১
প্রথমে ভেবেছিলাম প্রিয় সিসিবির গেট টুগেদার নিয়ে লিখব। পরে মনে হল ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ নিয়ে লিখি। সময়টা বড়ই কঠিন। অন্ধের যেমন হাতি দর্শন আমার তেমনি অর্থনীতি বয়ান। দেশে থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দুই ক্রেডিটের অর্থনীতির একটা কোর্স করেছিলাম। ব্যাস, এই বিষয়টাতে আমার প্রথাগত পুঁথি গেলা এই পর্যন্তই। তাই আমার অর্থনীতি বয়ান হবে অনেকটাই এরকম –
’হাতি দেখতে কেমন?’
’খসখসে।’
২
প্রথমেই আমেরিকার অর্থনীতির কথা বলি। আমরা ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’এর কথা ইন্টারনেটে দেখছি। তরুণ থেকে অশীতিপর বৃদ্ধ নিউইয়র্কে ওয়াল স্ট্রিটের রাস্তা আটকে আছে। এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকার সব খানে। কিন্তু কেন? মার্ক যুকারবার্গ যখন ফেসবুক সবার জন্য মুক্ত করে দেয় তখন বোধহয় সে ভুলেও ভাবতে পারেনি যে সে কি করতে যাচ্ছে। আজকে আমরা সংগঠিত। আমরা কারা? আমরা ৯৯%। সেই আমরা এখন ঐ ১% এর হাতে দড়ি বাঁধা পুতুল হয়ে থাকতে চাই না। কোন দরকারই নেই এক একজনের বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা থাকার। তারপরও ঐ ১% এর অনেকের হাতে তা আছে। কারণ ওরাই হর্তাকর্তা। সবকিছুর। কর্পোরেট হয়ে এখন ওরা দেশকে খাচ্ছে। বড় দেশ খাচ্ছে ছোট দেশকে। সরলসোজা চোখে তাই তো দেখতে পাচ্ছি।
৯৯% প্ল্যাকার্ড দেখে আমার তিন বছর আগের একটা স্মৃতি মনে পড়লো। অফিসে যাচ্ছিলাম। পথের এক পাশে সিসকো সিস্টেমের বিশাল অফিস। এক জায়গায় দেখি কয়েকজন লোক জটলা করে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা ‘সিসকোর সিইও বছরে ১৩ মিলিয়ন বেতন পায়। আর চাকরি ছাটাই করে স্বল্প-বেতনের জেনিটরদের।’ আবার ১৯৯৯ সালে ক্যারলি ফিওরিনা প্রথম মহিলা হিসেবে ফরচুন ১০০ গ্রুপের একটি কোম্পানি হিউলেড-প্যাকার্ড বা সংক্ষেপে এইচ-পি এর সিইও হন। মিস ফিওরিনা ৩০,০০০ লোককে ছাটাই করেন। আর ওদিকে নিজের বেতন তিনগুণ বাড়িয়ে নেন। ব্যক্তিগতভাবে মিলিয়ন ডলারের প্রমোদ-তরী কেনেন, ৫ টা কর্পোরেট জেট কেনেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালে এইচপির বোর্ড মেম্বাররা তাকে ২১ মিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ দিয়ে কোম্পানি থেকে অপসারণ করেন। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্যারলি ফিওরিনারা অপসারিত হন না। তাদের প্রমোদ-তরী, ব্যক্তিগত বিমান, পৃথিবী জুড়ে ভ্যাকেশন হোমের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ব্যাংক ব্যালেন্স আকাশচুম্বি হতে থাকে। আর ওদিকে আমজনতার ছাটাই হওয়ার সংখ্যাটা পৌঁছে ১৫ মিলিয়নে।
বর্তমানে সবমিলিয়ে ২৫ মিলিয়ন আমেরিকান এদেশে বেকারত্বের ঘানি টানছে। এদেশে দরিদ্রের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। ২০০৯ এর হিসেব অনুযায়ী ৪৩।৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা দারিদ্রের মধ্যে বাস করছে। আমেরিকার অর্থনীতি চলে তিনটা চক্রে – জিনিষ বানাও, বেচ, কেন। অর্থনীতি ভাল নাই তো কম বেচাকেনা, বাজারে কম চাকরি। কম লোকের চাকুরী থাকলে সরকার ট্যাক্স পায় কম। তখন সার্ভিস সেক্টরেরও (শিক্ষক, ফায়ারফাইটার, পুলিশ) টাকার টানাটানি পড়ে। সেখান থেকেও লোকের চাকরি যায়। সভ্যতা আজ যে স্তরে আছে সেখানে মানুষের চাকরি না থাকলে চলে না। একজন তরুণ পাশ করে দেখবে তার সামনে চাকরি আছে কিনা। মোটামুটি জীবনধারণের জন্য একটা চাকরি পেলে তার আর কিছু চাই না। আমাদের ছা-পোষা, আমজনতা তকমাগুলো বড়ই পছন্দ। আমরা খুব সহজেই স্রোতের সাথে মিশে যেতে পারি। শর্ত শুধু একটাই – একটা চাকরি দিতে হবে। স্বাধীন ব্যবসা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। এই দায়িত্ব বর্তায় কিন্তু ঐ ১% এর হাতে; যারা আমজনতা নয়, ছা-পোষা নয়। এই দায়িত্ব ঠিকঠাক মতো পালন করতে না পারলে তাদের শত শত মিলিয়ন বা বিলিয়ন ডলারের উষ্ণতা উপভোগ করারও অধিকার নেই। আমজনতাকে পদদলিত করা যেতে পারে, কিন্তু নিশ্চিহ্ন করা অতো সহজ নয়। তাই পৃথিবীর আনাচে কানাচে আজ সরব হচ্ছে ৯৯% এর কণ্ঠস্বর। এর শেষ কোথায়, পরিণতি কি তা আমরা জানি। তবে এটা জানি এক একটা বিপ্লব মানব সভ্যতাকে এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে (যদি না সে বিপ্লব হ্যাইজ্যাক হয়ে যায়)।
বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। এ বছরই আমরা দেখেছি ৯৯% কিভাবে ১% এর আড়িয়াল খাঁ বিলের উপর ৫০,০০০ কোটি টাকার এয়ারপোর্ট বানানোর পরিকল্পনা রুখে দেয়। এই পর্যন্ত একটা ক্ষেত্রে তো আপাতত আমরা সফল হয়েছি। তেমনি আরও অনেক ক্ষেত্রেও সফলতা আসবে। এবার দেখা যাক আমাদের আমেরিকান ভাইবোনেরা তাদের ‘ওকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলনে সফল হন কিনা?
