বরাক একটি আন্তর্জাতিক নদী। প্রায় পনের বছরের অধিক সময় ধরে ভারত বরাক নদির উপর টিপাইমুখ বাধ দেওয়ার চেষ্টা করে আসছে। স্থানীয় জনগণের বিরোধিতা মুখে তারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারছিলোনা। অতিসম্প্রতি তারা টিপাইমুখ বাধ নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু করে দিয়েছে।
ভুমিকা
টিপাইমুখ বাধ যে নদিতে দেওয়া হবে তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। উজানের দেশ ভাটির দেশের সাথে আলোচনা ব্যতীত আন্তর্জাতিক নদী হতে পানি প্রত্যাহার বা বাধ স্থাপন করতে পারেনা। টিপাইমুখ বাধ পরিকল্পনা নিশ্চিত রুপে আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী, কেননা
আন্তর্জাতিক নদির দায়িত্বসমুহ হচ্ছে
#সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের অনুমতি ব্যতীত কুনো রাষ্ট্র একক সিদ্ধান্তবলে নদির গতিধারা পরিবর্তন করতে পারবে না।
#কোনো আন্তর্জাতিক নদির গতিধারা যদি কোনো রাষ্ট্র একতরফা পরিবর্তন করে এবং তদুপরি অপর কুনো তীরবর্তি রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় সাধিত হয়, তবে এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র খতিকারক রাষ্ট্র হতে ক্ষতিপূরণ পাবে।
#আন্তর্জাতিক নদির ক্ষেত্রে সকল আন্তর্জাতিক কনভেনশন, সম্মেলন এবং চুক্তি প্রাধান্য পাবে।
নদির গতিধারা ও প্রকৃতি
বরাক নদির উতপত্তিস্থল মূলতঃ মনিপুরের উত্তর সেনাপতি জেলার লিয়াই গ্রামে। বরাক নদী উতপত্তিস্থল হতে ক্ষীণ ধারা প্রবাহিত হয়ে কারং এর নিকট এসে তীক্ষ্ণ ধারায় প্রবাহিত হয়। প্রবাহিত ধারার সাথে কতিপয় পার্বত্য নদী বরাক নদির জলধারাকে সমৃদ্ধ করে। এসব নদির মাঝে উল্লেখযোগ্য নাম হল তুবাই নদী। বরাক নদী শুষ্ক মৌসু্মে শান্ত ভাবে প্রবাহিত হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে টানা ৩/৪ দিন বৃষ্টি হলেই নদিটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে।
টিপাইমুখের অবস্থান – ভূখণ্ড দিক হতে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত হতে ১০০ কি মি দূরে মনিপুর প্রদেশের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে আবার জলভাগ হতে বললে তুবাই এবং বরাক নদির সংগম স্থান হতে ৫০০ মিটার ভাটিতে অবস্থিত।
সময়সীমা – ভারত হতে সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১২। ভারত ২০০৭ সালে এর কাজ শুরু করতে চেয়েছিল। অর্থাৎ আমরা প্রাথমিক কাজ শুরু হওয়ার ২৬ মাস পর চীৎকার চেঁচামেচি করছি। project monitor 2nd edition December 2007 এ প্রকাশ মণিপুর প্রাদেশিক সরকারের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তি এবং সংলগ্ন প্রদেশ মিজোরাম ও আসাম সরকারের নিকট হতে অনুমতি ছাড়পত্র(NOC = no objection certificate) চুক্তি স্বাক্ষর সম্পাদিত হয়েছে। এখন আমাদের ভারতকে এই প্রকল্প হতে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে।
প্রাক্কলিত ব্যয় = ১.৩৫ বিলয়ন ডলার।
স্থাপত্য কৌশল = ১৬২.৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট ১৬০ টি সুবৃহৎ বাধ নির্মাণ করা হবে। এখানে ২ টি তানেল থাকবে যা ভাটি হতে ১.৭ কি মি দূরে তৈরি করা হবে। এই পরিকল্পনায় ৬ টি ইউনিট থাকবে। এই পরিকল্পনার পানি ধারণ ক্ষমতা হবে ৪৮৩২৫ কিউবিক মিটার।
উদ্দেশ্য = ১৫০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন।
উভয় দেশের যে সকল সমস্যা বা বিপর্যয় হতে পারে =
#শুধু বরাক নদী নয় বরং ইরাং – বরাক – তুবাই – ঝিরি – মাকরু জলভাগে চিরস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
#বাংলাদেশের ৩৫০ কিমি দীর্ঘ সুরমা এবং ১১০ কিমি দীর্ঘ কুশিয়ারা নদির জলপ্রবাহ কমে যাবে। দীর্ঘমেয়াদে নদী দুইটি মারা যাবে।
#কৃষি পরিবেশ এবং জলবায়ুতে পরিবর্তন হবে। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং মিথেন ও গ্রীন হাউজ এফেক্ট এর সম্ভাবনা অনেক বেশী বৃদ্ধি পাবে।
#বর্ষা মৌসুমে যখন পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে তখন এই অতিরিক্ত পানি উজান এবং ভাটি উভয় দেশের জন্য মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি করবে।
#বাংলাদেশের মোট জলভাগের ৮ ভাগ আসে বরাক হতে। আর এই পানির উৎস যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা আমাদের অস্বিত্বের জন্যও হুমকি স্বরূপ।
#টিপাইমুখ যে স্থানে নির্মাণ করা হচ্ছে তা মূলতঃ ভুমিকম্পনপ্রবন এলাকা। আর নদিতে বাধ নির্মাণ করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলে ভূমিকম্প আশঙ্কা আর বেড়ে যায়। কারণ এতে ভূগর্ভস্থ প্লেটের অবস্থান নাজুক হয়ে পরে। আর কোনো কারণে যদি ভূমিকম্প হয় এবং নদির গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায় তবে বাংলাদেশের নগর, গ্রাম এবং জান মালের ভয়াবহ ক্ষতি হবে।
টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা সমূহ
IWM (institute of water modeling) একটি গবেষণা শেষে যে রিপোর্ট প্রকাশ করে সেখানে ৬ প্রকার ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়। যেমন পানি সম্পদে প্রভাব, জীববৈচিত্রে প্রভাব, স্বাভাবিক বন্যায় প্রভাব, হাওড় ও তদসংলগ্ন জলাভুমিতে প্রভাব, পানির গুণগত পরিবর্তনে প্রভাব এবং অন্যান্য সাধারণ প্রভাব।
জীববৈচিত্রে প্রভাব=
এই বাধের ফলে উচুমাত্রায় ভুমি ক্ষয় হবে। আর এই ক্ষয়ের মাত্রা বাদ হতে ভাটিতে ১০০ কি মি বা তা ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রাথমিকভাবেই বাধ নির্মাণের ফলে ১০০ হতে ১৫০ কি মি পর্যন্ত নদিতে পলি জমে থাকার আশঙ্কা আছে। এর ফলে নদী তার নাব্যতা হারাবে। সুরমা কুশিয়ারা বর্ষা বা শুষ্ক মৌসুমে এই পলি জমার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে।
এই পলি জমাট নদীগর্ভের উচ্চতা হ্রাস করবে। এবং বর্ষা মৌসুমে দুকুল ছাপিয়ে বন্যা প্লাবিত হবে। এবং তখন বর্তমান বিপদ সীমার অবস্থায় প্রচুর বন্যা হবে। আর ভয়ঙ্কর বন্যা হওয়ার পরিমাণ যাবে বেড়ে। এতে কৃষি, বন সহ জীববৈচিত্র বিনষ্ট হবে।
পানি সম্পদে প্রভাব=
IWM একটি সমীক্ষা ধারণা করেন যে টিপাইমুখ পরিকল্পনা পুর্নভাবে কার্যকর থাকলে সুরমা,কুশিয়ারা ও মেগনা অববাহিকায় জুন মাসে ১০%, জুলাই মাসে ২৩%, আগস্ট মাসে ১৬%, এবং সেপ্টেম্বর মাসে ১৫% পানি প্রবাহ কমে যাবে। কুশিয়ারা নদিতে আমলশিদ স্টেশন, ফেঞ্চনঞ্জ, শেরপুর, মারকুলি স্টেশনে পানির উচ্চতা কমে যাবে যথাক্রমে ১ মিটার, ০.২৫ মিটার, ০.১৫ মিটার, ০.১ মিটার পর্যন্ত। অপরদিকে কানাইরগাট সুরমা নদির সিলেট স্টেশনের পানির উচ্চতা কমে যাবে যথাক্রমে ০.৭৫ মিটার এবং ০.২৫ মিটার পর্যন্ত।
ভারতীয় হাই কমিশনারের বক্তব্য এবং স্ববিরোধিতা
পিনাকী রঞ্জন চক্রবর্তী বললেন টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ করা হবে বরাক নদির বুকে আড়াআড়ি ভাবে। তবে এই প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
হাস্যকর কথা আড়াআড়ি ভাবে বাধ নির্মাণ যাকে বলা হয় ব্যারেজ নির্মাণ করা হলে পানি প্রবাহ অবশ্যই বাধাগ্রস্থ হবে। এবং বরাক নদির ভাটির দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। খুবই সহজ কথা। এর জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নাই।
পিনাকী আরও বলেছেন টিপাইমুখ প্রকল্প হতে উৎপাদিত বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত বাংলাদেশ পেতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
পরবর্তিতে ভারতীয় এক প্রতিনিধিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর করলেন বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে বিদ্যুত পরিবাহী কোনো মেকানিজম নাই। এটি পিনাকির বক্তব্যের বিরোধীতার শামিল।
পিনাকি টিপাইমুখ বাধের বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন এটি ফারাক্কার মত ইরিগেশন প্রজেক্ট নয় যা বাংলাদেশের ক্ষতি করবে।
তাকে ধন্যবাদ তিনি স্বীকার করেছেন ফারাক্কা আমাদের দেশের ক্ষতি করছে। তাই আমরা ফারাক্কার একটি ন্যায় সঙ্গত সমাধানের পরই আমরা টিপাইমুখ নিয়ে ভারতের সাথে আলোচনা করতে পারি। আমাদের দাবি আগে ফারাক্কার সমাধান পরে টিপাইমুখ প্রকল্পের আলোচনা।যখন ফারাক্কা নিয়ে আমরা আমাদের সমস্যার কথা ভারত কে জানাব। তখন এই পিনাকিই বলবেন ভারত বাংলাদেশকেতার ন্যায্য হিস্যা হতে বেশী পানি দিচ্ছে।
১৯৬০ সালে ফারাক্কা নির্মাণের পূর্বে এবং পরে চালু করার পূর্বে এমন করেই বলেছিলেন ফারাক্কা বাংলাদেশের ক্ষতি করবেনা। যদি করে তবে তারা বাংলাদেশের আপত্তি করা মাত্র এই প্রকল্প বন্ধ করে দিবেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখলাম উলটো। ফারাক্কা আমাদের ক্ষতি করছে। আমরা বার বার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তারা একটি সম্মানজনক চুক্তির জন্যও প্রস্তুত ছিল না। ১৯৯৬ সালে একটি বৈষম্যমুলক চুক্তি হলেও তারা তাও মানছেন না। এক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে না। আমরা টিপাইমুখ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ভারতের কাছে আরও অসহায় হয়ে যাব।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া
