রমজানের স্মৃতি – ১

ঠিক কত বছর বয়সে রমজানের প্রথম রোযাটা রেখেছিলাম, তা আজ সঠিক মনে নেই। অনুমান করি, ৬/৭ বছর হবে। আরো আগে থেকেই এ ব্যাপারে উৎসাহী ছিলাম, কিন্তু আম্মা রাখতে দেন নি। মনে আছে এখনকার মত বড় দিনেই প্রথম রোযাটা রেখেছিলাম। দুপুর পর্যন্ত ভালই ছিলাম, তার পর থেকে দিন আর কাটছিল না। ঘড়ি দেখতে দেখতে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘুম থেকে উঠে দেখি ইফতারের সময় আসন্ন। সাথে সাথেই প্রসন্ন বোধ করতে শুরু করলাম,

বিস্তারিত»

রাধার প্রাণে কত ব্যাথা

“তুমি বুঝবে তখন নারীর বেদন
রাধার প্রাণে কত ব্যথা”

ইদানিং “ফেমিনিজম এবং কম্পারেটিভ লিটারেচার” নিয়ে কিছু একাডেমিক রিসার্চের কাজ করছি। মানুষের উপরে তার একাডেমিক চর্চার বেশ প্রভাব পড়ে। রিলেটেড যে কোন জিনিসই বেশ ভাবায়। আর মাথাটাও যেমন! চিন্তাগুলো ঘুরতেই থাকে, ঘুরতেই থাকে। এই যেমন, কিছুক্ষণ আগে আমার এক পুরোনো সিনিয়র ছাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা কবিতা শেয়ার করেছে। (আমি ইদানিং ছাত্র-ছাত্রী সকলকে নির্বিশেষে “ছাত্র” বলেই সম্বোধন করি,

বিস্তারিত»

শিক্ষকের মৃত্যু নেই

মানুষের মৃত্যু আছে। শিক্ষকের কি মৃত্যু আছে? মনে হয় না।

একবার আমার এক শিক্ষক আমার বর্তমান কর্মস্থলে শিক্ষক নিয়োগের ইণ্টারভিউ-এ এক্সটার্নাল সাব্জেক্ট এক্সপার্ট হিসেবে এসেছিলেন। রেজিস্ট্রার অফিসে বসেছিলেন। সন্ধ্যার পরে সিলেকশন বোর্ড বসবে। আমি বিকেলে অফিস আওয়ারের পরে রেজিস্ট্রার অফিসে গেলাম তাঁর সাথে দেখা করতে। কুশালাদি বিনিময়ের এক পর্যায়ে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি মাহবুব!! পড়াতে টড়াতে পার কিছু?” আমি তো বেশ হতবাক হয়ে গেলাম।

বিস্তারিত»

“সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে … সহজ কথা যায় না বলা সহজে”

আচ্ছা, “ম্যানার্স” কি জিনিস? খায়? নাকি, মাথায় দেয়? ছোটবেলায় গুড ম্যানার্স, ব্যাড ম্যানার্স বুঝতাম না, শুধু “ম্যানারিজম” কথাটা নানান জায়গায় শুনে তার সাথে পরিচয় হয়েছিল। তাকে চিনেছি আরো পরে যখন জানলাম ম্যানার্স আর ম্যানারিজম এক নয়। আবার এও জানলাম ব্যাড ম্যানার্স আর ম্যানারিজমও নাকি হুবহু একই বিষয় নয়।

যাকগে, বছর বিশেক মাষ্টারি করার পরে নাকি কোর্টে আর স্বাক্ষী নেয় না। আমার হয়েছে পনেরো বছর।

বিস্তারিত»

স্মৃতিকাতরতাঃ একটি অপ্রেরিত চিঠি

পাখি,
আমার এখানে এখন দুপুর তিনটে বাজে। তোমার ওখানে রাত তিনটে। আমাকে এ সময় চিরাচরিত দিবানিদ্রায় পেয়ে বসে। আজও আমার দু’চোখ ভরে ঘুম নেমে আসছে। তুমিও এখন এই মধ্যরাতে নিশ্চয়ই গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। হয়তো কিছু স্বপ্ন তোমায় ঘিরে রেখেছে, হয়তো নয়। এই সেদিনও এ সময়ে তুমি আমার সাথেই ঘুমাতে, আমার ঘাড়ে কিংবা বুকে মাথা রেখে। আমি গান শুনতে শুনতে ঘুমাতে ভালবাসি, তুমিও। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো,

বিস্তারিত»

