ফয়েজ ভাইয়ের আদেশ শিরোধার্য করে, মণীশ ঘটকের লেখা আমার খুবই প্রিয় একটা কবিতা, কুড়ানী দিয়ে দিলাম। এই কবিতাটি আমি পড়েছিলাম ক্লাস এইটের শেষ দিকে, সেই থেকে আমার খুবই প্রিয় একটা ফ্যান্টাসি —
বন্ধুত্ব ……… প্রনয় ……… পরিণয় ………
১
স্ফীত নাসারন্ধ্র. দু’টি ঠোঁট ফোলে রোষে,
নয়নে আগুন জ্বলে। তর্জিলা আক্রোশে
অষ্টমবর্ষীয়া গৌরী ঘাড় বাঁকাইয়া,
“খট্টাইশ, বান্দর, তরে করুম না বিয়া।”
এর চেয়ে মর্মান্তিক গুরুদন্ডভার
সেদিন অতীত ছিলো ধ্যানধারণার।
কুড়ানি তাহার নাম, দু’চোখ ডাগর
এলোকেশ মুঠে ধরি, দিলাম থাপড়।
রহিল উদগত অশ্রু স্থির অচঞ্চল,
পড়িল না এক ফোঁটা। বাজাইয়া মল
যায় চলি; স্বগত; সক্ষোভে কহিলাম
“যা গিয়া! একাই খামু জাম, সব্রি-আম।”
গলিতাশ্রু হাস্যমুখী কহে হাত ধরি,
“তরে বুঝি কই নাই? আমিও বান্দরী!”
২
পঞ্চদশী গৌরী আজ, দিঠিতে তাহার
নেমেছে বিদ্যুৎগর্ভ মেঘের সম্ভার।
অনভ্যস্ত সমুদ্ধত লাবণি প্রকাশে
বিপর্যস্তদেহা তন্বী; অধরোষ্ঠ পাশে
রহস্যে কৌতুকে মেশা হাসির আবীর
সুদূর করেছে তারে—করেছে নিবিড়!
সানি্নধ্য, সুদুর্লভ, তবুও সদাই
এ-ছুতা ও-ছুতা করি বিক্ষোভ মেটাই।
গাছের ডালেতে মাখি কাঁঠালের আঠা।
কখনো সখনো ধরি শালিক টিয়াটা।
কুড়ানিকে দিতে গেলে করে প্রত্যাখ্যান
“আমি কি অহনো আছি কচি পোলাপান।”
অভিমানে ভরে বুক। পারি না কসাতে
সেদিনের মতো চড়, অথবা শাসাতে।।
৩
ছুটিতে ফিরিলে দেশে কুড়ানি-জননী
আশীর্বাদ বরষিয়া কন—“শোন মণি,
কুড়ানি উনি্নশে পরে, আর রাহি কত?
হইয়া উঠতেয়াছে মাইয়া পাহাড় পর্বত।”
“সুপাত্র দেহুম”—কহি দিলাম আশ্বাস
চোরাচোখে মিলিল না দরশ আভাস।
ম্লানমুখে, নতশির, ফিরি ভাঙা বুকে,
হঠাৎ শুনিনু হাসি। তীক্ষন সকৌতুকে
কে কহিছে—“মা তোমার বুদ্ধি তো জবর!
নিজের বৌয়ের লাইগা কে বিসরায় বর?”
সহসা থামিয়া গেল সৌর আবর্তন,
সহসা সহস্র পক্ষী তুলিল গুঞ্জন!
সহসা দক্ষিণা বায়ু শাখা দুলাইয়া
সব কটি চাঁপাফুল দিল ফুটাইয়া।।
🙂 🙂
বড়ই কঠিন লাগিলো পড়িয়া...
🙁 🙁
সফল পরিণয়, অসাধারণ একখানা কবিতা। মনে বড় আশা জাগিল পাঠ করিয়া। কালে কালে তো অনেকগুলো বসন্ত গড়িয়ে গেল, কুড়ানিরা যদি একবার খট্টাইশ, বান্দর বলিয়া সম্বোধন করিত :dreamy: :dreamy: ।
:salute: মণীশ ঘটককে।
অনটপিকঃ দিঠি মানে কি??
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
দিঠি মানে পিঠ ......
গোধুলী কথন কোথায় ???? কাহিনীটা মর্মস্পর্শী দেখে তোমাকে লেট করার পাঙ্গাইতে পারতেসিনা। কিন্তু এইভাবে অপেক্ষা করায়ে রাখাও কিন্তু ঠিক না।
আমি ঐটার শেষ পর্ব টানতে গিয়ে একটু হিমসিম খাচ্ছি, ঠিক বুঝতে পারছি না কিভাবে এগোবো, খানিকটা লিখে রেখে দিয়েছি, আজকে শেষ করে দেব ভাইয়া।
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
ভাইয়া দিঠি মানে মনে হয় চোখ। একটু চেক করবেন? ছোট বেলার একটা কবিতা মনে পড়ে এই শব্দ শুনে
মাগো আমি বিদেশ থেকে দিচ্ছি তোমায় চিঠি
কেমন আছ জানতে চায়,দেখতে চায় দিঠি
এই টাইপের। এনিওয়ে আমার ভুল হতে পারে।
না তোমার টা ঠিক আছে ...... দিঠি মানে দৃষ্টি ......... ভুল ধরিয়ে দেবার জন্যে ধন্যবাদ কামরুল .........