শিপিং মিনিস্টার আমিন বলেছেন যদি পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয় তবে বাংলাদেশ অবশ্যই আপত্তি জানাবে। আমরা ঘটনা নিবীড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এই প্রকল্প কখনো বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকারক হবে না। তার কথা শুনে আমার মনে হচ্ছে তিনি কি বাংলাদেশের মন্ত্রী নাকি ভারতের।
রমেশ চন্দ্র সেন বলেছেন ঢাকা জানে সেখানে একটি পানি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। কোন বাধ বা ব্যারেজ নির্মাণ করা হবে এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নাই। তবে বাধ নির্মাণের ফলে যদি বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে অবশ্যই বাংলাদেশ আপত্তি জানাবে। তিনি কেন মন্ত্রানালয়ে বসে আছেন! তার উচিত কোনো লাইব্রেরিতে গিয়ে বসে থাকা। তাহলেও তিনি কিছু জানতে পারবেন। কতটুকু হাস্যকর তার মন্ত্রানালয় হতে বেরিয়ে পিনাকি সাহেব সাংবাধিকদের জানালেন যে বাধ হবে। কিন্তু তাকে জানানোটা প্রয়োজনবোধ করলেন না। তবে কি পিনাকি ও সেন সাহেব ঘরে বসে তাস খেলছিলেন নাকি কোনো প্রমোদ আলাপনে ব্যস্ত ছিলেন।
আংশিকারে সামগ্রিক মূল্যায়ন(ব্যক্তিগত)
ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্যের স্ববিরোধীতা দেখিয়ে এবং রমেশ চন্দ্র সেন সহেব এবং মিস্টার আমিন সাহেবের বক্তব্যের হালকা সমালোচনার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে বলতে হলে আমার মনে হয়েছে আমাদের সরকার উদাসীন। আর সরকারের এই উদাসিতা ভারতকে অনেক বেশী আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। তারা সরকারের সামনে মুলা ঝুলিয়ে কাজ আদায় করে নেওয়ার সহজ পাঁয়তারা করছে। অনেক সুশীল সমাজ নিশ্চুপ তারা হয়ত ভারত সরকার হতে কিঞ্চিত সুবিধা প্রাপ্ত। আসলে আমাদের ভারতের কাছে চাইবার কিছু নাই। আমরা যা চাই তা আমাদের দাবি; চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এসব আমাদের অধিকার। কিন্তু ভারত আমাদের কাছে চেয়ে আসছে সুবিধা। যারা আমাদের যৌক্তিক দাবি মানে না তাদের কাছ থেকে সুবিধা প্রাপ্তির আশা সম্পুর্নভাবে পরিত্যাগ করা উচিত। তাই তাদের সাথে নমনীয় নয় বরং আত্ববিশ্বাসের সাথে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক পুনর্মুল্যায়ন করা উচিত।
আসাম এবং মিযোরামের অনাপত্তি পত্র প্রদানে মনে হয় বাধে জমিয়ে রাখা পানি প্রত্যাহার করে আসাম এবং মিজোরামে কৃষির জন্য ব্যবহার করা হবে। কিন্তু তারা এটা আপাতত প্রকাশ করবেনা। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর তারা প্রকল্পের নকশার বা নির্মাণ কৌশলে ত্রুটির কথা বলে পানি জমিয়ে রাখা জলাধার হতে খাল খননের মাধ্যমে পানি অন্যদিকে সরিয়ে নিবে। এবং এই কাজ হইত তারা গোপনেই করবে। আমরা জানতেও পারবনা। আর আমাদের অভিজাত শ্রেণী তাদের আস্থাভাজন হয়ে এখন যেমন নির্লিপ্ত আছেন তখনও এমনি করে চোখ বন্ধ করে রাখবেন। (আমার অতিরিক্ত সন্দেহ বাতিক আছে) হয়ত এমনটা না ঘটতেও পারে।
সরকারের চাল চলন এবং ভারতের কূটনৈতিক প্রবনতা লক্ষ্য করে আমার মনে হয়েছে দুই পক্ষ মিলে জনগনকে তৃতীয় পক্ষ বানিয়ে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
আমার সবথেকে আশর্চয্য লাগছে প্রধানমন্ত্রী এই টিপাইমুখ কে গুরুত্বের সাথে না নেওয়াকে। তার হস্তক্ষেপ এখানে খুব জরুরী। বিশেষতঃ টিপাইমুখ প্রকল্প তার এখতিয়ার অধিনে গ্রহণ করা জরুরী।
ভারত তিস্তামুখে বাধ নির্মাণ করে সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছে যার প্রভাবে উজানের দেশ বাংলাদেশের তিস্তা সেচ প্রকল্প চরম্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকার এ সম্পর্কে কিছু জানেন বলে আমার মনে হয়না। জানলেও এটা হয়ত confidential ভেবে চুপ করে বসে আছে। এরকম অনেক নদিতে ছোট ছোট খাল খনন করে পানি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে ৫৩ টি অভিন্ন নদির প্রকৃত জলপ্রবাহ হতে বাংলাদেশ কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আর এসব কাজ তারা করেছে বাংলাদেশ কে না জানিয়েই।
করণীয়
যা আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে প্রলাপের মত আসল তাই লিখছি। আমার জ্ঞান করণীয় সম্পর্কে কিছু লেখার জন্য অতীব ক্ষুদ্র। (তাই ভুল কিছু লিখলে তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।)
