প্রহর শেষের আলোয় রাঙ্গা-১
প্রহর শেষের আলোয় রাঙ্গা-২
দুইজনের ছোট্ট একটা গ্রুপ। আর বাকীদেরও ঠিক তাই। কেমিস্ট্রি কোনকালেই আমার প্রিয় বিষয় ছিলনা, ল্যাবগুলো তো না-ই! পিপেট, ব্যুরেট, বীকার, টেস্টটিউব, রাসায়নিক দ্রবণ- এইসব জড় পদার্থের প্রতি উৎসাহের কোন কারণ আছে কিনা আমার জানা নাই, আর কারণ থাকলেই বা আমার কি! প্রথম ল্যাবে স্যার কি কি জানি ইন্সট্রাকশন দিলেন, বুঝলাম না বা বুঝার চেষ্টা করলাম না। তার চেয়ে আমার গ্রুপমেটের অংগভঙ্গী কিংবা অনুভূতির প্রকাশগুলো দেখাই ভাল। তাই করতে চাচ্ছিলাম, কিন্তু ক্লাসে সরাসরি তো আর তাকানো যায়না। তাই সিরিয়াসলি স্যারের কথা শোনার ভান করে একটু পর পর আড়চোখে স্বাতীর দিকে তাকাচ্ছি! ধুর ছাই! এত সুন্দর লাগছে কেন ওকে? সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে প্রচন্ড উদাসী হয়ে যেতে ইচ্ছে করে! উদাসী হওয়ার সুযোগ আর পেলাম না! স্যার ইন্সট্রাকশন শেষ করে এবার আমাদেরকে কাজে লেগে যেতে বললেন। আমি তখন গ্রুপ নাম্বার অনুযায়ী রাখা যন্ত্রপাতির সামনে এসে বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলাম। প্রায় নিঃশব্দে আমার পাশে এসে দাঁড়ানো লাবণ্যময়ীর মুখে কিঞ্চিৎ বিরক্তি আর উৎকন্ঠার আভাস দেখতে পেলাম। বোকার মত হেসে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার কি বলেছেন বুঝেছ? মাথা নাড়ল উপর-নিচ। করুণভাবে বললাম, আমাকে একটু বুঝিয়ে দিবে কি করতে হবে? বিরক্তির রেখাটা এবার সুস্পষ্ট দেখতে পেলাম। লজ্জা আর অপমানে ভিতরটা কুঁচকে গেল। স্বাতী আমাকে বুঝিয়ে যাচ্ছে আর আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করছি এর পর থেকে অন্ততঃ কেমিস্ট্রি ল্যাবে ফাঁকিবাজি করা যাবেনা! এরপর যন্ত্রচালিতের মত ল্যাব করে গেলাম। ল্যাব শেষে মনে মনে কেমিস্ট্রির চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করতে করতে হলে ফিরলাম।
আমার মত আমার দিনগুলোও সাদামাটাভাবে কেটে যেতে লাগল। মাঝে মাঝে মঙ্গলবারে কেমিস্ট্রি ল্যাবটা ভালোলাগার একটা হালকা পরশ বুলিয়ে যায়! আজকাল লাবণ্যময়ীর মুখে বিরক্তির রেখা আর খুঁজে পাইনা, সেখানে অবশ্য প্রশ্রয়ের আভাসও থাকেনা। মেয়েরা বুঝি এমন কঠিন হয়! একটু প্রশ্রয় দিলে কিই বা ক্ষতি। আমাকে দেখি নাম ধরে ডাকেও না। শুধু বলে, বীকারে ২০ মিলি পানি নিয়ে আস, পিপেটটা দাও- এইসব। আমিও কেন যেন ওকে নাম ধরে ডাকতে পারিনা। কিছুটা জড়তা, কিছুটা ভয়- ধুর ছাই! এইরকম বোবা,বেকুব হওয়ার চেয়ে সালফিউরিক এসিড গিলে ফেলাও ভালো! একদিন ল্যাবে স্যার ঘোষনা করলেন পরের সপ্তাহে ল্যাবের কুইজ, এতদিন পর্যন্ত যা করেছি তার উপর। আমার আবার বেশ পরীক্ষাভীতি আছে। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে প্রত্যেকটা ল্যাবের প্রস্তুতি ভালভাবে নেয়া থাকলেও স্যারের কথা শোনার পর পুরাপুরি নার্ভাস হয়ে গেলাম! খুব অসহায়ভাবে স্বাতীকে বললাম, আমি তো সব ভুলে গেছি। তুমি কি আমাকে ল্যাবগুলো বুঝিয়ে দেবে? আমার এহেন অসহায় আত্মসমর্পণের কথা মনে হয় বেচারী চিন্তাও করতে পারেনি! অপ্রস্তুত অবস্থাটাকে খুব সুন্দরভাবে সামলে নিয়ে বলল, ঠিক আছে। তবে আগে নিজে একবার পড়ে নিও যাতে আমি বুঝালে বুঝতে পার! লজ্জা না ভালোলাগা- ঐ সময়ের অনুভূতি কি ছিল তা এখনও বুঝতে পারিনা! ওর দৃষ্টিতে প্রশ্রয়ের আভাস ছিল কি? হয়তো ছিল। কি জানি!
