প্রাউড টু বি মুসলিম

(এই ব্লগের শানে নুযুল আশাকরি সবারই জানা, জ্ঞানীদের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। লেখাটি আমাদের প্রিয় রহমান ভাইকে উৎসর্গীকৃত।)

মুসলমান ঘরে জন্মেছি তাই গর্ববোধ করি। জন্মসূত্রে মুসলমানিত্ব পেয়েও এটাকে সৃষ্টিকর্তার এক রহমত বলে মনে হয়। (ভাইজানেরা, যারা একমত, বলেন সুবহানাল্লাহ্‌।) কেন আমার এমন মনে হয়?
ইসলাম ধর্ম স্রষ্টা-প্রবর্তিত একটি ‘পূর্ণ গাইডলাইন’। এর প্রমাণ আমরা দেখতে পাই ইসলামের প্রবক্তা মুহাম্মদের (সাঃ) জীবনেই। পার্থিব অক্ষর-জ্ঞানশূন্য এই মানুষটি তার চারপাশের অনৈতিক-বর্বর যোদ্ধা জাতিকে কী করে উদারনৈতিক-সহনশীল জাতিতে পরিণত করেছেন, আমরা দেখেছি। আর এর ফলেই ইসলামের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে, এভাবে বাংলাদেশের মানুষও পেয়েছে এই সত্যপথের সন্ধান।

ইসলামের এই শ্রেষ্ঠত্ব কেন? কারণ ইসলাম জন্ম দিয়েছে এক স্বতন্ত্র সংস্কৃতির, দিনের পুরো ২৪ ঘন্টা একজন অনুসারীর কিভাবে কাটাতে হবে, সব বলে দেয়া হয়েছে ইসলামে। অন্য ধর্মের সাথে ইসলামের পার্থক্য এখানেই যে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা সারাদিন ধর্মচর্চা করেনা কিন্তু মুসলমানেরা করে। একজন প্রকৃত মুসলমান তার দৈনন্দিন প্রতিটি কাজ করেন স্রষ্টার সন্তুষ্টির বাসনায়, প্রতি মুহূর্ত তিনি ভাল কাজে রত এবং খারাপ থেকে বিরত থাকেন; অন্য ধর্মের লোকেরা কেবল বিপদে পড়লেই প্রভুকে স্মরণ করেন, অন্যথায় নয়। সপ্তাহে একদিন চার্চে গেলেই তাদের চলে, অথবা নির্দিষ্ট একদিন দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করে নিলেই তাদের ধর্মপালন হয়। কিন্তু মুসলমান প্রতি সেকেন্ডে আল্লাহকে হাজির জেনে তার দেয়া নিয়মেই চলে।
সারাদিন মুসলমানকে ব্যস্ত থাকতে হয় ইবাদতের মাঝে, গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে যা-খুশি-তাই করা যায় না। একটু পরপর নামাজের মাধ্যমে প্রভুর সাথে কথোপকথন, রোযার মাধ্যমে প্রভুর ভীতি সঞ্চয় ঘটে। ধনী-দরিদ্র ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে নামাজ পড়ে মুসলমান, গরিবের ভালবাসায় নিজের সম্পদ থেকে যাকাত-ফিতরা বিলিয়ে দেয়, আঘাতপ্রাপ্ত হলে সবে মিলে আত্মরক্ষা করে। বিশ্বময় ভ্রাতৃত্বের এ-সম্পর্ক ইসলামের চিরাচরিত সংস্কৃতি। আর এখানেই আমাদের মুসলমানিত্বের গর্ব।

ইসলাম একটি সুনিয়ন্ত্রিত পারিবারিক আবহ গড়ে দিয়েছে। পরিবারের বৃদ্ধ-শিশু সবাই মিলে একটা শান্তির যে মিলনক্ষেত্র, বড়-ছোট শ্রদ্ধা-ভালবাসার মধ্য দিয়ে পরিবারের সদস্যদের মাঝে যে বুঝাপড়ার সম্পর্ক বেঁধে দিয়েছে ইসলাম, তা পশ্চিমা সমাজে বিরল। বাংলাদেশের ভেতরে বসে বসে এই ধ্রুবসত্য ব্যাপারটি আমাদের অনেকের চোখে পড়েনা, ‘আধুনিক’ দুনিয়া ভ্রমণ করলে বোঝা যায়, এ দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন কেবল ইসলাম মানার মাধ্যমেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

মুসলিম সংস্কৃতির আরেকটি বড় দিক হলো অপরের চিন্তাধারা ও ফিলিংসকে গুরুত্বদান। নিজের উপর অন্যের দাবিকে অগ্রাধিকার দেয়া। মুসলমান হয় সহজ-সরল, অহংকারশূন্য। কারন সে জানে আপন প্রভুর বাণীঃ

অহংকার আমার চাদর। যে ব্যক্তি অহংকার করলো, সে যেন আমার চাদর ধরে টানাটানি করে।

এভাবে সমাজে একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সুযোগ করে দেয় ইসলাম। যে সমাজে কেউ অপরের সম্পদ নিয়ে লোভাতুর হয়না, নিজের ব্যবসায় লাভের জন্য অন্যকে প্রতারণার আশ্রয় নেয়না, লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ছলচাতুরি করেনা, অন্যের বংশমর্যাদা প্রতিপত্তি নিরাপত্তা নিয়ে বিপত্তি করেনা। যে সমাজে আত্মীয় প্রতিবেশী বয়োজ্যাষ্ঠ সবার অধিকার রক্ষিত হয়, অন্য ধর্ম ও গোত্রের লোকের প্রতি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা দেখানো হয়।

