>“হযরত ইব্রাহীম (আঃ)” এর মনে প্রশ্ন ছিল আকাশরাজি, তারকারাজি’র সুনিপুণ নিয়ন্ত্রক কে?
প্রার্থনালয়ের প্রতিমাগুলো সত্যিই কী প্রতিপালক হতে পারে?
তিনি সে প্রশ্নের উত্তর খুজতে খুজতে “নব্যুওয়াত” পেলেন!
>গেলাপেগাস দ্বীপের প্রানবৈচিত্র্য “চার্লস ডারউইন”কে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। বছরের পর বছর দ্বীপের প্রানীকুলের উপর গবেষনা চালিয়ে খুজলেন তার উত্তর।
তিনি উত্তর খুজতে খুজতে জন্ম দিলেন “বিবর্তনবাদ” তত্ত্বের!
>ছুটি থেকে ফিরে এসে “আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং” পেলেন ব্যাকটেরিয়াবিহীন একটি পেট্রিডিস। নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকলেন কী ছিল সেই পেট্রিডিসের কাছাকাছি রাখা অন্য পেট্রিডিসে?
উত্তর খুজতে খুজতে আবিষ্কার করলেন প্রানরক্ষাকারী “অ্যান্টিবায়োটিক”!
>টুপ করে পড়া আপেলটি “আইজ্যাক নিউটনে”র ক্ষুধা উদ্রেক না করে, উদ্রেক করেছিল জিজ্ঞাসার। আপেলটি উপর থেকে কেন নীচেই পড়ল? আকাশ পানে কেন ছুটে গেলনা?
তিনি উত্তর উত্তর খুজতে খুজতে পেলেন “গতিসূত্র সমূহ”!
>জ্ঞানসাধনা, পরীক্ষণ, নিরীক্ষণ প্রাচ্যকে মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে দিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের দর্শনকে, জ্ঞানচর্চাকে। অসংখ্য তত্ত্বের সংযোজন, বিয়োজন, গ্রহন, বর্জন, সমন্বয় সাধিত হল “ইবনে সিনা”, “খাওয়ারিজমী”, “আল হাইয়্যান”, “আল-কেমী”, “আল-রাজি”, “আল-কিন্দ” প্রমূখের হাতে।
তাদের অবিরত অনুসন্ধানে পৃথিবী পেল দর্শনশাস্ত্র, চিকিতসাশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, গনিতশাস্ত্র, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি সংক্রান্ত অভাবনীয়, অসামান্য সব তত্ত্ব!
>গোছালো সংসার আর রাজপাটের মাঝেই “সিদ্ধার্থে”র মনে ভাবনা জেগেছিল সত্য ও বোধের।
গৃহত্যাগী ধ্যানে খুজতে লাগলেন সত্যকে।
খুজতে খুজতে বুদ্ধ পেলেন “বোধিসত্ত্ব”!
>নিজের পায়ের শব্দ বা ঘন্টার ধ্বনি কেন কুকুরের লালা ঝড়ায় সে প্রশ্ন ভাবিয়েছিল “পাভলভ”কে। খাবার ছাড়াও কী লালাগ্রন্থির রস নিঃসরন সম্ভব?
তিনি উত্তর খুজতে খুজতে বিজ্ঞানকে দেখিয়েছিলেন নতুন পথ, “কন্ডিশনিং” আবির্ভূত হল বিজ্ঞানের নতুন এক দর্শন হিসেবে!
>সূর্য্য, গ্রহরাজি আর চন্দ্রের গতিপথ চিন্তায় ফেলেছিল “কোপার্নিকাস”কে।
তবে কী সুর্য্যই পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে? চন্দ্র তবে কাকে কেন্দ্র করে ঘোরে?
তিনি উত্তর খুজতে খুজতে বলেছিলেন- “পৃথিবী সূর্য্যের চারপাশে পরিক্রমনশীল”।
>হেমলকের পাত্রে চুমুক দিতে দিতে সমগ্র মানবজাতির কাছে প্রশ্ন রেখে গিয়েছিলেন “সক্রেটিস”- তার মৃত্যু বা তার শিষ্যদের জীবন ধারনের মধ্যে কোনটি শ্রেয়?
সে প্রশ্নের উত্তর খুজতে খুজতে গ্রীক দর্শন ছড়িয়ে পরেছিল সমগ্র পৃথিবীতে।
>জাতের স্বরূপ খুজতে খুজতে “লালন ফকির” ছেড়েছিলেন জগত সংসার। একতারা আর খঞ্জনীর সুরে সুরে খুজেছিলেন স্রষ্টাকে, নিজেকে।
গানে গানে জানিয়ে গেলেন জাত-পাতের অসারতা, অন্তঃসারশূন্যতা।
>ভারত নামক এক সমৃদ্ধশালী, উন্নত সভ্যতার খোজে ডুবে গিয়েছিল কত শত জাহাজ। তারই কোনটায় চেপেছিলেন “কলম্বাস”, কোনটায় “ম্যাগিলান”, কোনটায় “ভাস্কো-দা-গামা’।
ভারত খুজতে খুজতে আবিষ্কৃত হল “আমেরিকা”, “আফ্রিকা”, “দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া”।
>মটর শুটির জন্ম জন্মান্তরে কী এক অজানা প্রশ্নে বিভোর ছিলেন “মেন্ডেল”। মটরের কোন গাছ কেন খাটো বা লম্বা? কোন গাছটি কোন বৈশিষ্ট্যের?