৩
অর্থনীতি আর রাজনীতি একেবারেই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এই টালমাটাল অর্থনীতিতে সুপার পাওয়ার আমেরিকার রাজনীতিটা কেমন চলছে তা এবার দেখা যাক। এ দেশের প্রেসিডেন্টকে আমজনতাকে চাকরি দেবে, নিরাপত্তা দেবে এই প্রতিশ্রুতি শুনিয়ে ক্ষমতায় আসতে হয়। গণতন্ত্র কিভাবে কাজ করে? অন্তত পক্ষে সেখানে দুটো দল থাকবে। আমজনতাকে আকৃষ্ট করার জন্য সরকার পক্ষের একটা পরিকল্পনা থাকে। যেমন ওবামা সরকার বেশি লোককে চাকরি দিতে চাচ্ছে। কিন্তু কিভাবে? ওবামা সরকারের পরিকল্পনা হলও তারা চাকরির বাজার তৈরি করার জন্য ৪৭৭ বিলিয়ন ডলার ব্যবসা, স্থানীয় সরকার আর ব্যক্তিগত খাতে ঢালবে। তার মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার রাস্তাঘাট, ব্রিজ তৈরি করতে ব্যবহার করবে। ৩৫ বিলিয়ন ডলার শিক্ষাখাতে ঢালবে যাতে শিক্ষক আর স্কুল চালনা করার জন্য অনেক চাকরি তৈরি হয়। এখন এই ৪৭৭ বিলিয়ন ডলার যোগার করবে কিভাবে? এজন্য সেই ১% অর্থাৎ বড়লোকদের ইনকামের উপর বেশি ট্যাক্স বসাতে চাচ্ছে। ১%কে নাড়াচাড়া করা এতো সহজ না। নির্বাচন মানেই টাকা। সেই টাকা আসে লবিস্টদের কাছ থেকে। এই লবিস্টরা হচ্ছে সেই মহামান্য ১%।
এখন বিরোধী দল মানে রিপাবলিকানরা কি চায় দেখি। তারা অর্থনীতিতে এই ডলার ঢালাটাকে সঠিক সমাধান বলে মনে করছে না। তাদের কথা এই অবস্থা তো আগামী প্রজন্মের ঘাড়ে আরও লোনের বোঝা তৈরি করবে। কথাটা একদিক দিয়ে ঠিক। এক সময় দেশে কত সোনা রিজার্ভ আছে তার ভিত্তিতে ডলার ছাপানো হত। সেই ব্যারিকেড উঠিয়ে দিয়ে এখন ডলার ছাপানো হচ্ছে। আমেরিকা সারা পৃথিবীতে এত যে যুদ্ধ চালাচ্ছে তার খরচটা মূলত এভাবে ডলার ছাপিয়েই যোগার করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে আমেরিকার জাতীয় লোনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে। রিপাবলিকানদের সমাধানটা হচ্ছে সরকারী খরচ কমিয়ে আনা। তাদের বক্তব্য কংগ্রেস ইতিমধ্যেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আগামী দশ বছরে ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকা সরকারের খরচ কমিয়ে আনতে। বড়লোকদের উপর ট্যাক্স বসালে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে না।
এক কথায় কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ সেটা বলা যায় না। এইসব অর্থনীতির খেলা আমার কাছে খুবই ঘোলাটে লাগে। এই যেমন ধরি একজন বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ বা সদ্য প্রয়াত স্টিভ জব সেই মহামান্য ১%এর অন্তর্গত। কিন্তু আবার তারাই হাজার হাজার চাকরি তৈরি করছে। তাদের অস্তিত্ব নেই মানে সেইসব চাকরিগুলোও নেই। সামাজ্যবাদীর দোসর হিসেবে তাদেরকে ঠিক কতটুকু ঘৃণা করা উচিত? এবার বাংলাদেশে একজন তরুণ উদ্যোক্তার সাথে কথা হলও। বয়স হয়তো ত্রিশ পেরিয়েছে। তার পরিবার দেশের প্রথম সারির ব্যবসায়ীদের একজন। সেই ছেলে জানাল কানাডায় পড়াশোনা করার সময় তাদের বন্ধুদের (যারা বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ছেলে) অনেকেরই পোশ, মার্সিডিজ ধরনের ছয়টা-সাতটা গাড়ি ছিল। তারা অধিকাংশই দেশে ফিরে আসেনি। দুইটা তিনটা ম্যাকডোন্যালস (শুধু ব্র্যান্ড-নেম কিনতেই ১ মিলিয়ন ডলার লাগে) ধরনের কিছু কিনে পশ্চিমেই থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলে মিথ্যা কথা বলতে হয়, ঘুষ দিতে হয়। তাই তারা এই দেশে আসবে না। কিন্তু সেই ছেলে মনে করে টাকা বানাতে চাইলে বাংলাদেশ হচ্ছে স্বর্গরাজ্য। উচ্চ-আয়ের তুলনায় বাংলাদেশে ট্যাক্স খুব কম (আসল কথা বাংলাদেশে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া খুব সহজ)। তাই ব্যবসায়ীদের পছন্দ বাংলাদেশ। ছেলেটি জানাল জনসংখ্যার কারণে বাংলাদেশে বিক্রিবাটা বেশি। অথচ সে তুলনায় দেশের নিজস্ব প্রোডাক্ট খুব কম। সদ্য বাবা হওয়া সেই ছেলেটি বলল, ‘দেখেন ডাইপারটাও আমার বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। অথচ খুব সহজেই আমি এটা এই দেশে বানাতে পারি এমনকি বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি। উৎপাদন খরচের দিক থেকে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।’ চিন্তা করে দেখলাম অনেক টাকার মালিক হওয়াটাই সেই ছেলেটার প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু সে সেটা করছে খাটাখাটি করে। এই পর্যন্ত দুটো নতুন কারখানা সে নিজ উদ্যোগে চালু করেছে। আগে বাইরে থেকে আমদানি করা হতো এমন সব প্রোডাক্ট এখন সেসব কারখানায় উৎপাদিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে অনেক নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। আমার কেন জানি এইসব উদ্যোক্তাদের পুঁজিপতিদের সমাজের জন্য খুব প্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।