(চলবে)
১ম 😀
শেষ করিসনাই দেখে ভাল লাগলো 😀 । চলুক স্বাতী আর তোর গল্প আরো কিছুদিন, ভালই তো লাগছে ।
দোস্ত, গল্প বেশি বড় হলে পড়তে ভালো লাগেনা। এই পর্বটা খুব একটা ভালো হয়নাই। ছোটও হইছে। সারাদিন অফিস করার পর বাসায় গিয়ে লেখালেখির ধৈর্যও পাইনা। 🙁
দোস্ত এই পর্বটা আসলে ছোট হইলেও ভাল হইসে । হুট করে শেষ করিসনা । গল্পের বিন্যাস আরো কিছু পর্ব দাবী করছে 😀 ।
আমার সার্কিট ল্যাবের পার্টনার এক মায়াবতী ইরানী মেয়ে :dreamy: । স্বাতী আপুও বোধহয় এর পাষাণ হৃদয় দেখলে আমাকে সান্ত্বনা দিত :(( :(( । কই ভালো মন্দ কিছু বলবে, তা না, খালি কয় তুমি এইটা ভুল করো, ঐটা ভুল করো। ওকে তো আর বুঝাইতে পারি না আমি কেন ভুল করি। 😛 😛
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ইরানের মেয়েগুলা বড়ই সৌন্দর্য । আহা কি মনে করায় দিলি । যাই বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসি 😀 ।
এত তাড়াতাড়ি হতাশ হইও না। লেগে থাক। 😛 😛
Life is a box full of chocolates; you never know what you gonna get.
:shy: :shy: যাই আমিও তাইলে একটু স্বপ্ন দেখে আসি :dreamy: :dreamy:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
🙂
কপিরাইট: Forest Gump
কপিরাইট তো 'মাই মাম্মা'র হওয়ার কথা... =)) =)) =))
(মাই মাম্মা সেইড... :-B )
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
গভীর প্রেম জমে ধীরে...... তাই না তানভীর.........। 🙂
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
এইসব ব্যাপার তো ভাইয়া আপনারা ভালো বুঝেন।
আমি তো দর্শক মাত্র। 🙂
ব্যাটা জানস না তো আমারে জিগাইলেই হয়। আমি বলে দিতাম। 😀
www.tareqnurulhasan.com
হ..তুই তো সবই আগে থেকে জানস! 😛 😛
নেট নাই। আসলে একসাটে পড়ব। 'লা কেন যে লিনাকসে ফনেটিক নাই। 🙁 🙁 🙁 🙁
---
রায়হান
ব্যাপার না রায়হান। সময় নিয়ে পড়ে পইড়। 🙂
কাজে লাইগা যাও বৎস্য, বহুত ফায়দা ...
তানভীর ভালই এগুচ্ছে ...
"মাইয়ারা প্রশ্রয় দিলেও সীমা লঙ্ঘন করিও না"
- সীমা
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
তাইফুর ভাই, আপনার চোখে এই লাইনটা তাইলে আটকাইল! 😀 😀
কাজে লাগা আর হইল না রে ভাই। 🙁 🙁
সীমা ঠিকই বলছে। :thumbup: :thumbup:
ভালই তো আগাইতেসে। :dreamy:
স্বাতীরে ছাইড়েন না কিন্তু ;;;
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
স্বাতীরে তো আমিও ছাড়তে চাই না! ;;; ;;;
মাইয়াগো সাথে নিয়া তথাকথিত 'গ্রুপ-ডিস্কাশন'এর কথা মনে পড়ে গেল।- 😛 😛
জমতাছে মনে হচ্ছে। চালাই যাও......
