ক্যাডেট কথিকাঃ পর্ব ৩

মার্চের কুড়ি, উনিশশো তিরাশি। গতকাল বাবা মায়েরা আমাদের কলেজে রেখে গেছেন। রাতে প্রায় কারোর ভাল ঘুম হয়নি। অচেনা একটি ভোরবেলায় ঘন্টা বাজলো ঢং ঢং করে। প্রথমে ঠাহর করতে পারি না কোথায় আছি। চোখ রগড়ে ইতিউতি তাকাতে মিলি আপাকে দেখতে পেলাম। আমাদের বেডগুলো খাট আর চৌকির মাঝামাঝি কিছু একটা। পাশ ফিরে শুলে বেশ একটা ক্যাচর ম্যাচর আওয়াজ হয় দেখি। আটজন ক্যাডেটের ডর্মে দুই বাথরুম আর দুটো টয়লেটে সকালবেলা বেশ একটু নীরব ঠেলাঠেলি হলো আমাদের মাঝে।

বিস্তারিত»

ক্যাডেট কথিকাঃ পর্ব ২

তিনতলার পেছনের ব্লকের দ্বিতীয় রুমটি আমার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কেউ একজন জানালো, আমার নতুন ঘর বাড়ি সরেজমিনে দেখতে মা হাউসে যেতে পারবেন কিন্তু বাবাকে অডিটোরিয়ামে বসে থাকতে বলা হলো। অগত্যা বাবার থেকে বিদায় নিয়ে আমরা হাউসের দিকে রওনা দিলাম। আসিয়া খাতুন নামের একজন অল্প বয়েসী মহিলা আমাদের সেখানে পৌঁছে দিয়ে গেল। নির্ধারিত রুমে ঢুকে দেখি আমার আগেই দুই জন ক্যাডেট চলে এসেছে। একজন শ্যামলা মতন দেখতে,

বিস্তারিত»

ক্যাডেট কথিকাঃ পর্ব ১

নুসরাত ম্যাডাম পাটভাঙা সুতির শাড়ি পরতেন টানটান করে, সাথে ম্যাচিং লাল রঙের ব্লাউজ। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকের রেখা, কপালে উদীয়মান সূর্যের মত একখানা টিপ গোটা মুখটি উজ্জ্বল করে রেখেছে। সাজপোশাক বলতে ঐটুকুনই। কলেজ চলাকালীন সময় ম্যাডামদের লালপেড়ে সাদা শাড়ি পরবার চল ছিল, অন্য সময়ে তাঁরা সিভিল জামাকাপড় পরতে পারতেন। ছিপছিপে পাতলা গড়নের ম্যাডাম হাঁটতেন ঝড়কে পেছন ফেলে, ঈষৎ ভেজা কন্ঠে তিনি কথা বলতেন স্পষ্ট উচ্চারণে। কাঁধ অব্দি লম্বা চুল টেনে বাঁধতেন পেছনে।

বিস্তারিত»

যুদ্ধ এবং শৈশব

যুদ্ধ এবং শৈশব

“বালক হিসেবে আপনি যখন যুদ্ধে যাবেন তখন আপনার মধ্যে অমরত্বের মোহ কাজ করবে। অন্যরা নিহত হবে; কিন্তু আপনি নন…” – আর্নেস্ট হেমিংওয়ে

স্বাধিকার বা স্বাধীনতার জন্যে সংগ্রামের অনিবার্য পরিণতিই যুদ্ধ। এটা পৃথিবীর আদিমতম সত্যগুলোর একটি। যুদ্ধের রকমফের যাই হোক না কেন, কোন দেশ বা জাতি বা নৃগোষ্ঠীই এই সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেনি। নিজেদের লুপ্ত অধিকার পুনঃঅর্জনের জন্য অথবা আপনার ওপরে জবরদস্তি করে চেপে বসা কাউকে প্রতিহত করবার জন্য যুদ্ধে আপনাকে অবতীর্ণ হতেই হয়।

বিস্তারিত»

জাপান ভ্রমণ ২০১৬ (ভিসা সংগ্রহ)

পেপার টা সম্পর্কে একটি হ্যাঁ সূচক ই-মেইল পাওয়ার পর থেকে মনের ভিতরে একটি সুন্দর অনুভুতি শুরু হল। জাপান ভ্রমনের এই সুযোগ কানাডীয় সরকারের খরচে ! যখন প্রাথমিক স্কুলে পড়তাম, তখন সম্ভবত চীন-জাপান নিয়ে একটি গল্প পড়ান হত। তাই ছোট বেলা থেকেই এই দুটো দেশ সম্পর্কে একটি কৌতূহল ছিল। যাহোক, এবার সেটা মেটানোর পালা। প্রফেসর ও খুশি, শুধু খুশি নয় জীবন সঙ্গিনী, যাচ্ছি যে  আমি একাই।

