রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ বাংলাদেশের ৪র্থ ক্যাডেট কলেজ।১৭৩৩ সালে বার্লিনে প্রথম ক্যাডেট স্কুল স্থাপন করেন জার্মান সামরিক শাসক দ্বিতীয় ফ্রেড্রিক উইলিয়াম। জার্মান সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবার (জাংকার) এর সন্তানরা যাতে বিদেশী সেনাবাহিনীতে যোগ না দেয় এবং একই সাথে জাংকারদের সমর্থন পাবার জন্য এই ক্যাডেট স্কুলের শুরু।পরবর্তীতে সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ফ্রান্সে এই ব্যবস্থা চালু করেন।কিন্তু ক্যাডেট কলেজ শব্দটি প্রথম আসে জার্মানীর চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক এর সময়ে । ক্যাডেট কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের (সপ্তম শ্রেণী হতে দ্বাদশ শ্রেণী) জাতীয় পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি ক্যাডেটদের শারীরিক, মানসিক,বুদ্ধিবৃত্তিক, চারিত্রিক, সাংস্কৃতিক ও নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা সম্পূরক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
অবস্থান ও যোগাযোগঃ
রাজশাহী শহর থেকে ৩০ কিমি দূরে চারঘাট উপজেলার সারদায় পদ্মা নদীর তীরে মুক্তারপুর গ্রামে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ অবস্থিত। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের বানেশ্বর ট্রাফিক মোড় হতে বানেশ্বর-চারঘাট সড়কের সারদা ট্রাফিক মোড় দিয়ে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে যেতে হয়।
টেলিফোনঃ 07223-56088 ফ্যাক্সঃ 07223-56283 ই-মেইলঃ rcc_rajshahi@yahoo.com
পত্র যোগাযোগঃ অধ্যক্ষ, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ, সারদা, রাজশাহী।
ইতিহাস
ঔপনিবেশিক পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত ৪র্থ তথা শেষ ক্যাডেট কলেজ ‘রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ’ । পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ১৯৬৪ সালের ৬ই নভেম্বর আয়ুব ক্যাডেট কলেজ নামে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান ১৯৬৬ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী আয়ুব ক্যাডেট কলেজের উদ্বোধন করেন। পদ্মা নদীর তীরে মুক্তারপুর গ্রামে ১১০ একর জমির উপর তিনটি হাউস ( হোস্টেল) নিয়ে এ ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন উইং কমান্ডার মোহাম্মদ সাঈদ, পিএএফ। কলেজের প্রথম বাঙ্গালী অধ্যক্ষ এম বকীয়তুল্লাহ ।রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রথম ক্যাডেট আব্দুল হামিদ (১/১)। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর আইয়ুব ক্যাডেট কলেজের নাম পরিবর্তন করে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ রাখা হয়। এই ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের সংগঠন Old Rajshahi Cadets Association (ORCA)- অরকা নামে পরিচিত।
অবকাঠামো
বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ভবন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র। বিশাল এই দ্বিতল ভবনে রয়েছে- শ্রেণীকক্ষ সমূহ, কম্পিউটার ল্যাব, পদার্থ বিদ্যা,রসায়ন বিদ্যা ও জীব বিদ্যা ল্যাবরেটরি, মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব, কেন্দ্রীয় লেকচার হল, অনুষদ সমূহ, উপাধ্যক্ষের অফিস এবং স্টাফ লাউঞ্জ। একাডেমিক ব্লক সংলগ্ন আরেকটি স্থাপনা হল বীর শ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল অডিটোরিয়াম। অডিটোরিয়ামটিতে আধুনিক মঞ্চ, অডিও ভিজুয়াল ইফেক্ট ও আলোক প্রক্ষেপণের সুব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিতল এ অডিটোরিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৬৫০জন। অডিটোরিয়ামের দক্ষিণ পূর্ব কোনে বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ: আব্দুর রউফ পাঠাগার। বিশ্বসাহিত্য, বিশ্বকোষ, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিভিন্ন বিষয়ের রেফারেন্স বইয়ে কলেজের এ কেন্দ্রীয় পাঠাগারটি সমৃদ্ধ। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে ক্যাডেটদের আবাসনের জন্য ৩টি হাউস ( হোস্টেল) রয়েছে। প্রখ্যাত মুসলিম বীর খালিদ বিন ওয়ালিদ, মুহাম্মদ বিন কাসিম এবং তারিক বিন যায়েদ এর নামানুসারে হাউস গুলোর নামকরণ করা হয়েছে- খালিদ হাউস, কাসিম হাউস এবং তারিক হাউস। সুসজ্জিত, সুরক্ষিত, একশত শয্যা বিশিষ্ট প্রত্যেকটি হাউসের সামনে রয়েছে সুন্দর বাগান।
প্রশাসন
ক্যাডেট কলেজ সমূহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল শাখা কর্তৃক সরাসরি নিয়ন্ত্রিত। একজন লে: কর্নেল ( কখনও নৌ/বিমান বাহিনীর সমমর্যাদার অফিসার) অথবা সিনিয়র শিক্ষক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যক্ষ ক্যাডেট কলেজের সার্বিক বিষয়ে প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। উপাধ্যক্ষ শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব পালন করেন। মেজর পদমর্যাদার একজন অফিসার (অ্যাডজুটেন্ট) প্রশাসনিক বিষয়ে অধ্যক্ষকে সহায়তা করেন। প্রত্যেক হাউসে একজন সিনিয়র শিক্ষক ‘হাউস মাস্টার’-এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হাউসের প্রশাসনিক বিষয় দেখা শোনা করেন।
দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তোলা এবং কলেজ প্রশাসন সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার জন্য দ্বাদশ শ্রেণী হতে এক গুচ্ছ প্রিফেক্ট মনোনয়ন দেয়া হয়। ক্যাডেট প্রশাসন কলেজ প্রশাসনাধীন এবং ক্যাডেটদের সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করে। প্রিফেক্ট পদগুলো হচ্ছে-
কলেজ প্রিফেক্ট, হাউস প্রিফেক্ট (প্রত্যেক হাউসে), কলেজ গেমস প্রিফেক্ট, কলেজ কালচারাল প্রিফেক্ট, কলেজ ডাইনিং হল প্রিফেক্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট হাউস প্রিফেক্ট, হাউস গেমস প্রিফেক্ট, হাউস কালচারাল প্রিফেক্ট, জুনিয়র প্রিফেক্ট ( প্রিফেক্টদের সহায়তার জন্য প্রত্যেক হাউসের একাদশ শ্রেণী হতে মনোনীত)।
শিক্ষা ব্যবস্থা