মুসলমান হিসেবে গর্ববোধের আরেকটি প্রধান কারণ হলো, ইসলাম মানবতার ধর্ম। বিশেষতঃ নারীজাতির প্রতি ইসলামের অনুভূতি অপূর্ব সুন্দরভাবে প্রমাণিত। না-জানার কারণে কেউ কেউ এক্ষেত্রে একটু হোঁচট খান, তবে মুসলিম সভ্যতা নারীর যোগ্য মূল্যায়ন করেছে। নারীর নিরাপত্তার সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা করেছে ইসলাম, পৌত্তলিক সমাজে নারীকে যে অসহায়ত্বের শিকার হতে হতো, সে-অবস্থা হতে উত্তরণ করেছে ইসলাম। নারীর যৌক্তিক স্বাধীন জীবনের নিশ্চয়তা দিয়েছে ইসলাম।
(এখানে উল্লেখ্য, যৌতুকের মতো একটি অভিশাপ এদেশে হিন্দু ধর্ম থেকে এসেছে, ইসলামে এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। বরং ইসলামে স্ত্রীর অধিকার প্রতিষ্ঠাকল্পে স্বামীর উপর স্ত্রীকে মোহরানা দেবার বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে!)
পুরুষ-নারীর স্বাভাবিক চাহিদা হিসেবে যৌনমিলনের সুন্দরতম উপায় বাতলে দিয়েছে ইসলাম, তথাপি নারীকে পশুর মতো ‘ব্যবহারের’ চলমান অসুস্থ পাশ্চাত্য সংস্কৃতি যদি কেউ ইসলামের চেয়ে শ্রেয়তর মনে করে তবে সেটা নারীর চরম অবমাননা বৈ কিছু নয়।

ইসলামের রয়েছে সৌন্দর্যমন্ডিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি। ক্ষমা-সৌহার্দ্যের ভিত্তিতে উদারনৈতিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসলামের মূলমন্ত্র। ইসলামের যুদ্ধ আক্রমনাত্মক নয়, রক্ষণাত্মক হয়। এ সৌন্দর্যের সূচনা করেন স্বয়ং মুহাম্মদ (সাঃ), তিনি মক্কা বিজয়ের পর ‘প্রতিহিংসা নয় ক্ষমার’ শাসন চালু করেন।
এর অপরদিকের ইতিহাসে আছে শুধু নিষ্ঠুরতা, লুন্ঠন, হত্যার বিবরণ। অশোকের কলিঙ্গ বিজয়ের ঘটনাতে রয়েছে এই করুণ অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি, বিশেষতঃ আধুনিক যুগে অর্থাৎ গত এক শতাব্দীতে ‘বিজয়ীর নিষ্ঠুরতা’র সাথে তুলনীয় আর কোন নজীর লিখিত ইতিহাসে নেই।
এসব-থেকেও প্রকৃত জ্ঞানীদের জন্যে একটাই শিক্ষণীয় আছেঃ ইসলামে অংশ নেয়া, শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া জগতময়।

শেষটায় আমার অনুরোধ, আমরা যারা মুসলমান, আমাদের দ্বিধাবিভক্ত হবার কোনো কারণ নেই, অন্য ধর্মে যেটাই থাকুক আমাদেরটা তাদের চেয়ে কোনো অংশেই অচল নয়, অতএব আসুন গর্বভরে স্বীকার করিঃ উই প্রাউড টু বি মুসলিম্‌স।
আর এই হাদীসটা একটু খেয়াল রাখুনঃ

আরব উপদ্বীপের মুসলমানদের কাছ থেকে শয়তান আনুগত্য পাওয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য ও পারস্পরিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে সে নিরাশ হয়নি। -মুসলিম।

২৪ টি মন্তব্য : “প্রাউড টু বি মুসলিম”

  1. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    দুঃখিত প্রাউড হতে পারলাম না। তবে আপনাকে ধন্যবাদ। মাওলানাদের শেখানো গতবাধা বুলির জবাবে এখন অনেক কিছু লেখা যাবে...

    পার্থিব অক্ষর-জ্ঞানশূন্য এই মানুষটি

    এ প্রসঙ্গে দুটো হাদিসের কথা বলা যায়। একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে মুহম্মদ নিজ হাতে একটি চুক্তির একটি লাইন কেটে দিচ্ছেন।

    Sahih Muslim, Book 019, Number 4401), al-Bara’ b. ‘Azib, one of Mohammad’s gang members testified: “Abu Talib penned the treaty between the Holy Prophet (may peace be upon him) and the polytheists, on the Day of Hudaibiya. ……………..They (the polytheists) said: Do not write the words: “Messenger of Allah.” If we knew that you were the Messenger of Allah, we would not fight against you”. Smart people indeed! The narrator continues….. “The Prophet (may peace be upon him) said to Ali: “Strike out these words!” He, (Ali) said: “I am not going to strike them out.” So the Prophet (may peace be upon him) struck them out with his own hand………….”.

