বকবকানির বাকবাকুম

রাত দুইটা বেজে উনিশ মিনিট। আমি পঞ্চগড়ে। সবাই ঢাকায়। জরুরি কাজে এসেছি। আগের দিন রাত পৌনে এগারটায় বাসে চেপে, হাইওয়ের অস্বাভাবিক ট্রাফিক ঠেলে সতেরো ঘণ্টা পাড়ি দিয়ে পরদিন বিকাল চারটায় পৌছেছি। আরেকটু হলে তো শিকড় গজিয়ে যেত। বিকাল-সন্ধ্যায় টানা ঘুম। এখন আর ঘুম আসছে না। ফেসবুকে সময় কাটাচ্ছি। ওদিকে পরিবার মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে। ম্যাসেঞ্জারে সাড়া পাচ্ছি না। ফোনে ডিস্টার্ব করতেও ইচ্ছা করছে না।

কিছুক্ষণ অনেক ছোট বয়সের দুজন জুনিয়রের সাথে একই প্লাটফর্মে ভার্চুয়াল ক্যাচাল করলাম।

বিস্তারিত»

অনুকথন স্মৃতিচারণঃ নকশীকাঁথার মাঠ

অনুকথন স্মৃতিচারণঃ নকশীকাঁথার মাঠ

আমার একটা কাঁথা আছে; তিনটা শাড়ির লেয়ার দিয়ে বানানো। তিনটা শাড়িই ছিল এম্ব্রয়ডারিতে ভরা সুতি শাড়ি। অনেক স্মৃতিবিজড়িত এই কাঁথাটা। এটার মূল্য আমার কাছে অনেক। জড়িয়ে নিয়ে থাকি, ঘ্রাণ নেই। অন্যরকমের একটা ছোঁয়া পাই। বাইরের দিকের শাড়ি দুটো আমার স্ত্রীর, যেগুলো আমি তাকে আমাদের বিয়ের সময় দিয়েছিলাম। ভেতরের লেয়ারে যে শাড়িটা আছে সেটা সবচেয়ে স্মৃতিবিজড়িত। আমার মায়ের অনেক শখের একটা শাড়ি ছিল সেটা।

বিস্তারিত»

তুমি চলে গেলে তুমি একা, আমি চলে গেলেও তুমি একা

আমরা অনেকেই ছোটবেলায় ইংরেজ কবি জন ডানের মৃত্যু নিয়ে একটি কবিতা পড়েছিলাম – ‘ডেথ্, বি নট প্রাউড’। কবিতার শেষ দু’টি লাইন ছিল এমন – ‘একটা ছোট্ট ঘুমের পর যখন আমরা চিরকালের জন্য জাগবো / মৃত্যু, তুমি তখন থাকবে না; তোমারই তখন মৃত্যু হবে।‘
কবিতাটি আমাদের অনেকের মনেই বেশ গভীর চিহ্ন রেখে গিয়েছিল। কৈশর থেকে তারুণ্যে বেড়ে ওঠার জোয়ারে এবং জীবনের চাঞ্চল্যে ডুব দেয়ার সাথে-সাথে ছোটবেলার এই কবিতা অনেকেরই মনে থাকে নি।

বিস্তারিত»

কোথায় লুকাবো….. আমি

সাধারণত নতুন কারোর সাথে পরিচয়ে- আমি হাতটা বাড়িয়ে দেই নিজের নামটা বলার বা পরিচয় দেয়ার জন্য কিন্তু যার মাধ্যমে বা যে ব্যক্তি/বন্ধু আমাকে নিয়ে এসেছে তারা পরিচয় করিয়ে দেয়-
: আমার বন্ধু …………। ওই যে বিডিআর বিদ্রোহতে অল্প কয়েকজন …… বেঁচে গিয়েছিল তাদের মধ্যে ও একজন।
মেজাজটা খারাপ কার উপর করব। কতবার বলেছি আমি আমার পরিচয়ের সাথে এই বিশেষ তকমা ব্যবহার না করতে।

বিস্তারিত»

অপেক্ষা

শোভন চেয়ার আন্তঃনগর
রেলগাড়ী ঝকর ঝকর
গাছপালা ঘর জীব জানোয়ার
দোলায় দোলে জানালার ধার
জোরছে তাদের কেউ ছুটে যায়
কেউবা যেন কেবল ঝিমায়।

মাঠের পর রাস্তার ধার
নারকেল সার বাঁশের ঝাড়
তার ছায়াতে বাবা ঘুমায়
দিন গোনে মা অপেক্ষায়।
বিষ্যদ বার শুককর বার
শনিবার আর কত বার?
ছেলে তবু আসে না আর!

