কলেজে থাকতে কিছু সাহিত্য চর্চা করার চেষ্টা করতাম। কলেজ থেকে বের হয়ে সেগুলো সব বন্ধ ছিলো। ধন্যবাদ সিসিবি কে। আবার লেখা পড়া বা লেখার চেষ্টা করতে পারছি। বিভিন্ন সাহিত্য সাইট গূলো ঘাটাঘাটি করার অভ্যাসটা আবার কিছুটা ফিরে আসছে। সেদিন এরকম ১ টা সাইট এ কিছু খুব সুন্দর লাইন পেলাম। ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করা যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম, অনুবাদ করে দেই। পরে দেখলাম আমি অনুবাদ করলে মূল ফিলিংস টা থাকবে না (আমি তো আর তারেক না)।
বাংলাদেশ ঘুরে এলাম। প্রায় দু’টি মাস ধরে দেখলাম আমার দেশকে; বড় আবেগে, বড় উচ্ছাসে।
প্রবাসে যারা আছেন, দেশের প্রতি তাদের টানটা বোধকরি বেশ বেশিই থাকে। দেশকে তারা মিস করেন বেশি, তাই দেশের মাটিতে পা দিতেই ফিলিংসে উথলে পড়ে তাদের।
আমিও তাদেরই একজন। এক বছর পর দেশে গিয়ে তাই দেশপ্রেমের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছিলাম যেন। ঢাকার রাস্তায় নিঃসংকোচে ঘুরে বেড়িয়েছি দিবানিশি, সবুজ শ্যামল দেশটাকে নিয়ে যত্রতত্র ভেবেছি,
ইদানিং কেমন যেনো নিশাচর হয়ে যাচ্ছি। আগে থেকেই কিছুটা ছিলাম। ভার্সিটি জীবন থেকেই রাত জাগার অভ্যাস ছিলো। কিন্তু ইদানিং এই অভ্যাসটা অনেক বেশি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সারা রাত জেগে থাকি। ভোর হলে ঘুমাতে যাই। যদিও অফিসের জন্য কিছুটা কষ্ট হয়। কিন্তু শুক্র, শনি বারে আমাকে পায় কে? সারারাত জেগে থাকি। ভোর হলে ঘুমাতে যাই, সারাদিন ঘুমাই, আবার রাত হলে জেগে থাকি। যেনো ড্রাকুলার মত।
অনেক আগে থেকেই আমি খেলাধুলার প্রতি একটু বেশি মনযোগী। পত্রিকা হাতে নিয়ে প্রথমেই খুলি খেলার পাতা, টিভি তে প্রথমে দেখি খেলার চ্যানেল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, স্পানিশ লীগ সব খেলা দেখি। ফ্যান্টাসী প্রিমিয়ার লীগে টীম করি। কলেজে সব খেলাই খেলেছি। ফুটবল আর আথলেটিক্স মিটে গেছি।
এই খেলা প্রীতি আরো বেড়ে গেলো ৯৭ এ। বাংলাদেশ এর আইসিসি জয়ের পর। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ করে ক্রিকেট এর সব আমাদের মুখস্ত।
দেখতে দেখতে ভ্যাকেশন শেষ হয়ে গেল,আগামীকাল কলেজে জয়েন করছি!ভাবলেই মন খারাপ হচ্ছে,আর সেটা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
প্রতিবার এমনটা হয়,ভ্যাকেশনটা কেমন করে কেটে যায়,আর হঠাৎ করে শেষ দিনটা এসে উপস্থিত হয়।আর সাথে সাথে বুকের ভেতরটা কেমন ফাঁকা হয়ে যায়,কেমন একটা অদ্ভুত আবেগ জমে উঠে বাসার জন্যে, আব্বু আম্মুর জন্যে, অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমোবার জন্যে!কষ্ট হয়!এতদিন ধরে ক্যাডেট কলেজে পড়ছি,অথচ এখনো বাসা ছেড়ে যাবার আগ মুহুর্তে খারাপ লাগে,আম্মুকে দোয়া করতে বলতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে উঠে অজান্তে।জানি,এই আবেগটা সাময়িক,কলেজ়ে যাবার পর একটুও খারাপ লাগবে না!তাছাড়া বাসার চেয়ে কলেজটাই বেশী মজার মনে হবে ,সব বন্ধুরা যারা আমার অস্তিত্বের অর্ধেক,তাদের সাথে আড্ডা,দুষ্টামি সব কিছুতে আরও উচ্ছল হয়ে উঠব।তখন মনে হতে থাকবে কলেজে থাকলেই বেশী ভাল!