    যিনি লিখতে -পড়তে জানতেন না, তিনি কিভাবে চুক্তি থেকে লাইন কেটে ফেললেন?
    আবার আরেকটা হাদিসে আছে যে মুহম্মদ নিজেই একটি ডকুমেন্ট রচনা করেছিলেন -

    “Narrated Amir ibn Shahr: ……..Apostle of Allah (peace_be_upon_him) wrote the document for Umayr Dhu Marran……” (Sunan Abu-Dawud Book 19, Number 3021)

    যিনি লিখতে পড়তে জানতেন না, তিনি কি করে ডকুমেন্ট রচনা করেন? এ সমস্ত হাদিসের বাইরেও আরো অনেক প্রমাণ আছে যে গুলো থেকে মনে হতে পারে যে ‘মুহম্মমদ নিরক্ষর ছিলেন’ - এ ব্যাপারটা মিথ্যা। মূলত তার সম্পাদিত (মৌলিক রচনা নয়, অন্যের সাহায্যে লেখা) কুরআন কে একটা অলৌকিক জিনিস হিসেবে প্রমাণের জন্য এই কথা ছড়ানো হয়েছে।

    আর এর ফলেই ইসলামের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে

    হা হা হা। আমি যদি বলি, ইসলাম ছড়িয়েছে তলোয়ারের কোপে সেটার ঐতিহাসিক সত্যতা রয়েছে। এমনও হয়েছে, মুহাম্মদের মৃত্যুর পর অনেকেই তাদের আগের ধর্মে ফেরত গিয়েছেন। এইটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার ইচ্ছা রয়েছে।

    বিশেষতঃ নারীজাতির প্রতি ইসলামের অনুভূতি অপূর্ব সুন্দরভাবে প্রমাণিত।

    সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার ইমাম গাজ্জালি (রঃ) বিখ্যাত ‘ইয়াহ্ইয়া উলুমেদ্দিন’ ( পৃ-২৩৫)গ্রন্থে লিখেছেন -

    “স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে তার নিজ সত্ত্বার চেয়েও উপরে স্থান দেয়া, এমনকি তার সকল আত্মীয়স্বজনের উপরে স্থান দেয়া। সে স্বামীর জন্যে নিজকে সদা-সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখবে যেন স্বামী যখন ইচ্ছা তাকে ভোগ করতে পারে..।”

    আসলেই কী সুন্দর অনূভুতি।

    সুরা নিসা : ৩৪) পুরুষেরা নারীদের উপর কতৃত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে ও তারা হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্ক্ষা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।

    আরে দারুন তো, নারী প্রতি সহানুভূতি...

    আরও কথা পরে বলবো, আলাদা পোস্টে। সময় পেলে।

  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    মন্তব্য করতে আমার খুব ভাল লাগে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে অল্প লিখতে হয় এবং খুব একটা চিন্তা-ধারাও করতে হয় না...সব চেয়ে বড় কথা মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সেই বিষয়ে বেশি জ্ঞান থাকাও জরুরী নয়...এসব কিছু মিলিয়ে আমার জন্য পার্ফেক্ট হচ্ছে মন্তব্য করা...কবিতা, ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ, বিজ্ঞান, চলচিত্র এমনকি রাজনীতির বিষয় নিয়েও কমেন্ট করা হচ্ছে খুব সহজ...তবে, একটা জিনিস আমি খুব খেয়াল করে মেইনটেন করি...সেটা হচ্ছে, আমি কখনো ধর্ম বিষয়ে কমেন্ট করি না।
    ধর্মের পক্ষে কথা বলতে গেলে বিশ্বাসের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পড়াশুনা তথা জ্ঞান থাকা জরুরী...তেমনিভাবে, বিপক্ষে কথা বলতে গেলেও অবিশ্বাসের পাশাপাশি প্রচুর পড়াশুনালব্ধ জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক।

    আমি নিজে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী...কিন্তু সব কিছু মানা হয়ে ওঠে না...আর আমার জ্ঞানও সেই পরিমানে নেই যে, ঘন্টার পর ঘন্টা যুক্তি-তর্ক করে ইসলামকে প্রদর্শন করব।
    এসব কারনেই আমি কখনো ধর্ম-সংক্রান্ত পোস্টে কখনো মন্তব্য করি না। কিন্তু আজ করতে বাধ্য হলাম। সেটা আলমের কারনেই। আমি আলমকে দুই একটা কথা বলতে চাই, আমার কথা এডু-মডুদের পছন্দ না হলে মুছে দিতে পারেন। তবে আমি আঘাত করার উদ্দেশ্যে কিছু বলছি না এই ব্যাপারে সবাই নিঃসন্দেহ থাকতে পারেন।

    আলম, তোমার এই পোস্টের শুরু দেখেই চরম বিরক্ত হলাম। তুমি শুরুতেই অনিচ্ছাসত্বেও এটা আমার আরেকটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট লিখেছ...তুমি যদি কোন লেখা এখানে দেবার কথা ঠিক করে থাক, সেটা তোমার পূর্ণ ইচছাতেই হওয়া উচিৎ...আর যদি মনে হয় কোন লেখা 'অনিচ্ছাকৃত' ভাবে দিচ্ছ- সেটা না দেয়াই ভাল...

    এবার আসি মূল প্রসঙ্গে, তুমি রায়হানের লেখা পোস্টটাতে ও যেসব যুক্তি দেখিয়েছে সেসব খণ্ডন না করেই এই পোস্ট দিয়েছ কেন? তাহলে কি ও ঐ পোস্টে যা লিখেছিল তা তুমি সব মেনে নিয়েছ??? অথচ আমার মনে হয় তোমার আগে উচিৎ ছিল ঐ পোস্টের যুক্তি খণ্ডন করা এবং তারপর এই পোস্ট দেয়া...আমার নিজের কাছেই মনে হয়েছিল ঐ খানে বলার মতন অনেক কিছু ছিল। প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে আমি কেন কিছু বললাম না??? এর উত্তর আমি মন্তব্যের শুরুতেই দিয়ে দিয়েছি...