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে ক্যাডেটদের সপ্তম শ্রেণি হতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজী মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হয়। প্রত্যেক ক্লাসে গড়ে ৫০ জন ক্যাডেট ২ শাখায়(ফর্ম) বিভক্ত হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে। প্রত্যেক শাখা তদারক করার জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষক (ফর্ম মাস্টার) রয়েছেন। গ্রীষ্ম কালে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা ( শনিবার হতে বুধবার) এবং সকাল ৭-৪০ হতে বেলা ১১.২০ টা পর্যন্ত ( বৃহঃবার) এবং শীতকালে সকাল ৮-২০ হতে বেলা ১-৫০ এবং ৮-২০ হতে বেলা ১-৩০ পর্যন্ত ( বৃহঃ বার) ক্লাস নেয়া হয়। ক্লাসের সময় ছাড়া প্রত্যেকদিন নিজ নিজ শ্রেণীকক্ষে লেখাপড়া করতে হয় (প্রিপারেটরি ক্লাস বা প্রেপ ক্লাস)। গ্রীষ্মকালে প্রেপ ক্লাস ৩টি। বিকালে ৩-১৫ হতে ৪-১৫,সন্ধ্যায় ৬-৪৫ হতে ৮-১৫ এবং রাত্রে ৮-৫০ হতে ৯-৫৫ পর্যন্ত । শীতকালের প্রেপ ২টি। সন্ধ্যায় ৬-৩০ হতে ৭-৫৫ এবং রাত্রে ৮-৩০ হতে ৯-৫৫ পর্যন্ত। দুর্বল ছাত্রদের জন্য খেলার সময়ে অতিরিক্ত প্রিপারেটরী ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। ক্যাডেটদের যোগ্যতা মূল্যায়ন এবং শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষার (জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি) প্রস্তুতির জন্য স্পটটেস্ট,পাক্ষিক পরীক্ষা, প্রগ্রেস টেস্ট প্রভৃতি পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে মানবিক বিভাগে ইংরেজী,বাংলা,ইসলামিক স্টাডিজ,পৌরনীতি,অর্থনীতি,ভূগোল এবং চারু ও কারুকলা এবং বিজ্ঞান বিভাগে গণিত,পদার্থ বিদ্যা, রসায়ন,জীববিদ্যা,পরিসংখ্যান ও কম্পিউটার সাইন্স বিষয়গুলো রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার বাইরে ধর্মীয় শিক্ষা, কমিউনেকেটিভ ইংলিশ, সাধারণ জ্ঞান ও চলতি ঘটনার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। ক্যাডেটদের শিক্ষা সংক্রান্ত এবং অন্যান্য বিষয়ের মূল্যায়ন নিয়মিত অভিভাবকদের অবহিত করা হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান
১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষন, শাসন ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে যে আন্দোলন দানা বেধে উঠছিল তা আইয়ুব ক্যাডেট কলেজকেও প্রভাবিত করেছিল। কলেজের অধ্যক্ষ এম বকীয়তুল্লাহর নেতৃত্বে অ্যাডজুটেন্ট ক্যাপ্টেন রশীদ, শিক্ষকবৃন্দ,কর্মচারীবৃন্দ এবং সকল ক্যাডেট অহিংস এবং অসহযোগ আন্দোলন সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেন। দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ক্রমেই জটিল এবং অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার প্রেক্ষিতে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ আইয়ুব ক্যাডেট কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ক্যাডেটদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ৭জন সাহসী ক্যাডেট বাড়িতে না গিয়ে রাজশাহী অবস্থান করে। সেই ৭ জন হল-
১) কলেজ প্রিফেক্ট ক্যাডেট মোশাররফ হোসেন, দ্বাদশ শ্রেনী, ক্যাডেট নং ৩৭,ব্যাচ নং ২,খালিদ হাউস
২) ক্যাডেট তালেবুল মওলা চৌধুরী, দ্বাদশ শ্রেনী, ক্যাডেট নং ৫৮, ব্যাচ নং ২, কাসিম হাউস
৩) ক্যাডেট মনিশ দেওয়ান, দ্বাদশ শ্রেনী, ক্যাডেট নং ৭৪, ব্যাচ নং ২, খালিদ হাউস
৪) ক্যাডেট খায়রুল আলম বেলাল, একাদশ শ্রেণী, ক্যাডেট নং ৭৮, ব্যাচ নং ৩, খালিদ হাউস
৫) ক্যাডেট আফজাল নূর, একাদশ শ্রেণী, ক্যাডেট নং ৯৩, ব্যাচ নং ৩, তারিক হাউস
৬) ক্যাডেট আমিনুল ইসলাম, একাদশ শ্রেণী, ক্যাডেট নং ১০৯, ব্যাচ নং ৩, খালিদ হাউস এবং