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
তথাকথিত ‘গ্রুপ-ডিস্কাশন’ আমারে দিয়া কখনই হইলনা! 🙁 🙁
তানভীর ভাই, এই লেখাটা চলতেই থাকুক...চলতেই থাকুক... :thumbup:
কুন থামাথামি নাই... 😀
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
জুনা, লেখতে খুব আলসেমী লাগে রে! 😕 😕
আর এখন তো গল্পের প্লটও ভুইল্যা যাইতেসি। থামাথামি না হইলে আমার গতি নাই! 😛
বস, প্লটের কথা ভুইলা যান... :grr:
যেরকম ইচ্ছা করে সেই দিকে মোচড় মারেন... 😀
কুন প্রব্লেম নাই... :thumbup:
খালি তাড়াতাড়ি শেষ কইরেন না... :((
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
হায়, এই জীবনে কেউ কেমিস্ট্রি প্র্যাকটিকাল বুঝায় দিল না, বুঝেও নিতে চাইল না :bash: :bash:
লিখা নিয়ে পুরা লিখা শেষ করে একবারে কমেন্ট করবো, শুধু একটা কথা, দারুণ স্পনট্যানিয়াস। আপনি যে কেন এমন আইলসা 😡
সামিয়া, তোমার তো আরও কয়েক টার্ম বাকী আছে! আশায় থাকতে পার। 😛 😛
আমি যে কেন এমন আইলসা আমি নিজেও জানিনা! :grr: :grr:
তানভীর ভাই...হেব্বী দারুন হইতেসে...আপনের ভিত্রে যে এত্ত রস আগে বুঝিনাই... 😀 😀 😀
চালায়া যান...প্লিজ শেষ কইরেন না 😕 😕
থ্যাঙ্কস ফুয়াদ। 🙂
রস সবার মধ্যেয় থাকে, কেউ প্রকাশ করে, কেউ করে না! 😀
যাও, পরের পর্বেও শেষ করলাম না!
আহারে কেমিস্ট্রি ল্যাব গুলি করলেই পারতাম। হয়তো কেউ ট্রাইটেশন বুঝে নিতে চাইতো, হয়তো আমি বুঝে নিতে পারতাম। 😉
তানভীর এই গল্পটা আগে লিখিস নাই ক্যান শালা।
তাইলেই তুই ভাবি পাইতি। :grr:
দুইন্যাডাই এমন ... যে যার তালে ...
পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥
উচ্চমর্গীয় কথাবার্তা কিছুই বুঝি না 🙁
দোস্ত, আগে লিখলেই যে ভাবী পাইতাম তার কোন গ্যারান্টি কি আছে? 😛
তানভীর : জমছে। আগাও। :clap: :clap: :clap:
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
লাবলু ভাই, আপনি যে কষ্ট করে এই ধারাবাহিক গল্প পড়ছেন তাতেই আমি অনেক খুশি। 😀 😀
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। :salute: :salute:
ভাই জটিল জমছে। শেষ কইরেন না, পিলিজ লাগে।
এখনও শেষ করিনাই। তবে শেষের মনে হয় আর বেশী দেরী নাই। 😀
লেখা পড়ে পড়ে নিজের জীবনে এরকম হলে কেমন হত সেটা বেশ চোখের সামনে আনা যায়। লেখকের সার্থকতা মনে হয় এখানে। জটিল হচ্ছে তানভীর ভাই। তবে এই পার্টটা ছোট হয়েছে ।
তপু, অনেক অনেক ধন্যবাদ। 🙂
তুমি তো অনেক দিন গল্প লিখনা। অন্যরকম ক্যাডেট কলেজের মত আরেকটা লেখা শুরু করে দাও না রে ভাই।
তানভীর,
ভাল হচ্ছে তো। যত ব্যস্তই থাকনা কেন, এই সিরিজ কন্টিনিউ করার জন্য এত পাঠকদের দাবী কি ফেলতে পারবা বল?
রহমান ভাই, ধন্যবাদ।
পাঠকের ভালোবাসার জন্যই মনে হয় এই কয়েকটা পর্ব লিখতে পেরেছি। গল্প বেশী বড় হলে বোরিং হয়ে যায়, তাই তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলাই ভাল।
মেয়েরা একটু কঠিনই হয়। তবে নরম হতে বেশি সময় লাগে না। হাজার হোক, মানুষ তো। :-B
এই ব্যাপারে তোমার ব্যাপক অভিজ্ঞতা আছে বইল্যা মনে হইতেছে! 😛 😛
তা তো থাকবেই। আপনে ছোট ভাই না... 🙂
কে কার ছোট ভাই... 😛 😛 😛
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