# এই বাধ নির্মাণ বাংলাদেশ হতে মণিপুর আসাম এবং মিজ়োরামের সাধারণ মানুষ অনেক বেশী প্রতিবাদ মুখর। তাদের এই প্রতিবাদ আন্তর্জাতিক মহলে প্রচার করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। ঠিক ১৯৭১ সালে আমরা আমাদের বঞ্চনার কথা যেমন বিশ্বমহলে জানাতে পারতাম না, ভারত আমাদের সাহায্য করেছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের কথাগুলো পৌঁছে দিতে তেমনি আমরাও পারি মনিপুর, আসাম, মিজোরামের আদিবাসীদের টিপাইমুখ বিরোধী আন্দোলঙ্কে আন্তর্জাতিক মহলে জানাতে সাহায্য করতে পারি। তবে এক্ষেত্রে ভারত আমাদের বিরুদ্ধে তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করবে। তাই আমাদের উচিত হবে বাংলাদেশি Diaspora কে ব্যবহার করে তাদের আন্দোলনের পক্ষে বিশ্বের নৈতিক সমর্থন আদায় করা।
# বাংলাদেশী Diaspora কে ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন পরিবেশবাদী আন্তর্জাতিক এজেন্সীগুলোর মাধ্যমে ভারতকে অব্যাহত ভাবে চাপ প্রয়োগ করা।
# আন্তর্জাতিক নদী কনভেশনের অমান্য অভিযোগে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হওয়া।
# WCD world commission on dam এর নিকট আমরা আমাদের আপত্তি পত্র জমা দিতে পারি। এরফলে wcd ভারত কে বাধ না নির্মাণ করার জন্য চাপ দিবে।
# বাধ নির্মাণ জন্য প্রয়োজন হবে ১৩৭ বিলয়ন ডলার। কোনো দাতা দেশ বা অর্থসংস্থানকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন সমুহকে বুঝিয়ে আস্থায় আনা তারা যেন বাধ নির্মাণ অর্থ প্রদান না করে।
# মণিপুর, আসাম, মিযোরামের আদিবাসীদের কে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভারতীয় হাই কমিশনারের উপস্থিতিতে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক আহ্বান করা।
# ভারত হতে উজানের দেশ যেমন ব্রম্মপুত্রের ক্ষেত্রে চীন, ও গঙ্গার ক্ষেত্রে নেপালের মত দেশ সমুহের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করে ভারতকে টিপাইমুখ প্রকল্পকে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করা।
#নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ, বার্মার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিবিড় করে ভারতের বিরুদ্ধে শক্তি সাম্য সৃষ্টি করা। যাতে পারস্পরিক আলোচনা বা সমঝোতায় ভারত bargaining power এর একক সুবিধা ভোগ না করতে পারে।
#যৌথ নদী কমিশন ব্যতীত অন্য কোনো ফোরামে টিপাইমুখ নিয়ে আলোচনা না করার জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
পরিশেষ
১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত যে কোনো উপায়ে উৎপাদন করা সম্ভব। তাপ, বায়ু, পরমাণু অথবা সৌর যে কোনো উপায়ে উৎপাদন করা যাবে। কিন্তু নদিটির মৃত্যু হলে পুনরায় কোনো উপায়ে নতুন বরাক নদী তৈরি করা সম্ভব হবে না। আরেকটি কথা একটি বাল্ব জ্বালানোর জন্য একটি গাছ নিধন কতটা যৌক্তিক। আমরা নতুন করে অনেক কিছুই তৈরি করতে পারব। কিন্তু পরিবেশ একবার বিনষ্ট হলে তা পুনর্দ্ধার করা সম্ভব হবে না। আর প্রকৃতি যখন প্রতিশোধ নেয় তা হয় নির্মম। সিডর হতে আইলা সময় অতিবাহিত হয়েছে মাত্র আড়াই বছর। কিন্তু আমরা আক্রান্ত হয়েছি ৬ টি ঘূর্ণিঝড়। সামনে আর ভয়াবহ পরিস্থিতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তাই এখনি আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আর পরিবেশ বিপর্যয়কারী সকল প্রকার কর্মকাণ্ড হতে নিজেরা বিরত থেকে অপরকেও বিরত রাখার জন্য সর্বতোভাবে বাধা প্রদান করতে হবে।
তথ্যসুত্র
International law by ansar ali khan
http://onnesha.wordpress.com/2009/05/21/we-must-call-to-s
http://www.e-pao.net/GP.asp?src=22..310509.may09
http://nation.ittefaq.com/issues/2009/06/02/news0908.htm
https://lists.resist.ca/pipermail/indigenousyouth/2005-July/00045
http://www.theshillongtimes.com/
http://www.ccddne.org/
http://www.projectsmonitor.com/detailnews.asp?newsid=12408
http://www.independent-bangladesh.com/2009051910988/count
অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য এবং পরিশ্রমী একটি লেখা।আমার বিসিএস পরীক্ষায় খুব কাজে লাগবে।মাসুদ ভাই অনেক ধন্যবাদ।আপনার আগের ব্লগে একটা মন্তব্য করেছি কষ্ট করে একটু দেখবেন বস।
আমাদের সুশীল সমাজ কি কিছু করবে আদৌ ?
Masud Bhai,
Salam,
Banglai Type koresilam but lost.
So, I am writing in English. Please accept my apology.
The international community can be bought by anyone who has either power or money which we do not have. India has big market which those great powers needs for their economy.
I have a simple solution.
We must be true Muslim first to become real patriot. We have to be self sufficient in food minimum. Every day we eat something imported from India. Thus our DNA is somehow Indianized. Every day we use something made in western countries. So our minds are becoming slowly westernized. What do we make ourselves?