৭) ক্যাডেট মনোয়ার হোসেন, একাদশ শ্রেণী, ক্যাডেট নং ১২৫, ব্যাচ নং ৩, খালিদ হাউস ।
তারা সেখানে বড় বড় ছাত্র নেতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সংস্শর্শে এসে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে অনুপ্রানিত হয়।
২৩ মার্চ আইয়ুব ক্যাডেট কলেজের নাম সর্বসম্মতিক্রমে ‘মুক্তারপুর ক্যাডেট কলেজ’ রাখা হয় এবং পাকিস্তানের পতাকার পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এক বিশাল মিছিল নিয়ে ক্যাডেট কলেজ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা প্রদক্ষিণ করে। কলেজের অধ্যক্ষ এম বকীয়তুল্লাহ ক্যাডেট কলেজ পরিবারকে সাথে নিয়ে এ মিছিলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। এভাবে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ স্থানীয় জনতার সাথে একাত্ব হয়ে পাকিস্তান বিরোধী একটি আন্দোলন সংগঠিত করে।
২৭ মার্চ অধ্যক্ষের অনুমতি ও সমর্থনে কলেজের প্রথম বাঙ্গালী অ্যাডজুটেন্ট ক্যাপ্টেন রশীদ শিক্ষক এবং কর্মচারীদের সাথে নিয়ে রাজশাহীর দক্ষিণ অংশে মুক্তিসংগ্রাম চালানোর দায়িত্ব নেন । তাঁকে সহযোগিতা করেন বাংলার শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকী, মিলিটারী সাইন্সের শিক্ষক শামসুল আলম, ওয়ার্কশপ ইনস্ট্রাক্টর মোয়াজ্জেম হোসেন, হাবিলদার ইউসুফ প্রমুখ । ক্যাডেট এস এ মমিন ( হিটলু) বগুড়ায় সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন। কিন্তু পাক সেনাদের হাতে ধরা পড়েন এবং ২৯ মার্চ তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। মুক্তিসংগ্রামে তিনি প্রথম ক্যাডেট শহীদ। ৩০ মার্চ অধ্যক্ষ মোঃ বকীয়তুল্লাহ পদ্মা নদী পার হয়ে ভারতে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি কোলকাতার বাংলাদেশ মিশনে ‘ইয়ুথ ক্যাম্প’ এর পরিচালক হন।
১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিড়ালদহতে পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ভারী অস্ত্রে সজ্জিত বিশাল পাক বাহিনীর সাথে আপ্রাণ চেস্টা করেও পেরে ওঠেননি। ঐ যুদ্ধে আবু বকর সিদ্দীক বীরত্বের সাথে লড়াই করে শহীদ হন। এজন্য তাকে বীর বিক্রম খেতাব দেয়া হয়।
১৩ এপ্রিল পাক বাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমীতে প্রবেশ করে। ঐ দিন ক্যাডেট মন্নাফ সারদা বাজারের কাছে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে তার ভাইসহ শহীদ হন। পুলিশ একাডেমীর দখল নেয়ার পর শুরু হয় গণহত্যা। পদ্মা নদীর তীরে প্রতিদিন অসংখ্য বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়। এ সময় জীবন বাচাতে অনেক লোক পদ্মা নদী পার হয়ে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় চলে যান। ক্যাপ্টেন রশীদ তখন কাজীপাড়া ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলেন। তিনি শেখপাড়া এবং কাজীপাড়া ক্যাম্পে গেরিলা প্রশিক্ষণ দিতেন। ক্যাপ্টেন রশীদ পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন এবং ৭ নং সেক্টরাধীন ৪ নং সাব সেক্টর এর কমান্ডার এর দায়িত্ব পান। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। মিলিটারী সাইন্সের শিক্ষক শামসুল আলম বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কমিশনে যোগ দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় তিনি ‘বীর প্রতীক’খেতাব পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের ১৮ জন শহীদ হয়েছেন । তারা হলেন-
