মনপুরা

ডিসক্লেইমারঃ দয়া করে সিনেমাবোদ্ধারা দূরে থাকুন। এইটা কোন চিন্তাশীল রিভিউ না

দয়া করে কেউ মনপুরা দেখতে যায়েন না। পরিচালককে খামচি দিতে ইচ্ছা করবে। 😡
ফাল্গুনের প্রথম দিনে আমরা অনেক মজা করি, আমাদের ডিপার্টমেন্টের রেওয়াজ এইটা। আর কিছু না হলে, অন্তত হলুদ কমলা ছড়াছড়ি থাকে ক্যাম্পাসে। জুটিরা পাশাপাশি বসে ফিসফাস করে… এটা ওদের মজা, আমরা দূর থেকে ওদের গালাগালি করি… এটা আমাদের মজা।
এবার কোন এক কুজাত ক্লাসমেট মনপুরা দেখার রোল তুলল, বলা বাহুল্য আমরা বাকি বেজাতেরা তাতে সায়ও দিলাম। সায় দেয়ার আরেকটা কারণ, আমরা জানতাম সিনেপ্লেক্সের টিকেট আড়াইশ টাকা, ফাহিম বলে এই টিকেটের দাম বলে একশ বিশ। আমার মত যারা সিনেমা দেখাকে পড়াশোনার চেয়েও বেশি ভয় করে, তারো হইহই করে উঠলাম। টিকিট কাটা নিয়ে হইচই হলো, ঝগড়া ঝাটি হলো, শেষ মেশ টিকেট কেনা হয়ে আমরা মনপুরা দেখতেও গেলাম, তারপর আরাম করে দেখা শুরু করলাম।
প্রথম দিকের কাহিনী গুলোর মাঝে কোন কন্টিনিউটি নাই, মনে হলো প্রেমের জন্য একটা সিকোয়েন্স বানাইছে, পয়গাম পাঠানোর একটা সিকোয়েন্স বানাইছে, উলটাপালটা হয়ে যাওয়ার একটা সিকোয়েন্স বানাইছে, তারপর সবগুলা একসাথে পরপর জোড়া দিছে। ধুম করে এক সিনের মাঝে প্রেম হলো, ধাম করে নায়িকা নায়ককে দেখতে চলে আসলো। প্রতিটা সিকোয়েন্স ইটসেলফ চুইঙ্গাম, কিন্তু এক সিকোয়েন্স থেকে আরেক সিকোয়েন্স এ ধুমধাম চলে যাওয়া হয়েছে।
শেষের দিকে এই সমস্যা ছিল না। কাহিনী নিজস্ব গতিতে এগিয়েছে, কন্টিনিউ করে গেছে শেষ পর্যন্ত। শেষে নায়িকাকে কবরে নেয়ার সময় ‘হায় হায় সোনাই’ গানটা বুকের মাঝে বাজতে থাকে। আমার মনে হলো একমাত্র এই গানটাই জায়গামত বসেছে। অন্য গানগুলোকে যেন ধরে ধরে চরিত্রের মুখে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
শটগুলা নিয়ে ক্লাসমেটরা অনেক আহাউহু করলো, আমি আবার বুঝি একটু কম, আমার কাছে তেমন আহামরি কিছু মনে হয়নি। =(( তবে আশা ছিল ভাল লাগবে।
এই সিনেমায় দেখার মত একটাই জিনিস আছে, সেটা হলো চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়। অসম্ভব অসম্ভব সাবলীল। আমাকে গ্রেডিং করতে দিলে আমি একশতে দুইশ ঊনিশ দিতাম। চঞ্চল চৌধুরী যেইরকম সুন্দর অভিনয় করছে, মেয়েটা ঠিক সেইরকম খারাপ অভিনয় অভিনয় করছে। মেয়েটার আমি চরম ফ্যান, এত্ত সুন্দর এত্ত সুন্দর, কিন্তু এইরকম অভিনয় করে কেন?? শিমুলের অভিনয়ও ভালই।
যাই হোক, সিনেমা দেখে মুখ চুন করে বেড়িয়ে আসলাম আমরা বিশ জন। শিরোনামহীনের মোড়ক উন্মোচন ছিল বসুন্ধরা সিটিতে, তাই কয়েকজন থেকে গেল। আমরা বাকিরা চারুকলাতে আড্ডা দিলাম অনেক অনেকক্ষণ। মাঝখানে আমার দুই বন্ধুর সাথে দেখা হলো, এক পিচ্চা ও এক পিচ্চি (দুই পাখি, যাদের দেখে হিংসায় আমি জ্বলেপুড়ে যাই)। পিচ্চা আবার এই ব্লগে লেখেও।
তারপর আম্মার বকার ভয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে বাসায় ফিরে দেখি আম্মা কিছুই বলে না। :awesome:
আজকে পরীক্ষা শেষ হলো, যাই ঘুমাইতে যাই। :guitar:

৭,৯১৮ বার দেখা হয়েছে

৯১ টি মন্তব্য : “মনপুরা”

  1. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    মনপৃরার গানগুলার দৃশ্যায়ন আগে দেখছিলাম ভাল লাগে নাই x-( ~x(
    থ্যাংকস সামিয়া ১০০ টাকা বাচাইলা ....২০ টাকার আইসক্রিম তোমার 😛


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  2. মজার ব্যাপার হচ্ছে পহেলা ফাল্গুনে আমাদের ব্যাচের ১৬ জন একসাথে সিনেপ্লেক্সে মনপুরা দেখেছি।

    সরাসরি প্রতিক্রিয়া হচ্ছে 'মন পুরে নাই মনপুরায়।' ভালো লাগেনি।

    একঘন্টার গল্প যদি কেউ টেনে টুনে আড়াই ঘন্টায় বলে আর যদি সে গল্পটা গুছানো কিছু না হয় তাহলে ভালো না লাগাই স্বাভাবিক। কাহিনীতে আমার অনেক খটকা থেকে গেছে। শুরুতেই শিমুল কাজের মেয়েটাকে কেন খুন করলো ছবি শেষ করার পরও আমার কাছে পরিষ্কার না। পাগল বলে? কিন্তু মিলি'র সাথে বিয়ের পর ওর আচরন দেখে ওকে মোটেই ওরকম মনে হয়নি।

    খুনের ব্যপারটা ধামাচাপা দেয়ার সময়ও গোঁজামিল দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়েছে। 'মনপুরা' দ্বীপে চঞ্চলের খোঁজে বারবার পুলিশের আসার দৃশ্যগুলিও হাস্যকর লেগেছে। প্রথম দেখাতেই মিলি যেভাবে চঞ্চলের প্রেমে পড়েছে তাতে মনে হয়েছে পরিচালক প্রেমে পড়তে বলছে তাই পড়ছি।

    এমনকি চঞ্চলের অভিনয়েও নতুনত্ব কিছু নেই। শিমুল অভিনয় পারেই না। ফজলুর রহমান বাবু ভালো অভিনয় করে সব সময়, কিন্তু পরিচালক উনাকে দিয়ে আরো করিয়ে নিতে পারতেন। মামুনুর রশীদের অভিনয় জঘন্য হয়েছে। এমনকি ইংরেজি, প্রমিত বাংলা আর গ্রামের কথ্য ভাষা মিলিয়ে উনি গুব্লেট করে ফেলেছেন।

    ফারহানা মিলি দেখতে কেমন সেটা সামিয়ার পোস্ট বলে আর বললাম না। 😛 কিন্তু গ্রামের পথে ওকে হাঁটতে দেখে মাঝে মাঝে আমার মনে হয়েছে বুঝি র‌্যাম্পে হাটছে। 🙁

    গানগুলি মনে হয়েছে বুঝি হঠাৎ শুরু হয়ে গেছে। আরোপিত। চোখ বন্ধ করে শুনলে অবশ্য দারুন লাগে।

    সবচেয়ে দারুন যেটা সেটা হচ্ছে, লোকেশন। যতদূর জানি শুটিং হয়েছে বগুড়ার ধুনটে। অসাধারন জায়গা। দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আর ক্যামেরাম্যান খসরু 'র কাজ চমৎকার।

    জবাব দিন
  3. দিহান আহসান

    আগে যে ক্যাম্নে পড়া হয়নাই?
    লেখা আর মন্তব্য পড়তে পড়তে :just: পিরা গেলাম। :khekz:
    টিটো ভাই, মাম্মা, দাদা এরা সব কোথায় গেলো? :dreamy:
    পুরাই ফাঁকিবাজ হইয়া গেসে সবাই :no:

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।