We do not have the gut to do something alternative just if we could build another Farakka Barrage inside Bangladesh then, India would feel what is called flood.
If we can change ourselves into real Muslims, real Hindus (for Hindus) or real Christian (for Christians) or real Buddhist (for Buddhists), then we must love our country. If 80% of us really love our country, then I believe we can face any challenges of this type. We need to be economically strong. We have to have more trade with other countries. We must get more involved international affairs. Then, they will listen to us.
I remind myself and as well as others to check why we are Muslim, why we believe in Allah, how we should live our life. If we can reflect true Islam in our life we will be able to shine as a nation as did the Arabs during the time of the Prophet (PBUH).
ভাইয়া ধর্ম একটা অনুশীলন। হঠাত করেই ধর্ম কে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আনা যাবে না। আমরা বলছি রাষ্ট্রের একটি সমস্যার কথা। ধর্ম কে যদি আপনি সম্পুর্ন জীবন ব্যাবস্থা বলেন তবে আপনাকে জাতীয়তাবাদ এবং রাষ্ট্রের ধারনা পরিত্যাগ করতে হবে। কেননা ইসলাম ধর্মে রাষ্ট্রের ধারনা নেই এটি ইউরোপিয় দর্শন। ইসলামে আছে মুসলিম উম্মাহ বা মুসলিম ভ্রাতৃত্বের ধারনা। এখানে সীমানার প্রশ্ন নেই। আর এই মুসলিম ভ্রাতৃত্ব নিয়ন্ত্রন করবে একজন ইমাম। যিনি ইসলাম ধর্মে সমগ্র মুসলিম জাহানে সর্বাধিক জ্ঞানী হবেন।
We must be true Muslim first to become real patriot.
আমি দুঃখিত,দেশপ্রেমের সাথে ধর্মের সম্পর্কটা আমার কাছে পরিষ্কার হলনা।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অনেক নাস্তিক কমিউনিস্ট বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছেন এবং অনেকেই দেশের জন্যে প্রাণ দিয়েছেন।দেশপ্রেমের মূল শর্ত দেশকে ভালবাসা-সত্যিকারের মুসলিম,সত্যিকারের হিন্দু বা সত্যিকারের ধর্মানুসারী না হয়েও সেটি খুব ভালভাবেই করা সম্ভব।
Every day we eat something imported from India. Thus our DNA is somehow Indianized.
ভারতীয় খাবার খেলে আমাদের ডি এন এ ভারতীয় হয়ে যাবে তা-ই যদি হয় তাহলে ইরাকে আমেরিকানরা সেনা না পাঠিয়ে বিনামূল্যে খাদ্য পাঠিয়েই কর্ম সাবাড় করত বৈকি!আমি বুঝতে পারছি যে আপনি আমাদের সংস্কৃতির উপর বৈদেশিক প্রভাবের কথা বলছেন এবং এ নিয়ে আপনার সাথে আমার খুব বেশি দ্বিমত নেই-কিন্তু উদাহরণটি অত্যন্ত স্থূল মনে হয়েছে আমার কাছে।
সবশেষে,টিপাইমুক বাধের মত কট্টর পার্থিব,রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবের উপর নির্ভরশীল একটি আলোচনায় ধর্মের মত একটি পারলৌকিক বিষয় টেনে এনে আলোচনার মোড় অযথা ভিন্নদিকে প্রবাহিত না করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
অনেক কিছুই জানতাম না। লেখাটা পড়ে জানা হল। ধন্যবাদ।
ভাইয়া,অসাধারণ লেখা।অনেক খেটে লিখছেন।অনেক কিছুই জানতাম না আগে যেটা আপনার থেকে জানলাম।
আর টিপাইমুখি বাধের ব্যাপারে সরকার আসলেই উদাসীন।বিরোধী দলের অবস্থান ও বলার মত নয়।কি হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।আজকে দেখলাম একটা টিম করেছে সরকার।কিন্তু ভালই বোঝা যাচ্ছে এটা লোক দেখানো কাজ।
Lekhatar jonno wait kortesilam. Ami khub pessimistic. Government jodi ei rokom udashin thake tahole kisu hobar asha dekhsi na.
মাশরুফ ভাই
ধর্ম মানে পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা।তাই সবকিছুর মূল সমাধান ধর্ম থেকে পাওয়া সম্ভব।আপনি সৃষ্টিকর্তাকেই যদি না ভালবাসেন তাহলে তাঁর সৃষ্টিকে কিভাবে ভালবাসবেন।
আপনি ভাগ্যবান্্ মুসলমানের ঘরে জন্মেছেন।আপনার দায়িত্ব অন্যদের ইসলামের মেসেজ পৌছে দেয়া।ধর্ম পার্থিব ও অপার্থিব উভয় মিলে।তাই আমি মনে করি যারা আস্তিক তাদের জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ভালবাসলেই সমাধান সম্ভব। যারা নাস্তিক তাদের জন্য অন্যকিছু হতে পারে যেটা তারা জানে।কিন্তু আপনি তো মুসলমান।
ভারতীয় খাবার খেলে আমাদের ডি এন এ ভারতীয় হয়ে যাবে বলতে বোঝাচ্ছিলাম আমাদের সবাই তো এর প্রতিবাদ করছেনা।আমরা কেউ ভারতপন্থী কেউ পাকিস্তানপন্থী কেউ পশ্চিমাপন্থী, বাংলাদেশপন্থী খুব কম। আমরা কি পারিনা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে? আমরা তো ভারতের উপর অতি নি্র্ভরশীল।
বিএনপিজামায়াত পাকিস্তানপন্থী, আওয়ামীলীগ ভারতপন্থী, সুশীল সমাজ পশ্চিমাপন্থী। তাহলে কিভাবে আপনি টিপাইবাঁধের নির্মান বন্ধ করবেন?
