লাইন ম্যানেজার আমাকে আমার ডেস্ক দেখিয়ে দিলেন। বিশাল ফ্লোরের একদম শেষ মাথার পশ্চিম কোণের কিউবিকলে। একেকটা কিউবিকলে তিনটা ডেস্ক। আমার চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে খানিকটা ঘাবড়ে গেলাম। আমার কিউবিকলের বাকি দু’জন সহকর্মী নারী। পাশের কিউবিকলের তিনজনই নারী। আমার আগে এ ডেস্ক যার দখলে ছিল তিনিও ছিলেন নারী। দেখে মনে হচ্ছে এখানটায় মেয়েরা নিজেদের বেশ একটা সুরক্ষিত সংরক্ষিত এলাকা বানিয়ে ফেলেছে। আমার অসহায় চেহারা দেখে লাইন ম্যানেজার পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘ইউ আর আ লাকি ম্যান! এতগুলা ফিমেল কলিগের মাঝখানে বসবেন!’ অফিসের প্রথম দিনই এমন অভিজ্ঞতায় আমি দমে গেলাম। আগের অফিসের কথা মনে পড়ল। ওখানে ভালই ছিলাম। শুধু নতুন বসের সাথে ঝামেলাটা না হলে আমি কি আর চাকরি ছাড়ি!
মেয়েরাও মনে হয় আমার মত উটকো ঝামেলায় কিছুটা বিরক্ত। তবে সেটা সাময়িক। শিগগিরই তারা আমার অস্তিত্ব ভুলে সব ধরণের মেয়েলি কথা-বার্তা চালিয়ে গেল। মেক-আপ থেকে শুরু করে স্যানিটারি ন্যাপকিন পর্যন্ত!
তো এই নারী-রাজ্যের এক মহিয়সী– নীরা আপু আমাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলেন। নীরা আপু আর আমি একই ভার্সিটির একই ডিপার্টমেন্ট থেকে এসেছি। আমার মাত্র দু’বছরের সিনিয়র হলেও ভার্সিটিতে কেন যেন আমাদের কখনোই দেখা হয়নি। তিনি বেশ বড়বোন-সুলভ ভাব আর কর্তৃত্ব নিয়ে আমার ওপর জেঁকে বসলেন। প্রথম দিনই আমাকে নিয়ে গেলেন অফিসের ক্যাফেটেরিয়ায়। দু’কাপ কফির অর্ডার দিয়ে বললেন, ‘শোন, নতুন আসছ তুমি। চোখ-কান খোলা রেখে চলবা। ইম্প্রেশন বিল্ড আপ করার জন্য এই সময়টা খুব ক্রুশিয়াল। তো কেমন লাগতেছে তোমার?’
‘আপনাদের ফিমেল-ব্রিগেডের মাঝাখানে পড়ে আমার তো নাজেহাল অবস্থা!’
‘আহা, বেচারা!’ নীরা আপু শব্দ করে হাসলেন। তারপর চোখ কুঁচকে বললেন,
‘সাবধান! তুমি কিন্তু আমাদের মেয়েলি কথায় নাক গলাতে যাইও না! বেশি ফ্রী হওয়ার দরকার নাই। আমি তোমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র আপু। আমার কথা আলাদা। তুমি মুখ ফসকে অফেন্সিভ কিছু বলে ফেললে অন্য মেয়েরা কিন্তু সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অ্যালেগেশন দিতে পারে।’
‘অ্যাঁ !’ আমি ভয়ে ঢোক গিললাম। কি সাংঘাতিক ব্যাপার!
