ইলেভেনে উঠে যেবার আমরা কক্সবাজারে যাই এক্সকারশানে, সে বারে বর্ষা ছিলো না মোটেই, কনকনে ঠান্ডা মাখা শীতকাল ছিলো সেটা। তবু এত দিন পরে যতবার সেই ট্যুরটার কথা ভাবি, আমার ঝম ঝম বর্ষার কথা মনে পড়ে সবার আগে।
আমি মনে হয় সারা জীবনই বর্ষায় বেঁচেছি। বসন্তও ভাল লাগে, বসন্তের পাখি, গান বা রঙ, সব ভাল লাগে, তবু বাঁচতে ভাল লাগে বর্ষাতেই। যেন বা টুপুর টাপুর বৃষ্টির মাঝে দিঘীর পানিতে পা ডুবিয়ে ওপাড়ে টগবগে আগুনে জ্বলতে থাকা কৃষ্ণচূড়া ভালবেসে যাওয়া আজীবন।
কলেজে থাকতে মাঝে সাঝেই কিছু দুর্বল কবিতা লিখে ফেলতাম। সে সময় যা হতো- একটা কিছু লিখে ফেললে নিজেকে আলেক্সান্ডার মনে হতো। মনে হতো- হিমালয় পাড়ি দেয়া কি আর এমন ব্যপার, আমি তো কবিতা লিখে ফেলেছি হে!
সেই সময়ের কবিতা খুলে পড়তে গেলে দেখি, সেখানেও বর্ষার মাতম। কবিতার ডায়েরীর পাতায় পাতায় সোঁদা গন্ধ। একটা কবিতা ছিলো এমন, তাতে বর্ষা ছিলো, আবার খানিক উচচাভিলাষও ছিলো, কবিতার নাম ছিলো যুযুধান। কবিতাটা এরকম-
সেই বর্ষালগ্ন থেকে শুরু করেছি
আজ আমার বসন্ত-দিন ৷
বিন্দু বিন্দু বিষপানে
আমি আজ নীলকন্ঠ ৷
অবসাদে অবসন্ন ৷
পৃথিবীর সব বিষ শুষে নিয়ে
আমি পরিশ্রান্ত ৷
তবু – -, সুকঠিন প্রতিজ্ঞা – –
বিষমুক্ত করব আমার পৃথিবীকে , সুধাময় ৷
মূমুর্ষু আমি, শরীরে অনল-জ্বালা;
তবু আকাশে বাতাসে আজ নেচে বেড়াব
— কোথাও এতটুকু বিষ
লুকিয়ে নেইত!
আজ লিখতে বসে সেই সব ধুমধাম স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেল।
স্মৃতি নিয়েও নানা মুশকিল অবশ্য। কলেজে থাকাকালীন, সেখান থেকে বেরিয়ে, বন্ধুদের সাথে, পরিবারে বা বাইরে এত জায়গায় এত এত গল্প করেছি যে, অনেকটা তাসের ঘরের মতন সেসব মাথা জুড়ে আছে, একটা টোকা দিলেই গড়গড় করে গড়িয়ে যাবে সব। সব গল্পে সত্যবাদীতা মেনে চলা মুশকিল ছিলো, গল্পের গরুকে সুযোগ পেলেই গাছ, মাঝে মাঝে হেলিকপ্টারেও চড়াতাম, কেউ টের না পেলেই হয়।
ইদানীং সিসিবিতে সবার স্মৃতিকথা পড়ি, আর ভাবি, এটাতো আমার ব্যাচেরই কাহিনি। কামরুল হয়তো, সিলেটের কোন গল্প করলো, কিন্তু পড়তে পড়তে আমার মনে হচ্ছে, আমার স্মৃতিতে সেটা জমে আছে আমাদের কলেজের গল্প হয়ে। লোকজনকে বলেওছি কতো! তার মানে, কামরুলের কাছে শুনে শুনে এতই মাথায় গেঁথেছে যে, আমার মাথায় সে সব ছবির মত জেঁকে বসেছে!
স্মৃতি কথা বলতেও তাই ভয় পাই। দেখা যাবে, সেইসব ছবিও আসল নয়, গল্পের গরু পরিচালিত কোন চিত্র নাট্য হয়তো সে সব। এই ভয়ে চুপ থাকি, সবার স্মৃতি পড়ি।
কিন্তু, আমার আবার লেখার ব্যারামও আছে। ইঁদুরের এমন হয় বলে শুনেছি। বেচারা সারাক্ষণই দাঁত দিয়ে কিছু না কিছু কাটতে থাকে, নইলে নাকি দাঁতের ভারে অক্কা পেয়ে যাবে। আমারও তাই, কিছু না লিখলে আমি সুস্থির হয়ে বসতে পারি না। মনের মধ্যে চুলবুল করতে থাকে তাবৎ ভাবনা-চিন্তা। সে গুলোকে গুগল-ডকে আশ্রয় না দিলেই নয়!
এইখানে লিখবো ভেবে আজ তাই ডায়রী খুলে বসেছি। পাতা উল্টে দেখি, আমাদের এক্সকারশানের স্মৃতিটাই সবচে বেশি জায়গা নিয়ে আছে ওখানে। তো ভাবলাম, লিখেই ফেলি না হয়, একটু একটু করে। দেখা যাক, কতদুর এগুতে পারি।
( শেষ-মেষ এটা মনে হয় একটা ট্রেলার-পোস্টই হয়ে গেলো, তাই না?)
১.
জিহাদ আসার আগেই কমেন্ট কইরা ফেলাই। 'বর্ষা' নিয়া কেউ কিছু বললেই ও কই থেইকা যেন দৌড়াইয়া আইসা পড়ে। :grr: :grr:
২.