আমি আমার মতামত বললাম।আপনি ভিন্নমত পোষন করেছেন ঠিক আছে কিন্তু
"সবশেষে,টিপাইমুক বাধের মত কট্টর পার্থিব,রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবের উপর নির্ভরশীল একটি আলোচনায় ধর্মের মত একটি পারলৌকিক বিষয় টেনে এনে আলোচনার মোড় অযথা ভিন্নদিকে প্রবাহিত না করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।"
এটা বোধহয় আপনার অনধিকারে পরে।
Please let us AGREE to DISAGREE which is the core of any blog.
ধন্যবাদ
সাইফুল্লাহ ভাই, কিছু মনে করবেন না। এই বিষয়টাতে এর আগেও অনেক তর্ক হয়েছে। এই তর্ক শুরু করতে বাঁধা দেয়া তাই আমাদের অধিকারের মধ্যে পরে। এটাকে অনধিকার বলার অধিকার বোধহয় আপনার নেই। আর আপনি যেহেতু এতই ভালো মুসলমান, তবে ফিৎনা ফ্যাসাদ কেনো উদ্বুদ্ধ করতে চাচ্ছেন তা আমার কাছে ধোঁইয়াশাচ্ছন্নই রয়ে গেল।
///আপনি সৃষ্টিকর্তাকেই যদি না ভালবাসেন তাহলে তাঁর সৃষ্টিকে কিভাবে ভালবাসবেন///
সাইফুল্লাহ ভাই,
১)আমি একজন সংশয়বাদী এবং সৃষ্টিকর্তায় আমি বিশ্বাস করিনা-সৃষ্টিকর্তা যদি থেকেও থাকেন অন্ততঃ প্রথাগত ধর্মগুলো থেকে তার যুক্তিযুক্ত কোন ব্যাখ্যা এখনো খুঁজে পাইনি।সুতরাং,সৃষ্টিকর্তাকে ভালবাসা বা ঘৃণা করার প্রশ্নই ওঠেনা।কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার ভাষায় "সৃষ্টি" যারা-এই যেমন এই ব্লগের মানুষজন অর্থাৎ আমার ক্যাডেট কলেজের বন্ধু বান্ধব বা এই পরিবারের সদস্য যাঁরা-এঁদের ভালবাসতে কিন্তু কোন সমস্যাই হয়নি।কাজেই,আপনার এই কথাটি আমার ক্ষেত্রে অন্ততঃ খাটে না।সৃষ্টিকর্তাকে ভাল না বাসলে(অথবা তাঁর অস্তিত্বকে অস্বীকার করলে) যে কাউকে ভালবাসা যাবেনা এ দাবীটি একান্তই আপনার মস্তিস্কপ্রসূত বলে আমি মনে করি এবং আশা করি এই ক্ষুদ্র আমার মাধ্যমেই বুঝতে পারছেন যে আপনার এই দাবীটি অসার।
এছাড়া আপনার আগের যে দাবি যে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হতে গেলে আগে সত্যিকারের মুসলিম/ধার্মিক হতে হবে এ কথাটির অসারতাও কিন্তু আমি আমার আগের মন্তব্যে তুলে ধরেছি যা হয়তো আপনার চোখ এড়িয়ে গিয়েছে।পরবর্তী মন্তব্যে আপনার দুটো দাবীর বিপরীতে আমার যে মন্তব্য তা খন্ডন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
২)আপনি ইসলামের মেসেজ সবার কাছে পৌঁছে দিতে চান এটি চমৎকার কথা কিন্তু ইসলামের মেসেজ পৌঁছে দিয়ে সমাজ পরিবর্তন করে তারপর টিপাইমুখ বাধ রোধ করার চাইতে আরো দ্রুত ও কার্যকর কিছু
যেমনটি লেখক মাসুদ ভাই তাঁর করনীয় অংশে বলেছেন-সে জাতীয় কিছু বলতে তা আরো অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হত বলেই আমার ধারণা।মাসুদ ভাই যে সমাধান গুলোর কথা বলেছেন সেগুলো করতে প্রয়োজন সর্বাগ্রে নিখাদ দেশপ্রেম(যা ধর্ম ছাড়াও খুব ভালভাবে অর্জন করা সম্ভব),তারপর দরকার কূটনৈতিক ও যোগাযোগের দক্ষতা।এখানে "প্রকৃত মুসলিম/বৌদ্ধ/খ্রিষ্টান" হতে হবে এমন ধারণা কিন্তু ধোপে টিকবেনা কেননা ভারতের সাথে নেগোশিয়েট করতে গেলে পড়তে হবে আন্তর্জাতিক আইন আর প্রকৃত ধার্মিক হতে গেলে পড়তে হবে ধর্মগ্রন্থ।হ্যাঁ-দুটো একসাথে সম্ভব,একজন ধার্মিক ব্যক্তি অসাধারণ কূটনীতিক হয়ে দেশের পক্ষে লড়তে পারবেন এমনটি হতেই পারে।