অল্প কথার গল্পঃ সবুজের শার্ট

সবুজের পরিবারটা ঠিক স্বচ্ছলও ছিল না, আবার অভাবীও ছিল না। কঠোর নিয়ম কানুন আর পই পই হিসেব নিকেশের মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত সংসারে সে বড় হয়েছে। মা বাবা কিংবা বড় ভাইবোন কোন কিছু কেনাকাটা করার জন্য যদি তাকে কোন অর্থ দিতেনও, খরচ শেষে তারা তার পুংখানুপুংখ হিসেব নিতেন। ঈদে পর্বে নতুন জামা কাপড় সে পেত ঠিকই, কিন্তু সব সময় তা নিজের পছন্দ অনুযায়ী হতোনা। এ নিয়ে অবশ্য সবুজের তেমন কোন দুঃখবোধ ছিল না,

বিস্তারিত»

‘Last In, First Out’

ছোটবেলায় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার পর আমরা প্রায় প্রতি বছরই নানাবাড়ী, দাদাবাড়ী বেড়াতে যেতাম। উভয়বাড়ী উত্তরবঙ্গে হওয়ার কারণে আমরা ট্রেনেই বেশী যাওয়া আসা করতাম। খুবই আনন্দের ছিল এ জার্নিটা। তখন সারাদিনে ঢাকা থেকে মাত্র দুটো ট্রেন উত্তরবঙ্গে যেত, একটা সকাল ৮ টার দিকে ছাড়তো, নাম ১১ আপ দ্রুতযান এক্সপ্রেস। অপরটা রাত ১১টায়, নাম ৭ আপ নর্থ বেঙ্গল মেইল। প্রথম প্রথম ট্রেনগুলো নারায়নগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু করতো,

বিস্তারিত»

একটি উচ্ছ্বল প্রাণের ঊর্ধ্বারোহণঃ

Friends at a funeral

আমার বন্ধু জামান, অনেক প্রতিভা ও গুণের অধিকারী। ওর সব গুণের চেয়ে আমার বিবেচনায় সবচেয়ে বড় যে গুণটি সেটি হলো শত প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও ধীর স্থির এবং প্রতিক্রিয়াহীন থাকার সক্ষমতা। গত কয়েক বছর ধরে জানি যে ক্রমাগতভাবে ওর উপর দিয়ে নানা রকমের ঝড় ঝঞ্ঝা বয়ে চলেছে। প্রথমে ওর বড়ভাই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে কয়েকবার সিঙ্গাপুরে যাওয়া আসা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।

বিস্তারিত»

অসুখের ছবি-

এবারে একেবারে জমকালো ঠাণ্ডা পড়েছে মেলবোর্নে।
এইটুকু লিখে মনে হলো, প্রতি বছরই কি এরকমই লিখি? নাকি এবারের ঠাণ্ডা আসলেই অনেক বেশি?
প্রতি বছরই মনে মনে প্রস্তুত থাকি, বছরে এক সপ্তাহ সর্দি-কাশি লাগিয়ে বসে থাকবো বাসায়। রুটিনের মত করেই। এবং ব্যস, ওই একবারই। তারপরেই আবার পুরো বছরের জন্যে মুক্তি।
কিন্তু এবারের ঠাণ্ডা আমাকে ভালোই বাগে পেয়েছে। মাসখানেক আগে সোনামুখ করে সপ্তাহখানেক সর্দি জ্বরে ভুগলাম,

বিস্তারিত»

নস্টালজিয়াঃ সময়ের পালাবদল

নস্টালজিয়াঃ সময়ের পালাবদল
আহমদ মাহবুব-উল-আলম
[আহমদ, সিসিআর, ১৯৮৮-’৯৪]

১। ক্যাডেট কলেজে ৭ম শ্রেণীতে পড়ার সময় ক্লাস টুয়েলভের বড় ভাইদের দানবাকৃতির মনে হতো। সময় গড়ালো, আমরা যখন টুয়েলভে, নতুন ইণ্টেক যখন ক্লাস সেভেনে ভীতু-ভীতু চেহারা নিয়ে ভর্তি হতো, ভাবতাম ওদের মা-বাবা-দের কোন দয়া-মায়া নেই, এইটুকুন বাচ্চাদের কেউ ক্যাডেট কলেজে পাঠায়!!

২। আমাদের সময়ের এক প্রিন্সিপাল ম্যাডাম (মিসেস প্রিন্সিপাল) একবার তাঁর বাসায় তিনশ ক্যাডেটকে একসাথে দাওয়াত করে শবে বরাতের হালুয়া রুটি খাইয়েছিলেন।

বিস্তারিত»

কি করে অকৃতজ্ঞ হও?