তিনি উত্তর উত্তর খুজতে খুজতে বলে গিয়েছিলেন “বংশগতি’র কথা।
>আরবের অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজ ব্যথিত করেছিল “মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)” কে। বিষাদ ভারাক্রান্ত হৃদয় তাকে নিয়ে গিয়েছিল হেরার নির্জন গুহায়। মানবতার মুক্তির ভাবনা তাকে পীড়িত করেছিল প্রতি মূহুর্তে।
প্রিয় বন্ধুর কাছে ওহী পাঠালেন আল্লাহ তায়ালা। সারা জাহানের মুকুট হলেন তিনি। উম্মতের নাযাতের জন্য নাযিল হল “মুসলিমে”র পথ নির্দেশক পবিত্র কোরান।
>বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়ে ক্রুশবিদ্ধ হলেন “ঈশা (আঃ)/ যীশু খ্রিস্ট”। ফোটা ফোটা রক্তে প্রশ্ন রেখে গেলেন বিশ্ব মানবতার কাছে। সে প্রশ্ন নিয়ে সমগ্র ইউরোপ ও আরবে ছড়িয়ে পড়লেন তার সহচরেরা।
দেশে দেশে পড়ে উঠল গীর্জা, পাদ্রীরা ব্রতী হলেন ‘খ্রিস্টের বানী” প্রচারে।
>গীর্জার নিষেধ উপেক্ষা করে মানব শরীর ব্যবচ্ছেদে ব্রতী ছিলেন “ব্রুনো”। মানব শরীরের গঠন প্রকৃতই কেমন? অন্যান্য পশুর শরীর ব্যবচ্ছেদ করে কী মানব শরীরকে সঠিক ভাবে চেনা সম্ভব?
এর সমাধান খুজতে খুজতে জীবন্ত আগুন খুজে নিয়েছিল ব্রুনোকে!
>মানব মনের স্বরূপ “ফ্রয়েড” খুজেছিলেন স্বপ্ন, আচার, বিশ্বাস, আচরন, ব্যবহার ইত্যাদিতে।
মন ও চেতনার স্তর অন্বেষনে তার কেটেছিল সারাটা জীবন।
তিনি উত্তর খুজতে খুজতে জন্ম দিয়েছিলেন “বিশ্লেষনী মনোবিদ্যা”র!
>আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে হালের বিশ্ব সমাজকে “কার্ল মার্ক্স” ও “ফ্রেডরিক এঙ্গেলস” দেখেছিলেন শ্রেনী ধারনার চোখ দিয়ে। হেগেলের বস্তুবাদী দর্শন তাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
উত্তর খুজতে খুজতে “দান্দ্বিক বস্তুবাদ”কে নির্দিষ্ট করলেন শ্রমিক শ্রেনীর মুক্তির ইশতেহার হিসেবে!
>বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের সৃষ্টি রহস্য উত্তেজিত করেছিল নিস্তরংগ “স্টিফেন হকিংস”কে। গতি ও ভরের সম্পর্ক তাড়িত করেছিল “আইনস্টাইনকে”।
তাদের এ তাড়না রুপান্তরিত হল যুগান্তকারী “বিগ ব্যাং” বা “আপেক্ষিকতাবাদ” তত্ত্বে!
>আমরা বাঙ্গালী না বাংলাদেশী না পাকিস্তানী না বাঙ্গালী মুসলিম না মুসলিম বাংলাদেশী; এ প্রশ্নের উত্তর এমরা খুজেছিলাম বুকের রক্ত দিয়ে, ঝাঁক ঝাঁক বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে।
সে প্রশ্নের উত্তর খুজতে খুজতে পেলাম প্রানের “বাংলা ভাষা”র অধিকার, স্বাধীন “বাংলাদেশ”!!
এমনই কত শত দন্দ্ব, প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, তাড়না, প্রেরনা যুগ যুগান্তরে নিরন্তর জন্ম দিয়েছে কবি, দার্শনিক, ধর্ম প্রচারক, বিজ্ঞানী, গবেষক, লেখক, চিত্রকর, তাত্ত্বিক, দেশপ্রেমিক, বীর, কিংবদন্তীর, অজস্র চিন্তাশীল, প্রগতিশীল মহৎ মানব প্রানের!
অথচ যে কোন প্রশ্ন, সন্দেহ, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, পরীক্ষণকে ইতিহাস জুড়ে সইতে হয়েছে তীব্র আক্রমন, অসহনীয় নিপীড়ন, নিদারুন উপহাস বা কটাক্ষ, এমনকী প্রানঘাতী ষড়যন্ত্র!