কিন্তু বিপরীতটিও কিন্তু সম্ভব-ধার্মিক না হয়েও দুর্দান্ত কূটনীতিক হয়ে দেশের পক্ষে লড়া।এটা পরিষ্কার যে আন্তর্জাতিক আইন পড়তে ধর্মগ্রন্থ পড়া জরুরী নয় কিন্তু শুধু ধর্মগ্রন্থ পড়ে আমি দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবনা।কাজেই আপনার মূল যে দাবী অর্থাৎ We must be true Muslim first to become real patriotএটি সম্পূর্ণভাবেই তার যৌক্তিকতা হারাচ্ছে।
৩)
আমাদের এই আলোচনা দেখলেই কিন্তু আমি কেন এ কথাটি বলেছি বুঝতে পারবেন।লেখক মাসুদ ভাই এখানে টিপাইমুখ বাঁধ,এর ক্ষতিকর প্রভাব এবং বাংলাদেশ সরকার এবং সাধারণ মানুষের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবন সেই প্রসঙ্গে অন্যদের মন্তব্য আশা করেছেন।আপনি নির্দিষ্ট কোন সমাধান না দিয়ে বললেন যে আমাদের সবাইকে প্রকৃত ধার্মিক হতে হবে এবং সেই সাথে অযৌক্তিক কিছু দাবী করলেন(যে দাবীগুলোর খন্ডন আমি উপরেই করেছি)।ফলে কি হল??মূল আলোচনা বাদ দিয়ে এখানে ধর্ম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল(হ্যাঁ, আপনি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার কথা বললেন যেটি কিন্তু সরাসরি সমাধান নয়,খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন হয়ে ভারতের উপর নির্ভরশীল না হবার মাধ্যমে টিপাইমুখ বাঁধ ঠেকাতে ঠেকাতে আরো ১০ টা টিপাইমুখ বাঁধ ভারত তৈরি করে ফেলবে এটা না বোঝার মত মানুষ আপনি আশা করি নন।
আমি স্বীকার করছি যে আপনার বন্ধনীকৃত লাইনগুলো আরেকটু নরম ভাষায় বলা যেত কিন্তু আমার বক্তব্যের মূলভাব থেকে এক বিন্দু সরে আসার কোন প্রয়োজন বোধ আমি করিনা।অপ্রাসঙ্গিক এবং মূল সুরকে ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে নেবার ক্ষমতাসম্পন্ন আপনার এই ধর্মপ্রচারের প্রতিবাদ করাকে ব্লগের একজন শুভানুধ্যায়ী হিসেবে আমার অধিকারের ভেতরে পড়ে বলেই মনেকরি।
আশা করি আপনার কাছ থেকে সুচিন্তিত,নির্দিষ্ট মতামত ভবিষ্যতে পাব যা "ধার্মিক হবার মাধ্যমে টিপাইমুখ প্রতিরোধ করতে হবে" এর চাইতে ভাল কিছু হবে।
ধন্যবাদ।
খাইসে,পরিবেশ দেহি গরম হয়া গেছে। 🙁 🙁
🙁 🙁 🙁
এখন আবার ঠান্ডা হয়া গেল।সাইফুল্লাহ ভাই আমার সিনিয়র তাই উনার সাথে আমার কুনুই গন্ডগোল নাই,সব মিট্মাট হয়া গেছে 🙂
শার্লী ভাই,
আমি নিজে ভাল মুসলমান নই বলেই আমার মনে হয়েছে মূল সমস্যা ঐখানে।
"এই বিষয়টাতে এর আগেও অনেক তর্ক হয়েছে। এই তর্ক শুরু করতে বাঁধা দেয়া তাই আমাদের অধিকারের মধ্যে পরে।"___ এটা আমার জানা ছিলনা কারন আমি এ ব্লগে নতুন।
"... ... ...তবে ফিৎনা ফ্যাসাদ কেনো উদ্বুদ্ধ করতে চাচ্ছেন তা আমার কাছে ধোঁইয়াশাচ্ছন্নই রয়ে গেল।"______ ধন্যবাদ বলার জন্য।
আমার বলা ফিৎনা ফ্যাসাদে উদ্বুদ্ধ করলে এখানেই থামা সংগত।
মাসরুফ ভাই,আপনার ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ। আর পাল্টা ব্যাখ্যায় যাচ্ছিনা কারন উপরের দ্রস্টব্য।
আপনার সহিষ্ণু মনোভাবের জন্য অনেক ধন্যবাদ সাইফ ভাই।আপনি আমার দু বছরের সিনিয়র তাই আশা করি আমার কথায় মনে কষ্ট পাননি।as you said,we should agree to disagree.
