সীমান্তের ওপার থেকে সামান্য আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসা ঐ মা ও শিশুগুলোর দুঃখ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা। আমি নিজেও তো একবার আমার স্ত্রী ও দুধের শিশুকে নিয়ে এমনি বিপদে পড়েছিলাম। ঘটনাটি বছর দশেক আগে, আমি ও আমার স্ত্রী তখন ইউরোপীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। আমাদের সাথে ছিল এক বছরের শিশুপুত্র। তুহীন শীতের রাত, বাইরে মাইনাস দশ ডিগ্রী তাপমাত্রা। খালি গায়ে বাইরে একঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকলে একটি সুস্থ-সবল মানুষ শীতে জমেই মারা যাবে।
বিস্তারিত»ক্যাডেট কলেজে ঘটনাবহুল প্রথম রাত
ঘটনা : ১
বাবা মা চলে যাওয়ার পর যথারীতি আমি সহ আমার ডর্মের বাকি ৩ জন তুমুল কান্নাকাটি শুরু করলাম। কে কাকে থামাবে… কেউ একটু থেমে যেতে গেলেই আরেকজন আরও জোরে শুরু করে দেয়। এমন মুহূর্তে হাউজ বেয়ারা দিদির আগমন।
ডর্মে ঢুকেই বললেন” তোমাদের মধ্যে মীম কার নাম?”
স্বাভাবিক ভাবেই প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেলাম…… “আমি।” কান্নার জন্য না ভয়েই কেঁপে জবাব দিলাম।
আমার মায়েরা…
আজ কেন যেন খুব মায়ের গল্প করতে ইচ্ছা করছে।সচরাচর যা আমি করিনা…মা দিবসে সবাই মাকে নিয়ে পোস্ট দিয়ে ফেবুতে ঝড় তুলে দেয়।আমি চুপ থাকি।আমার যা বলার আছে ফেসবুকের একটা স্ট্যাটাস এর সাধ্য নাই তা বলার।আজকে বলতে ইচ্ছা করছে খুব।
আমার মায়ের সাথে আমার বয়সের পার্থক্য মাত্র সতের…গ্রামে হয়তো ব্যাপারটা
খুবি স্বাভাবিক…কিন্তু একটি অবস্থাপন্ন বাড়ির সবচে ছোট মেয়ের জন্যে জীবনের অর্থ কখনোই সংসার,সন্তান কিংবা চারদেয়ালের মাঝে দিন কাটানো,সন্ধ্যাবেলা বারান্দায় অফিসফেরত স্বামীর জন্যে অপেক্ষা করার মাঝেই আটকে ছিল না…..হবে কেমন করে…মফস্বলে বেড়ে ওঠা আমার মা শুনতেন এলভিস প্রিসলি…পরতেন গোর্কি…মা চেয়েছিলেন অনেক বড় হতে…আব্বু মাকে দেখতে চেয়েছিলেন আর দশটা বাঙালি বউ এর চেয়ে অনেক আলাদা…অনেক স্বাধীন…বাড়ির ছোট বউ আমার মা তাই শাশুড়ি জা এর সব আদেশ মেনে,সব কাজ সামলে সারারাত ধরে পরতেন এস এস সি এর জন্যে…আমাকে নিজের ভিতর বয়ে নিয়ে মা মাইল মাইল হেঁটে গিয়েছেন পরীক্ষা দিতে…ম্যাট্রিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রতিটা পরীক্ষায় আমার মায়ের রেজাল্ট নিয়ে আমার আব্বু এবং আমরা এখনো গর্ব করি…
মানুষ নয়, রোহিঙ্গা
গভীর রাতে বৃষ্টি নেমেছে। গরমে অতিষ্ঠ হওয়া মানুষের দেহে বয়ে যাচ্ছে শীতল পরশ আর বৃষ্টির মধুর ঝাপটা। ঘুম গাঢ় হয়ে উঠেছে কারো কারো। এমনই সময় নাফ নদীর ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা একাকী একটা ট্রলারে বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটা আর বাতাসের তীব্র ঝাপটা ভিজিয়ে দিচ্ছিলো বিশাল এ আকাশের নীচে অসহায় কিছু অচ্ছুত মানুষকে। উবু হয়ে বসা মা তার আর কিছু না পেয়ে নিজের দেহটা দিয়েই আড়াল করে রেখেছিলো তার শিশুটিকে।
বিস্তারিত»“মা, মা, আমি পরীক্ষায় পাশ করেছি……”
ডিসক্লেইমারঃ এই পরীক্ষা দিয়ে আমি গ্র্যাজুয়েট ষ্টুডেন্ট থেকে পিএইচডি ক্যান্ডিডেট হলাম মাত্র, ডঃ হইতে আরো বছর দুয়েক বাকি………
গতকাল প্রায় দেড়যুগব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রজীবনের শেষ পরীক্ষাটা দিয়ে ফেললাম- পিএইচডি থিসিস প্রপ্রোজালের ডিফেন্স ছিল দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত। আমার থিসিসের বিষয়বস্তু হলো, বাংলাদেশী অভিবাসী এবং শ্রমিকরা কেন দেশে টাকা (যা’র সুন্দর, পোষাকি নাম হলো রেমিট্যান্স) পাঠায়? মৌখিক পরীক্ষা, ছোট্ট একটা রুমে চারজন প্রফেসরের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হতে আক্ষরিক অর্থেই আমার সময় থমকে গেল।
বিস্তারিত»শেষ সিগারেট
ছুটে চলা ট্রেনের জানালা দিয়ে মুখ বের করে দিলাম আর দুরন্ত বাতাসে বুজে এলো দুটি চোখ। ডোবায় আধখানা চাঁদের টলমলে প্রতিচ্ছবি দেখতে দেখতে হঠাৎ বৃষ্টির ঝাপটায় এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলো মুখ। চাঁদ ও বৃষ্টির এই উদ্ভট সহাবস্থানের কোন ব্যাখ্যা দাড়া করানোর চেষ্টা না করে মাথা ভেতরে এনে জানালা বন্ধ করতে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় সহযাত্রীর প্রশ্ন, “বৃষ্টি পড়ছে?” উত্তর দিলাম, “চাঁদের আলো বৃষ্টি দুটোই পড়ছে।” ইয়ার্কি করছি কিনা সেটা বোঝার জন্যে সহযাত্রীর চোখ মূহুর্তের জন্যে সরু হয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে এলো।
বিস্তারিত»অতীন্দ্রিয় না ষষ্ঠইন্দ্রিয়?
সনাতন ধর্মে ‘টিপ’ ব্যবহার শুরুর দিকে ছিল আধ্যাত্মিক! কপালের “টিপ” তখন “তৃতীয় নয়ন” এর রূপকার্থে মুনি ঋষিদের অলংকৃত করত।
হাজার বছর ধরে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাইরেও মানুষ খুজে ফিরেছে “আরও” কিছু। আর সেই ‘আরো কিছু’ যে কি? তার সঠিক হদিস আমাদের সাধারন মানুষের কারো কাছে অবশ্যই নেই, হলফ করে বলতে পারি।
কেও ধ্যান মগ্ন থেকে, কেও নৃত্যে,গীতে,তালে,সুরে,লয়ে,জিকিরে-আজগারে সাধারনকে অতিক্রম করে সেই অতীন্দ্রিয়,
বিস্তারিত»আসেন নামতা শিখি!!
১৯৯৬ সাল।
শাইখ ক্লাস ১ এ পড়ে। প্রথম সাময়িক পরীক্ষা । অংক!!!! ভুতের মুখ আর অঙ্ক পরিক্ষার প্রশ্ন একই রকম।
১০০ নম্বরের পরীক্ষা!!!!!
প্রশ্নপত্রের আগমন। ভুতের চোখের সাথে শাইখের চোখাচোখি হল।!!
প্রশ্নপত্রঃ ১। অঙ্কে লিখ
শাইখঃ পারি
২। কথায় লিখ
শাইখঃ পারি
৩। যোগ কর (হাতে না রেখে)
৪। যোগ কর ( হাতে রেখে)
৫।
বদলে না যাওয়া ভালোবাসাগুলো
১৯৯৮ সালের জুন মাসের এক তারিখ
আব্বা, আম্মা আর আমি – এই তিনজন গাড়িতে করে টাঙ্গাইল যাচ্ছি। সবাই বললো ক্যাডেট কলেজে চান্স পাওয়া অনেক কঠিন। তাই ঠিক হলো আমাকে ক্যাডেট কোচিং এ দেয়া হবে। যেখানে থাকি সেখানে ভালো কোন কোচিং নেই। অগত্যা টাঙ্গাইলে চলো। ঠিক হলো আবাসিক থেকে কোচিং করবো কয়েক মাস। আজ সেই দিন। আমাকে কোচিং এ রেখে আসা হবে। গাড়িতে আম্মা আমার পাশে বসা।
বিস্তারিত»সংখ্যা হিসেবে ১২’র প্রভাব বিষয়ক আলোচনা
১।
১২ সংখ্যাটার সাথে আমার যোগাযোগ খুব ভাল। ১২ বছর বয়সে ১২ মে ক্যাডেট কলেজে থেকে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে ১২ সংখ্যাটা ঘুরে ফিরে আসে। নাকি আমি খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসি সেটাও ভাববার বিষয়। তবে এটা ঠিক, আমার ক্ষেত্রে ১২ একটি টিপিকাল খেলোয়ারি সংখ্যা। আমার জীবনে ১২’র খেলাধুলার শেষ নেই। উদাহরণে ব্যাপারটা পরিস্কার হবে। নেদারল্যান্ডসে প্রথম যে বাসায় ছিলাম, সেটার ঠিকানা ছিল এডেলইউসস্ত্রাত-১২।
আমার ফ্লোরের ইমিডিয়েট নিচে যে ভদ্রমহিলা থাকতেন,
বিস্তারিত»রোজনামচাঃ পর্ব ১- সকাল
ক্লাস ৭ এর প্রথম ছুটিতে যেবার বাড়ি গেলাম প্রথম দিন সকালে মা ঘুম থেকে ডাকলে ইয়েস প্লিজ বলে চিৎকার করে উঠছিলাম ।মা বুঝতে পারে নাই আমি কি বলেছি কিন্তু আমি আমার পরিবর্তন বুঝতে অতিরিক্ত কোন ন্যানো সেকেন্ড ব্যবহার করি নাই ।
কলেজের ৬ বছরে সকালগুলো কয়েকটা রেঞ্জে ফেলা যাই ।সেভেন এ পিটি বেলের অনেক আগে ওঠা , এইটে এ নরকের হোটেল বয় রুপী ডিউটি কাডেটশীপ,নাইনে অন্ধের দেশে ল্যাংড়া কানা রাজার রাজ্য পরিচালনা ওই সকাল থেকেই শুরু।
সিসিবির সামার পিকনিক
সিসিবির পিকনিক হওয়ার কথা ছিল অনেক অনেক দিন আগে। গতবছর একটা তারিখ ঠিক করেও শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হয়েছিল। এবছরও শীতে আমার ছেলের পরীক্ষা থাকায় করা যায়নি। তারপর আমার যুক্তরাষ্ট্র সফরের কারণেও পিছিয়েছে। আমাকে বাদ দিয়ে পিকনিকটা হয়ে গেলে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু কেন যেন এবারের পিকনিকের জায়গাটা ঠিক হয়েছিল পল্লবী-২ এ। আর তাতেই বারবার বিপত্তি! এবার আর কোনো বাধা মানতে রাজি ছিল না অনেকে।
বিস্তারিত»অপরিচিত কিংবা অর্ধ পরিচিত মানুষ ও জীবনের গল্প
গল্প লিখতে বসলে গল্পের চরিত্র নিয়ে কাহিনী ও নাম সংকটে পরে যেতাম প্রথম প্রথম। বাস্তব আর গল্পের অসমতায় প্রভাবিত হয়ে গল্পের প্লট নিয়েই সন্দেহাতুর হয়ে যেতাম। বাস্তবের ঘটনাগুলো গল্পের মতো অভিনব হয় না নাকি গল্প বাস্তবের মত জীবন্ত হয় না এ নিয়েই দ্বিধা কাজ করতো মনে। কাহিনী তাই গড়ে উঠে বয়ে চলা জীবনগুলোর একটার সাথে আরেকটার কাহিনীর যোগ বিয়োগে। অদেখা জীবন গল্পে চলে এলে সেই জীবনের বাস্তবতার চেয়ে সেই জীবন নিয়ে রোমান্টিক ভাবনায় স্টেরিও টাইপ কাহিনী গড়ে উঠে।
বিস্তারিত»ফুলের পাঁপড়িতে আন্দোলন
ফুলের পাঁপড়িতে আন্দোলন
– রমিত আজাদ
ভুল হয়ে গেছে কি?
ভুল তো হয়েই যাচ্ছে,
ক্রমাগত আরো ভুল হয়তোবা হবে।
ভুল করি বলেই তো আমরা মানুষ,
অথবা মানুষ বলেই আমরা ভুল করি।
বারবার ভুলে গেলে বলি ভুলো মন,
আর ভুল করে মন দিয়ে দিলে বলি,
মনের ভুল!!
মনের কারণে ভুল হতে দিলে
কতটুকু অপরাধ হবে?
কিছু অসমাপ্তি-৩
ক্লাস ইলেভেনে উঠলাম তখন সবেমাত্র। ICCLMM নিজের কলেজে, অংশগ্রহন করছি, FB’র নিত্য নতুন ক্যাডেট বন্ধুদের অনেকের সাথেই প্রথম দেখা ও প্রতিযোগীতা…সব মিলিয়ে চুড়ান্ত উত্তেজনা! সাথেই কিছু অস্বস্তিও! বন্ধুরূপে ক্যাডেটদের সাথে মিশতে আমার উদারতার কমতি নেই, কিন্তু যখন ওরা MGCC’র CC বাদ দিয়ে G তে ফোকাস করে, তখন অস্বস্তি তো হবেই! অবশ্য এই G বিনা ICCLMM এর স্বাদ ই বা কি হোত!!!
যাক আসল কথায় আসি।