    আশা করি, আমার বড় ভাই সুলভ কথাগুলোকে তুমি পজিটিভলি নেবে।


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    • সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

      :no: সহমত :thumbup:

      তুমি রায়হানের লেখা পোস্টটাতে ও যেসব যুক্তি দেখিয়েছে সেসব খণ্ডন না করেই এই পোস্ট দিয়েছ কেন?

      আমারো আসলে যুক্তি খন্ডনগুলা জানার ইচ্ছা ছিল...সিসিবির বাইরে আমার পরিচিত দুয়েকজনের সাথে(যারা ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করে) সেই জন্য পোস্টটা শেয়ার করসিলাম...আমরা যারা মুসলিম, আমার মনে হয় যে আমাদের সবারি এই যুক্তিগুলা খন্ডন করার মত প্রস্তুতি থাকা উচিত...এবং সেই প্রস্তুতির ইন্ধন হিসেবেই আমি ধর্ম-সংক্রান্ত পোস্ট সমর্থন করব...

      কিন্তু,নাহ! এই বিতর্কটা ফেয়ার হচ্ছেনা... :no:


      "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
      আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

  3. মরতুজা (৯১-৯৭)

    শুধুমাত্র এই লেখার কারনে নয়, তবে বিভিন্ন ব্লগে এই বিষয়ক(পক্ষে/বিপক্ষে) প্রচুর লেখা দেখে একটা কথা না বলে পারছি না।

    আমদের আজকাল অন্যের উপর নিজের বিশ্বাস চাপিয়ে দেবার প্রবনতা খুব বেশি। চাপিয়ে দেয়া মানে শুধু আক্ষরিকর্থে নয়, অন্যকে নিজের বিশ্বাসটা যে সর্বশ্রেষ্ঠ তা জাহির করা। সবাই কোরাণ/ইসলাম সর্বশ্রেষ্ঠ এটা জাহির করতে ব্যাস্ত। নিজে কি করে তা কেউ বলে না। আমাদের মহানবী আগে ইসলাম প্রচার করেছিলেন না আগে গরীবের সেবা করেছিলেন? উনি কি আগে নারীদের সম্মান ইস্লামের কতটা এটা কোরান দিয়ে আগে বলেছেন নাকি আগে উনি নিজে সম্মান দেখিয়েছিলেন? কোরান ইসলাম কি বলল তা দিয়ে আমার কি লাভ যদি তুমি নিজে তা আগে না কর।

    দেশটা আসলে হিপোক্রেটে ভরে গেছে। ইসলাম নিয়ে খালি লাফালাফি, কিন্তু শালা বালের ইসলাম কেমনে আসলো তা জানে তো নাই, মানেও না।

    যে ব্যক্তি অহংকার করলো, সে যেন আমার চাদর ধরে টানাটানি করে।

    ভাই আলম, তোমার ব্লগের নাম দেখেই আমার প্রথম বিরক্তি। ইসলাম কি ফেসবুকের কোন ক্লাব যে তুমি বল প্রাউড টু বি মুসলিম? ভাবখানা এমন যেন মুসল্মান বাপের ঘরে জন্ম নিয়ে বিশাল কিছু করে ফেলেছ। নিজেই হাদিস শুনায়ে দিলা অহঙ্কার না করা নিয়ে, আবার নিজেই গ্রুপ খুলে বসছ "প্রাউড টু বি মুস্লিম"? ইসলাম/কোরান কবে কোন যায়গায় বলেছে যে "তোমরা আগে নিজে মুস্লিম বলে গর্বিত হও তারপরে মুসল্মান হতে যা যা করতে হয় তা কর"? হাদিসে ত ছিলই "যার প্রতিবেশি ভুখা থাকে আর সে পেট পরে খায় সে আমার উম্মত নয়"। আশা করি তুমি এ ব্যাপারে অনেক গর্বিত যে ইসলাম গরীবের হক দিয়েছে। কিন্তু আমি সন্দিহান তুমি তার কতটুকু কর।

    তাই আমি অনুরোধ করব, এই সব ফালতু প্রাউড ফিল না করে কিছু করে দেখাও যে তুমি আসলেই মুসল্মান। আমি জানি এই কথা পড়ার পর তুমি আমাকে প্রশ্ন করবে যে আমি কি করি, আমি কেমন মুসল্মান। উত্তরে আমি বলব, আমি মুসল্মান কিনা তা দিয়ে তো তুমি বেহেস্তে যাবে না, সুতরাং আগে আয়নার দিকে তাকাও। খালি ছোটবেলায় হাজাম সাহেব তোমার/আমার কিঞ্চিত চামড়া কেটেছিলেন বলেই আমরা মুসল্মান না।

    একই কথা আমি রায়হানকেও বলি। তুমি তোমার বিশ্বাস নিয়েই থাকনা বাবা। ইসলাম সত্য না মিথ্যা তা দিয়ে তোমার কি দরকার? নিজের বিশ্বাস নিজের কাছে রেখে কাজে প্রমান দেয়াটাই আসল যে তুমি ভাল মানুষ কিনা। মাদার তেরেসা কবে ভাষন দিয়েছিলেন যে খ্রিস্টান ধর্ম সেরা? কিন্তু তাতে কি ওনার নাম কমেছে? কোরানে কি কি ভুল আছে তা তুমি যতই বলনা কেন তাতে তো আর আলম নাস্তিক হয়ে যাবে না। আমরা আসলে অন্যের ভুল ধরতে সদাই ব্যাস্ত।

    আর সবশেষে আমি সবাইকে অনুরোধ করব এই ভাবে ধর্মের পক্ষ/বিপক্ষ নিয়ে কিছু না লেখার জন্য। ওসব ফালতু লেখার জন্য ম্যালা আলতু ফালতু ব্লগ সাইট আছে। সিসিবি না।

    • ওসব ফালতু লেখার জন্য ম্যালা আলতু ফালতু ব্লগ সাইট আছে। সিসিবি না।

      মনের গভীর থেকে ধব্যবাদ ভাই এই সুন্দর কথাটা বলার জন্য।

    • আমি সবাইকে অনুরোধ করব এই ভাবে ধর্মের পক্ষ/বিপক্ষ নিয়ে কিছু না লেখার জন্য। ওসব ফালতু লেখার জন্য ম্যালা আলতু ফালতু ব্লগ সাইট আছে। সিসিবি না।

      ১০০% সহমত।

  4. অনিচ্ছাসত্বেও এটা আমার আরেকটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট।

    অনিচ্ছাসত্বে মানে? কেউ কাউকে ধরে পিটিয়ে নিশ্চয়ই ব্লগ লেখায় না। যে যা লিখে নিজের ইচ্ছাতেই লিখে। তাই না?

    'সাম্প্রদায়িক পোস্ট' এই শব্দগুলিতে ঘোরতর আপত্তি আছে। ধর্ম নিয়ে আলোচনা করার জন্যে পোস্ট দেয়া ঠিকাছে, কিন্তু সেটাকে নিজেই 'সাম্প্রদায়িক' ঘোষনা দেয়া কতটা গ্রহনযোগ্য?
    আমরা কেউই (বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী সবাই), 'সাম্প্রদায়িক' হতে চাইনা বা 'সাম্প্রদায়িক' লেখা পড়তে চাই না।

    সিসিবিতে তোমার নিজের ধর্ম ছাড়াও অন্য ধর্মালম্বী অনেক সদস্য রয়েছে। সুতরাং 'আরেকটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট' বললে যে কেউ আহত হতে পারে। তার চেয়ে বলো তুমি তোমার নিজের ধর্ম প্রচার করতে আরেকটি পোস্ট দিয়েছো। 'সাম্প্রদায়িক পোস্ট' এর মতো জঘন্য একটি লেবেল সিসিবির সাথে লেগে যাক এটা আমি অন্তত ব্যাক্তিগত ভাবে চাই না।

    ভাইজানেরা, যারা একমত, বলেন সুবহানাল্লাহ্‌।

    একমত হতে পারলাম না। দুঃখিত।

    পার্থিব অক্ষর-জ্ঞানশূন্য এই মানুষটি তার চারপাশের অনৈতিক-বর্বর যোদ্ধা জাতিকে কী করে উদারনৈতিক-সহনশীল জাতিতে পরিণত করেছেন, আমরা দেখেছি।

    সহনশীলতার কোন প্রমানই তুমি দেখাতে পারোনি। নইলে নিচের কথাগুলি কিভাবে বললে?

    অন্য ধর্মের লোকেরা কেবল বিপদে পড়লেই প্রভুকে স্মরণ করেন, অন্যথায় নয়।

    তুমি নিশ্চিত জানো যে অন্য ধর্মের লোকেরা কেবল বিপদে পড়লেই প্রভুকে স্মরণ করেন, অন্য সময় করেন না? আমি নিজেই দেখেছি আমার অন্য ধর্মালম্বী খুব কাছের বন্ধুদের নিয়মিত ধর্মচর্চা করতে, তার প্রভুকে স্মরণ করতে।
    সুতরাং তুমি একদমই ভুল কথা বললে। এবং একেবারেই না জেনেশুনে , কোনরকম পড়াশুনা ছাড়া। অসহনশীলতার চুড়ান্ত প্রকাশ তোমার এ লাইনটাতে।

    সপ্তাহে একদিন চার্চে গেলেই তাদের চলে, অথবা নির্দিষ্ট একদিন দেবদেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করে নিলেই তাদের ধর্মপালন হয়।

    এটাও হাওয়া থেকে পেয়েছো মনে হচ্ছে। নইলে অন্য ধর্মগুলির আচার-আচরন সম্পর্কে তুমি কিছুই জানো না। এ ধরনের 'ঢালাও বাক্য' না লেখার অনুরোধ করছি।

    পুরো লেখাটির আরো অনেক বিষয়ে কঠিন ভিন্নমত রয়েছে। কিন্তু তোমার লেখার ধরন দেখে আপাতত আর গঠনমূলক কোন বিতর্কের লক্ষণ দেখছি না।

    লেখাটি পড়ে বারবার শুধু সৈয়দ ওয়ালীওল্লাহ'র লালসালু'র একটা লাইন মনে পড়ছে, .........শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের চেয়ে আগাছা বেশি।

  5. আহসান আকাশ (৯৬-০২)
    মুসলিম সংস্কৃতির আরেকটি বড় দিক হলো অপরের চিন্তাধারা ও ফিলিংসকে গুরুত্বদান।

    আশা করি তুমি নিজে একজন গর্বিত মুসলিম হিসেবে মুসলিম সংস্কৃতির এই বড় দিকটি সম্মুন্নত রাখবে।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

  6. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    ছোট ভাইদের কাছে আমার একটা দাবি- "সিসিবি'কে অন্য ব্লগের মতো বানিও না।"