বিস্তারিত»

লতাগুল্মের গালগল্প

আমাদের শহরে এখন সন্ধ্যা নামছে। দিনশেষের এই সময়টুকু আমার বড় প্রিয়। এখানে গ্রীষ্মের দিনগুলি অনেক লম্বা। ‘ঠাডাপড়া’ গরমে স্থানীয় লোকজন দেখি কেবল সমুদ্র সৈকতের দিকে দৌড়োয়। মাঝেমধ্যেই তাপমাত্রা একশো ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। দিনভর তুমুল গরম থাকলেও সন্ধ্যা আসে প্রশান্তি নিয়ে। সারাদিনের প্রচন্ড দাবদাহে গাছেরা তৃষ্ণাতর্ হয়ে থাকে। আমাদের বাড়ির সামনে পেছনে খোলামেলা সবুজ সমতল জায়গা আছে। সামনের চত্বরে আগে কেবল বুনো লাল গোলাপ ছিল, আর দক্ষিণের সীমানা ঘিরে ছিল ঘন সবুজ ফার্ণের ঝোপ ও জেরানিয়াম।

বিস্তারিত»

দিনলিপিঃ চিকেন টামালে কিংবা খগেন জে্যঠুর চালতার আচার

এক
সাতদিনের জন্য কেটি এসেছিল আমাদের বাড়ি; চৌদ্দ দিন পুরিয়ে অবশেষে সে ফিরে গেল কানেকটিকাটে। তবু কি যেতে চায়? আমিই প্রায় ঠেলে ধাক্কিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। কেটির বাবা এবছর অবসর গ্রহণ করেছেন। বাবার সূত্রে কন্যা বছরে বিমানে তিনটে ট্রিপ নিতে পারে বিনা টিকিটে। ওর আটলান্টা ট্রিপটা এমনই একটা ফ্রি ট্রিপ ছিল।

চার পুরুষ আগে কেটি আরমানিনির পরিবার ইটালী থেকে এদেশে এসেছিল বসতি গড়তে।

বিস্তারিত»

মঁ ভেলো -১

মানুষের কতরকম শখ থাকে; কেউ ছবি আঁকে, কেউ গান গায়, কেউ গান শোনে। কেউ জিনিষপত্র জমায়, কেউ কেউ বিলায়ও। কেউ বাড়ি গাড়ি করে, কেউ করে শপিং! আমি ভালবাসি মানুষ, জীবন, গতিময়তা, অভিজ্ঞতা, মুহুর্ত। কংক্রিটের এই জঙ্গলে শুধুমাত্র টিকে থাকতে, টপকে উঠতে মানুষ যখন তার সবটুকু দিয়ে ছুটতে থাকে, আমার সেখানে এই ইঁদুর দৌড় থেকে দূরে, আরো দূরে চলে যেতে ইচ্ছে করে। আর তাই সুযোগ পেলেই আমি আমার প্রিয় বন্ধুটাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি,

বিস্তারিত»

শেষ না হওয়ার গল্প

ক্যাডেট কলেজের রাতগুলো নগর জীবনের রাতের চাইতে ভিন্ন ছিল। আমাদের ময়মনসিংহের শহরতলীতে সন্ধ্যা নামতো ঝুপ করে। এমজিসিসির তিন দিকে ছিল ধানক্ষেত, বছরের ছয়মাস জুড়ে সেখানে হাঁটু জল থাকতো। কলেজের দক্ষিণে ধারে কাছে কোথাও শেয়ালকূলের ঘর গেরস্থালি ছিল। সন্ধ্যা হতে না হতে পরিবার পরিজন সহ শতেক শেয়াল একসাথে হুক্কাহুয়া রবে চারদিক কাঁপাতো আর আমাদের শহরবাসী অনভ্যস্ত কান সেই ডাকাডাকিতে ভীত হয়ে পড়তো! শৃগাল সংগীত শুরুর আগে গেমস শেষে হাউসের স্বনামধন্য দৌড়বাজ ক্যাডেটরা বাথরুমের দখলদারিত্ব নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে দিত।

বিস্তারিত»