বিস্তারিত»

লতাগুল্মের গালগল্প

আমাদের শহরে এখন সন্ধ্যা নামছে। দিনশেষের এই সময়টুকু আমার বড় প্রিয়। এখানে গ্রীষ্মের দিনগুলি অনেক লম্বা। ‘ঠাডাপড়া’ গরমে স্থানীয় লোকজন দেখি কেবল সমুদ্র সৈকতের দিকে দৌড়োয়। মাঝেমধ্যেই তাপমাত্রা একশো ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। দিনভর তুমুল গরম থাকলেও সন্ধ্যা আসে প্রশান্তি নিয়ে। সারাদিনের প্রচন্ড দাবদাহে গাছেরা তৃষ্ণাতর্ হয়ে থাকে। আমাদের বাড়ির সামনে পেছনে খোলামেলা সবুজ সমতল জায়গা আছে। সামনের চত্বরে আগে কেবল বুনো লাল গোলাপ ছিল, আর দক্ষিণের সীমানা ঘিরে ছিল ঘন সবুজ ফার্ণের ঝোপ ও জেরানিয়াম।

বিস্তারিত»

এক বালকের যুদ্ধ-স্মৃতি

স্মৃতির পাতা থেকে বলছি। এটি এমন সময়ের স্মৃতি যা আমার মনে থাকার কথা নয়। এটি এমন সময়ের গল্প যখন বাংলাদেশ এবং দেশের মানুষকে নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বড়-বড় হেডলাইন তৈরি হচ্ছিল। এই হেডলাইনগুলোর কথা আমি জীবনে আরো অনেক পরে জেনেছি। জেনেছি সেই গৌরব-গাথা যার গল্প মানুষ মনে করবে আরো হাজার বছর ধরে। গৌরবের পাশাপাশি এ এক ব্যর্থতার গাথাও। এই গৌরবকে মনে না নিয়ে, আলোর পথে না এসে কিছু মানুষ মানবতার চেহারায় কালিমা লেপে দিয়েছিল।

বিস্তারিত»

দিনলিপিঃ চিকেন টামালে কিংবা খগেন জে্যঠুর চালতার আচার

এক
সাতদিনের জন্য কেটি এসেছিল আমাদের বাড়ি; চৌদ্দ দিন পুরিয়ে অবশেষে সে ফিরে গেল কানেকটিকাটে। তবু কি যেতে চায়? আমিই প্রায় ঠেলে ধাক্কিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। কেটির বাবা এবছর অবসর গ্রহণ করেছেন। বাবার সূত্রে কন্যা বছরে বিমানে তিনটে ট্রিপ নিতে পারে বিনা টিকিটে। ওর আটলান্টা ট্রিপটা এমনই একটা ফ্রি ট্রিপ ছিল।

চার পুরুষ আগে কেটি আরমানিনির পরিবার ইটালী থেকে এদেশে এসেছিল বসতি গড়তে।

বিস্তারিত»

শুভ জন্মদিন!

ফেসবুক বার্থডে নোটিফিকেশনের যুগে এখন কষ্ট করে কারো জন্মদিন মনে রাখার প্রয়োজন হয় না। সিসিবির জন্মদিনের কোন নোটিফিকেশন না আসলেও কিভাবে জানি মনে পড়ে গেল আজকে জন্মদিন। আর তাই সমকালীন ফেসবুকীয় ধারা বজায় রেখে শুভেচ্ছা জানিয়ে যাই…….

শুভ জন্মদিন সিসিবি।

বিস্তারিত»

স্মৃতিকথন

 

ক্লাস ফাইভে থাকতে স্কুলের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহে দুইটা বই প্রাইজ পেয়েছিলাম।‘শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু’ আর ‘সায়রা সায়েন্টিস্ট’। দুপুরের দিকে বাসায় এসেই সঙ্গে সঙ্গে ‘শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু’ বইটা পড়তে শুরু করেছিলাম। বই পড়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি যাবার মত অবস্থা হয়েছিল। বিকালে মা স্কুল থেকে আসলে দাদু মাকে বলেছিলেন, ‘ওর যেন কি হইছে, একা একা বারান্দায় বসে জোরে জোরে হাসতেছিল’। সেই শুরু।

বিস্তারিত»