    আমি প্রায় বছর-খানেক ধরেই নানা ব্লগে যাই, কিন্তু কোনোটাতেই অংশ নেওয়ার রুচি হয় না। সবগুলাই কিচ্ছু ইচরেপাকা পোলাপাইনে ভর্তি। যতটা জানে, ভাব ধরে তার থেকে হাজার গুন বেশী। গুটিকয় হাদিস/কোটেশন মুখস্থ করেই মনে করে মহাপন্ডিত হয়ে বসে আছে একেকজন।

    প্রগতিশীল/প্রতিক্রীয়াশীল কথা দুটোর মানে ভালো করে বুঝে তারপর এই জাতীয় আলোচনা শুরু করা উচিত। (এই কথাটা দুই'দলের প্রতিই যারা ধর্ম নিয়ে টানাটানি করে।)

    প্লিজ, বুদ্ধি যাহির করার এইসব সস্তা পথ বাদ দাও।

    মর্তুজার এই কথাটা ভাল লেগেছে-
    "আগে আয়নার দিকে তাকাও।"


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

  7. রহমান (৯২-৯৮)

    আলম, অনেক বড় কমেন্ট হয়ে যাওয়াতে সাময়িক পোষ্ট আকারে আমার প্রথম মন্তব্যটুকু দিলাম। আশা করি সবটুকু পড়বে। তবে এখানে তোমার কলেজের বড়ভাই হিসেবে বলব এ ধরনের লেখা ব্লগের মতো জায়গায় না লেখাই উচিত। যে ভুল তুমি এর আগে একবার করেছ তা বারবার কেন করছ?

    আমি যখন তোমার এই লেখাটা প্রথম পড়ি তখন শুধু ২ টা কমেন্ট ছিল (রেজওয়ান আর আবীরের)। এখন আমার পোষ্টটা জমা দিয়ে দেখলাম আরো অনেকেই তোমার এই লেখার বিরূদ্ধে অনেক বিরূপ মন্তব্য করেছে। আমার অনুরোধ থাকবে ব্লগ এডু বা মডুকে বলে তুমি এই লেখাটি প্রথম পৃষ্ঠা থেকে সরিয়ে নাও। আমি এখানে আর কোন বিরূপ মন্তব্য দেখতে চাচ্ছিনা। ব্লগের পরিবেশটা সুন্দর থাকুক

    সবশেষে, আমার নামে এই পোষ্টটা উৎসর্গ করার কারন জানতে চাই।

  8. আলমের কাছে আমার অনুরোধ, ভবিষ্যতে আমাকে অন্তত এই ধরনের কোন পোস্ট উৎসর্গ কোরো না। আমার খুবই লজ্জা লাগবে। আগেই মাফ চেয়ে গেলাম।

  9. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    মরতুজা ভাই,

    একই কথা আমি রায়হানকেও বলি। তুমি তোমার বিশ্বাস নিয়েই থাকনা বাবা। ইসলাম সত্য না মিথ্যা তা দিয়ে তোমার কি দরকার? নিজের বিশ্বাস নিজের কাছে রেখে কাজে প্রমান দেয়াটাই আসল যে তুমি ভাল মানুষ কিনা।

    নিজের বিশ্বাস যেন সবাই নিজের কাছে রাখে, সেটা নিয়ে যেন লাফালাফি না করে- সেইটাই আমি চাই। সকল ধর্মের মৃত্যু চাই। কারও যদি খুব সখ থাকে ধর্ম পালন করতে- সেটা নিভৃতে করুক। কিন্তু এই ধরণের ওপেন ফোরামে যদি এই ধরণের মূর্খতায় পরিপূর্ণ লেখা আসে, তাহলে আমি প্রতিবাদ করবো। কারণ আমি মনে করি এইটা আমার দ্বায়িত্ব।

    আমি কোন কিছুই বিশ্বাস করি না। সুতরাং আপনার ভালো মানুষ হবার থিওরী মানতে পারলাম না বস। মাফ কইরা দিয়েন।

    তবে জানিয়ে রাখি আমি নাস্তিকতা প্রচারে জীবন উৎসর্গ করি নাই। আমার দ্বারা অন্যের উপকার না হোক, কোনদিন যেন অপকার না হয়- সেটা খেয়াল করি। এইটুকু করতে পারলেই, আমার জীবন সার্থক হবে।

    • মরতুজা (৯১-৯৭)
      আমার দ্বারা অন্যের উপকার না হোক, কোনদিন যেন অপকার না হয়- সেটা খেয়াল করি

      মনে হয় না ঠিক মত খেয়াল কর। একজন মুর্খতা করতে পারে, তাই বলে তুমি অন্যের বিশ্বাসে আঘাত করতে পার না। তুমি ধর্ম নিয়ে কিছু পড়াশোনা করেছ, আর সুযোগ পেলেই সেটা যাহির করে অল্প বিদ্যা ভয়ংকরি করার কি দরকার। কেউ মুর্খামি করলে তাকে শোধরানোই কাম্য। নিজের বিশ্বাস চাপিয়ে দিয়ে তাকে আরও মুর্খ প্রমান করার মাঝে শিশুসুলভ আচরনই প্রকাশ পায়।

      কারও যদি খুব সখ থাকে ধর্ম পালন করতে- সেটা নিভৃতে করুক।

      আমিও চাইব তুমি তোমার বিশ্বাস নিভৃতে পালন করবে। তুমি এসে বলে যাবে ইসলাম খারাপ সেটা আমি কেন মানব, যেমন তুমি আমারটা মান না? চুপ করলে তুমিও করবে আলমও করবে।

      • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)
        তাই বলে তুমি অন্যের বিশ্বাসে আঘাত করতে পার না।

        কথাটা প্রচণ্ড ফাঁকা মনে হল। ঠিক কি করলে অন্যের বিশ্বাসে আঘাত লাগে তার কোন সংজ্ঞা আছে কি? আমি যদি বুঝতে পারি যে মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ কোন ওহী পাননি এবং কুরআন অন্য মানুষদের দিয়ে লিখিয়েছেন, তবে সেটা সবার কাছে খুলে বলাই তো আমার দায়িত্ব হওয়া উচিত। এটা বললে অমুকে আঘাত পাবে, তমুকে কি না কি মনে করবে এসব ভেবে আমরা চুপ করে যাব? এত বড় ব্লাসফেমি? আর ধর্মানুভূতি সম্পর্কে কিছু কথা বলি। হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন,

        আমার শিল্পানুভূতি সৌন্দর্যানুভূতি রাজনীতিকানুভূতি কাব্যানুভূতি প্রভৃতি পাহারা দেয়া রাষ্ট্রের কাজ নয়, কিন্তু এখন রাষ্ট্র এক উদ্ভট দায়িত্ব নিয়েছে, মনে করছে ধর্মানুভূতি পাহারা দেয়া তার কাজ; তাই রাষ্ট্র দেখে চলেছে কোথায় আহত হচ্ছে কার ধর্মানুভূতি।

        আমার মনে হচ্ছে এখানে রাষ্ট্রের বদলে সিসিবি অথরিটিও বলা যায়। সিসিবি অথরিটি ধর্মানুভূতি নামক একটি উদ্ভট জিনিসকে পাহারা দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে নিচ্ছে। এমনতর অথরিটির কথা শুনব কি করে!
        আবেগ-অনুভূতির কথা বলে সবসময় কঠোর ও নির্মম সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এটা অন্যকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করার একটি অস্ত্র মাত্র, আর কিচ্ছু না। তাই রায়হান আবীরের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, এ ধরণের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হবেন না। এখানে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং এর পাশাপাশি আরেকটি আক্রমণ এসেছে সেটা হল:

        তুমি ধর্ম নিয়ে কিছু পড়াশোনা করেছ, আর সুযোগ পেলেই সেটা যাহির করে অল্প বিদ্যা ভয়ংকরি করার কি দরকার।

        এই আক্রমণ মরতুজা ভাই সিনিয়র হিসেবে করেছেন। সিনিয়র ভাইকে কিছু বলতেও পারছি না। তবে আবারও রায়হানকে অনুরোধ করছি, "নিজের জ্ঞান অল্প মনে করে কখনই ইনফেরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভুগবেন না।" কারণ মানুষ যতই জানে ততই সে বুঝতে পারে কত অল্প জেনেছে, আর কত বেশী জানার বাকি আছে। তাই যতটুকু আমরা জানি সেটুকু যৌক্তিক কি-না এবং সেগুলোতে কোন খুঁত আছে কি-না সেটাই সবার আগে বিবেচনা করা উচিত। আমি রায়হান আবীরকে এই বলে সান্ত্বনা দিতে চাই যে, "আপনার জ্ঞান মোটেই অল্প না এবং আপনি জ্ঞান জাহির করার মত অপরাধটি করেন না। আপনাকে তো আমি মরতুজা ভাইয়ের চেয়ে বেশী চিনি, না-কি?"

        এবার মরতুজা ভাইকে বলছি। আপনি বলেছেন, সবার উচিত নিজের বিশ্বাস নিয়ে নিভৃতে চলে যেতে এবং নিভৃতে সব পালন করতে, কোন উচ্চবাচ্য না করতে। এই চরিত্র কার থাকে সেটা তো জানেনই। এ ধরণের চরিত্র যার আছে, হয় বিশ্বাসের পেছনে যথেষ্ট যুক্তি তার জানা নেই, নয়ত সে সুবিধাবাদী এবং ভণ্ড।

        বিশ্বাস দুই ধরণের হতে পারে। এক অন্ধ বিশ্বাস, দুই যৌক্তিক বিশ্বাস। পৃথিবীর শতকরা ৯৯ ভাগ ধার্মিকই অন্ধ বিশ্বাসী। কারণ এই বিশ্বাসের পক্ষে কোন যুক্তি তারা দেখাতে পারে না। আর ধর্মে বিশ্বাস যারা করে না তাদের শতকরা ৯৯ ভাগই যৌক্তিক বিশ্বাসী। তারা যুক্তি দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে তবেই ধর্ম ছেড়েছে।

    • আমি মনে করেছিলাম অত্যন্ত প্রগতিশীল একটা ছেলে তুই।

      কারও যদি খুব সখ থাকে ধর্ম পালন করতে- সেটা নিভৃতে করুক।

      কথাটা কি খুব আরোপনেচ্ছু মনে হচ্ছে না? এতটা autocratic কথা না বললে ক হত না? তুই কি এতটা crazy হয়ে গেছিস? কেন রে ভাই? এত রাগের কিছু নাই তো। এই ধরনের পোস্টের বিরোধিতা করি। কারন প্রথম দিকে গঠনমুলক আলোচনা হলেও এখন তা আর গঠনমূলক নেই। এডু মডূদের সাহায্য চাই।

  10. জিহাদ (৯৯-০৫)

    আস্তিকতা এবং নাস্তিকতার প্রচার - এই দুই ধরণের বিষয়ই আমার কাছে চরম রকমের ফাউল এবং বিরক্তিকর মনে হয়। কমেন্ট করার রুচি জাগেনা তাও নিজের কথাটুকু বলে যাই।

    আমি মরতুজা ভাইয়ের সাথে মোটামুটি সহমত।

    যারা আস্তিক তারা ভাবেন নিজের ধর্ম প্রচার করে ইহকাল পরকাল সব নিজের করে নিতেসি। আর যারা নাস্তিক তারা ভাবেন যেই ব্যাটারা এত সহজে ইহকাল পরকাল সব নিয়ে গেল তাদের এত সহজে নিতে দেয়া ঠিক হচ্ছেনা।

    এই নিয়ে তর্ক করতে করতে দেখা যায় যে জিনিসটার জন্য আমরা সব কিছু করি, শান্তি, সেই জিনিসটাই বিঘ্নিত হয় সবচে বেশি।

    আমার বিশ্বাস মানুষের পরিচয় তার বিনয়ে, ঔদ্ধত্যে নয়। এবং বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ঘোর আস্তিক এবং ঘোর নাস্তিক দুই দলের মধ্যেই দুই নাম্বারটাই বেশি পরিলক্ষিত হয়। নিজেকে সবার শ্রেষ্ঠ মনে করা ভাল। কিন্তু কখনোই আর সব কিছুকে তুচ্ছ এবং নগণ্য করে নয়।

    এর আগেও এই নিয়ে ব্লগে পক্ষে বিপক্ষে বহুত ক্যাচাল হইসে। কাজেই দুই পক্ষকেই অনুরোধ, আপনারা যার যার মত নিয়ে নিজের মধ্যেই থাকেন। সেইটা সবার জন্যই ভালো।

    মুক্ত চিন্তার চর্চা করায় আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্তু যেই মুক্ত চিন্তা নিরানব্বই জনের শান্তি বিঘ্নিত করে একজন মানুষকে তথাকথিত সত্যের পথে আনে তাহলে আমি মনে করি সেই চর্চা না করাই ভাল।

    এবং আমার মনে হয় এই ব্লগের অধিকাংশ মানুষই সেই নিরানব্বই জনের দলে।

    সবাইকে ধন্যবাদ।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

  11. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    আলম তোমার কাজ বিব্রতকর। আমি তোমার পোষ্ট পুরোটা পড়িনি, অনেক কমেন্ট আছে দেখেছি, এগুলোও পড়িনি।

    তুমি আমাকে পরিষ্কার করে বল, তুমি আসলে কি চাও?

    একজন সত্যিকারের মুমিন কখনই এইভাবে ঢোল পিটায় না, যেটা তুমি করছ। এর অনেক গুলো কারন আছে। তোমার যদি নিজের ঈমানের ব্যাপারে কোন সন্দেহ থেকে থাকে তবে সেই খানে গিয়ে এই সব আলোচনা কর যেখানে এইসব আলোচনা করা হয়। সেটা উন্মুক্ত কোন কিছু না। এখানে আমরা অনেক মতের এবং ধর্মের লোক আছি। আশা করি নিজের গর্বের জন্য তুমি আরেকজনকে ছোট করে ফেলবে না।

    আশাকরি তুমি আমার কথা বুঝতে পেরেছ। এবং আমি এও আশা করি তুমি এমন কিছু করবে না, যাতে ব্লগে আমি তোমার পোষ্ট এড়িয়ে চলা শুরু করি।

    Enough is Enough.


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

  12. আলম (৯৭--০৩)

    আমার মনে হয় সবাইকে কম্বাইন্ডলি একটাই জবাব দেয়া যায়ঃ

    সিসিবিতে আমি প্রথম আসি কলেজের স্মৃতিচারণ এবং বিনোদনের জন্যে। আমার শুরুর দিকের লেখাগুলোয়ও আপনারা তা খেয়াল করবেন। কিন্তু গত ৩ মাস ধরে লক্ষ্য করছি, আমার 'সুপ্ত বিশ্বাসের' বিরোধী কিছু মন্তব্য আসছে, যা আমাকে এ-জাতীয় 'সাম্প্রদায়িক' ব্লগ লিখতে বাধ্য করে
    এক কথায়, যেমনটা মরতুজা ভাই বলেছেনঃ

    তুমি তোমার বিশ্বাস নিভৃতে পালন করবে। তুমি এসে বলে যাবে ইসলাম খারাপ সেটা আমি কেন মানব, যেমন তুমি আমারটা মান না?

    আমার 'প্রতিক্রিয়া' পোস্টকে অনেকে বলছেন শান্তি-বিঘ্নিত, তবে যার 'ক্রিয়া' তাকে কেউ কিছু বলবেন না? কী সচেতন বিচার!! মুহাম্মদ যেদিন বললো, মুসলিম সংস্কৃতি সবচে জঘন্য, সেদিন আমাদের ফিলিংস কেমন হয়েছিল? (কয়েকজন তার জবাব দিয়েছিলেন, তাদেরকে ধন্যবাদ) আমার মতে, কেউ আমার সম্প্রদায়কে 'আক্রমণ' করলে আমি 'আত্মরক্ষা' করবো, নতুবা আমি অন্যের উপর নিজের চিন্তাধারা চাপিয়ে দেইনা। আর এজন্যেই এটা 'অনিচ্ছাকৃত' পোস্ট।

    আমার স্বেচ্ছাকৃত পোস্ট হলো নির্মল বিনোদনভিত্তিক, আমি সেগুলো নিয়েই আজীবন সিসিবির সাথে থাকতে চাই, 'নিতান্ত বাধ্য হয়ে' এই-জাতীয় ব্লগ লিখতে চাইনা।