‘আর তোমার লাইন ম্যানেজার ব্যাটা কিন্তু খুব বজ্জাত! মুখে একটা, মনে আরেকটা। তোমাকে দিয়ে কাজ করায় নিয়ে ক্রেডিট নেবে নিজে। ওই ব্যাটার টিমে আমি আগে কাজ করছি। এই জন্যই আমার এখনো প্রোমোশন হয়নি।’
এরপর থেকে আমাকে প্রায়ই তার সাথে ক্যাফেতে যেতে হত এবং, অফিস-কালচার, অফিস-পলিটিক্স বিষয়ে গাদা গাদা লেকচার গিলতে হত। শেষমেশ ব্যাপারটা এমন দাঁড়াল যে , তিনি নিউমার্কেটে গেলেও আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এক জোড়া জুতা কিনতে হবে। যাবা আমার সাথে?’
আমাদের জোড়া বেঁধে ঘোরাঘুরি করতে দেখে অফিসের কেউ কেউ প্রেমের সম্ভাবনার গন্ধ পেয়ে বাঁকা হাসি দিতে লাগল। এই আতঙ্কে আমি যতটা পারি নীরা আপুকে এড়িয়ে চলা শুরু করলাম। অবশ্য তার উপদেশ এড়াতে পারিনি। বেফাঁস কথা বলার ভয়ে পারতপক্ষে নারী সহকর্মীদের সাথে কথাই বলতাম না।
আমি মৌন-সাধুর ভেক নেওয়ার পর অফিসের লুসি নামের মেয়েটা নিজেই এগিয়ে এল। চোখাচোখি হলেই হাই-হ্যালো আর মিষ্টি হাসি। দিনে অন্তত একবার আমার ডেস্কের সামনে এসে বলবে, ‘এত সিরিয়াস হওয়ার কি দরকার মিস্টার নেহাল ? ইউ আর নট আ নাসা-সায়েন্টিস্ট! সোশ্যালাইজিং করতে হবে না ?’
কখনো আবার বলবে, ‘হেই, আপনার টাইয়ের প্যাটার্ন-কালার কোনটাই শার্টের সাথে ম্যাচ করেনি।’
কোন কোন বিকালে তার ডেস্ক থেকেই চেঁচিয়ে বলবে, ‘নেহাল ভাই, উই আর হাংরি! পিওন কে দিয়ে ক্যাফে থেকে কিছু আনান।’ অন্য মেয়েরাও গলা মেলাবে, ‘হ্যাঁ নেহাল ভাই আনান না প্লিজ !’
ক্যাফে থেকে স্ন্যাকস আনানো বাদে লুসির বাকি খুনসুটিগুলো আমার ভালই লাগত। লুসি বেশ সুন্দর। বড় বড় চোখ, একটু বোঁচা নাক, একজোড়া আদুরে ঠোঁট । লালচে সিল্কি চুল ঘাড় পর্যন্ত ছাঁটা। ওর মুখটার কোথায় যেন একটা চুম্বক আছে। ফ্যাশন-দুরস্ত লুসির ওড়না সবসময় গলায় ঝুলত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওর সুন্দর মুখ কিংবা ভারি বুকের দিকে তাকালে ক্লান্তি ভুলে কেমন চাঙ্গা হয়ে উঠতাম।
ক’দিনের মধ্যেই লুসি আর আমি আপনি থেকে তুমিতে চলে এলাম। আলাপে আলাপে যেদিন জানলাম ও আমার বছর দুয়েকের বড়, সেদিন বেশ অবাকই হয়েছিলাম। ওকে আমার চেয়ে ছোটই দেখায়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঢুঁ মারতাম ওর ডেস্কে। ব্যাপারটা চা-সিগারেটের মত নেশা হয়ে দাঁড়াল। কাজের বিরতিতে এক চুমুক চা না খেলে যেমন চলে না, তেমনি চলে না ওর সাথে এক-আধবার কথা না বললে। কিন্তু আমার কাজের ব্যাঘাত না ঘটার কোন উপায় ছিল না। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ও একদিন সিক লিভ নিত। সকালে ওর লাইন ম্যানেজারকে টেক্সট পাঠিয়ে জানাত আসতে পারবে না। কোনদিন জ্বর, কোনদিন ফুড পয়জনিং, কোনদিন পিঠ-ব্যাথা। একবার যথারীতি ও অসুস্থ এবং অফিসের খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজ ওর বাসায়।
আমাকে ফোন দিয়ে জানাল, ‘অফিসে যাওয়ার পথে আমার বাসায় একটু আসতে পারবা ? ডকুমেন্টগুলা আমার লাইন ম্যানেজারকে দিতে হবে।’
জানতাম ও একা একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকে। যদ্দুর জানি, ব্যাচেলর মেয়েদের ফ্ল্যাটে পুরুষ অতিথির যাওয়া-আসার ব্যাপারে হাজারটা রেস্ট্রিকশন থাকে। ওকে সে কথা বলতেই ও জানাল, ‘নো ওয়ারি। মাই ফ্ল্যাট, মাই রুল। ল্যান্ডলর্ডের কোন রেস্ট্রিকশন নাই ।’
ছোট্ট ছিমছাপ একটা ফ্ল্যাট। লুসির পরনে টি-শার্ট আর থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট। আমাকে ডকুমেন্টগুলো দিয়ে বলল, ‘চা খাবা ?’