ব্লগে সুস্বাগতম।
ভাই আমার কথায় কষ্ট পেলে ক্ষমাপ্রার্থী। ভালোমত একটা পাঙ্গা দিয়ে দেন। কিন্তু সাবধানতার বিকল্প দেখি না বলেই মন্তব্যটা করেছিলাম।
সালাম মাসরুফ,
কষ্ট পায়নি ভাইয়া।
আমার কথায় মনে কষ্ট পেলে ক্ষমাপ্রার্থী।
দোয়া করি সবাই ভাল থাকুক।
খুব পরিশ্রমী আর তথ্যবহুল লেখা, টিপিক্যাল মাসুদ। :boss: :boss: :boss: :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে কি মন্তব্য করবো বুঝতে পারছিনা। ফারাক্কার পরে এই সব বাঁধ প্রকল্পের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা ভাবনা সিদুরে মেঘ - গোয়ালের গরুর মতন হওয়া উচিত ছিলো।
আমরা মনে হয় শুধুই গরু ---- বুঝাইতাসে কুনু ঝামিলা নাই, আমরাও বুইঝঝা বইসা আছি কুনু ঝামিলা নাই। 🙁
কিসে যেন গন্ধ পাওয়া যায়...............!!!! আমাদের দেশের ভবিষৎ কি...??? 🙁 🙁
ভাইয়া খুব কম বয়সে জনমত গঠনের কিছু উপায়ের কথা শুনেছিলাম। আসুন আমরা একটু চেষ্টা করে দেখি জনমত গঠণ করতে পারি কিনা। আমাদের দেশের রাজনীতি ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি। তাই জনমতের বিরুদ্ধে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না। মানুষকে জাগাতে হবে।
আরেকটা ফারাক্কা নির্মানের বুদ্ধিটা ভাল লাগসে...এইটা নিয়া কিছু জানতাম না......লেখাটার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে পিনাকরঞ্জনের কুটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন, মিথ্যাচার এবং একই সাথে এই ব্যাপারে আমাদের মাননীয় মন্ত্রীদের ভক্তিমূলক সঙ্গীত পরিবেশন আসলেই অসহনীয়। তার চেয়ে অসহনীয় দেশের সামনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভারতীয় আগ্রাসনমূলক মনোভাব, বিডিআর হত্যাকান্ড ও যুদ্ধপরাধীদের বিচার, চলমান অর্থনৈতিক মন্দা পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো গুরুতর বিষয় বাদ দিয়ে এক প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রীর বাড়ী ও সংসদে আসন বিন্যাস নিয়ে বিরোধের কারণে অকার্যকর সংসদ।
কি করবি বল,দে আর শোইং দেয়ার ট্রু কালারস।শিয়াল কুকুরদের সাথে আমাদের এম্পিদের বেশি পার্থক্য আছে বলে মনে হয়না।সরকারী চাকরিতে ঢুকলে এই শুওরদের স্যার বলতে হবে ভাবলেই মনটা বিষায় যায়।
ভাইরে, এমন একটা ভাব যে আমরা তাদের দয়ায় বেচে আছি.........।। 😡 😡 😡
😮 x-( আর্মির সাথেও এমন করে? x-( x-(
আর্মি তো আর সমাজের বাইরে না... :no: :no: ......।। সমাজেরই অংশ। 😮
🙁 বস আমি সেইটা করি নাই কিন্তু আমার ধারণা ছিল মিলিটারির সাথে এইরকম করার আগে দুই বার চিন্তা করে শালারা 🙁
:salute: :salute: :salute:
এটা একটা সময়পযোগী পোস্ট...অনেক কিছু জানতে পারলাম
মাসুদ ভাই,ধন্যবাদ... :thumbup: :thumbup: :thumbup:
কাল প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন বঙ্গপোসাগরে ৪ মিলিমিটার করে প্রতিবছর পানির উচ্চতা বাড়ছে। আর এই হার পৃথিবির অন্যান্য দেশ হতে বেশী। যাই হোক এই হারে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে নদিতে লবনাক্ততার পরিমান বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চল সম্পুর্ন লবনাক্ত হয়ে যাবে। আর বরাক নদিতে পানির প্রবাহ হ্রাস পেলে লবনাক্ততার মাত্রা আরও বেড়ে যাবে।
:hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
এখানে অনেক কথা হল এবার চলুন একটু কাজ করি। আন্তরিকতার সাথে এক্তু ভাবি দেখি কিছু করা যায় কিনা।
টিপাইমুখ বাধকে না বলুন
সর্বতোভাবে এর বিরোধীতা করতে হবে। একে ঠেকাতে হবে। এটা ধর্মের জন্য নয়, ভারতবিরোধীতার জন্য নয়, দেশপ্রেমের জন্য নয়- মানবাধিকারের জন্য, পরিবেশের জন্য, ভারতের উত্তর-পূর্ব ও বাংলাদেশের জনগণের অস্তিত্বের জন্য করতে হবে। এই বাধ হলে ভারতের উল্লেখিত অংশ ও বাংলাদেশের পুরো পূর্বাঞ্চল ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। তাই দুই দেশের সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঐক্যটা জরুরি।
পরিবেশের ওপর যে কোনো হস্তক্ষেপ রাজনৈতিক সমস্যাও ডেকে আনে। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম তার একটা প্রধান নজির। কতো বিদ্যুৎ পাই আমরা ওখান থেকে? তার জন্য প্রায় দুই দশক আমাদের প্রচুর মূল্য দিতে হয়েছে। সে অবিশ্বাস-সন্দেহ আজো কাটেনি। টিপাইমুখ যে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য ভবিষ্যত বড় রাজনৈতিক বিপদও ডেকে আনবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়?
তাই, টিপাইমুখ বাধকে না বলতেই হবে। এর কোনো বিকল্প দেখি না। ধন্যবাদ মাসুদ বিষয়টি সিসিবিতে তুলে ধরার জন্য।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মানুষের কাজের অনেকগুলি বিকল্প থাকে। অনেকে বলেন বিদ্যুত উতপাদনের জন্য জলবিদ্যুত পরিবেশের জন্য সবথেকে কম ক্ষতিকর। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে জলবিদ্যুত প্রকল্প অন্যান্য প্রকল্প হতে তুলনামুলকভাবে বেশী ক্ষতিকর।
সত্যি কথা বলতে কি টিপাইমুখী বাধঁ এর ব্যাপারে এতটা গভীর এই লেখা থেকেই জানলাম।
সরকার প্রধানের নির্ল্পততা আসলেয় আমাদের হতাশ করে।তার উপর যখন বাণিজ্য মন্ত্রী কর্ণেল ফারুক খান (অবঃ) স্বয়ং বলেন যে টীপাইমুখী বাধঁ নিয়ে যারা কথা বলছেন তারা না যেনে বলছেন...হাস্যকর
ধন্যবাদান্তে,
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১
["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]
১. জকিগঞ্জ পর্যন্ত একটা লংমার্চ করা যায়।
২. ভারতের থেকে গরু, পেয়াজ, ডাল, গাড়ী আমদানী বন্ধ করে দেয়া যায়। সিনেমা, হিন্দি সিরিয়ালসহ।
৩. ট্রানজিট ব্যবহারে বাধা দেয়া যায়।