তবে আমার বিবমিষা জাগে পারসেন্টেজ খাওয়া দালালদের উপরে। লবিস্টদের উপরে। যারা ব্যাংকিং সেক্টর আর স্টক মার্কেটে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা নয়-ছয় করে নিজেদেরকে ১%এর মধ্যে অন্তর্গত করেছে। অর্থাৎ অনুৎপাদনশীল খাত থেকে প্রভাবের জোরে বায়বীয় টাকার মালিক হয়ে যাওয়া। সত্যিকার অর্থে এদের কোন নীতি-বোধও নেই। আমেরিকার ব্যাংকগুলোকে বাঁচানোর জন্য বুশ থেক শুরু করে ওবামা সরকার কম ভূমিকা নেয়নি। কিন্তু সেই ব্যাংকগুলো স্পন্সরের নামে কত টাকা অপব্যয় করে আর সেইসব ব্যাংকের হর্তাকর্তারা কত টাকা বেতন-ভাতা নেন তা দেখলে ৯৯% এমনিতেই বিপ্লবী হয়ে উঠবে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নেই। দেশে এবার একজন ব্যাংকারের কথা জানলাম যে কিনা শুধু দুই কোটি টাকা খরচ করেছে বাসার ভেতরের সাজসজ্জার জন্য। প্রকৌশলীরা জানি ঘুষখোর হয়, ডাক্তারটা হয় কসাই, কিন্তু একজন ব্যাংকারের হাতে কিভাবে এতো টাকা আসে? আমরা জানি পুরো ব্যাংটাই একটা টাকার ডিপো। এখন ১% হবার আশীর্বাদে ইচ্ছে হলেই একজন হর্তাকর্তা সেই ডিপো থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। জানি না কিভাবে এর সমাধান সম্ভব। তবে ৯৯%এর আর চুপ করে সব মেনে নেওয়ার কারণ দেখি না।
আচ্ছা আমরা কি জানি চাকরি তৈরিতে বাংলাদেশের সরকারী দল কি করছে? আর তার বিপরীতে বিরোধী দলই বা কি পরিকল্পনা আনছে? ব্লগে দেশের চাকরির বাজার নিয়ে লেখা খুবই কম আসে।
বাংলাদেশের মধ্যে অনেকেই রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করতে দেখলে আঁতকে উঠে। এই বুঝি গণতন্ত্র গেল গেল। আরে বাবা, বাংলাদেশে যেখানে গণতন্ত্রই নেই, সেটা আবার যাওয়ার ভয় করি কি করে? রাজপরিবার ছাড়া সৌদি আরবে যেমন কেউ সরকার প্রধান হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে না। ফলশ্রুতিতে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দেশটি ইসরাইলের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন দেশ হতে পারেনি। আরামে প্রতিপালিত হওয়া রাজসন্তানরা নিজেদের হারেম আর ক্যাসিনো নিয়েই ব্যস্ত থাকছে। মার খাওয়া মুসলিম বিশ্বের পক্ষে কথা বলবার জন্য তাদের কোন কণ্ঠস্বর শোনা যায় না। সাহায্য করা তো দূরের কথা। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি তেমন কোন প্রাকৃতিক সম্পদ। তার উপর শাসনব্যবস্থার নামে এই দেশে যেটা আছে সেটা হলও সামন্ততন্ত্র – কিম্বা ব্রিটিশদের আবিষ্কার চিরস্থায়ী জমিদার প্রথা। আমরা যদি এই সত্যটাই না বুঝি বা স্বীকার না করি তাহলে আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বো কিভাবে। এই সামন্তবাদী সরকারী ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা তো বলতে গেলে এখন নাগরিক দায়িত্বের মধ্যেই পরে। চারপাশ থেকে এমন তীব্র সমালোচনা হবে যে সরকার এবং বিরোধী দল প্রধানগণ নড়েচড়ে বসে ভাববেন – না,বাবা এবার অর্থনীতিতে কিছু চাকরি-বাকরি তৈরি করি। নইলে আমার বংশধরদের মসনদে বসা তো দূরের কথা আমাদের পরিণতিটাও শুভ নাও হতে পারে। আমার ব্যক্তিগত অভিমত বাংলাদেশের ৯৯%এর আন্দোলন হওয়া উচিত বিভিন্ন দফা ভিত্তিক। দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার মতো যথেষ্ট লোকবল এদেশে আছে। এর আগে এক দফা ভিত্তিক আন্দোলন করে তার সুফল আমরা ঘরে তুলতে পারিনি। একজন দক্ষ সেনাপতি খুব ভাল করেই জানেন যুদ্ধে জিততে হলে আক্রমণ হতে হয় চতূর্মুখী।
৪
আমেরিকার ১৯৩০ সালের মন্দা গ্রেট ডিপ্রেশন নামে পরিচিত। এই মন্দার পেছনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু ভূমিকা ছিল। দেশের রপ্তানি কমে গিয়েছিল। লোকজন কেনাকাটা বন্ধ করে দেওয়াতে উৎপাদন গেল কমে। ইনফ্রাস্ট্রাকচারেও কাজের গতি হয়ে পড়লো ঢিলেঢালা। অনেকাংশ ক্ষেত্রে সে কাজও বন্ধ। স্টক মার্কেট শতকরা ৮৯ ভাগ নেমে গেল। উৎপাদন কম বলে সে সময় আমেরিকাতে লোকের হাতে কাজ নেই, আবার থাকলেও পয়সা খুব কম। তখনকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট হারবার্ট হুভার মনে করতেন সরকার অর্থনীতি পর্যবেক্ষণ করবে কিন্তু সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে না। ১৯৩২ সালে সেসময়কার একটা চিত্র দেই। বেকারত্বের হার শতকরা ২০ ভাগ। হাজার হাজার ব্যাংক আর বিজনেসে লাল বাতি জ্বলছে। মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ ঘরছাড়া। বাড়ির কর্মক্ষম মানুষটি কাজ না পেয়ে শূন্যহাতে ঘরে ফিরে এসে পরিবারসহ পথে নেমে যাচ্ছে। তারা অলীক কাজের সন্ধানে এক শহর থেকে আরেক শহরে ছুটে চলছে। শহরের প্রান্তে বস্তি গড়ে উঠছে। ডাস্টবিনগুলোর তখন আভিজাত্য-দশা। মানুষ ভিড় করে সেখানে খাবার খুঁজতে। দৃশ্যটা চেনা চেনা লাগছে?