হ্যাঁ, চা তো আমি খেতেই চাই। লুসির সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করব নাকি ! আর ফ্ল্যাটে শুধু আমি আর ও সেটা ভাবতেই কেমন উত্তেজনা হচ্ছিল। আমি হ্যাঁ-না কিছু বলার আগে লুসি নিজেই উত্তর দিল, ‘না, না, চা খাবা কিভাবে ? দেরি হয়ে যাবে তো অফিসের। আরেকদিন চা খাওয়াব তোমাকে। আজ যাও।’ আমি হতভম্ব হয়ে চলে এসেছিলাম সেদিন।
এদিকে নীরা আপুর সাথে চোখাচোখি হলেই আমি অস্বস্তিতে পড়ে যাই। তার চেহারায় ঠাণ্ডা কঠিন ভাব। টানাহ্যাঁচড়া থেকে রেহাই পেলেও এমন গম্ভীর রামগড়ুরের ছানা-মার্কা মুখ দেখলে অপরাধবোধ হয়। নীরা আপু এক বিকেলে বললেন, ‘এক কাপ কফি চলবে ?’
‘হ্যাঁ আপু, অবশ্যই!’ আমার মুখে বিগলিত হাসি।
কফি খেতে খেতে গম্ভীর মুখেই নীরা আপু জিজ্ঞেস করলেন, ‘অফিস কেমন লাগছে এখন?’
‘ভাল।’
‘তা ফিমেল-জোনে বসার কারণে কি মেল কলিগদের সাথে তোমার খাতির জমে নি?’
‘কেন? অনেকের সাথেই তো আমার ইন্টিমেসি। লাস্ট উইকেন্ডেই তো আমি, জাহিদ আর তৌফিক ভাই সিনেপ্লেক্সে ম্যুভি দেখতে গেলাম।’
‘অন্য ভাবে নিও না, কিন্তু তুমি যা করছ দ্যাট লুকস অড। তুমি খালি লুসির ডেস্কের পাশে ঘুরঘুর কর। অন্যরা কিন্তু ভালভাবে দেখছে না ব্যাপারটা। তুমি ওর প্রেমে-ট্রেমে পড়ছ নাকি ?’
‘আরে না, আপু। কি যে বলেন!’
‘তাহলে এত মেলামেশা বাদ দাও। নিজের ইমেজ নষ্ট করবা কেন ? আর ও কিন্তু যে কোন সময় ফায়ার হয়ে যেতে পারে। ঘনঘন অফিস মিস দেয়, সিনসিয়ারলি কাজ করে না। লাঞ্চ টাইমে বাইরে খেতে গিয়ে দুই ঘন্টা কাটায় আসে। আর ওর ক্যারেকটার নিয়ে কি বলব! ওর গুডলাক, আমাদের অফিসের কালচার খুব ভাল। অন্য কোথাও কাজ করলে কলিগরা ওকে স্লাট বলতে ছাড়ত না!’