স্বপ্ন দেখে দিন যায়, আধো ঘুমে রাত যায়,
সহজেই ভুলে যাওয়া বেকুব অকৃতজ্ঞ মানুষের কাছে সম্মান পাওয়ার স্বপ্ন ,
দুই দিনের দুনিয়ায় অনেক ধনী হবার স্বপ্ন।

আবার অবাক চোখে তাকিয়ে দেখি 
জেগেও দেখি, ঘুমিয়েও দেখি

একবারও কি স্বপ্নে দেখেছি পালনকর্তার সামনে দাঁড়ানোর মুহূর্তের কথা !!

###

সন্ধ্যার ক্লান্ত ঘরে ফেরা মানুষ দেখি
এবং আয়েশরত মানুষ
সন্ধ্যা-প্রভাত ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ,

বিস্তারিত»

সোশ্যাল মিডিয়া কতখানি সোশ্যাল

“পুরানা যদিও কেচ্ছা তবু বর্বকত / সমঝাইয়া দিবে নয়া হাল হকিকত”
— সৈয়দ মুজতবা আলী, “গুরবে কুশতন শব ই আওয়াল” (মার্জার নিধন কাব্য), পঞ্চতন্ত্র

[ডিসক্লেইমারঃ এটা কোন গবেষণালব্ধ লেখা নয়; ব্যাপক পড়াশুনা করে ডেভলাপ করা কোন ড্রাফটও নয়। নিজের দেখা এবং অনুভব করা কিছু অভিজ্ঞতাকেই এখানে সাজানোর চেষ্টা করেছি মাত্র। আসলে দুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পারিবারিকভাবে বেশ ঘনিষ্ট এবং যথেষ্ট স্নেহভাজন একজনের ক্রমাগত “মন খারাপ করা” ফেসবুক স্ট্যাটাসের কমেণ্টের ঘরে কিছু কথা লিখতে গিয়ে তার সাথে ভার্চুয়াল কমিউনিকেশনেই কিছুটা বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়।

বিস্তারিত»

অনুকথনঃ আরিশা-বচন

মেয়েঃ (রাত ১০টা … রিডিং রুমে বাবাকে খুঁজে না পেয়ে …) মা, পাপা কোথায়?

মাঃ বাবা নিচে গেছে।

মেয়েঃ নিচে কোথায়? দাদুর ওখানে? নাকি গ্যারেজে?

মাঃ বাবা গ্যারেজে গেছে।

মেয়েঃ আমি পাপার কাছে যাব।

মেঃ বাবা তো কাজে গেছে। তুমি যাবে কেন?

মেয়েঃ (বেশ আশ্চর্য হয়ে …) আমি আমার ভালবাসার কাছে যাব না!!

বিস্তারিত»

সারাহার ভিন্নমাত্রাঃ “আঁই অন কিত্তাম”

ফেসবুকের সারাহা নিয়ে আমার আগের ব্লগটা লেখার পরে বেশ মজার কিছু অভিজ্ঞতা হলো। সোশাল মিডিয়ায় অধিকাংশ মন্তব্য এলো পুরোনো ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে, যাদের অন্তত হারানোর কোন ভয় নেই, অর্থাৎ পেনালাইজড হবার প্যানিক নেই। একজন তো পরামর্শ দিয়েই দিল, যাতে আমিও একটা সারাহা একাউণ্ট খুলে ফেলি; এটাও গ্যারাণ্টি দিল যে আমি নাকি পাঞ্চাশোর্ধ মন্তব্য পাব, যার মধ্যে কুড়িটার মত থাকবে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জনের জমে থাকা আক্ষেপের ঢালাও বাক্যবাণ,

বিস্তারিত»

পিছু ফিরে দেখাঃ “কামিজ কা বাটন টুটেঁ হ্যায়”….

১৯৭৫ সালের শেষের ক’টা দিন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সদ্য কমিশন লাভ করে ঢাকার একটা ইউনিটে যোগদান করেছি। পাকিস্তান প্রত্যাগত অফিসারদের দেশে ফিরিয়ে আনাতে তখন আবাসন সংকট চলছিল। জরুরী ভিত্তিতে আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য তখন সেনানিবাসের এখানে সেখানে “রূপসা” প্রকল্পের অধীনে কিছু ব্যাচেলর অফিসার্স কোয়ার্টার্স (বিওকিউ) তৈরী করা হয়েছিল। সদ্য বিবাহিত কিংবা ছোট পরিবারের জন্য দুই কক্ষ বিশিষ্ট কিছু ম্যারেড অফিসার্স কোয়ার্টার্সও নির্মিত হয়েছিল। ইটের হাল্কা গাঁথুনী,

বিস্তারিত»