১। এ বি সিদ্দিকী বীর বিক্রম, শিক্ষক, ২। আব্দুর রাজ্জাক, কেয়াটেকার, ৩। মোঃ খায়রুল আলম, অফিস সহকারী, ৪। মোঃ আজিজুল হক, পিওন, ৫। মোঃ সালাহ উদ্দিন, মেস ওয়েটার, ৬। মোঃ নূরুল হক, হাউস বেয়ারার, ৭। মোঃ ফয়জুদ্দিন শেখ, হাউস বেয়ারার, ৮। শ্রী জংগুরাম জমাদার, হেড সুইপার, ৯। শ্রী জগদীশ জমাদার, সুইপার,১০। শ্রী বধুরাম জমাদার, সুইপার, ১১। ক্যাডেট আব্দুল মন্নাফ, ক্যাডেট নং ২৫৯, ১২। ক্যাডেট এস এ মোমিন, ক্যাডেট নং ৩৫, ১৩। ক্যাডেট মাজিদ রেনা, ক্যাডেট নং ১৬০, ১৪। ক্যাডেট মোঃ জাকারিয়া, ক্যাডেট নং ২২৩ ,১৫। ক্যাডেট মোঃ আবতাব আলম, ক্যাডেট নং ২৩৫, ১৬। ক্যাডেট মোহাম্মদ ইনাম, ক্যাডেট নং ২৪৮, ১৭। ক্যাডেট আবদুল্লাহ্ আল-আমিন, ক্যাডেট নং ২৫৭ এবং ১৮। ক্যাডেট হান্নান আশরাফ, ক্যাডেট নং ৩৫৩।
ক্যাডেট কলেজ ব্লগে বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য কেউ আশা করতেই পারেন।তাদের জন্যেই এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ এই ব্লগটি সমৃদ্ধ করবে।ধন্যবাদ।
চমৎকার লেখা। :clap: :clap: :clap:
সব কলেজেরই এরকম একটা পরিচিতিমূলক লেখা থাকা উচিত।
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:party: :party: :party:
:teacup:
সব কলেজেরই এরকম একটা পরিচিতিমূলক লেখা থাকা উচিত।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
মুক্তিযুদ্ধে ক্যাডেট কলেজের অবদান বিষয়ে একটা লেখা পড়সিলাম জনৈক স্যারের...স্যালুট আরসিসি...হয়তো অন্য কলেজগুলো তখন প্রতিষ্ঠিত হয় নাই বলে আমাদের গর্ব করার নাই......স্টিল আয়্যাম প্রাউড টু বি আ ক্যাডেট! :just: ::salute:: ::salute:: ::salute::
People sleep peaceably in their beds at night only because rough men stand ready to do violence on their behalf.
কলেজ আলাদা হলেও আমরা ক্যাডেট। যে কোন ক্যাডেট কলেজের ভালো কাজে আমরা গর্ব করতে পারি । :thumbup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ভাল লাগল লেখাটা 🙂 বিশেষ করে ৭১ এ রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাহসী ভূমিকা। 🙂
কিন্তু প্রথমেই তথ্যে একটু অসঙ্গতি পাচ্ছি। বলা হয়েছে- 'জার্মানীতে চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক এর সময়ে ক্যাডেট কলেজ ধারণার প্রবর্তন হয়। পরবর্তীতে সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ফ্রান্সে এই ব্যবস্থা চালু করেন'
কিন্তু বিসমার্ক এর জীবনকাল ১৮১৫-১৮৯৮ আর নেপোলিয়নের জীবনকাল ১৭৬৯-১৮২১। বিসমার্ক নেপোলিয়ানের অনেক বেশ পরের সময়ের মানুষ। বিসমার্কের পরে কিভাবে নেপোলিয়ান ফ্রান্সে ক্যাডেট কলেজ ব্যবস্থা চালু করেন? তথ্যটি আসলে খানিকটা উলটে গেল নাকি? 🙁
ধন্যবাদ রাহিন।
'কিন্তু বিসমার্ক এর জীবনকাল ১৮১৫-১৮৯৮ আর নেপোলিয়নের জীবনকাল ১৭৬৯-১৮২১। বিসমার্ক নেপোলিয়ানের অনেক বেশ পরের সময়ের মানুষ। বিসমার্কের পরে কিভাবে নেপোলিয়ান ফ্রান্সে ক্যাডেট কলেজ ব্যবস্থা চালু করেন? তথ্যটি আসলে খানিকটা উলটে গেল নাকি?'
