এলোমেলো-৪: নাম ছিল না

১.
সকালে এলার্মের শব্দে ধরফর করে ঘুম থেকে উঠি। তারপর বিরক্ত মুখে বাথরুমের দিকে পা বাড়াই। বিরক্তির সেই যে শুরু, তা আর যেন থামতেই চায় না! অফিসে আসতেও বিরক্ত লাগে। সেই সিস্টেম থেকে ডাটা নেয়া, ডাটার উপর কোয়েরী লেখা, পার্ফরমেন্স ট্রেন্ড এনালাইসিস করা, আজাইরা সব মিটিং করা- আর কত! আমার গ্রুপ মেম্বাররা এই ডিপার্টমেন্টে নতুন। তাদেরকে মাঝে মধ্যে টুকটাক কাজ বুঝিয়ে দিতে হয়। এইটা করতেও কেন জানি এখন বিরক্ত লাগে। ইচ্ছে করে চিৎকার দিয়ে বলি, “আমি কিচ্ছু বুঝাতে পারব না, আমার কিচ্ছু ভালো লাগেনা”! আমি মুখে হাসি নিয়ে ওনাদের কাজ বুঝিয়ে দেই। আর কত যে
অভিনয় করতে হবে! মাঝে মধ্যে ভয় লাগে অভিনয়টা না আমার আমিকে গ্রাস করে ফেলে!

২.
গ্রীষ্ম মাত্র শেষ হল। কিন্তু আম-কাঠালের মৌসুম এখনও শেষ হয়নি। বাসায়ও আমের মৌসুম চলতেছে। সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাসায় ফিরলে নাস্তায় আম দেয় আম্মু। রাতে ভাত খাওয়ার পর আমের জুস। তারপর গেম খেলি আমসত্ব চাবাতে চাবাতে। এই বেহেশতী ফলটাকে আমাদের জাতীয় ফল করলে খুব খুশী হতাম।

৩.
অনেকদিন ধরেই গল্প লিখতে ইচ্ছা করছে, কিন্তু লিখতে পারছি না। এটার জন্য অবশ্য আলস্যও অনেকটা দায়ী। মাথায় আইডিয়া একটা আছে। কিন্তু ঐটার প্রথম দুই-একটা লাইন ছাড়া আর কিছু মাথায় আসতেছে না। গল্পটা কিভাবে আগাবে বা কিভাবে শেষ হবে তারও কোন ক্লু পাচ্ছি না। শালার দুনিয়ায় দেখি প্রচুর গিয়ানজাম………

৪.
আমার ওয়েলকাম টিউন ছিল ১০-১২টার মত। সেইদিন কি মনে করে দিলাম সবগুলাকে ডিলিট করে। কি আছে দুনিয়ায়! কোন ওয়েলকাম টিউন না থাকলেও আবার কেমন যেন লাগে। আমি অর্ণবের চরম ভক্ত। তাই, ওর পাঁচটা গান বাছাই করে ফেললাম আমার ওয়েলকাম টিউন লিস্টের জন্য। অর্ণবের শেষ যেই গানটা সবচেয়ে বেশী শুনছি সেটা হল “গুরু’স অফ লাভ” এলবামের “নাম ছিল না” গানটা। অফিস-বাসা সবজায়গায় সারাক্ষণ শুনতে থাকি এই গান। এখানে এই গানের ইউটিউব ভিডিওটাও দিয়ে গেলাম, গানের লিঙ্ক আপাতত দেয়া যাচ্ছে না।

জানি জীবনের পিছন ফিরে তাকানোর মত সময় আমার এখনও আসেনি, কিন্তু ভুল করে যখন তাকাই তখন বুঝতে পারি, “আসলেই! তোমার দেয়া আমার কোন নাম ছিল না”।

৭,২০৬ বার দেখা হয়েছে

৯৩ টি মন্তব্য : “এলোমেলো-৪: নাম ছিল না”

  1. জিহাদ (৯৯-০৫)

    তানভীর ভাইয়ের দিনলিপি কতদিন পর! :hug:

    নাম ছিলনা গানটা আমারও জোস লাগে। খালি কেউ এখনো কোন নাম দিলোনা ভাবতেই মন্টা যা একটু খারাপ হয়! 🙁

    অফটপিক: রবিন ভাই কি একটু মেসেঞ্জারে আসতে পারবেন? O:-)


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
  2. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    ভালো লাগলো তানভীর .........
    আসলেই মাঝে মাঝে কাজকর্ম সব বিরক্ত লাগে ..।......
    অফিসে আছি দেখে গানটা শুনতে পারতেসি না ।
    নামের ব্যাপারটা বুঝতেসি না ......... কেউ বুঝায়া দাও ......

    জবাব দিন
  3. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    দিনলিপি টাইপের লেখা খুব ভাল লাগে কেমন আপন আপন লাগে লেখককে। দিনলিপি পড়লেই আমার লেখকের সাথে দেখা করার ইচ্ছে জাগে কেন জানি। ভাইয়া দেশে আসলে দেখা করব তখন যেই মৌসুম সেটা খাওয়াবেন।
    অ।টঃ সিসিবিতে ফেইসবুকের কথাবার্তার ব্যাঞ্চাই মাথার উপর দিয়ে যায় ধরতে পারি না।

    জবাব দিন
  4. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    পড়ে বেশ ভাল লাগলো :hatsoff: :hatsoff: 😡

    এই বেহেশতী ফলটাকে আমাদের জাতীয় ফল করলে খুব খুশী হতাম।

    :thumbup: :thumbup:

    আমি অর্ণবের চরম ভক্ত

    :thumbup: :thumbup:


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  5. আর কত যে অভিনয় করতে হবে! মাঝে মধ্যে ভয় লাগে অভিনয়টা না আমার আমিকে গ্রাস করে ফেলে!

    যদিও এখনো চাকরী জীবনে যাই নাই, কিন্তু এই কথাটা আমার এখনই বলতে খুব ইচ্ছে করে। কেমন যেন মনের কথাটা খুঁজে পেলাম এইখানে।

    জবাব দিন
  6. সামিয়া (৯৯-০৫)

    আমাদের তানভীর ভাই কোন এককালে বলসিলেন উনি নাকি লিখতে পারে না :khekz: :khekz:
    গানটা মোটামোটি আধা ঘন্টা ধরে বাফার করলাম, এরপর ভুলে কুটুস করে উইন্ডোটা কেটে দিলাম 🙁

    জবাব দিন
  7. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    ফাঁকিবাজ তানভীর অনেকদিন পর লেখা দিছে 😉
    পোলাটা কত সুন্দর লেখে, কিন্তু কেন জানি লেখতেই চায়না 😡
    . নাম ছিলোনা আম ছিলোনা কইয়া এখন আর লাভ নাই, নিজে নাম দিয়া আম পাইড়া নিয়া আসতে হবে, এই ছাড়া রাস্তা নাই। 😛

    অফিস থাকলে ভাল লাগেনা, আবার অফিসে না গিয়ে বাসায় চুপচাপ বসে থাকতেও ভাল লাগেনা

    আমি তাইলে অদ্ভুত না এক্কেরেই 😀 কারণ অফিসে না গিয়ে বাসায় চুপচাপ বইসা থাকতে আমার বেশ ভাল্লাগে :grr:
    তানভীর, কামরুলরে সাথে নিয়া গিয়া তিন প্রহরের বিল দেইখা আসিস 😀


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।