ক্যাডেট কলেজের এক বড় ভাইয়ের কলেজে থাকাকালীন গল্প জানলাম সেদিন। নাম না বলি। ধরুন তিনি জয় ভাই। তাঁরা যখন অষ্টম শ্রেনীতে, বাংলার এক শিক্ষক এলেন কলেজে। বয়ষে তরুণ; পড়ান খুব ভাল।
জয় ভাইয়েরই এক বড় ভাই, নবম শ্রেনীর, তাঁকে জানালেন যে সেই শিক্ষক বিশ্ববদ্যালয়ে পড়াকালীন এক তরুণীর প্রেমে পড়ে বিতাড়িত হয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ক্যাডেট কলেজে এসে বনবাস নিয়েছেন। জয় ভাই অত্যন্ত পুলকিত হলেন। এর চেয়ে মজার গল্প আর কি হতে পারে!
একদিন স্যার ক্লাসে এলেন পড়াতে। পড়াচ্ছেন। জয় ভাই যতবারই স্যারের দিকে তাকান ততবারই তাঁর হাসি আসে। মুচকি-মুচকি হাসলেনও। তাঁর হাসি স্যার দেখে ফেললেন। জানতে চাইলেন কেন হাসছেন।
‘এমনিই, স্যার; কোন কারণ নেই’।
স্যার বিশ্বাস করলেন না। বার-বার তাঁর কাছে জানতে চাইলেন। জয় ভাই স্বীকার না করায় তাঁকে ক্লাস শেষ হলে দেখা করতে বললেন। ক্লাস শেষে জয় ভাই গেলেন স্যারের কক্ষে। স্যার আবারো তাঁর কাছে জানতে চাইলেন। জোর করলেন।
শেষে জয় ভাই বললেনঃ ‘স্যার বলতে পারি, তবে আমায় কথা দিন আমায় আপনি কোন শাস্তি দেবেন না।‘
স্যার কথা দিলেন।
জয় ভাই জানালেন, ‘স্যার, আমরা বার্তা পেয়েছি যে আপনি এক নারীর প্রেমে পড়ে, ছ্যাকা খেয়ে আমাদের কলেজে বনবাসে এসেছেন; আপনাকে দেখে তা মনে পড়লো – তাই হাসছিলাম।‘
স্যার সহ্য করতে না পেরে ভিষণ রেগে তাঁকে দু’দিনের এক্সট্রা-ড্রীল দিয়ে দিলেন।
জয় ভাই তাঁকে তাঁর প্রতিজ্ঞার কথা বার-বার মনে করালেন। স্যার কানে নিলেন না। তারপর দু’দিন জয় ভাই এক্সট্রা-ড্রীলে শাস্তি পেলেন। স্যার তাঁকে দেয়া কথা না রাখায় তিনি কষ্ট পেয়েছিলেন।
তারপর অষ্টম শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত – চার বছর — স্যারের সাথে একবারও কথা বলেন নি, তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেন নি, তাঁকেও কোন প্রশ্ন করেন নি। কোন-না-কোন ভাবে স্যারকে তিনি এড়িয়ে গেছেন। স্যার তাঁর কথা রাখেন নি…
🙂 🙂 🙂 🙂
শেষ-না-হওয়ার এই গল্প চলতেই থাকবে....
সেই শিক্ষক বিশ্ববদ্যালয়ে পড়াকালীন এক তরুণীর প্রেমে পড়ে বিতাড়িত হয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ক্যাডেট কলেজে এসে বনবাস নিয়েছেন -- হোয়াট এ ব্রীফিং, ফ্রম এ বড়ভাই টু এ ছোটভাই!
একটি ঘটনা, একটি গল্প। চমৎকার!
ভাই, সিরিজ করার প্ল্যান করেছেন?
দারুণ হবে!
সিসিবি'র সবচেয়ে আকর্ষনীয় পোস্ট কলেজ জীবনের স্মৃতিচারণ!
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম! 🙂
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:clap:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম