মতিউর রহমান স্যার

আজকে কেন জানি হঠাৎ অংকের মতিউর রহমান স্যারকে বারবার মনে পড়ছে। একেবারেই কাদামাটির অন্তর, প্রাতঃস্মরণীয় মানুষ, পরম শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ। আমাদেরকে তিনি নিজের সন্তানদের মতই দেখতেন।

স্যারের একটা অদ্ভুত অভ্যাস ছিল। কোন একজনকে ধমক দিতে হলে তিনি বলতেন, “ইডিয়েটস!”, আর একাধিক জন হলে বলতেন “ইউ ইডিয়েট!” গনিতের লোক বলেই বোধহয় গ্রামারের নাম্বারকে খুব একটা তোয়াক্কা করতেন না। তাঁর একটি কথা আমার মাথায় আজও ঘোরে (এবং আমি সবসময় অনুসরণ করার চেষ্টা করি) সেটা হল,

বিস্তারিত»

প্রেমের চিঠি

প্রেয়সী,
কেমন আছো? আমি ভালই আছি, বললে ভুল বলা হবে। আমি যেনো কেমন পাথরের মত নির্লিপ্ত হয়ে যাচ্ছি। মগজের ভিতরের সুক্ষ অনুভূতিগুলো কেমন যেনো শ্যাওলা জমা ছত্রাকের মত নিথর হয়ে পরেছে। আমি জানিনা কোন ঠিকানায় এই চিঠি পাঠাবো, কিন্তু লিখতেতো কোনো অসুবিধা নাই। তাই না? হৃদয়ের অলিন্দ নামক স্থানে আনকোরা এক অনুভূতি আজকাল বোধ হচ্ছে। সেখানে কোনো আশার আলো আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিস্তারিত»

স্মৃতিকাতরতাঃ একটি অপ্রেরিত চিঠি

পাখি,
আমার এখানে এখন দুপুর তিনটে বাজে। তোমার ওখানে রাত তিনটে। আমাকে এ সময় চিরাচরিত দিবানিদ্রায় পেয়ে বসে। আজও আমার দু’চোখ ভরে ঘুম নেমে আসছে। তুমিও এখন এই মধ্যরাতে নিশ্চয়ই গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। হয়তো কিছু স্বপ্ন তোমায় ঘিরে রেখেছে, হয়তো নয়। এই সেদিনও এ সময়ে তুমি আমার সাথেই ঘুমাতে, আমার ঘাড়ে কিংবা বুকে মাথা রেখে। আমি গান শুনতে শুনতে ঘুমাতে ভালবাসি, তুমিও। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো,

বিস্তারিত»

বাবা-মা চিরদিনই বাবা-মা

আমার বাবা ঝিনাইদাহ ক্যাডেট কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক হিসেবে তাঁর অবদান আমার জীবনে অনেক। তবে তাঁকে আজ শিক্ষক-রূপে চেনাতে চাইছি না। বাবা-রূপে চাইছি।
আমরা যখন খেলতাম তিনিও প্রায়ই আমাদের মাঝে থাকতেন, খেলতেন। বেশ কয়েকটি খেলায় তিনিও খুব ভাল ছিলেন। ডিউটি মাস্টারদের ক্যাডেটদের মাঝে থাকতেই হত। শুধু সে কারণেই তিনি আমার আশে-পাশে ঘোরাঘুরি করতেন তা নয়। তিনি কাছে থাকতেন তাঁর ছেলে খেলছে বলেও। ব্যপারটি আমি প্রথম টের পাই দশম শ্রেনীতে পড়ার সময়।

বিস্তারিত»

কাগজের চিঠি

আমাদের যখন ১২ বছর বয়স, বাবা-মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম অনেক দূর। ক্যাডেট কলেজে পড়তে গিয়েছিলাম। আমাদের সেই অভিভাবকহীন দিনগুলোতে কলেজের শিক্ষকরাই ছিলেন বাবা-মা। তাঁরা আমাদের যতই ভালোবাসুন না কেন, বাবার-মায়ের অভাব পূরণ করতে কখনোই পারতেন না। ক্যাডেট কলেজের কঠোর জীবনের মাঝে, প্রায় সব ক্যাডেটই তাদের পিতা-মাতাকে চিঠি লিখতো, সারা সপ্তাহ সবাই অপেক্ষা করতো বাবা কিংবা মায়ের কাছ থেকে চিঠি পাবে বলে।
আমার জন্য অবশ্য ব্যাপারটি অন্যরকম ছিল।

বিস্তারিত»