আমি উইকিপিডিয়া থেকে ( http://bn.wikipedia.org/wiki/Cadet_College ) বিভ্রান্ত্র হয়েছি। প্রথমে উইকিতে লিখেছিলাম। ঐ তথ্য ওখানে উইকি থেকেই দিয়েছিলাম। এখন দেখছি উইকিতে বিসমার্ক এবং নেপোলিয়ন পাতা নেই।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
পরবর্তীতে সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ফ্রান্সে এই ব্যবস্থা চালু করেন। এ লাইনটা বাদ দিলাম।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
মোস্তাফিজ ভাই, ১৭৩৩ সালের দিকে (সন নিশ্চিত ভাবে বলা হয় নাই) বার্লিনে প্রথম ক্যাডেট স্কুল স্থাপন করেন জার্মান সামরিক শাসক দ্বিতীয় ফ্রেড্রিক উইলিয়াম। জার্মান সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবার (জাংকার) এর সন্তানরা যাতে বিদেশী সেনাবাহিনীতে যোগ না দেয় এবং একই সাথে জাংকারদের সমর্থন পাবার জন্য এই ক্যাডেট স্কুলের শুরু। সূত্রঃ Technology and War: From 2000 B.C. to the Present By Martin Van Creveld সাথে অারো একটি সাইট ছিলো খুঁজে পাচ্ছি না।
পরবর্তিতে অানুমানিক ১৭৬৩ সালের দিকে ফ্রান্সে বেশ কয়েকটি ক্যাডেট স্কুল স্থাপন করা হয়। সূত্রঃ Crisis, Absolutism, Revolution: Europe And the World 1648-1789 By Raymond Birn
জার্মানদের দেখে তারাও একই পদ্ধতি চালু করেছিল কিনা এই ব্যাপারে কোন তথ্য পাই নাই। তবে সেই স্কুলগুলোর মাঝে একটিতে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট নিজেই গিয়েছিলেন যেটার নাম ছিল Cadet School at Brienne-le-Château. তবে সমসাময়িক স্কুলগুলোর মাঝে জার্মান স্কুলগুলোর সুখ্যাতি ছিল।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:boss: :boss: :boss:
:frontroll: :frontroll: :frontroll:
ভাগ্যিস ভুল করেছিলাম :shy: এবার সত্যের সন্ধান পাবো :dreamy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
এই ছি ভাই অাপনি ফ্রন্টরোল দিতেসেন কেন? 🙁 🙁 🙁
সঠিক তথ্য বের করার পেছনে অাপনার অবদান বেশী। প্রশ্নবিদ্ধ না করা হলে তো খুঁজেও দেখতাম না। 😀
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:thumbup: :teacup: :party: :party: :party:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:thumbup:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
:teacup: 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
অসাধারণ। আমার প্রিয় কলেজ কে মিস করছি
ধন্যবাদ (সম্পাদিত)
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
এককথায় চমৎকার একটি লেখা।
দারুন ::salute::
ভালো থাকা অনেক সহজ।
::salute::
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:party: :party:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
সুন্দর লাগলো।
রাজীব ভাইয়ের সাথে একমত।
সব কলেজেরই পরিচিতি মূলক একটা লেখা থাকা উচিত।
... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!
:thumbup: :thumbup: :thumbup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
শাহী ক্যাডেট হিসাবে গর্বিত!
:thumbup: :guitar: :teacup: :party:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:clap: :clap:
রাজশাহী এবং মির্জাপুর গিয়ে কলেজটাকে আপন লেগেছিল, কেননা একাডেমিক ব্লক পুরো আমাদের জেসিসি'র মতনই। 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:teacup:
আমার ধারণা ছিল প্রথম চারটি ক্যাডেট কলেজের একাডেমিক ব্লক এক রকম। কেউ কি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের একাডেমিক ব্লকের ছবিটা আপলোড করবেন?