আমি মনমরা হয়ে ডেস্কে ফিরলাম। ঢাকা শহরের গলিগুলোর মতই এখানকার মানুষের মন। ঘিঞ্জি। একটা মেয়ে একা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকলে আর পোশাকে-আশাকে রাখ-ঢাক না রাখলেই তাকে নিয়ে এত কেচ্ছা-কাহিনী বানাতে হবে ?
এরপর থেকে আমি একটু সাবধান হয়ে গেলাম। নীরা আপু ডেস্কে থাকলে ভুলেও লুসির আশপাশে যাই না। বরং পুরুষ-সহকর্মীদের সাথে আমার অন্তরঙ্গতা-আন্তরিকতা জাহিরের চেষ্টা করি। একদিন অফিস শেষে বেরোবার সময় ফাঁকা লিফটে লুসিকে বলি, ‘এত অফিস বাঙ্ক করাটা কিন্তু রিস্কি। চাকরিটা চলে গেলে ?’
লুসি পুরো বিষয়টাকে হাতের পিঠ দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘আরে ধুর! ফাঁকি দেওয়াটাও একটা আর্ট। নট অল হ্যাভ দ্যাট গাটস অর ট্যালেন্ট!’
আমি ওর সাহসী-আত্মবিশ্বাসী ঝকঝকে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার বুকের ভেতর একটা ভাললাগা-ভরা বেলুন উড়তে থাকে। লুসি একদিকে যেমন খোলামেলা, তেমনি চাপা। সাধারণ কথা-বার্তায় মনে হবে যেন বুক উজাড় করে সব বলছে, কিন্তু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ এলে ট্র্যাফিক পুলিশের মত কড়াকড়ি।
পরপর তিনদিন লুসি অফিসে আসছে না। ভাইবারে কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই জানাল ব্যাক-পেইন। ওর লাইন ম্যানেজার ওর ওপর ত্যক্ত-বিরক্ত-ক্ষিপ্ত। আমার ডেস্ক থেকেই তার গলার রাগী আওয়াজ শোনা যায়। যে-ই আসছে, তার কাছেই লুসির নামে নালিশ করছেন। টুকরা-টাকরা শুনতে পাই– ‘আমি এই মেয়েকে নিয়ে আর কাজ করতে পারবো না। নো ওয়ে! শি ইজ টোটালি ওয়ার্থলেস!’
তিনদিন পর লুসির দেখা মিলল। সবসময় ওর অসুস্থতা নিয়ে সন্দেহ হয়েছে, কিন্তু সেদিন ওকে দেখে মনে হল, শুধু ব্যাক-পেইন না , আরও কোন অসুখ করেছে। চোখ লাল, তলায় কালি। ক্লান্ত-ফ্যাকাশে চেহারা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম , ‘এমন দেখাচ্ছে কেন?’
ও হেসে বলল, ‘কজ আই ডিডন্ট অয়্যার মেক-আপ।’
দু’দিন অফিস করে লুসি আবার লাপাত্তা। এবার মোবাইল বন্ধ, ফেসবুক-ভাইবারেও কোন হদিস নেই। কয়েকজন কলিগ আমাকে ঠেস দিয়ে বলল, ‘আপনিও জানেন না ! আপনার সাথে না এত ইন্টিমেসি!’