কেউ কেউ রয়ে যায়

রেলগাড়ির ভেতরে বসে সাঁই-সাঁই করে পার হয়ে যাওয়া স্টেশনগুলোর নামফলক পড়া আমার একটি নেশার মতো। সব পড়া যায় না, অনেকটি যায়। কিছু ফলক এতই পুরনো যে, পড়তে কষ্ট হয়। দিনের বেলা খুব একটা আনন্দদায়ক না হলেও, রাতের ট্রেনে যাওয়ার সময় ফলক চেনার পাশাপাশি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলোও দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করে। অপেক্ষাকৃত নিশ্চুপ শহরের স্টেশন আমায় আরও বেশি টানে। স্বল্প-রাতে নিবুনিবু হলদে আলোয় দোকানিরা তাদের শেষ ক্রেতার কাছে সদাই বিক্রি করছে।

বিস্তারিত»

সৈয়দ হককে মনে পড়ে

খবরটি শুনেই মনে হয়েছিল একসাথে হাজার তারার আগুন বুকের ভেতর ছুরি হয়ে বিঁধেছে। নিজেকে আকাশের মতো একা মনে হলো, মানুষ জন্মের আগে পৃথিবী যেমন একা ছিল, তেমনই একা মনে হয়েছিল। তিনি চলে গেছেন এ বাস্তবতাটি মেনে নেয়া আমার জন্য কঠিন ছিল। জানি না কেন। আমরা সবাই জানতাম তিনি চলে যাচ্ছেন; ডাক্তাররা তাই-ই বলেছিলেন। বললেই বা কী! ওনাকে কীভাবে যেতে দেই? এমন মানুষকে যেতে দেয়া যায় না।

বিস্তারিত»

নস্টালজিয়াঃ সময়ের পালাবদল

নস্টালজিয়াঃ সময়ের পালাবদল
আহমদ মাহবুব-উল-আলম
[আহমদ, সিসিআর, ১৯৮৮-’৯৪]

১। ক্যাডেট কলেজে ৭ম শ্রেণীতে পড়ার সময় ক্লাস টুয়েলভের বড় ভাইদের দানবাকৃতির মনে হতো। সময় গড়ালো, আমরা যখন টুয়েলভে, নতুন ইণ্টেক যখন ক্লাস সেভেনে ভীতু-ভীতু চেহারা নিয়ে ভর্তি হতো, ভাবতাম ওদের মা-বাবা-দের কোন দয়া-মায়া নেই, এইটুকুন বাচ্চাদের কেউ ক্যাডেট কলেজে পাঠায়!!

২। আমাদের সময়ের এক প্রিন্সিপাল ম্যাডাম (মিসেস প্রিন্সিপাল) একবার তাঁর বাসায় তিনশ ক্যাডেটকে একসাথে দাওয়াত করে শবে বরাতের হালুয়া রুটি খাইয়েছিলেন।

বিস্তারিত»

স্মৃতিগুলো (পার্ট-১)

ক্লাস ১২ এ থাকাকালীন সময়ে কলেজে পাওয়া অ্যাডজুটান্ট স্যার খুবই রসিক মানুষ ছিলেন। ICCVBM এর প্র্যাকটিসে স্যার অভিনব পানিসমেন্টের ব্যবস্থা করলেন। কিভাবে মিস করেছো দেখাও। এর মাঝে সবচেয়ে কঠিন পানিসমেন্ট ছিল বল রিং এর চারপাশে ঘুরে বাহিরে পড়ার মিসটা দেখানো। দেখা যেতো ৩০ বার ট্রাই করা হয়ে গেছে কিন্তু কোনভাবেই একটা বল রিং_য়ের চারপাশে ঘুরে বাহিরে পড়তো না।
আদেশ অব্যাহত থাকতো। যতক্ষণ না মিসটা দেখানো যাচ্ছে,

বিস্তারিত»

আমার ব্যাটম্যানেরা

কিছুদিন আগে পোস্ট করা আমার “পিছু ফিরে দেখাঃ “কামিজ কা বাটন টুটেঁ হ্যায়”….” শীর্ষক একটা লেখা পড়ে জনৈক পাঠক মন্তব্য করেছেনঃ This is the first instance where somebody wrote about batman. তার এ মন্তব্যটা পড়ে ভাবছিলাম, সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন সময়ে ব্যাটম্যানরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ছিল। তাদের ক’জনার কথা আমি মনে রেখেছি?