শেষ না হওয়ার গল্প

ক্যাডেট কলেজের রাতগুলো নগর জীবনের রাতের চাইতে ভিন্ন ছিল। আমাদের ময়মনসিংহের শহরতলীতে সন্ধ্যা নামতো ঝুপ করে। এমজিসিসির তিন দিকে ছিল ধানক্ষেত, বছরের ছয়মাস জুড়ে সেখানে হাঁটু জল থাকতো। কলেজের দক্ষিণে ধারে কাছে কোথাও শেয়ালকূলের ঘর গেরস্থালি ছিল। সন্ধ্যা হতে না হতে পরিবার পরিজন সহ শতেক শেয়াল একসাথে হুক্কাহুয়া রবে চারদিক কাঁপাতো আর আমাদের শহরবাসী অনভ্যস্ত কান সেই ডাকাডাকিতে ভীত হয়ে পড়তো! শৃগাল সংগীত শুরুর আগে গেমস শেষে হাউসের স্বনামধন্য দৌড়বাজ ক্যাডেটরা বাথরুমের দখলদারিত্ব নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে দিত।

বিস্তারিত»

~ প্রবাসে পরবাসে নেই, সাত সকালে বেরিয়েছে সে; বহুকাল পর বাড়ী গেছে ~

বলা হয় কোনো লেখা পড়ে পাঠকের মনে যখন সেই দ্যোতনাটি জেগে ওঠে – আর সে ভাবে, ‘আরে এ যে আমারও কথা’; তখনই সে লেখাটা সার্থক লেখা হয়ে ওঠে। যতো বেশী পাঠকের মনে এমন ধারণার জন্ম দিতে পারে কোনো লেখা, ততো বেশী পাঠকপ্রিয়তা, ততো বেশী জনপ্রিয়তা পাবে তা; পাবে দীর্ঘায়ু। সহজ শাদামাটা ভাবে তাই বলাই যায় যে, বিভিন্ন ভাষার শীর্ষ কবি ও লেখকরা যখন লেখেন, এমনটা ভেবে এরকম কিছুই লেখেন।

বিস্তারিত»

আমরা সবাই রাজা

লিজার্ড লগ পার্কে পৌঁছুতে মনে হলো কোন অলিম্পিক ভিলেজে এসেছি বুঝি। উনিশশো ছিয়ানব্বইতে আটলান্টা অলিম্পিকে বিভিন্ন ইভেন্ট দেখার পাশাপাশি ঘুরে ঘুরে শহরের সাজসজ্জা দেখেছিলাম। ইসিএফ অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত ক্যাডেটস ডে আউটের বর্ণাঢ্য আয়োজন দেখে অলিম্পিকের পুরনো স্মৃতি ফিরে এলো মনে। পার্কে আমরা পৌঁছুতেই চারপাশের উৎসবমুখরতা চোখে পরে! এখানে শীতের শেষে গাছে গাছে নবীন পাতা আর রংবাহারী ফুলের মেলায় আলো ছড়াচ্ছে প্রিয় সব মুখ। ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন আর কলেজের পতাকায় বর্ণময় বসন্ত সকাল!

বিস্তারিত»

ভ্রমণ

ভ্রমণ

আমার বয়স তখন ১৪ অথবা ১৫ বছর। নবম শ্রেণীতে পড়ি। মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজের নজরুল হাউজের রিক্রিয়েশন রুমের পার্শ্ববর্তী কক্ষে স্থাপিত পিংপং খেলার টেবিল। মাঝখান থেকে জালটা সরিয়ে নেয়া হয়েছে।এই টেবিলের ওপরেই আমি আন্তঃহাউজ দেয়াল পত্রিকা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের জন্যে আমাদের হাউজের বাংলা দেয়াল পত্রিকা লিখছি। আমাদের অর্থাৎ নজরুল হাউজের এই পত্রিকার নাম ‘তরঙ্গ’! পাশেই হাউজ মাস্টারের কক্ষে অথবা ১১ নম্বর রুমে ১৪ তম ব্যাচের রফিক ভাই লিখছেন ইংরেজি দেয়াল পত্রিকা।

বিস্তারিত»

লিরিকস এণ্ড থটস

লিরিকস এণ্ড থটস

“পিয়ার ইয়ে, জানে ক্যায়সা হ্যায় / কিয়া কাহে, ইয়ে কুছ এ্যায়সা হ্যায় / কাভি দার্দ ইয়ে দেতা হ্যায় / কাভি চ্যায়েন ইয়ে দেতা হ্যায় / কাভি গাম দেতা হ্যায় / কাভি খুশি দেতা হ্যায়।” খুব সম্ভবত হায়ার সেকেণ্ডারিতে পড়ার সময় এটা প্রথম শুনি। এমনিতেই আমি এ.আর.রেহমানের অন্ধভক্ত ছিলাম। এখনও ভাল লাগে এই সুরকারের সুর। কিন্তু টিন এইজের মতন বিশেষ কোন ব্যক্তি বা বিষয়ে সেই অন্ধ আসক্তি এখন কোনখানেই আর কাজ করে না।

বিস্তারিত»