শনিবার সকাল সকাল আট মাসের অন্তঃসত্তা বোনকে নিয়ে মেরী স্টোপস ক্লিনিকে যাচ্ছি। বিশাল পেট নিয়ে চলাফেরা করার মুশকিল তো আছেই, তার ওপর বোনটা আমার ভীতু স্বভাবের । দুলাভাই ঢাকার বাইরে। তাই ছুটির দিনের আরাম বিসজর্ন দিয়ে আমাকেই সঙ্গী হতে হল। মেরী স্টোপসে পৌঁছে ভেতরে আর ঢুকলাম না। গেটে দাঁড়িয়ে বললাম, ‘তুমি চেক-আপ করাও। আমি আশেপাশেই আছি।’ হঠাৎ খেয়াল করলাম, আরে! গেটের আরেক পাশে লুসি দাঁড়িয়ে! উত্তেজিতভঙ্গিতে ফোনে কথা বলছে। ওর কথা শেষ হবার অপেক্ষায় দাঁড়ালাম।
এক আধটা ভাঙাচোরা শব্দ কানে আসছে। লুসির কাঁপা-কাঁপা গলা।…অ্যাবর্শন…রিলেশনশিপ… শব্দ দু’টো কানে ছিটকে আসতেই চমকে উঠলাম। মনে হল লুসি কাঁদছে।
আমি আর দাঁড়ালাম না। আমার মুখোমুখি হলে বেচারী অস্বস্তিতে পড়বে। রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছি আর ওর কথা ভাবছি। ওর যে কারও সাথে সম্পর্ক আছে, সেটা কখনো জানায়নি কেন! ভাবতে ভাবতে আমার আর হুঁশ ছিল না। পেছন থেকে একটা রিকসাওয়ালা যেতে যেতে বলল, ‘ব্যাটা অন্ধ না ঠসা ! এত বেল বাজাইতাছি, তাও বোঝে না!’
লুসির প্রতি রাগ-অভিমান দু’দিনে মুছে গেল। এবার শুধু মায়া। মায়া আমাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরল যে এ-ও মনে হল, আমি মেয়ে হলে ভাল হত! লুসি হয়ত তাহলে লজ্জা-সংকোচ ভুলে সব শেয়ার করত।
সপ্তাহ দুয়েক বিনা নোটিসে ছুটি কাটিয়ে অফিসে ফিরল লুসি। হাতে একটা মেডিক্যাল সার্টিফিকেট –ডেঙ্গু জ্বর। কলিগরা বলাবলি করছিল, ওটা নীলক্ষেত থেকে বানানো ভুয়া সার্টিফিকেট। অফিসে পা রেখেই লুসি ডিপার্টমেন্ট-হেডের রুমে ঢুকে গেছে। আমি অপেক্ষায় আছি, কখন বেরুবে। কলিগদের কানাঘুষা কানে আসে, ‘ওকে বস রিজাইন করতে বলছে। রিজাইন শেষে এতক্ষণে চলেও গেছে হয়ত।’
নীরা আপু আমার ডেস্কের সামনে এসে গলা নামিয়ে বললেন, ‘দেখছ ! আমি আগেই বলছিলাম না তোমাকে! বেশি ঘেঁষাঘেঁষি করলে তুমিও ফেঁসে যাইতা। তলে তলে ও কি করে আমি কি জানি না! দিনরাত ফ্লার্ট করা স্লাট বিদায় হইছে ভালই হইছে!’ আমি ডেস্কের দিকে তাকিয়ে ভাবি, সেদিন আমাকে আর লুসিকে মেরী স্টোপসের গেটে দেখলে নীরা আপু নিশ্চয়ই দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে ছড়িয়ে বেড়াত যে আমি লুসিকে অ্যাবর্শন করাতে নিয়ে গেছি! আমি বলি, ‘আপু, আপনি জার্নালিজমে গেলে ভাল করতেন!’ এরপর বিড় বিড় করে বলি, ‘ইয়েলো জার্নালিজম।’ কথাটা জোরে বলা হয় না কারণ নীরা আপু যে সেটাকে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অ্যালেগেশন করে বসবেন না তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।
মনে হচ্ছে প্রথম! 😀 চমৎকার ঝরঝরে ছোট গল্প পড়লাম। সিসিবিতে ইদানিং আসা হচ্ছে না। ভালই হলো এই গল্পের কারণে আসা হলো!
\\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\
বাহ! :clap: :clap: :clap:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
সাবলীল ভাষায় বিবৃত এ গল্প ভালো লেগেছে। ভাবনাগুলো সমসাময়িক সমাজের প্রতফলন।
দারুন :clap: :clap: :clap: