়! এই মানুষটা এলে কালো মেয়েটা আর অন্য খদ্দের নেয়না সেই রাতে। মানুষটা এলেই কেন জানি তার একটু বেশি সাজতে মন চায়, একটু গুনগুন করে গাইতে ইচ্ছে করে, একটু ঢঙ করারও সাধ হয়। রাতটা বড় মিষ্টি মিষ্টি লাগে। ভালবাসায় প্রতারিত হয়ে লাইনে নামার অনেক বছর পর আবার কি ভালবাসা এসে ভর করল?

ডিসেম্বর ১, ২০১৬
টরন্টো, কানাডা।

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।