ব্লগে সবার এতো সুন্দর সুন্দর লেখা দেখে লেখতে ভয় লাগে। এতো ভালো লেখার ভীড়ে কিভাবে লিখি। তারপর বাংলাতে লেখতে গেলে আবার খব্র হয়ে যায়। অভ্র দিয়েও দেখি সব যুক্ত অখখ্র হয়ে যায় এরকম।তারপরও লেখার লোভ সামলাতে পারতেছি না।
ক্যাডেট বন্ধু থাকার ১০০০১ টা উপকারীতা এর আরেকটা কিছুদিন আগে টের পেলাম। গত মাসে আমরা ৫ ক্যাডেট ভ্রমন এ গেলাম। সাথে ১ জন আর্মি থাকাতে পূরা ট্যুর তাই অন্য রকম হলো। আসলে এই ট্যুর টার প্ল্যান অনেকদিন থেকেই হয়ে আসছিলো। তানভীর (এম সি সি) সেই দেশের বাইরে থেকেই মাসে ১০ টা মেইল করতো, আমি আগামী মাসে আসতেছি। তোরা ট্যুর রেডি কর। শেষ পযন্ত ও আসার পর ঠিক করলাম চল, পার্বত্য এলাকা ঘুরে আসি।তো যা হয়, প্রথমে সবাই যাবে। আমরা টিকেট বুকিং দিয়ে সারতে পারিনা নতুন আরেকজন বলে আমি যাবো। আরমান (এম সি সি) মনে হয়, ৮ বার গেছে কাউন্টারএ।ঠিক হলো, ১২ জন। শেষ মেষ যাবার দিন দেখা গেলো, আমরা ৫ জন। আমি, আলামিন, আরমান, মোস্তফা আর কাদের। (তানভীর বেচারা জর এর জন্য যেতে পারে নাই)। এক মাত্র আর্মি পার্টি কাদের। সাউদিয়া বাস এ করে ভোর এ বান্দ রবন। সেখানে আছে আর্মি আছে শাহেদ (এফসিসি)। দেখি বাস স্ট্যান্ডে আর্মি গাড়ি দাঁড়িয়ে। গাড়ি করে বান্দরবন সেনানিবাস। সেখানে আমাদের জন্য রুম আগেই ঠিক করা ছিল। কিছু সময় রেস্ট করে, আর্মি এর খাবার খেয়ে গেলাম নিলাচল পাহাড় আর মেঘলাতে। সুন্দর জায়গা। দুপুরে আবার সেনানিবাসে খাবার খেয়ে রওয়ানা দিলাম বান্দরবন এর মূল জায়গা নীল গিরি এর উদ্দেশে। খুব নাকি সুন্দর জায়গা। যাবার পথ এ দেখলাম শৈল প্রপাত, আর চিম্বুক পাহাড়। চিম্বুক এর উপর থেকে যখন দেখলাম, মেঘ আমাদের নিচে অই অনূভুতি বলে বা লিখে এমন কি ছবি দেখলেউ বোঝানো যাবে না। তারপর আমরা গিয়ে থাম্লাম নীল গিরি তে। সবার মুখ বন্ধ। বাংলাদেশ এ এমন সুন্দর জায়গা আছে? তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছে। নিচে মেঘ। অদ্ভূত এক ছবি। আর কটেজগুলো আমাদের যেকোনো ৫ তারকা হোটেল এর চেয়ে কম না। আমরা ১ টা কটেজ নিলাম। বাইরের কেউ বুকিং দিয়ে গেলে ভাড়া ৫০০০ টাকা। আমাদের সাথে আর্মি থাকাতে ভাড়া ৮০০ টাকা। ডিনার করলাম, পোলাঊ, রোস্ট দিয়ে। রাতে এই গরমের দিনে বারান্দায় আমরা কম্বল মুড়ি দিয়েও ২০ মিনিটের বেশি বস্ তে পারি নাই। এত ঠান্ডা বাতাস।
ভোর এ আমরা উঠলাম ৫ টায়। কারন, ৮টায়, শহর থেকে কাপ্তাই এর বাস ধরতে হবে। রুম থেকে বের হয়ে দেখি সকালে আরো জোস। যাই হোক, শহর এ এসে কাপ্তাই এর উদ্দেশে যাত্রা করলাম। কাপ্তাই সেনানিবাস এ আগেই তন্ময় (আর সিসি ‘৯৫)কে ফোন করা ছিলো। সে আবার অই খানের অধিনায়ক। আমরা যখন ওর অফিসে গেলাম ও বাইরে ছিলো। কাদের ফোন করে বল্লো, তুমি কোথায়? ডাব্ল আপ। ওর সৈনিকরা তো অবাক। ওদের অধিনায়ক কে বলে, ডাবল আপ। কিচ্ছুখন পর ও আসলো। আমাদের জন্য ২ টা জীপ রেডি। তো আমরা কাপ্তাই লেক আর জল বিদ্যুত কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম। কলেজ থেকে যখন গেলাম, তখন শুধু কেন্দ্রের বাইরে থেকে দেখেছিলাম। এইবার সব দেখা হলো। তারপর ওর রুমে গিয়ে গোসল করে বের হয়েই দেখি খাবার রেডি। এই কাজএ তো আবার ক্যাডেটরা দেরি করে না। তারপর আবার কিছুখন ঘুরাঘুরি। বিকাল এ আমরা আবার রাংগামাটি যাবো। ওকে বল্লাম, যাবার ব্যাবস্তা কি? ও বলে বাস এ যান। কিন্তু লোকাল বাস এর সকাল এ যা দেখলাম তাতে আমরা কেউই আর উতসাহিত না। বলে, তাহলে, জেটি থেকে ট্রলার ছাড়ে। আমরা ফাজলামো করে ওকে বল্লাম, তুমি থাকতে জেটিতে কেনো যাবো? তোমার রুম এর সাম্নের লেক এ বোট আনার ব্যাবস্তা করো। কিছুখন পর দেখি আসলেই ওর রুম এর সাম্নের লেক এর কোনায় ট্রলার হাজির (জ্য় আর্মি)।