১ জুন ২০২৪: তখন তোমার ২১ বছর বোধহয়!!

২০০৩-এর এই দিনে আমি এম.আই.ইউ.-এর ইংরেজি বিভাগের একজন প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। কর্পোরেট জগৎ ছেড়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় দেখতে দেখতে কিভাবে যেন চোখের পলকেই ২১ বছর পার হয়ে গেল। সেই জুনেরই ৭ তারিখে ডিপার্টমেন্টের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েটের প্রথম ব্যাচের প্রথম ক্লাস নেই। শুরু হয় দুই জেনারেশনের একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পথচলা। সেদিক থেকে বলা চলে ডিপার্টমেন্টের চেয়ে বয়সে আমি ৬ দিনের বড়। অনেক কিছুই দেখলাম, ঠেকলাম, শিখলাম, আবার অর্জনও করলাম। বয়স হিসেবে অভিজ্ঞতার ঝুলিও নেহায়েত কম ভারি নয়। এখন আমার কাছে এটা এক ধরনের বিশ্বাসেই পরিনত হয়েছে: যে কোন অভিজ্ঞতাই জীবনের জন্য সঞ্চয়; ভাল বা মন্দ হলো সময়ের সাথে আপেক্ষিক।

২০২০-এর জানুয়ারির ৮ তারিখ থেকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে আছি। সেদিনটা আবার ছিল আমার জন্মদিন (সত্যিকারেরটা; সার্টিফিকেটেরটা নয়)। অভিজ্ঞতা এবারে শুরু হলো ভিন্ন মাত্রায়; ক্লাস, পড়াশুনা, পড়ানো, ডিপার্টমেন্ট সামলানো; এক কথায়, একটা একাডেমিক ডিপার্টমেন্টের একাডেমিক্সের পাশাপাশি এর সম্পূর্ণ এডমিনিস্ট্রেশন ঘাড়ে এসে পড়ল। তার মধ্যে আবার শুরু হলো কোভিডের বৈশ্বিক মহামারি জনিত লকডাউন। ঘরে বসে একটা ডিপার্টমেন্ট চালানো বা সামলানো, তার ওপরে আবার চেয়ারে তখন নেহায়েতই স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতা; কি যে গেছে রাতদিনগুলো! সেসময়ই প্রথম শিখলাম জুম, গুগুল ক্লাসরুম এবং মিট গুগুলের ব্যাবহার। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ-চ্যাটিঙেও সক্রিয় হতে হলো। মাঝখান থেকে প্যান্ডেমিকের আগেই বি.ইউ.পি.-তে শুরু করা আমার পি.এইচ.ডি.-র কাজ/পড়াশুনা নিয়ে বেশ এলোমেলো অবস্থায় পড়ে গেলাম, যা সামাল দিতে এখনো হিমসিম খেতে হচ্ছে।

প্যান্ডেমিকের পরে সব কিছু স্বাভাবিক হবার শুরুতেই অতিরিক্ত হিসেবে যুক্ত হলো প্রক্টর-এর দায়িত্ব। এর আগে যদিও এসিস্ট্যান্ট প্রক্টর ছিলামই, প্রক্টর হয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া শুরু করলাম, “টেনশন কাকে বলে!!” যাহোক সবাই সহযোহিতা করেছেন/করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন এমনকি পুলিশ প্রশাসনও; যার ফলে, এটাও এক পর্যায়ে সয়েই গেল; যদিও সত্যিকারর্থেই, প্রতি মুহূর্ত টেনশনে থাকার দায়িত্ব এটা।

আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে ২১ পেরিয়ে ২২-শে পা দিলাম। দীর্ঘ সময় শিক্ষকতায় কাটালে নাকি আদালতে সেই ব্যক্তির স্বাক্ষ্য নেয়া হয় না! ইতোমধ্যে মাথার উপরিভাগে নজর কাড়ার মতন চুল কমেছে, দুই কানের আসেপাশে যে কয়টা আছে তাও আবার বেশ শৈল্পিক ধবধবে বর্ণ ধারণ করেছে!! তারপরেও, সবকিছুর বিচারে বলতেই হচ্ছে, “এই বেশ ভাল আছি!!”

৪৩ বার দেখা হয়েছে

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।