প্রেয়সী,
কেমন আছো? আমি ভালই আছি, বললে ভুল বলা হবে। আমি যেনো কেমন পাথরের মত নির্লিপ্ত হয়ে যাচ্ছি। মগজের ভিতরের সুক্ষ অনুভূতিগুলো কেমন যেনো শ্যাওলা জমা ছত্রাকের মত নিথর হয়ে পরেছে। আমি জানিনা কোন ঠিকানায় এই চিঠি পাঠাবো, কিন্তু লিখতেতো কোনো অসুবিধা নাই। তাই না? হৃদয়ের অলিন্দ নামক স্থানে আনকোরা এক অনুভূতি আজকাল বোধ হচ্ছে। সেখানে কোনো আশার আলো আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ আর কতো মেকানাইসড/ ডিজিটাল হতে পারে? একটা সীমাতো থাকতে হবে, তার চাইতে বেশীতো আর হতে পারবে না। তারপর তাকে ফিরে আসতে হবে নিখাদ বাস্তবতায়। প্রকৃতির কাছে ফিরে আসতে হবে প্রত্যেক জন্ম নেয়া জীবকে। আর মানুষতো হলো সৃষ্টির সেরা জীব। তার হিসাবতো আলাদা। বিনা প্রয়োজনে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়নি। নিশ্চই আমাদের জন্মের পেছনে বিধাতার কোনো অভীষ্ট লক্ষ্য আছে। আমরা নিছক মানুষ, আমাদের বুদ্ধিতে এতকিছু আসেনা। আমরা ভাবি, আমরা হয়তো অনেক বুঝি। আসলে লবডঙ্কা। এতবড় পৃথিবীর, ততোধিক বড় আকাশ মন্ডলীর একশ ভাগের এক ভাগও আমাদের ধারণায় নাই। আমরা শুধু বোকার বাক্সে বন্দী হয়ে বসে থাকি। কথিত আছে যে, পুরুষের একটা হাড্ডি দিয়ে নাকি নারীকে তৈরী করা হয়েছে। আমি দ্বিমত করছি না। এইযে মানুষ সারাজীবন ধরে তার সঠিক যুগলের সন্ধান করে বেড়ায়, একাধিক সম্পর্কে জড়ায় তার তাহলে কি মানে আছে? হয়তো কোনো মানে নেই। হয়তো কিছুটা স্বার্থকথা আছে। কিন্তু আমরা বুঝি না। আমরা আমাদের প্রেমকেই সত্য জেনে সারাটা পৃথিবী ওলট পালট করে ফেলি। যেদিন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে, সেদিন আমি বুঝতে পারিনি তুমি কখনোই আমার ছিলেনা। যদি থাকতে তবে মিছে রঙ্গিন ফানুষের পিছনে ছোটার জন্য আমাকে গল্পের প্লটের মত আস্তে আড়াল করে দিতে পারতে না। আমার মধ্যে কোনো মিথ্যা ছিলো না। যতটুকু মিথ্যা ছিলো পুরোটাই ছিলো তোমার মেলামেশায়। আমি প্রেমের কারণে হয়তো ক্ষানিক পথভ্রষ্ট ছিলাম, অনেক ধৃষ্টতাই হয়ত ধরতে পারতাম না। কোনটা তোমার খেলা, কোনটা তোমার সত্যি অভিমান, বুঝে উঠতে ঢের সময় আমার লেগেছে। তারমানে এই নয় ভাল আমি বাসিনি, প্রেমে আমি পরিনি। জানিনা পৃথিবীর কোন শহরে তোমার বসবাস। শুধু এইটুকু বলতে পারি, ভীন দেশে তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিক হয়ে আর যা ই থাকোনা কেনো, মাথা উঁচু করে দাড়াতে তোমার ভীষন দ্বিধা হয়। তুমি সুখে আছো তো?
তোমার আমি
21/10/2017