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
এক না, ডিজাইন আলাদা।
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
যতদূর জানি ফৌজদারহাটের স্থপতি একজন এবং পরবর্তী তিনটি কলেজের স্থপতি অারেকজন। যেই কারণে পরের তিনটার ডিজাইন একই রকম।
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
:teacup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ভুল ভাংলো :frontroll:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
Thanks for the informative write up. We were fortunate to listen many war happenings from moazzam sir. I believe it should be formally shared with all present cadets. in formation during April to DEC 71 can be added.
আমার কাছে তো ভাই অতো তথ্য নেই। আর সব কিছু এক ব্লগে লিখলে অনেক বড় হয়ে যাবে। অধ্যক্ষ স্যার (শাহী ভাই) ::salute:: আমাকে ইংরেজীতে ২২ পাতা তথ্য দিয়েছিলেন। সেটা বাংলা করে ৩পাতা করেছি। তবে কথা দিচ্ছি প্রয়োজনীয় তথ্য পেলে মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ শিরোনামে আরো লিখবো। প্রয়োজনে ঐ তথ্যগুলো আবার নাড়াচাড়া করবো। অফিসের কাজের ফাকেঁ কাজটা করেছি। এজন্য ঠিক মানসম্পন্ন হয়নি। ইচ্ছা করলে তুমিও লিখতে পারো । কিন্তু ইউনিকোড বাংলায় লিখতে হবে। তাড়াতাড়ি সিসিবির সদস্য হও।
এ ব্লগের বিষয়টি ইআরসিসিতে গ্রুপ মেইলে দিয়েছি। হামিদ ভাই এবং শাহী ভাইকে সিসি দিয়েছি। তোমার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। :gulli2:
Tito: Excellent. Pardon me for using English - I am not yet trained in using Bangla and my key board don't have the option of using Bangla. A small piece of Suggestion: If you had not talk to Musharraf Bhai K2/37 before writing the blog, you can still do it now. You may explore hair rising stories from him. He likes to share his experiences of those time. Thanks bro, Godspeed. Jahangir K15/845.
ভাই অভ্র ৪.৫.১ ব্যবহার করুন।ফিক্সড কিবোর্ড দিবেন ইউনিবিজয়। এটার সাথে পরিচয় না থাকলে অভ্র ফোনেটিক কি বোর্ড ব্যবহার করবেন। মোশাররফ ভাইয়ের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। গ্রুপ মেইলে দিবেন প্লিজ।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। :boss:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ভাল লিখেছ বন্ধু!
লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়!
:teacup: :party: :khekz:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
ধন্যবাদ কাইয়ূম। :teacup: :teacup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:just: :gulli2: :gulli2: :gulli2: :gulli2: :gulli2: :gulli2:
নিজে দেখুন এবং জানুন
:teacup: :party: :party:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের আরও ছবি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
নেপোলিয়ন সাহেবও এক্স-ক্যাডেট, ::salute:: :thumbup: :thumbup:
🙂 🙂 :thumbup:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের ক্যাডেট আমি। আমি গর্বিত। ইতিহাস এলোপাথারিভাবে জানতাম। তবে এবার একসঙ্গে জানলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ মোস্তাফিজ ভাই।
মোহসীন ২৬/১৩৯৫ খালিদ হাউজ
ধন্যবাদ ভাই মোহসীন। এই ব্লগের বেশিরভাগ তথ্য লেঃ কঃ এ কে এম ইকবাল আজীম জি প্লাস (শাহী ভাই) এর কাছে পেয়েছি। ক্যাডেট কলেজ সংক্রান্ত ইতিহাস এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে এই ব্লগটাকে সমৃদ্ধ করেছে মোকাব্বির । তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই 🙂
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
আমার কাছে ১৯৭৯-৮০-এর কিছু ছবি আছে
ইফতেখার ভাই এই সিসিবির সদস্য হলে ছবি গুলো সহজেই পেতাম :dreamy:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল