ইদানিং কেমন যেনো নিশাচর হয়ে যাচ্ছি। আগে থেকেই কিছুটা ছিলাম। ভার্সিটি জীবন থেকেই রাত জাগার অভ্যাস ছিলো। কিন্তু ইদানিং এই অভ্যাসটা অনেক বেশি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সারা রাত জেগে থাকি। ভোর হলে ঘুমাতে যাই। যদিও অফিসের জন্য কিছুটা কষ্ট হয়। কিন্তু শুক্র, শনি বারে আমাকে পায় কে? সারারাত জেগে থাকি। ভোর হলে ঘুমাতে যাই, সারাদিন ঘুমাই, আবার রাত হলে জেগে থাকি। যেনো ড্রাকুলার মত। দিনের আলো সহ্য হয় না। হা হা।
আজকের কথাই ধরি। কালকে অফিস থেকে বাসায় ফিরলাম রাতে। তারপর একি রুটিন। কিছুক্ষন টিভি। তারপর ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায়। তারপর আর কি? প্রথমেই নেট এ কানেক্ট হয়ে ব্লগিং। এই ব্লগিং এখন আমাদের জীবনের ১ টা অন্যতম অংশ জুড়ে আছে। অনেকেই অনেক আগে থেকেই ব্লগিং করছেন। কিন্তু আমার ব্লগিং শুরু ক্যাডেট কলেজ ব্লগ দিয়ে। এই সিসিবি কেমন যেনো নেশার মতো। কিছুক্ষন পর পর না দেখলে ভালই লাগে না। যদিও ইদানিং টিভিতে এড দেখি “নেশা কে না বলুন”। কিন্তু এতো যে সে নেশা নয়। ক্যাডেট বলে কথা। তাই অফিস এ থাকলেও সারাদিন সিসিবি তে লগিন থাকা হয়। একটু পর পর কাজের ফাকে ফাকে নতুন লেখার খোজ করি।জানি না অন্যরাও একি কাজ করে কি না। তানভীর এর কথা জানি। সেও অফিস থেকে সারাদিন লগিন থাকে। মাঝে মাঝে মন্তব্য ও করে। কত মজার মজার লেখা পড়া হয় এখানে।মনে হয় আবার কলেজ লাইফে ফিরে যাই। এতো ভালো ভালো লেখার মাঝের লিখতে ভয় লাগে। তাই বেশির ভাগ সময় পাঠক থাকতেই মজা লাগে। আরেকটা কারনে লেখা কম হয়। বাংলাতে ভালো টাইপ করতে পারি না। অনেক সময় লাগে। মাঝে কয়েকদিন স্টাফ লাউঞ্জ নামে যে চ্যাট রুম ছিল সেখানে ভালো সময় কেটেছিল। এখন আর কাউকে পাই না।
তারপর আছে সামহোয়ার ইন ব্লগ। ওটাতেও ভালো সময় কাটে। বিভিন্ন জনের বিভিন্ন ধরনের লেখা পড়া হয়। আর ওই খানে যেকোনো লেখার সাথে সাথে কমেন্ট আসে। লোকজন যেনো কমেন্ট দেয়ার জন্য রেডি থাকে। মানুষ যে ব্লগের পিছনে কতো সময় দেয়, না দেখলে বুঝা যায় না।
আছে সচলায়তন। ওটার লেখাও পড়তে বেশ ভালো লাগে।তবে ওখানের সদস্য হবার প্রক্রিয়া আমার কাছে এখনো পরিষ্কার না। আমি কয়েকবার আবেদন করে এখনও হতে পারি নাই।
আর আছে বিখ্যাত ফেসবুক। এটার কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। সবাই জানে। কিছুদিন আগে ১ টা সময় ছিলো যখন ১টা মোবাইল না থাকলে প্রেস্টিজ থাকতোনা। আর এখন ১টা ফেসবুক একাউন্ট। আর আমরা হুজুগে জাতি। যেকোনো হুজুগে খুব তাড়াতাড়ি মাতি। ফেসবুক এর আগে ছিলো হাই ৫। আর এখন ফেসবুক এমন হুজুগ যে রীতিমতো ভয়ংকর। কিছুদিন আগে আমাদের অফিস এ ফেসবুক ব্লক করে দেয়া হয়েছে। কারন আর কিছু না। সকাল এ এসে সবার প্রথম কাজ ছিল ফেসবুক অপেন করা। ১ দিনের কথা বলতে পারি। চেক করে নাকি দেখা গেছে, সকাল বেলায় এসে প্রায় ২হাজার ৫০০ জন ফেসবুক এ লগিন করেছিলো। (আমাদের সর্বমোট মানুষ ৫ হাজারের মত)। তাই এখন রাতের বেলায় মূলত ফেসবুক চেক করা হয়। এবারের ঈদে নাকি ফেসবুক নিয়ে ২টি নাটক ও হয়েছে। দেখা হয় নাই যদিও। তবে এটা ঠিক, ফেসবুক এর কল্যানে অনেক পুরোনো বন্ধুকে ফিরে পেয়েছি। যাদের সাথে বছরের পর বছর কোনো যোগাযোগ ছিলো না।