অনেকদিন পরে তারেকের লেখা পাওয়া গেছে। কিন্তু এতোদিন আমাদের অভুক্ত রাখার শাস্তি এই লেখাতেই শেষ হবে না। এইটা কমপক্ষে ১০ পর্বের সিরিজ হতে হবে, তবেই মাফ করা যায়। :grr:
৩.
তুই দিন দিন দুষ্ট হইয়া যাইতেসছ। 😉
৪.
অফ টপিকঃ
এইবারও আমি চপল আর মান্না। ঈদ গুলি দিন দিন কেমন বোরিং হইয়া যাইতেছে আমাদের দেখসছ। তানভীররে জিগাইলাম, কয় ঢাকা ঈদ করবে। ও এখন ঢাকার ছেলে হইয়া গেছে। আমরা কুমিল্লার ছেলেই রইয়া গেলাম।
ঈদের দিন খুব তোর কথা মনে পড়ে। বিশেষ করে সব ঈদেই তোর কোন না কোন কারনে মন খারাপ থাকতো। একবার ঘুরতে গিয়া রিক্সায় লেগে পাঞ্জাবি একটু ছিড়ে গেল,আরেকবার ঈদের দিন তোর মোবাইল নষ্ট হইয়া গেল।
তোরে খুব মিস করি। 🙁
কামস, তোর কমেন্টগুলা পড়লেই শালা মন খারাপ হয়ে যায়, এক দুইটা লাইনে হাজার স্মৃতি মনে করাইয়া দিস। 🙁
রনস কই করবে ঈদ, ঢাকায় নাকি? ওরে ধরে বেন্ধে নিয়ে যা।
www.tareqnurulhasan.com
"এইখানে লিখবো ভেবে আজ তাই ডায়রী খুলে বসেছি। পাতা উল্টে দেখি, আমাদের এক্সকারশানের স্মৃতিটাই সবচে বেশি জায়গা নিয়ে আছে ওখানে। তো ভাবলাম, লিখেই ফেলি না হয়, একটু একটু করে। দেখা যাক, কতদুর এগুতে পারি।"
-- ভাই এই দিনটার জন্যই বাইচচা ছিলাম। 😀
কমপ্লিট মুভি চাই... পাইরেটেড হইলেও সমস্যা নাই। :dreamy:
কমপ্লিট দেয়া যাবে না, ডায়রি পড়তে গিয়া দেখলাম বেশ কিছু কাটপিস আছে, B-)
আপাতত সেন্সরে পাঠাইছি, দেখা যাক কতটুকু ছাড় পায়। 😛
www.tareqnurulhasan.com
এইডা কিতা কইলেন ভাই...। কাটপিস ছাড়া ছবি হিট হইব নাকি...। 😛
এই পোস্ট পড়ার জন্য ঢুকার আগে থিকাই মাথায় ঘুরতেসিল বর্ষা নিয়া কিসু কওন যাইবোনা।এই বর্ষা আমার না, এইটা তারেক ভাইয়ের। কামরুল ভাইয়ের কমেন্ট পড়ার পর সেইটা এইবার জোরে জোরে আওড়াইতেসি। আমি কিসু বলিনাই, কিসু ভাবিনাই, খালি তারেক ভাই যেইটা লিখসে সেইটা নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিয়া পড়সি খালি।
ট্রেলার পোস্ট এর পর এইবার মুল পর্বের আশায় বসে রইলাম। আশা করি এই বর্ষাতেই সেটা পাবো :dreamy:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
তোর বর্ষারে নিয়া একটা জম্পেশ লিখা দে ঈদ স্পেশাল হিসেবে... 😀
জিহাদ, পেয়ে যাবা মনে হয়। ডায়রি থেকে তুলবো, তবে টাইপ করাও কম কষ্ট না। 😛
তবে বর্ষা নিয়া তুমি একেবারেই কিছু না বললে কিন্তু আমি মাইন্ড খাবো। B-)
www.tareqnurulhasan.com
ইদুরের মত সারাক্ষণ দাঁত দিয়ে ব্লগে কিছু না কিছু কাটতে থাক।
ট্রাই করতেছি। 😀
www.tareqnurulhasan.com
:clap:
চরম হইসে মিয়া ভাই
তারেক ভাই,খুব ভাল লাগল লিখাটা।
অফ টপিকঃক্লাস নাইনে থাকতে বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে হাউস প্রিফেক্টের কাছে রাম পাঙ্গা খাইছিলাম।মনে করায় দিলেন মামা...
তারেক,খালি সচলায়তন এ লিখলে হবে........................এই দিক্টাইও একটু সময় দে..................।কিরে তোর প্রথম প্রেম কি বর্ষাকালে হইছিল নাকি...............।
বুঝলাম না তো......। 😕
ইয়ে, বর্ষা তো শুনসিলাম শুধু... 😀
জিহাদ ছেলেটা বর্ষাকে নিয়া শান্তিই পাইলনা । আগে আলম টানাটানি করল কিছুদিন এখন আবার তারেকভাই।
অফটপিক আলমের কি হইল। পাকিস্তান গিয়ে হারায় গেল নাকি । ওর কোন লেখা দেখিনা এখনো।
ইউ এন পিস কিপিং মিশনে নাম লেখাইসেন নাকি। নিজের শান্তি নিয়া চিন্তা করেন। :grr:
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
যথারীতি ট্রেলার দিয়া তারেক গায়েব x-( x-(
নাহ্, এখন থেইকা ই বি [এক্সট্রা ব্লগ] না লাগাইলে তো আর চলছেনা দেখি 🙂
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
এইরকম লেখা পড়তে কত্তনা ভালো লাগে!!
তারেক ভাই আর লেখে না 🙁 🙁