প্রশ্নকারীর প্রতি পৃথিবীর সকল সমসাময়িক মতবাদ ছিল খড়গ-হস্ত, আগ্রাসী ও আধিপত্যবাদী! যুগে যুগে প্রশ্নকারীকে পুঁজিবাদ বলেছে ব্যক্তিস্বাধীনতাবিররোধী বা প্রতিক্রিয়াশীল, ধর্ম বলেছে পাপাচারী বা মুর্তাদ, বামেরা বলেছে ডান, ডানেরা বলেছে বাম, সাম্যবাদ বলেছে সংশোধনবাদী বা প্রতিবিপ্লবী, আস্তিকরা বলেছে নাস্তিক, সামন্তবাদ বলেছে রাজদ্রোহী, শান্তিবাদীরা বলেছে অনাচারী, নীতিবাগীশেরা বলেছে ভ্রষ্টাচারী!
অযুত নিযুত বৈসাদৃশ্যের ভীড়ে মানব ইতিহাসের তাবত আদর্শের কী আশ্চর্য্য এই এক সাদৃশ্য, ভ্রাতৃত্ব, বন্ধুত্ব, মৈত্রিত্ব! হাজার হাজার বছর ধরে আক্রান্ত হলেই নিজেদের মাঝে সকল বিভেদ, প্রতিযোগিতা ভুলে সকল সমকালীন আদর্শসমূহ এক পাল হিংস্র নেকড়ের মত সীমাহীন ক্ষমাহীনতা আর বিধ্বংসী আক্রোশে ঝাপিয়ে পড়েছে সত্যশাবকের উপর, অংকুরেই নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে যে কোন নতুন চিন্তা, উপলব্ধি, সত্যজ্ঞান বা মতবাদকে!
হায়! তবু যদি থামানো যেত নতুন চিন্তার স্রোতকে, তবু যদি দমানো যেত দলছুটদের।
হায়! তবু যদি ঘোর ভাঙ্গত সনাতনীদের, তবু যদি শুদ্ধ হত পশ্চাতমুখীরা।
হায়! তবু যদি আদর্শ হত প্রকৃতই নিরন্তর সত্যনিষ্ঠতার, মানবকল্যানকর, মননশীলতার!
:hatsoff:
এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ
😛 😛
:boss: :boss:
পুরাদস্তুর বাঙ্গাল
:party:
ভাই যুগে যুগে নবীরাও মার খেয়েছেন আর চোর-বাটপার-অপরাধীরাও মার খেয়েছে।উভয়ে কি সমান?প্রশ্ন করা আর সমকালীন লোকেদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়াই সঠিক হবার মাপকাঠি নয়
দুর্মতি ডারউইনের বিবর্তনবাদের যেমন কোন যৌক্তিকতা নেই তেমনি ঈশা (আঃ) এর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পক্ষে কোন সত্যায়িত প্রমানপত্র নেই। আর মানসিক বিকারগ্রস্ত ইহুদি সিগমন্ড ফ্রয়েড উন্মত্ত যৌনতাকে মানুষের উপাসক বানিয়ে গেছেন সারাটাজীবন যা বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতা ও সংস্কৃতির ভিত্তিস্তম্ভে পরিনত হয়েছে।
১৪০০ বছর আগের ক্বুরআন অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে মেন্ডেলের বংশগতি, কোপার্নিকাসের হেলিওসেন্ট্রিক থিওরি, বিগ ব্যাঙ থিউরি, আইনস্টাইনের সমীকরন, হকিং রেডিয়েশন, কসমিক স্ট্রিং এবং নিউটনের অভিকর্ষ বলকে যথাযথভাবে অনুমোদন করে।
শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..
😐
হারুন ভাই@ ডারউইন আর ফ্রয়েডের কিন্তু আরো অসংখ্য অবদান আছে। আর পৃথিবীতে কোন একটি মত যুক্তির বিচারে শ্রেষ্ঠ হতেই পারে; তাই বলে অন্য মতের পক্ষে কোন যুক্তি নাই এমনটা বলা বোধহয় অযৌক্তিক।
আর দ্বিতীয় প্যারায় আপনি যা বলেছেন সে আলোচনায় নাইবা গেলাম। দয়া করে "সূফী" বা "মুতাযিলা"দের উপর যে অত্যাচার করা হয়েছিল সেটার কারনটা পরিস্কার করবেন কী??
"তাই বলে অন্য মতের পক্ষে কোন যুক্তি নাই এমনটা বলা বোধহয় অযৌক্তিক"।-সেই যুক্তিটা বলে ফেল।
দয়া করে “সূফী” বা “মুতাযিলা”দের উপর যে অত্যাচার করা হয়েছিল সেটার কারনটা পরিস্কার করবেন কী??--আমি পরিস্কারনা, জানিনা , তোমার মূল লেখার সাথে প্রাসংগিক কিনা সেটা পরিস্কার করে বুঝিয়ে দাও।
শুধু যাওয়া আসা শুধু স্রোতে ভাসা..