১৯৩২ সালে, আমেরিকান প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট একটা ডাইমেনশন আনলেন। উনি পিরামিডের সবচেয়ে নীচে দৃষ্টির আড়ালে থাকা মানুষগুলোকে গুরুত্ব দিলেন। অন্যদিকে হুভার বলেই যেতে থাকলেন যে সরকারের কাজ নয় এইসব সামাজিক সমস্যা সমাধান করা। ফলাফল নির্বাচনে রুজভেল্টের ল্যান্ড-স্লাইড বিজয়।
রুজভেল্ট জনগণকে কথা দিয়েছিলেন “নিউ ডিল ফর আমেরিকান পিপল”। এবং শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলেন। রুজভেল্ট সরকারের শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ বা প্রায় ১৫ মিলিয়ন বেকারত্ব দিয়ে যাত্রা শুরু। তিনি ক্ষমতা নেওয়ার ১০০ দিনের মাথায় ব্যাংকিং সেক্টর আর স্টক মার্কেটে সংস্কার আনতে পেরেছিলেন। জনগণের জন্য চাকরি তৈরি করেছিলেন। ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরির উপর গুরুত্ব দিয়ে দেশের অর্থনীতি উজ্জ্বল করে ফেলেছিলেন। আমরা বাঙ্গালিরা খুব মন খারাপ করি যে আমাদের কেউ ভাল করলে সবাই তাকে পেছনে টেনে ধরে। আসলে তাকেই একজন বড় নেতা বলা হয় যে সব অবস্থার মধ্যেও এগিয়ে যেতে পারে। ১৯৩৭ সালে রুজভেল্টকেও থমকে দাড়াতে হয়েছিল। সরকারের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের উপর সুপ্রিম কোর্ট রুলিং দিয়েছিল। আবার এক বছরের জন্য ডিপ্রেশন। আবার তা কেটে উঠে। এরপর তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আমেরিকায় উৎপাদনের চাকা আবার ঘুরে যায়। উৎপাদন মানেই চাকরি। চাকরি মানেই মানুষের হাতে টাকা। আর টাকা মানেই বেচা-কিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে কোন আঁচ লাগাতে পারেনি। তাই সেসময় আমেরিকা নির্বিঘ্নে উৎপাদন করে সারাবিশ্বে তার প্রোডাক্ট বেচতে পেরেছে। এরপরই আমেরিকা হয়ে যায় পৃথিবীর সুপার পাওয়ার। দুই বারের বেশি নির্বাচিত হওয়া রুজভেল্টই আমেরিকার একমাত্র প্রেসিডেন্ট।
এই দেশের ক্ষমতায় আসতে চাইলে জনগণকে নিশ্চয়তা চাকরির বাজার তৈরি করার নিশ্চয়তা দিতে হয়, বোঝাতে হয় সেটা কিভাবে সম্ভব হবে। এই কারণে ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে জেতা প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশ হেরে যান নতুন মুখ প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের কাছে। প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের আমল তো আমেরিকার স্বর্ণযুগ। সেসময়ের শেষের দিকে আমার এই আমেরিকায় আসা। সিলিকন ভ্যালিতে থাকার সুবাদে সিনেমার দৃশ্যের মতো চোখের সামনে আমেরিকার উত্থান-পতনের ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা আর এখানে বয়ান করছি না। তবে যে জিনিষটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট তা হলও একটি সুযোগ্য নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশ আর প্রযুক্তিবিদ স্টিভ জবের দিকে তাকিয়ে দুটি বিপরীতমুখী উদাহরণ টানছি। ক্লিনটনের স্বর্ণযুগের ফলে প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন একটি সমৃদ্ধ ট্রেজারি। বিদায় কালে সেই ট্রেজারিটা লোনগ্রস্ত,জরাগ্রস্ত অবস্থায় রেখে যান। বিদায়বেলায় জাতির কাঁধে চড়িয়ে দিয়ে যান কতগুলো যুদ্ধ। আবার অন্যদিকে স্টিভ জব প্রায় ম্রিয়মাণ এ্যপল কোম্পানির সিইওর দায়িত্ব নিয়ে কোম্পানিটিকে অতি-লাভজনক করে তোলেন। এক সময় এর আগে নিজের হাতে গড়ে তোলা এই এ্যপল থেকেই বাধ্য হয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল স্টিভ জবকে। একজন সফল নেতা জানেন কিভাবে বীরের বেশে ফিরতে হয়।
শুধু বাংলাদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সামনে এগিয়ে চলা মানুষদের পেছন থেকে টেনে ধরা একটা সহজাত প্রবৃত্তি। তারাই সার্থক নেতা যারা জানেন কিভাবে এই পেছনের টান উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। বরং পেছনের টান না থাকাটাই ক্ষতিকর। যত বড় বাঁধা, নেতৃত্বের পরীক্ষায় তত বেশি নম্বর। ক্রিয়ার সমান প্রতিক্রিয়া – নিউটনের এই তৃতীয় সূত্রটি শুধু গতিবিদ্যার ক্ষেত্রেই খাটে না; মানুষ,সমাজ সবক্ষেত্রেই সমানভাবে কার্যকরী।
৫
আমেরিকাতে একেবারে গরীব হলে অন্তত খাওয়া-পড়ার অসুবিধা নেই। তখন তাদের দেখাশোনাটা সরকার থেকে করা হয়,ধনীদের অনেক রকম প্রকল্প তো আছেই, পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজ করে যাচ্ছে। আমার বাচ্চাদের পিয়ানো শিক্ষক একজন ৭৫ বছর বয়স্ক আমেরিকান মহিলা। নাম ক্যাথি ফ্লেচার। মহিলাকে দেখে আমার সবসময়ই মনে হয় এদেশে বুড়ো বয়সটাতেই সবচেয়ে বেশি আনন্দ যদি সবদিক থেকে ফিট থাকা যায়। হাতে সময় ছিল বলে সামাজিক কাজে একবার ক্যাথিকে কিছুটা সাহায্য করেছিলাম। সে আর কয়েকজন মিলে গির্জায় ব্রেকফাস্ট খাওয়ানোর একটা প্রোগ্রাম দেখাশোনা করে। ব্যাপারটা এরকম যার ইচ্ছা সে এসে খেয়ে যাবে। একজন অতিথির মতো। সেই ব্রেকফাস্ট প্রোগ্রামে গিয়ে দেখি এলাহি ব্যাপার। দুধ, জুস, কফি, চা – সব আছে। হরেক রকম সেরিয়াল, এগ স্ক্র্যাম্বল, পরিজ, ব্রেড টোস্ট, পাই, বাটার, কত কি! যারা আসছে তারা অধিকাংশই শ্রমিক শ্রেণিয়, আর আসছে হোম-লেস। এতো রাজকীয় নাস্তা খাওয়ার পর তো সারাদিন আর না খেলেও চলে। আমার পরিচিত একজন বাংলাদেশী আমেরিকান সরকারের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগে কাজ করে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ওয়েলফেয়ারের টাকা কিভাবে সুচারুভাবে বন্দোবস্ত করা যায় তার জন্য প্রোগ্রাম লিখেন। মুসুল্লি মানুষ। তিনি বললেন,’ইসলাম যদি আর কোন দেশে থেকে থাকে তো এই দেশে আছে। গরীবদের দায়িত্ব পুরো রাষ্ট্র নিয়ে নেয়। নিজেকে কাজ করতে অসমর্থ আর নিঃস্ব প্রমাণ করতে পারলে সরকার তাকে ভাতা দেবে।’