লিরিকস এণ্ড থটস

লিরিকস এণ্ড থটস

“পিয়ার ইয়ে, জানে ক্যায়সা হ্যায় / কিয়া কাহে, ইয়ে কুছ এ্যায়সা হ্যায় / কাভি দার্দ ইয়ে দেতা হ্যায় / কাভি চ্যায়েন ইয়ে দেতা হ্যায় / কাভি গাম দেতা হ্যায় / কাভি খুশি দেতা হ্যায়।” খুব সম্ভবত হায়ার সেকেণ্ডারিতে পড়ার সময় এটা প্রথম শুনি। এমনিতেই আমি এ.আর.রেহমানের অন্ধভক্ত ছিলাম। এখনও ভাল লাগে এই সুরকারের সুর। কিন্তু টিন এইজের মতন বিশেষ কোন ব্যক্তি বা বিষয়ে সেই অন্ধ আসক্তি এখন কোনখানেই আর কাজ করে না।

বিস্তারিত»

পার্সেপশন্স টুয়ার্ডস টিচিং কমিউনিটি

পার্সেপশন্স টুয়ার্ডস টিচিং কমিউনিটি

প্রাইভেট টিউটর হিসেবে অভিজ্ঞতা নিয়ে এক্স ক্যাডেটস ফোরামের ফেসবুক পেইজে কদিন আগে অনেকেই তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছিলেন। সেখানে একটা স্ক্রীণ-স্ন্যাপশটের পোস্টে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে দেখি বেশ লম্বা হয়ে গেল। লম্বা মন্তব্য অন্যদের বিরক্তির কারণ হতে পারে ভেবে তখন লেখাটা আলাদা করে লিখেছিলাম, যেখানে আমি আগেই পরিস্কার করে নিয়েছিলাম যে, আমার লেখাটাতে কেবলমাত্র প্রাইভেট টিউশন নয়, বরং সার্বিকভাবে টিচিং কমিউনিটির প্রতি প্রায়শই অন্যদের যে দৃষ্টিভঙ্গিটা কাজ করে,

বিস্তারিত»

আমি কি? শিক্ষক? – ২য় পর্ব

আমি কি? শিক্ষক? – ১ম পর্ব
আমি কি? শিক্ষক? – ২য় পর্ব

যারা ১ম পর্বটা মিস করেছেন, তারা এখানে ক্লিক করে পড়ে আসতে পারেন। ১ম পর্বটা না পড়ে থাকলে ২য় পর্বটা খুব বেশি সাব্জেক্টিভ মনে হতে পারে।

[শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা আমার পুরোনো একটা ব্লগে আমারই একটা প্রাসঙ্গিক মন্তব্যকে বেশ খানিকটা এডিট করে এই ব্লগটা লিখেছি।]

প্রায় ১০/১২ বছর আগের একটা অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল।

বিস্তারিত»

কাহার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে

(এ লেখাটি গত ০৯ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে আমার ফেইসবুক পাতায় এবং অন্য একটি ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিলো। ঈষৎ সম্পাদনা করে আজ এখানেও প্রকাশ করছি। হয়তো এক্স ক্যাডেটরা এবং আমার প্রাক্তন সতীর্থরা এ লেখায় তাদের অভিজ্ঞতার সাথেও অনেক মিল খুঁজে পেতে পারেন)

“এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার?
আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল হল কার?
কাহার অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে
উষা কাহার আশিস বহি হল আঁধার পার?

বিস্তারিত»

আমি কি? শিক্ষক? – ১ম পর্ব

আমি কি? শিক্ষক? – ১ম পর্ব
আমি কি? শিক্ষক? – ২য় পর্ব

শিক্ষকতার পেশায় এক যুগেরও বেশি সময় পার করে আজ আমি ভাবতে বসেছি, আমি কি? আমি কি পড়াচ্ছি? আসলেই কি পড়াতে পারছি? আমি জানি যে, আমি নিজেও অনেক কম জানি। যত দিন যাচ্ছে, নিত্যনতুন বিষয় জানছি। নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাও টের পাচ্ছি। আসেপাশের কারো কাছে যেকোন ধরনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় যখনই পাচ্ছি,

বিস্তারিত»

কৈশোরের চাঞ্চল্য, একটি অপমান ও কিছু কথা (২)

(প্রথম পর্বের পর)

পুরো ক্লাস কে নাস্তা নাবুদ করার পর ভিপি স্যার আমাকে দাঁড় করালেন। বাঘ তার শিকার কে পাকড়াও করার পর যেমন একটা  বিজয়ীর হাসি/হুঙ্কার দেয়, তার মুখে তেমন এক ক্রুর হাসি। নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়েছিল সেদিন, কমপ্লিটলী ডিফেন্সলেস 🙁 কোন উত্তর নেই আমার কাছে।ছোটবেলা থেকে ভাল ছাত্র ছিলাম, তাই অপমানটা বেশি গায়ে লেগেছিল। জানিনা অতটা অপমানিত হওয়া ঠিক ছিল কিনা।

বিস্তারিত»