তারপ্র শুরু হলো অসাধারন নৈকা ভ্রমন। কাপ্তাই থেকে রাংগামাটি ঝুলন্ত সেতু এর গোড়ায়।২ ঘন্টা। সেখানেউ আর্মি এর গাড়ি হাজির। গন্তব্য, রাংগামাটি সেনানিবাস। সেখানে গিয়ে প্রথমে কটেজ খালি নাই। কে নাকি বুকিং দিয়ে রাখসে। তো আমাদের দেয়া হল, মেস এর ২ টি রুম। কাদের দেখি এর মধে একটু পর পর কোথায় জেনো ফোন দেয়। দেখা হলো আমাদের পরের ইন্টেকের জাকির (সিসিসি ৯৫)এর সাথে। যাক, ডিনার এর পর হঢাত শুনি, কাদের কিভাবে যেনো ১টা কটেজ আমাদের জন্য জোগাড় করতে পেরেছে। রাত ১০ টায় গেলাম অখানে। লেক এর পাড়ে টিলার চূড়ায় কটেজ। ফুল এসি সাথে সুইমিং পুল। ভাড়া??? ২০০ টাকা। ঃ)ঃ)
সকালে উঠে নাস্তা করার আগেই লেক এ আমাদের জন্য বোট এসে হাজির। আর্মি বোট। গন্তব্য শুভলং ঝরনা। লেক দিয়ে যাত্রা শুরু। ২ ঘন্টা লাগলো। খুবই সুন্দর জায়গা। অখানে অনেক ফটো সেসন করে তারপর গেলাম শুভলং আর্মি ক্যাম্পে। পাহাড়ের মাথায়। জোস।( নিশ্চয় যারা মাসের পর মাস থাকে ওদের কাছে জোস না)। আসার পথে গেলাম বিখ্যাত পেডা টিং টিং এ।
তারপর ফিরে এসে গেলাম পুল এ লাফালাফি করতে। দুপুরের খাবারের পর আবার আর্মি জীপ হাজির। এবার গেলাম শহর এর বুদ্ধ মন্দির দেখতে । ওটাউ সুন্দর।
রাতের মাঝেই চিটাগাং ফিরে এলাম বাস ধরতে হবে। সকাল এ আমাদের অফিস। আর্মিদের উপর ভালই ফ্রী ট্যুর দিলাম। চিটাগাং এ এসে দেখি আরেক কান্ড। আমি আমার ভারসিটি এর এক জুনিওর কে ফোন এ বলেসিলাম ৫ টা বাসের টিকেট বুকিং দিতে। এসে যখন কাউন্টারে নিতে গেলাম, বলে আপনি অমুকের কি হন? প্রথমে বুঝি নাই। পরে বলে, আপনি তো আমাদের মালিক কে বুকিং দিসেন তাই টাকা লাগবেনা। বুঝেন, অবস্তা। আমিও ট্যুর এর শেষে একটু ভাব নিলাম কাদের কে। যা তুই তোর সেনানিবাসে ফ্রী দিলি, আর বাইরে আমি দিলাম। বাইরে যা লাগবে আওয়াজ দিস। (ভাব এর চান্স পেলে কে ছাড়ে)।
কেউ যদি আমাদের ট্যুর এর ছবি দেখতে চান, নিচের লিংকগুলোতে যেতে পারেনঃ
http://robin757.com/gallery/thumbnails.php?album=1
অথবা,
http://www.new.facebook.com/album.php?aid=155692&l=1f7a9&id=884670633
http://www.new.facebook.com/album.php?aid=157070&l=12338&id=884670633
http://www.new.facebook.com/album.php?aid=146470&l=dcbe5&id=884670633
oi beta ami december e deshe ashtesi..arekta tour er plan kor (kader,kamrul jeje ase shobgulare awaz de)...joi army..hehehe
আয়
joi free tour
ctg hill tracks এ আর্মি বন্ধু থাকবার কারনেই অইখানে নবাবের মত ঘুরা যায়।
অইখানে আর্মি প্রটেকশান নিয়ে ঘুরাতে আলাদা থ্রিল আর মজা আসে।
bhai jotil tour disen. pic gulau josh asche.
ধন্যবাদ
🙂
খুব সুন্দর লেখা। পইড়া মনে হইতাসে ইস আমিও যদি যাইবার পারতাম আপনেগো লগে।
মাগনা খাইনা....টিয়া ফইসার অভাব নাই... 😀
আঁরে কয়ডা দ্যাচ্চা কিল্লাই? এত টিঁয়া হুইষা লৈ হ্যাতে কিতা কৈত্তো?
বান্দরবান আবার যাওয়া দরকার :clap:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!