দিঠি -- শব্দের অর্থ হলো --- দৃষ্টি
কাউরে কি আম জাম পেড়ে খাইয়েছ? এমনি এমনি তোমারে খাট্টাইশ বান্দর কইতে যাইব কার এত ঠেকা পড়ছে।
কুড়ানি লাগবোনা আমিই তোরে খাট্টাইশ,বান্দর,গণেশ,মদন,মফিজ,গব্বর সিং,আঁতেল ......(সেন্সর্ড) কইয়া ডাকলাম-আরো শুনতে চাইলে আওয়াজ দিছ :grr: :grr:
😉 😉 😉
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
সুন্দর ......।।
শেষ চার লাইনের মত সুন্দর প্রকাশ আমি খুব কম দেখেছি!
মঈনুল ভাই, আপনার জন্যে একটা লিংক। 🙂
www.tareqnurulhasan.com
:)) :)) :)) :)) :)) :)) :)) :))
জটিল !!!!!! ......... যাক আমার ফ্যান্টাসি পুরোপুরি পুরন করেছে এইরকম তৃতীয় জুটি দেখার সৌভাগ্য হলো .........
তোমাদের দুজনকেই আমার পক্ষ থেকে অভিনন্দন ...... :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:
দুর্দান্ত কবিতা
🙁 মূর্খের প্রশ্ন-মনীশ ঘটক কি এপার বাংলার লোক ছিলেন?ভাষাটা দুর্দান্ত লেগেছে
মণীশ ঘটক সম্পর্কে তেমন কিছু একটা পাইনি। তবে তাঁর মেয়ে মহাশ্বেতা দেবী (জটিল কিছু উপন্যাস আছে এনার) সম্পর্কে পড়েছি, মহাশ্বেতা দেবী ঢাকাতে জন্মগ্রহন করেন এবং দেশ বিভাগের পরে কলকাতা চলে যান। আমার ধারনা মণীশ ঘটকও এপার বাংলাতেই জন্মেছেন।
মহাশ্বেতা দেবী মানে অরণ্যের অধিকার,হাজার চুরাশির মা-সেই মহাশ্বেতা দেবী!!!কন কি!!!!!তাই তো কই মুরগি পানি খায় মুতে না ক্যান(কপিরাইট-টুশকি ভাই)-এই মহিলা এত্ত বস ক্যামনে!
মইনুল ভাই, অনেক ধন্যবাদ কবিতাটা শেয়ার করার জন্য।
অসাধারণ লেগেছে কবিতাটা। প্রিয়তে যোগ করে নিলাম।
ইস আমারে কেউ খাট্টাইশ বান্দরো কইলো না, আমার আম জাম কিছুই খাইলোও না।
জীবন বৃথা হয়ে গেল রে বান্দরী 🙁
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ভাবীকে কবিতাটা পড়তে দিয়েন বস। হয়তো উনি আপনার দুঃখ কিছুটা ঘোচাতে পারবেন ......
ঐ 😀
There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx
"দিঠি" শব্দের মানে "দৃষ্টি" ।
মণীশ ঘটক "কল্লোল" যুগের কবি । কল্লোল পত্রিকায় নজরুল লিখতেন । অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের "কল্লোল যুগ" বইয়ে রবীন্দ্র-পরবর্তী কবিদের বিবরণ ধরা আছে । মণীশ ঘটক হলেন চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটকের দাদা । মণীশ ঘটকের কন্যা মহাশ্বেতা দেবী ।
মণীশ ঘটক "যুবনাশ্ব" ছদ্মনামে উপন্যাস লিখতেন । তাঁর "পটলডাঙার পাঁচালী" একটি বিখ্যাত উপন্যাস । তিনি পূর্ববঙ্গের সন্তান ।
অল্প কথায় খুব সুন্দর করে আপনি অনেক কিছু বলে গেলেন। আপনার মন্তব্যটি আমার ভালো লেগেছে।
খুব সুন্দর একটা কবিতা পড়লাম। সখ্যতা-প্রণয়-পরিণয়, জীবনের পথ পরিক্রমায় এই তিনটি ধাপের কিছু সহজ সরল অনুভূতি চমৎকারভাবে ব্যক্ত হয়েছে মণীশ ঘটকের "কুড়ানী" কবিতায়। কবিতাটির ভাষা আমার খুব ভালো লেগেছে। শেষ চারটি পংক্তি অসাধারণ, অনবদ্য!
মন্তব্যগুলো থেকেও অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। কবিতাটি আমি ফেইসবুকে শেয়ার করলাম।