একদিন আম্মা হোসনা আপার বাসা থেকে ঘুরে আসলেন। বাসায় এসে জানালেন হোসনা আপা আসলে অনেক দুঃখ নিয়ে লন্ডন থেকে ফিরে এসেছেন। কিরণ ভাই আমেরিকায় পড়তে গিয়ে একজন আমেরিকান মেয়ে
বিয়ে করে ফেলেছে। হোসনা আপার আশা ছিল লেখাপড়া শেষ করে কিরণ ভাই দেশে ফিরবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলতে নিজের মেধা আর শ্রম দিবে। উনি ভুলেও কখনও ভাবেননি যে আমেরিকা গিয়ে এতো
সহজে কিরণ ভাই দেশকে ভুলে যাবে।
একদিন সামাদ স্যারের বাসায় গেলাম। স্যার আমার জন্য অনেক করেছেন। বিশেষ করে অংক পরীক্ষার আগের দিন বাসায় এসে সাহস দিয়ে গেছেন। স্যারের বাসাটা আমাদের বাসা থেকে খুব একটা দূরে না, হেটেই যাওয়া যায়। একা একাই চলে আসলাম। স্যারের বাসা থেকে বেরুলেই সেই বিশাল দেবদারু গাছ। সেদিন দেখি এই গাছটার গুড়িতে হেলান দিয়ে মানিকদা আরও কয়েকটা ছেলের সাথে গল্প করছে।
(এই উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আর সময় বোঝাতে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা এবং চরিত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাদবাকী ঘটনা আর চরিত্রগুলো কাল্পনিক, তবে অবাস্তব নয়। অনেক ঘটনাই বাস্তব আমজনতার অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া হয়েছে।)
‘ধ্যুৎ!এই প্রজেক্টটা খুবই ঝামেলার!অনেক রিসার্চ করতে হচ্ছে ।এত কাজ আর ভাল লাগেনা!’ স্যান্ডউইচে কামড় বসাতে বসাতে বলল লুবনা।
‘অত ঝামেলায় যাচ্ছেন কেন ? এখানে তো ফাঁকিজুকির অনেক স্কোপ আছে।আপনি জাস্ট…’ এতদূর বলে কথাটা আর শেষ করেনা রোহান।নোমানের উপস্থিতি টের পেয়ে চুপ মেরে যায়।ইঙ্গিতটা বুঝতে পারে লুবনা।সাথে সাথে কথা ঘোরায়।
‘হুম… রোহান ভাই।এই ক্যাফের স্যান্ডউইচটা একেবারে বাসি! এখন থেকে বাসার খাবার আনা ছাড়া গতি নেই।’
তাদের অফিস লাগোয়া এই ক্যাফেটার একটা ফাঁকা টেবিলে বসে পড়ে নোমা্ন।ইচ্ছা করেই সে তার কলিগদের সাথে অন্য টেবিলগুলোতে বসল না।এর কারণ দু’টো।অফিসের সবার সাথে তার মৌখিক সদ্ভাব থাকলেও অন্তরঙ্গতা নেই তেমন।আর কিছুটা গোপণ কোন আলোচনা থাকলে কেউই তা নোমানের সামনে করতে চায়না।অফিসে তাকে ‘স্পাই’ নামে ডাকে অনেকে।এসব নিয়ে সবসময় অস্বস্তিতে ভোগে নোমান।পারতপক্ষে অন্যের ব্যাপারে নাক গলায় না।কেউ সাহায্য চাইতে আসলে সাধ্যমত সাহায্য করে ঠিকই,কিন্তু আগ বাড়িয়ে সাহায্য করতে যায়না।কে জানে,যদি এর মাঝেও ওরা সন্দেহের গন্ধ খোঁজে!কেউ কেউ আবার দরকারের বেলায় ওর সাহায্য নেয়,আবার আড্ডায় বসলে অন্যদের সাথে সমান তালে বদনাম করে যায়।নোমান মাঝে মাঝে অবাক হয়ে ভাবে চারপাশে এত শত্রু নিয়ে সে টিকে আছে কীভাবে !
বহু ঝামেলা করে কখন যে চন্ডীগড়ে পৌঁছলাম, এতদিনে আর মনে নেই। চন্ডীগড় ভারতের দুটি রাজ্যের রাজধানী, হরিয়ানা আর পাঞ্জাব। এ শহরের মূল বৈশিষ্ট্য হল, এর পুরোটাই পরিকল্পনা করে গড়ে তোলা। স্থাপত্যের মানুষদের খুব কাছের একটি নাম হলো লি কর্ব্যুসিয়ের। শুরুটা ফরাসী, কিন্তু পরে পুরো বিশ্বের স্থাপত্যের ধারা বদলে দেয়াতে অবদান রাখায় স্থাপত্যের মানুষজন তাঁকে বিশাল গুরু মানেন। এই বিখ্যাত স্থপতির নকশায় গড়ে উঠেছে চন্ডীগড় শহর।
(এই উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আর সময় বোঝাতে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা এবং চরিত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাদবাকী ঘটনা আর চরিত্রগুলো কাল্পনিক, তবে অবাস্তব নয়। অনেক ঘটনাই বাস্তব আমজনতার অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া হয়েছে।)
আমাদের ছোট ভাই-বোনেরা এখন ভর্তি যুদ্ধ নিয়ে খুব ব্যস্ত ।ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে ।অনেকের চান্স হয়েছে, অনেকের হয় নি ।আরও কিছু পরীক্ষা বাকি আছে ।তাদের মুখ থেকে ভর্তির গল্প শুনে এবং আমার কিছু অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি থেকে ক্যাডেটদের ভর্তি যুদ্ধের ব্যাপারে কিছু কথা বলছি ।একজন ছাত্রের কোন ভাল প্রতিষ্ঠানে চান্স পাওয়া মূলত দুইটি জিনিস এর উপর নির্ভরশীল ।প্রথমত ছাত্রের অধ্যয়ন এবং দ্বিতীয়ত ছাত্রকে কিভাবে পাঠদান করা হয়েছিল ।চলুন ঘুরে আসি আমাদের প্রিয় ক্যাডেট কলেজ থেকে ।প্রথমে আসি ক্যাডেটদের পাঠদানকারী শিক্ষক প্রসঙ্গে ।দুটি প্রেক্ষাপট এর ভিত্তিতে যদি শিক্ষকের মান বিবেচনা করা যায় ( আমাদের বড় ভাইদের আমলের ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক আর বর্তমান সময়ের ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক এবং বর্তমান সময় এর ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক আর বাইরের নামকরা কলেজ সমূহের শিক্ষক) তাইলে দেখা যাবে যে দুটি ক্ষেত্রেই ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক এর মান তুলনামূলক ভাবে ভাল নয় ।অনেক ভাল শিক্ষক ক্যাডেট কলেজে সুযোগ সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যায় ।এবার আসি ক্যাডেটদের অধ্যয়নের ব্যাপারে ।কলেজ এর বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা,ডেইলি রুটিন,
(এই উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আর সময় বোঝাতে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা এবং চরিত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাদবাকী ঘটনা আর চরিত্রগুলো কাল্পনিক, তবে অবাস্তব নয়। অনেক ঘটনাই বাস্তব আমজনতার অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া হয়েছে।)
প্রথমে ভেবেছিলাম প্রিয় সিসিবির গেট টুগেদার নিয়ে লিখব। পরে মনে হল ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ নিয়ে লিখি। সময়টা বড়ই কঠিন। অন্ধের যেমন হাতি দর্শন আমার তেমনি অর্থনীতি বয়ান। দেশে থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দুই ক্রেডিটের অর্থনীতির একটা কোর্স করেছিলাম। ব্যাস, এই বিষয়টাতে আমার প্রথাগত পুঁথি গেলা এই পর্যন্তই। তাই আমার অর্থনীতি বয়ান হবে অনেকটাই এরকম –
’হাতি দেখতে কেমন?’
’খসখসে।’
কিছুদিন আগে তাহমিমা আনামের দ্যা গুড মুসলিম বইটি পড়লাম। প্রায় তিনশ পৃষ্ঠার বই। বইটি পড়ার সময় প্রথমেই যে বিষয়টি মুগ্ধ করে তা হল ইংরেজি ভাষার সাথে লেখকের একাত্মবোধ। লেখার ক্ষেত্রটিতে লেখকের স্বচ্ছন্দতা পরবর্তীতে পাঠকের পড়ার ক্ষেত্রটিকেও সহজ করে দেয়। তাহমিমা আনামের প্রথম বই ‘এ গোল্ডেন এজ’ আমার পড়া হয়নি। এটি দ্য গুড মুসলিমের আগের পর্ব। তবে প্রথম বইটি না পড়লেও পরেরটি বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি।
তখন সবে এইটে উঠেছি। h.s.c এর আপারা সব পরীক্ষা শেষে farewell নিয়ে চলে যাচ্ছে। যাবার সময় স্যার-ম্যাডামদের সালাম, জুনিয়রদের সাথে গণ হ্যান্ডশেক, জুনিয়র-ক্লাসমেটদের সাথে জড়াজড়ি,কান্নাকাটি, সে কি অবস্থা!! আমি অবাক তাকিয়ে দেখি আর ভাবি,’আদিখ্যেতা! কাঁদতে হবে কেন এত! এক্স-ক্যাডেট হয়ে চলে যাচ্ছে,কী মজা। আর আমার সামনে আরো পাঁচ বছর কারাবাস! বন্ধুদের বলি,”হুহ্,আমি একটুও কাঁদবোনা দেখিস। বের হয়ে মনেই রাখবোনা কলেজকে। ক্লাসমেট ছাড়া আর কারো সাথেই যোগাযোগ রাখবোনা।
(এই উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আর সময় বোঝাতে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা এবং চরিত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাদবাকী ঘটনা আর চরিত্রগুলো কাল্পনিক, তবে অবাস্তব নয়। অনেক ঘটনাই বাস্তব আমজনতার অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া হয়েছে।)
কুতুব দেখেই আমার কেন যেন ধারণা হয়ে গেছিল সম্রাটেরা বঙ্গ দেশকে খুব একটা পাত্তা দিতে চাইতেন না, তাঁদের নজর ছিল হিমালয়ের কাছাকাছি দিল্লী, রাজস্থান-এসব অঞ্চলে। ভারত ট্যুরের বাকি দিনগুলোতে এ ধারণা আরও পাকাপোক্ত হয়েছিল। সত্য বলতে কি, ভারতের পুরাকীর্তি দেখলে বাংলাদেশের লালবাগের কেল্লা, কি বগুড়ার মহাস্থানগড় সবই কেমন যেন মলিন মলিন লাগে। স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে ভারতীয় উপমহাদেশের মূলধারার স্থাপত্য আসলে পুরোটুকুই প্রায় ভারতের ভাগে পরেছে।