তারপর আছে, প্রোগ্রামিং এর কাজ। শুরু থেকেই আমি প্রোগ্রামিং বা সফটওয়ার ডেভেলপ এর কাজগুলা রাতেই করি। কেনো যেনো সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। ইদানিং আরো বেশি করতে হয়, কারন বাইরের কিছু ওয়েব ডেভেলপ এর কাজ করছি যেগুলো অফিস বসে করা সম্ভব না।
শেষ করছি অনেকের রাত জাগার আরেকটা কারন দিয়ে। মোবাইল। যেই অভ্যাস টা আমার কিছুদিন আগেও ছিলো। রাতে অন্তত ঘন্টা দুয়েক কথা বলতে না পারলে মনে হতো কি যেনো করা হয় নাই।
এইসব কারনে আমি দিনের পর দিন নিশাচর হয়ে যাচ্ছি।
২১ টি মন্তব্য : “নিশাচর আমি ও রাতের জীবন আমাদের…”
মন্তব্য করুন
বিয়া কইরা ফেল। এই সব হাঙ্কি পাঙ্কি সব চইলা যাইবো।
😀 😀
ভালো কইছোস। তোর ভাবি খুজতে বাইর হইতে হবে।
পেশাকে না বলুন...নেশাকে হঁ্যা বলুন.. :-B
ভাইরে তোর এই অবস্থা আমার ফ্রম দা ইয়ার 1942. সকালে অফিস করা যে কি যন্ত্রনা ! :((
মাঝে মাঝে মনে হ্য় ২৪ ঘ্ন্টাই যদি রাত হতো তাহলে আর অফিস করা লাগতো না...।সব সময় ই ব্লগে থাকতে পারতাম...... :party: :party: :party: :party:
মনের কথা বলছোস রে...
রবিন ভাই,আমারো ব্লগিং শুরু সিসিবি দিয়া।সিসিবি না থাকলে বাংলা শিখতাম না টাইপ করতে, ডজার টাইপ ক্যাডেট কিনা...আর এখন এমুন হইছে যে একটা মন্তব্য মিস হয়া গেল এইটাও সহ্য হয়না-এই ব্লগ আমারে মাইরা ফেলবে যা বুঝবার পারতাছি... 😕
যাইত্তা ধইরা মাইরালা... :chup:
:)) আগের লাইন গুলা যেন কি?
ঠিক, আমিও বাংলা টাইপ কিছুটা শিখছি মনে হয়
এইগুলা নিয়া টেনশন নিও না। এইগুলা ব্যাচেলর লাইফের প্রবলেম।
বিয়া করার পর লাইফ পুরা ভাজা ভাজা হয়ে যাবে। বরং ওইটা নিয়া টেনশন শুরু কর।
জি, অইটার মনে হয় বেশি দেরি নাই
আমার দেরি আছে বিয়া করতে 😀
এখনও ১৮ বছর হয় নাই আপ্নের!!?? 😛
:)) :))
=)) =))
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
রাতে অন্তত ঘন্টা দুয়েক কার (না কাদের?) সাথে কথা বলস্? ব্যাপার তো সুবিধার না!
এইসব আব্-ছাব্ ছাইড়া ভালো হইয়া যা।
তানভীর, ঠিক মতো পড়োস নাই আমার লেখা। লিখসি আগে কথা কইতাম। এখন ত অফিস এর প্রেসার জানোস তুই। যেহেতু এক জায়গায় আছি।চান্স পাইয়া কইলি।
আইচ্ছা ঠিক আছে।মানলাম।তো কাদের সাথে কইতেন? 😛
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
যারা তোমার ভাবী হবার জন্য আবেদন করতো :)) :))
হুমমম
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!