(হঠাত সামহোয়ার ইন ব্লগে নিচের গল্পটা পড়লাম। অনেকেই হয়তো দেখেছেন। যারা দেখেননি তাদের জন্য।oঅনেকের ভালো নাও লাগতে পারে। অন্যরকম, তাই ভাবলাম শেয়ার করি)
আমাকে দেখেই ভদ্রমহিলা উঠে দাঁড়ালেন। তারপর হ্যাণ্ডশেক করে খুব কায়দা করে টেনে টেনে বলতে লাগলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাছে আপনার মতো নবীন উদ্যোগতারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ; আপনাদের যেকোন প্রশ্ন বা পরামর্শকে আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করি। আমাদের শ্লোগানই হচ্ছে-। আমি মহিলাটিকে বেরসিকের মতো থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞাসা করি,
১. রিইউনিয়নের দ্বিতীয় দিন সকালে ব্রেকফাস্টের জন্য রেডি হচ্ছি। একজন মুখটা করুণ করে বলল,”দোস্ত ব্রেকফাস্ট করে আমার জন্য
একটা ফ্লাজিল নিয়ে আসবি”। লুকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বন্ধু ঊদ্ধারে রওয়ানা দিলাম।
ইলেভেনে উঠে যেবার আমরা কক্সবাজারে যাই এক্সকারশানে, সে বারে বর্ষা ছিলো না মোটেই, কনকনে ঠান্ডা মাখা শীতকাল ছিলো সেটা। তবু এত দিন পরে যতবার সেই ট্যুরটার কথা ভাবি, আমার ঝম ঝম বর্ষার কথা মনে পড়ে সবার আগে।
আমি মনে হয় সারা জীবনই বর্ষায় বেঁচেছি। বসন্তও ভাল লাগে, বসন্তের পাখি, গান বা রঙ, সব ভাল লাগে, তবু বাঁচতে ভাল লাগে বর্ষাতেই। যেন বা টুপুর টাপুর বৃষ্টির মাঝে দিঘীর পানিতে পা ডুবিয়ে ওপাড়ে টগবগে আগুনে জ্বলতে থাকা কৃষ্ণচূড়া ভালবেসে যাওয়া আজীবন।
আমাদের শাহরিয়ার এর দুরদশা দেখে শিক্ষা পেয়ে গেছি। আর এই ক্যাডেট কলেজ ব্লগে তো এখন রীতিমত ভীত সন্তস্ত্র হয়ে আছি। আল্লাহই জানেন কখন আবার সিনিয়র ভাই এর ডাক পড়ে আর ফল্ট এর জন্য পানিশমেন্ট 🙁 খেতে হয়। কারন কলেজ়ে ক্লাস ইলেভেন :grr: অনেক সিনিয়র ক্লাস হলেও এখানে তো পুরা বাচ্চা। এখন তো ব্লগটাও পোস্ট করতে গিয়ে মনে হচ্ছে এর জন্য কত রকমের পানিশমেন্ট যে খেতে হবে!!!
কালকে পাওয়ার সিস্টেম কুইজ। পড়তে ইচ্ছা করছে না। অবশ্য এই কাজটা কখনই আমার করতে ইচ্ছা করে না। এশার নামাজ পড়তে গেছি। কিন্তু হুজুর একদিকে আর আমি চিন্তা করি আরেক জিনিস। নামাজের মধ্যেই এই লেখাটা খালি মাথার মধ্যে ভনভন করতেছে। তাই কোন রকম নামাজ পড়েই দৌড়…
আমি কিছু ঘটনা বলবো এবং এইগুলা সত্যি। ক্যাডেট কলেজে ক্যাডেদের পিছনে সবচেয়ে কষ্ট যারা করে তাদের নিয়ে এই কাহিনি।
ক্যাডেট শব্দটা কানে আসলেই সবার সামনে আসম্ভব মেধাবী আর প্রতিভাধর একটা মানুষের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠে। বলতে লজ্জা বা দ্বিধা নেই আমি তার ব্যতিক্রম। না ক্যাডেট কলেজে না ক্যাডেট কলেজের বাইরে কোথাও আমি সেরকম কিছুর স্বাক্ষর রাখতে পেরেছি। তবে বন্ধুদের আড্ডায় আমি অনেক প্রিয়। তাই হলফ করে বলতে পারি ক্যাডেটসুলভ আচরণের ষোল আনা আমার মধ্যে আছে। এজন্যই নিজের অযোগ্যতা আর অসামর্থের কথা ভুলে যাই।
কয়েকদিন আগে তারেক ভাইয়ের কথা মতো তার পরিচিত এক বন্ধুর বাসায় গেলাম এক্স-ক্যাডেট গেঞ্জিটা হস্তান্তর করতে। তারেক ভাইয়ের সেই বন্ধুর নাম সানি। তো সানি ভাই আমাকে ড্রইং রুমে বসিয়ে জানতে চাইলেন তারেক ভাই আমার কি হন। আমি বলি ভাই হন। উনি মাথা নাড়েন। মৃদু স্বরে জানতে চান কেমন ভাই? চেহারায় তো তারেক ভাইয়ের সাথে তোমার কোন মিল নাই। আমি বলি ক্যাডেট ভাই। তখন উনি একটা সবজান্তা টাইপ হাসি দেন।