আমি যখন ময়নামতি সেনানিবাসে (সবার উপরে ময়নামতি) জেন্টেলম্যান ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণরত ছিলাম,

বিস্তারিত»

জানা হতো না

ক্যাডেট কলেজে না গেলে হয়তো ওই ছোট বয়সে ১ হাজার সূর্যোদয়ের দেখা পেতাম না। টেবিল সাজানোর জন্য ফল ইন ভেঙ্গে উসাইন বোল্ট হওয়ার ইচ্ছাও মনে যে জাগতে পারে তা ভাবনার মাঝে আসতো না। মাথা নিচু করে হাঁটতে হবে, টেবিলে দাঁড়ালে গ্লাসের নিচের অংশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, সবসময় সালামের উপর থাকতে হবে, টাচ লাগলে সাবধান হয়ে সরি বলতে হবে,সবার জন্য চা ঢেলে সবচেয়ে বড় কাপ সবচাইতে সিনিওরকে দিতে হবে এরকম হাজারও নিয়মের মাঝে যে মজার ঘটনা ঘটতে পারে তা জানা হত না।

বিস্তারিত»

পিছু ফিরে দেখাঃ “কামিজ কা বাটন টুটেঁ হ্যায়”….

১৯৭৫ সালের শেষের ক’টা দিন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সদ্য কমিশন লাভ করে ঢাকার একটা ইউনিটে যোগদান করেছি। পাকিস্তান প্রত্যাগত অফিসারদের দেশে ফিরিয়ে আনাতে তখন আবাসন সংকট চলছিল। জরুরী ভিত্তিতে আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য তখন সেনানিবাসের এখানে সেখানে “রূপসা” প্রকল্পের অধীনে কিছু ব্যাচেলর অফিসার্স কোয়ার্টার্স (বিওকিউ) তৈরী করা হয়েছিল। সদ্য বিবাহিত কিংবা ছোট পরিবারের জন্য দুই কক্ষ বিশিষ্ট কিছু ম্যারেড অফিসার্স কোয়ার্টার্সও নির্মিত হয়েছিল। ইটের হাল্কা গাঁথুনী,

বিস্তারিত»

যুদ্ধ এবং শৈশব

যুদ্ধ এবং শৈশব

“দেয়ালির আলো মেখে নক্ষত্র গিয়েছে পুড়ে কাল সারারাত
কাল সারারাত তার পাখা ঝ’রে পড়েছে বাতাসে
চরের বালিতে তাকে চিকিচিকি মাছের মতন মনে হয়
মনে হয় হৃদয়ের আলো পেলে সে উজ্জ্বল হ’তো ।“ – শক্তি চট্টোপাধ্যায়

শান্তির সময়ে শিশুদের বয়স দ্রুত বাড়েনা। অর্থাৎ এই মন্থর সময়ে তাদের মানসিক বৃদ্ধির গতি উল্লেখযোগ্য নয়। তবে যুদ্ধ বা দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি আপদকালীন সময়ে তাদের মানসিক বৃদ্ধি খেয়াল করবার মতন।

বিস্তারিত»

তউফিক স্যারের জন্যে প্রার্থনা!

আমি নিজে বিখ্যাত মানুষ না হলেও অনেক বিখ্যাত মানুষদের সাথে আমার পরিচিতি ও সখ্যতা ছিল। কৈশোরকাল হতেই। এই সুযোগটা মূলত সৃষ্টি হয়েছিলো মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে আমার পড়াশুনা করার সুবাদে। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৩ সাল। ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে সবার একটা সাধারণ ধারণা যে সমাজের বিত্তবান শ্রেণীর অভিভাবকদের সন্তানরা এখানে পড়াশুনা করে। বিষয়টার বর্তমান সত্যতা সম্পর্কে আমি খুব বেশি ওয়াকিবহাল নই। তবে আমাদের সময়ে, তৎপূর্বে, এমনকি আমাদের পরের অনেকটা সময় জুড়েও ধারণাটা সত্য ছিল না।

বিস্তারিত»

প্রয়াত শিক্ষক, পরবর্তীতে সহকর্মী মীর ওয়ালীউজ্জামান স্মরণেঃ

এম সি সি তে (Momenshahi Cadet College-MCC) আমার কিছুদিনের শিক্ষক ছিলেন মীর ওয়ালীউজ্জামান, ইংরেজীর প্রভাষক। আমরা তখন একাদশ কিংবা দ্বাদশ শ্রেণীতে, উনি ঢাবি থেকে সদ্য মাস্টার্স করা টগবগে তরুণ শিক্ষক, অত্যন্ত সুদর্শন, নায়কোচিত চেহারা। বয়সের ব্যবধান তেমন ছিলনা (গুরু শিষ্যের মত), তদুপরি ওনার সারল্য এবং আন্তরিকতার কারণে আমরা বন্ধুর মত ছিলাম। আমাদের চোখে উনি তখন ভীষণ একজন স্মার্ট টীচার। এ রকম সুদর্শন একজন ব্যক্তিত্বকে আমরা প্রভাষক নয়,

বিস্তারিত»