এর কিছু প্রত্যক্ষ নমুনাও দেখলাম। বাড়ির দাম খুব কমে যাওয়াতে এই ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে আর পিটসবার্গে আমরা কিছু এপার্টমেন্ট আর বাড়ি কিনেছিলাম। সেখানে মূলত থাকে স্বল্প আয়ের আমেরিকানরা। সেইসব ভাড়াটের দেখে অনুধাবন করি পিরামিডের নীচে থাকা নাগরিকরা আসলে কেমন আছে। না, তারা খুব একটা ভাল নেই। খাবার-দাবারের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ম্যাকডোনালসে এখনও এক ডলারের বিনিময়ে বার্গার কিনতে পাওয়া যায়। তবে আরেকটু ভাল খেতে চাইলে আগের থেকে প্রায় দ্বিগুণ পয়সা গুনতে হয়। আমি তো পছন্দের স্যামন আর রূপচান্দা মাছ কেনা প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। প্রতি পাউন্ডে আগে এদের দাম ছিল ৪/৫ ডলার। এখন ৮/৯ ডলার। আমাদের এক ভাড়াটিয়া , পেশায় বাসচালক, সেদিন বললেন গত ত্রিশ বছরে বেতন যে হারে বেড়েছে তার অনেকগুণ-হারে বেড়েছে জীবনযাত্রার খরচ। আবার এক ভাড়াটিয়া মহিলাকে দেখলাম সরকারের ভাতা নিয়ে দিব্যি সাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন করছে। কারণ নিঃস্ব সিঙ্গেল মা হিসেবে বাচ্চাদের কারণে সে ভাল ভাতা পাচ্ছে। আবার সাথে একজন বয়ফ্রেন্ড যোগার করে নিয়েছে। তবে ওয়েলফেয়ার ভাতা নিতে চাইলে প্রথমেই নিজেকে কর্মক্ষমহীন এতজন নিঃস্ব হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে। আত্মসম্মান-জনিত কারণে অনেকেই তা চাইবে না।
গতবছরের শেষের দিকে লস এঞ্জেলসে গিয়েছিলাম। সেখানে এক আত্মীয়র সাথে দেখা করতে একটা সরকারী বৃদ্ধাশ্রমে গেলাম। বেশ কবছর আগে ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় স্ত্রীসহ তিনি এসেছিলেন ছেলের বাড়িতে। পরে একটা বৃদ্ধাশ্রমে চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখলাম একটা এপার্টমেন্টে দুটো পরিবার থাকছে। সরকার থেকে মাস শেষে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতাও পাচ্ছেন। সেখানকার আশেপাশের সবাই বৃদ্ধ। একজন আরেকজনের সুখে দুঃখে এগিয়ে আসেন। উনাদের কোন অভিযোগ নেই।
এই সুযোগ নিয়ে বিশাল সংখ্যক ভারতীয় তাদের বাবা-মাকে সিটিজেন বানিয়ে আমেরিকান সরকার থেকে বৃদ্ধদের জন্য সোশাল ওয়েলফেয়ার ভাতা নিচ্ছে। একই কাজ করছে মেক্সিকান সহ আর অন্যান্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা। এতে ক্ষেপে যাচ্ছে মূল ভূখণ্ডের সাদা আমেরিকানরা। এমনিতেই আউটসোর্সিং এর জন্য তারা মহা বিরক্ত। তার উপর এই দেশে অভিবাসীরা এসে ভাল বেতনের চাকরিগুলো বাগিয়ে নিচ্ছে। তার উপর ওয়াল স্ট্রিটের আচরণের কারণে তারা পারছে না আত্মসম্মান নিয়ে অবসরে যেতে। কংগ্রেসে রিপাবলিকান-ডেমোক্রেটরা এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চালাচ্ছে। সামনের বছরের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন সে বিতর্কের আগুনে আরও ঘি ঢেলে দিচ্ছে। ‘অকুপাই ওয়ালস্ট্রিল’কে প্রেসিডেন্ট ওবামা স্বাগত জানিয়েছেন। ডেমোক্রেটরা বড়লোকদের ট্যাক্স বাড়ানোর পক্ষে। এতে আবার রিপাবলিকানরা ঘোর বিরোধী। তারা এভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাকে স্বল্পমেয়াদী সমাধান বলছে। তারা চায় দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।
আর ৯৯% চায় চাকরির নিশ্চয়তা। আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার মতো একটি জীবন।
৬
কথিত আছে রোম যখন পুড়ছিলেন সম্রাট নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল। দুই হাজার বছর পরও নিরোর সেই খেয়ালীপনাকে মাপ করা হয়নি। এখনও মানুষ সেই নিরোকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে।
হায়রে আমার পোড়া দেশ! বাংলাদেশ এখনও সেই নিরোর প্রেতাত্মা থেকে বের হতে পারল না। আজও সে বাঁশি বেজে চলে। তবে নগর পোড়ে না; শুধু …রা মন্ত্রী হয়।
আমরা এখন দিনরাত প্রার্থনারত – স্পার্টাকাসের।
Source:
1. http://topics.nytimes.com/top/reference/timestopics/subjects/g/great_depression_1930s/index.html
2. http://www.weeklyreader.com/
১ম নাকি 😛
আপু, ফরমেটিং এ মনে হয় একটু সমস্যা আছে, কিছু মনে হয় অতিরিক্ত প্যারা তৈরী হয়ে গিয়েছে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
ঠিক করে দিলাম।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
স্পার্টাকাসের খুবই অভাব আপা। আর একজন স্পার্টাকাসের কাজ এইটা না। অনেককে লাগবে..
(চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী লেখা, ভাল লাগলো।)
মানুষ জাগাতে একজনই দরকার। সবাই কদম বাড়িয়েই রয়েছে। কিন্তু সে কদম কোনদিকে ফেলবে তার জন্য দরকার সেই স্পার্টাকাসকে।
অনেক হলে তে সমস্যা নাই - গাজন নষ্ট না হলেই হলো।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
খুব সহজ ভাষায় অনেক কিছু ব্যাখ্যা করেছেন আপু, :hatsoff:
আমি অবশ্য আমাদের দেশে এই ৯৯% এর আন্দোলন নিয়ে খুব বেশি আশাবাদি না। কারন আমরা সংঘবদ্ধ হতে পারি না, সব কিছুতেই আমরা সাদা কালো, লাল নীল রঙ এ গ্রুপড হয়ে যাই। বিশাল একটা ধাক্কা না আসা পর্যন্ত এক রঙ হবার কোন সম্ভাবনাও আমি দেখি না। কারন যেকোন কিছু অর্জন করার জন্য (সোজা কথায় টাকা কামানোর জন্য) আমাদের কোন না রঙ থাকা বাধ্যতামূলক।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
আমাদের সমস্যা আমাদের মতো করে সমাধান করতে হবে। কাউকে নকল করে নয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন থেকে শুরু করে ফজলে হাসান আবে্দরা কারো সমাধান বের করেছিলেন/করছেন এই দেশের উপযোগী করে। মিলতে যেহেতু পারি না 'আমরা ৯৯%' বদলে আমাদের না হয় 'আমরা রংধনু' ধরনের কোন কিছু হোক।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখাটা মোটেও হাতি দেখতে খসখসে এমন হয়নি। আসলে খুব সাবলীলভাবে আমেরিকার অর্থনীতি ইতিহাসের যেন গল্প বললেন।
কিছু পয়েন্ট নিয়ে কথা ছিল। আপাতত সে পয়েন্টগুলিতে 'আমিনের ডিটেইল' সাইনবোর্ড দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলাম। পরে সময় এবং ইচ্ছের সমন্বয় ঘটলে ফিরে আসবো 🙂
শান্তা আপা, ইনসাইড জব ডকুমেন্টরিটা দেখেছেন?
আমার বন্ধুয়া বিহনে
আমিন কিন্তু শেষ পর্যন্ত মূলোটা ধরতে দেয়। তুমি আবার শুধু ঝুলিয়ে রেখ না। ভিন্ন পয়েন্ট না তুললে ক্যামনে হয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
পয়েন্টগুলি বরং সংক্ষেপে বলি -
বাংলাদেশের রাজনীতি আসলে ভাতের রাজনীতি, পেটে ক্ষিধে - এখানেই উন্নত বিশ্বের সাথে পার্থক্য। একারণে রাজনীতিবিদরা আমজনতার ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে ক্ষেতে পারে কিংবা স্টক মার্কেটের ধ্বস জনগণকে স্পর্শ করে না।
সামন্তবাদী অর্থনীতি কিংবা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কোনটাই আমাদের দেশে এখন কার্যকর নেই। অর্থনীতি এখন পুঁজিবাদী। কিন্তু এটা তৃতীয় বিশ্বের পুঁজিবাদ।
ওয়ালসিট্রের ব্যাংক, মর্টগেজ এবং ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ বা স্টিভ জবসদের ভিতর পার্থক্য আছে।
বাংলাদেশে একটা সত্যিকারে জোরেশোরে 'অকুপাই মগবাজার' হওয়া দরকার।
এখন এটুকুই। আমিনকে ধন্যবাদ - কি সুন্দর একটা জিনিস শিখলাম 🙂
আমার বন্ধুয়া বিহনে
এইখানে আমিন আইলো কই থেকা?
সেন্ট জোনস থেকা আইলো - উত্তর কি ঠিক হয়েছে? 😕
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ইতিহাস এটাই বলে বদলে দেবার জন্য একজনই যথেষ্ট।
শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো উপমহাদেশের রাজনীতি সামন্তধারায় চলছে। তাই উন্নত জিডিপির দেশ হয়েও ভারতে গরীব বাড়ছে, নারীরা আরো অসহায় হচ্ছে। ্মাহমুদের মন্তব্য থেকে একটা লাইন কোট করছি,
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
এই অর্থে বলিনি ... আমার কথাটা উৎপাদন কৌশল এবং উৎপাদন সম্পর্কের ভিত্তিতে বলা।
আমার বন্ধুয়া বিহনে
ছোটবেলায় আমি মাছ খেটে চাইতাম না; অবশেষে মা এক পন্থা অবলম্বন করলেন। ভাতের ছোট ছোট বলের মত বানাতেন, ভেতরে মাছের টুকরো পুরে দিতেন, আর এক একটাকে নাম দিতেন হরেক পাখির ডিম বলে। পুষ্টিগুণও অক্ষুণ্ন রইলো, আবার ছেলেও বেশ আনন্দে খেলো।
আপনার লেখাটা পড়তে গিয়ে অনুভূতিটা অনেকটা তেমনই। কাট্টাখোট্টা স্টাইলে না গিয়ে বেশ গল্প বলে ফেললেন; আর গল্প শেষে বুঝলাম আরে এযে মার্কিনী অর্থনৈতিক অবকাঠামোর ইতিহাস শোনানো হলো। 🙂
আর উপরে মন্তব্যের কথাটার সাথেও সহমত। বারুদে বিস্ফোরণ ঘটাতে একটা স্ফুলিংই যথেষ্ট। আমাদের মধ্যে একটা রোষ, পরিবর্তনের প্রতি প্রবল আকাংক্ষা রয়েছে; কেবল পথ প্রদর্শক হিসেবে কাউকে পাচ্ছি না। মাঝে মাঝে যারা স্পার্টাকাস হয়ে ওঠবার শপথ নেই, তারাও একদিন কোনভাবেই বদল আনতে না পেরে বদলে ফেলে নিজেদেরই।
লেখার জন্য আবারো সাধুবাদ জানিয়ে গেলাম আপু। 🙂
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
খুবই সুন্দর প্রশংসা পেলাম। নিজেকে মা মা লাগতেছে। তোমার মাছে এখনও সমস্যা থাকলে বল। ভাল সমাধান দিতে পারি।
ধন্যবাদ রকিব।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
না আপু, এখন মাছ খাই, তবে বেঁছে বেঁছে; সব মাছ ভালো লাগে না।
এটা দেখে মজা পেলাম। মা'ই তো আপনি। বলে না মেয়েরা মায়ের জাত। সব মেয়েই কোন না কোন সময়, কোন না ক্ষেত্রে মা'য়ের ভূমিকাতেই দাঁড়িয়ে যায়; হতে পারে তা সন্তানের জন্য মা হিসেবে, আবার প্রেমিক, স্বামী কিংবা ভাইয়ের জন্যও। তাই না? 😛
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষগুলো কত অসহায়। দুই পরিবারের বলয়ে বন্দি হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। হয়তো কিছু একটা হবে এই আশাই দিন কেটে যায় আমাদের।
আমি ঠিক হতাশ নয়, রেগে আছি। কি আর বলব - থাকি অন্য দেশে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
এই কথাটা যে কি পরিমাণ সত্য কথা, তাই অনেক তাত্ত্বীককে বোঝানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই লেখাটায় আরেকটু সময় নিয়ে কমেন্ট করতে হবে।
সামিয়া একদম মনের কথা বলেছ।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলনটাকে আমি কেন জানি সন্দেহের চোখে দেখছি। মানে ঠিক মানতে পারছি না যে এরা আদৌ কোন বদল আনতে পারবেন, বা সরকার/ওয়ালস্ট্রিট-এর আচরণ আদৌ বদলাবে। কারণ আমার মনে হচ্ছে এই ধরণের আন্দোলন বেগবান করার মতো 'দেয়ালে পিঠ ঠেকা' আমেরিকার সাধারণ জনগণ এখনো খায় নি*। আরেক দিকে এরকম আন্দোলনকে ঠেকিয়ে দেয়ার মতো জনবল ও বুদ্ধিবল আমেরিকান সরকার ও ওয়ালস্ট্রিটের টাইকুনদের আছে।
*এটা একটা ভাসাভাসা পর্যবেক্ষণ। হাঞ্চ-ও বলতে পারেন। আমি তো আর আমেরিকায় থাকি না, নিরপেক্ষ মিডিয়াগুলো - এনপিআর কিংবা বিবিসি কিংবা মাইকেল মুর, যারা সরকারি চাপে না পড়ে খবর প্রকাশ করেন, তাদের দেখানো ছবিটা আমার কাছে এমন। ভুল থাকলে সাহায্য কইরেন আপু।
আমেরিকার উত্থান ও বিস্তারকে আমার অনেকটা রোমান এম্পায়ারের মতো মনে হয়। গ্লাডিয়েটরের জায়গায় আসছে টেকনোলজি-ব্রেইনওলা নানাদেশি জিনিয়াসরা। সিনেটররা আগের মতই। এবং আমেরিকান গণতন্ত্রও রোমান রিপাবলিকের মতো। জুনিয়র বুশ এই অ্যানালজিটা আরো প্রকট করেছে নিজেকে যুদ্ধবাজ এমপেরর-এর মতো চেহারা দিয়ে।
রোমানদের পরিণতি আমেরিকানদের হবে কি না, এটাই এখন দেখার বিষয়!
পৃথিবীর ইতিহাসে কোন কিছুই স্থায়ী নয়। মোগলদের বংশধরদের নাকি কোলকাতার বস্তিতে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আজকের বাদশা কালকে ফকির টাইপের।
তবে আমেরিকার গোড়াপত্তনের ইতিহাসটা একটু অন্যরকম। পৃথিবীর সব জায়গার বঞ্ছিত বা সাপ্রেস মানুষের এই দেশে ভীড়েছিল। তারপর শূন্যহাতে শুধুমাত্র নিজেদের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। এইজন্য আমেরিকান সংবিধান এমনভাবে লেখা যে এর নাগরিকদের সব অধিকার সংরক্ষণ করে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা পায়। এই আমেরিকার ভিতরেই এখন আমাদের মতো তামাটেরা অনেকাংশে সাদাদের উপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেছে। এখানে যোগ্যতাই শেষ কথা। বিষয়টা আসলে এতো ছোট পরিসরে লেখা যাবে না।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
জাগো বাহে কুন্ঠে সবায়...............।
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ফয়েজ এই ডাক দিয়ে যাও। শুনলে আশা জাগে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখায় সুপার লাইক, ফেসবুকে শেয়ার করলাম 🙂
ধন্যবাদ হাসান।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
নানান তত্ত্বীয় ব্যাখ্যার বাইরে এই আন্দোলনটা নিয়ে আপনার ব্লগটা পড়ে বেশ ভালো লাগল। (পাঁচতারা)। সবথেকে ভালো লেগেছে আমেরিকার চলমান অর্থনৈতিক সমস্যার আলোকে বাংলাদেশের সমস্যা বিশ্লেষনের প্রয়াসটা। ভালো লাগার বাকি পয়েন্টগুলো নিয়ে আর কি বলবো, অনেকেই সেসব বলে দিয়েছে। আমি শুধু দ্বিমতের একটা বিষয় উল্লেখ করছিঃ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ণের কথা বলেছেন। কিন্তু কি উপায়ে করেছে, সেই মৌলিক মেকানিজমটার ধরতে পারেননি বলে মনে হলো। এর জন্য দরকার ইতিহাসের যথার্থ মূল্যায়ন যা'র জন্য অবধারিত ভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদকে বিবেচনা করতে হবে। আমেরিকায় এখনো যে দরিদ্রদের জন্য সোস্যাল বেনেফিটগুলো আছে, সেটাও এই প্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে। এর মাধ্যমে যদি বুঝতে পারেন কিভাবে একটা রাষ্ট্র বিশ্ববাজার নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে অধীনস্ত রাষ্ট্রসমূহের জনগণঅকে শোষণের মাধ্যমে নিজেদের জনগণকে সুবিধা দেয়। (নিরোর কথা এসেছে বলে মনে পড়ল একটা দূর্দান্ত ডকুমেন্টারির কথা, ইচ্ছে থাকলো সেটা নিয়ে কথা বলার মধ্যদিয়ে এই বিষয়টায় আলকপাত করার)। ইতিহাসের এইদিকটায় নজর না-থাকার জন্য আপনার মনে হয়েছে একজন স্পার্টাকাস (দাস-বিপ্লবের নেতা), অথবা রুজভেল্ট (আমেরিকার প্রেসিডেন্ট) অথবা ফজলে হাসান আবেদ (এনজিও টাইকুন) বাংলাদেশের সমস্যাগুলো সমাধান করে দিবে। তাই শেষটায় এসে বলেছেন-
খুবই আশাবাদী উপসংহার বলেই ব্লগটা পড়া শেষ হয়েছে একটা ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে। কিন্তু আপু, স্পার্টাকাস ত' আর আসবে না। আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে হয় দুই রাজপুত্রঃ তারেক, অথবা জয়। তারা আসবে উলটো স্পার্টাকাসদের বধ করতে। একজন আসবে বাংগালীর ইসলাম রক্ষা করতে, আরেকজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সওয়ার হয়ে।
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
আমি এদের মেকানিজম ধরতে পারি নাই সে সম্পর্কে বললে। আসলে আমার লেখা আসে উপলদ্ধি আর পর্যবেক্ষণ থেকে। কোন পশ্চিমের তাত্বিকের বিশ্লষণ পড়ে আমি তার বাংলাদেশি ভার্সন লিখতে বসি না। আমি আগে সত্যিকারের মানুষের জীবন আগে বুঝতে চেষ্টা করি।
দেখ এই লেখায় আমি ইনসাইড আমেরিকার কথা বলেছি। বিশ্ব বনাম আমেরিকার কথা বলিনি। এক কথায় যদি বলতে হয় যে সুপার পাওয়ার হয়ে পড়ে সে তো নিয়ন্ত্রনের অধিকর্তাও হয়ে পড়ে। পৃথিবীর ইতিহাস দেখ সুপার পাওয়ার কিন্তু বসিং করেনি এমন নজির কি পাওয়া যায়?
আমেরিকা কোন দেশ থেকে কত টাকা নিয়ে এসে নিজের দেশের মানুষদের ভাল রাখছে আমাকে সেই পরিসংখ্যাণটা পেতে হবে। আমেরিকা হলো বিশ্বের এক নম্বর বাজার। বাংলাদেশের গার্মেন্টস যদি আমেরিকার বাজার ধরতে না পারে তাহলে বসে যাবে। চীন যদি আমেরিকার বাজার হারায় তাহলে তাদের জিডিপি বাড়াতে পারবে না। তারপরও আমেরিকা চীনদের জিনিষ বেচাতে বাধা দিচ্ছে না। এদিকে আমেরিকার ভেতর নিজেদের কোম্পানিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আউট সোর্সিং এর জন্য।
আমেরিকা কিম্বা ইসরাইল কেউই আসমানী আশির্বাদপ্রাপ্ত দেশ নয়। বসিং করছে কিন্তু কিভাবে বসিং করছে - কি যোগ্যতায় এই পর্যায়ে আসল সেটার অনেক বিশ্লষণ প্রয়োজন আছে বলে মনে করি।
ঘৃণা করা খুব সহজ কিন্তু ঈর্ষার যোগ্য হয়ে উঠা অতো সহজ নয়। এবং স্বভাবতই একজন ঈর্ষিত ঘৃণিতও বটে।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
আপু,
আমি আমেরিকাকে ঘৃণা করার জন্য সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাসের কথা তুলি নাই, তুলেছি সারা বিশ্বের কাছে আমেরিকার ঈর্ষণীয় হয়ে ওঠার পদ্ধতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য। শুধু আমেরিকা নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোন সাম্রাজ্য বা রাষ্ট্রের হেজেমনিক পাওয়ার অর্জনের পেছনে কেনা-বেচা তথা ব্যবসা-বানিজ্যের ভূমিকা প্রধান ছিল না। প্রত্যেক যুগের সুপার পাওয়ার আগে গায়ের জোরে (সমরশক্তি) ক্ষমতা দখল করেছে, তারপর সেই ক্ষমতা কনসোলিডেট করেছে বানিজ্য+কূটনীতি+রাজনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে।
সরাসরি এই পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। তবে, কিছু সিস্টেমিক চিপা আছে যা'র মাধ্যমে অন্যদেশের মানুষকে (পড়ুন, শ্রমিক+কৃষক) শোষণ করে আমেরিকা (পড়ুন, সুপার পাওয়ার) নিজের দেশের মানুষকে ভালো রাখছে; এগুলো দেখুন। যেমন, আমেরিকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য (খাদ্য, বস্ত্র, ইত্যাদি) কম রাখার মেকানিজম।
- আপু, তারমানে আপনার সাথে আমার আসলে খুব একটা পার্থক্য নাই, শুধু পদ্ধতিটুকু ছাড়া। আর সবটাই মিলতে হবে, এমন ত' নয়, কি বলেন? 🙂
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
নিজেকে কী বলবো? আশাবাদী! অথবা হতাশ! নাকি দুটোর মাঝামাঝি? আসলে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মনের অবস্থা পাল্টায়। তাই নিজেকে নিয়ে সবসময় সংশয়ে থাকি।
ভালো লিখেছো। পাঁচ তারা। আমেরিকান অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ইতিহাস ভালো জানা নেই। তাই ভিন্নমতের সুযোগ নেই। তবে তোমার মতো করে যে রাজনৈতিক ইতিহাস লিখেছো তা একটানে পড়ে গেলাম। ৯৯% আন্দোলনের ব্যাপারে আমি এখনো সংশয়বাদী।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
মাঝে মধ্যে মনে হয় বাংলাদেশের চিন্তাশীল মানুষেরা খুব হতাশ হয়ে নিশ্চুপ হয়ে গেছে। জানিনা মনে হলো বলে বললাম।
সামনে প্রেসিডেন্ট ইলেকশন। এই সময় সামান্য জনমত জরিপ অনেক গুরুত্ব পায়। লবিস্টদের আসলে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। দেখা যাক কি হয়।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
লেখায় পাঁচ তারা।
ইতিহাস অর্থনীতি কোনটাই ভালো মত জানা নেই বলে ভিন্নমতের জায়গা পেলাম না।
তবে বাংলাদেশের ব্যাপার নিয়ে কেন জানি আশাবাদী হতে পারি না। সময়ের প্রয়োজনে হয়তো আসতে হবে কোন স্পার্টাকাসকে। তবে স্পার্টাকাস না আসলে আমার মনে হয় আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে বড় ধরণের পরিবর্তন। তবে সেটা পজেটিভ নয়। গৃহযুদ্ধ দুর্ভিক্ষ এসবই দেখতে পাই।
অনেক দিন পর আপনার লেখা পড়লাম। সবচেয়ে ভালো লেগেছে লেখার সহজ বোধ্য তা। আমার মত গণ্ডমূর্খদের বুঝার জন্য সুবিধাজনক।
আমেরিকাতে অনেক রকম মানুষ দেখার সুযোগ হয়েছে। তাদের সাথে পরিচয় হয়েছে। এইসব সত্যিকার মানুষ দেখে যে সাদামাটা উপলদ্ধি হয় তাই লিখি।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
Sorry to write in English as I have not yet installed appropriate program.
If you live in a foreign country, you may feel your country in a more loving way. But reality and history is different in case of BD.
If we go back to our history of economy abd governing systems for last 3,000 years, it will be very difficult to find a great ruler. Autocracy was everywhere and historiens were busy to praise their only leaders. If british were not there, I would be still updating my hal-khata on the eve of new-year.
Last 3,000 years and so on, our leaders were busy with baiji and alcohol, rather than they paid any attention to improve the life standard of their citizen.
A simple question raise in mind that what were our pleople were thinking about beyond the indian ocean or Bay of bengal? When europe went to discover america, arab were building routes to have business with china, what were our ancestors did at that time?
If we had facebook n internet available for last 3000 years may be we would be able to see our kings / queens' funny thinkings and their funny projects. Our huge population enjoyed the civilization around 10,000 years but 1% of all the generation treated us badly. I cant see dream for my country.
আপনার মন্তব্যের সাথে আমি একমত। আজকে ককেশীয়দের সারা পৃথিবীর উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। কিন্তু একটা সময় মেসোপটেমিয়া অনেক অগ্রগামী ছিল - যদিও তারাও আর্যভূক্ত। চীনকে বলা হয় সবচেয়ে পুরনো ধারাবাহিক সভ্যতা। অর্থাৎ গত পাঁচ হাজার বছরের মধ্যে ফারাও, মেসোপটেমিয়া, ইনকা, সিন্ধু-মহেঞ্জাদারো সভ্যতার উত্থান-পতন ঘটেছে। একমাত্র চীনই ধরে রাখতে পেরেছিল তার সভ্যতা। ইওরোপীয়রা ভারত রুট আবিষ্কারের অনেক আগেই চীনরা জলপথে ইওরোপে গিয়েছিল। চীন এতোদিনে সুপার পাওয়ার হওয়ার পথে এগোচ্ছে। তা্র আগে কালচারাল রেভ্যুলিউশনের মাধ্যমে চীনাদের কিছু বেসিক স্বভাব বা অভ্যাসে বদল আনতে হয়েছিল।
আমরা কখনও ভাল লিডার পাইনি - অন্তত যার দর্শণ লেভেল উঁচু পর্যায়ের। ভাল লিডার হতে গেলে ভাল মানুষ হতে হয়।
আপনার বক্তব্য অনেক উইশডম সমৃদ্ধ।
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi