পরশু সন্ধ্যায় হঠাত মোস্তফা (এমসিসি) ফোন দিলো “আম খাইতে যাবি?” আমিঃ “মানে?”
মানে হইলো তোহা (এমসিসি)এর গ্রামের বাড়িতে যাবার প্লান হচ্ছে আম খাবার জন্য। প্রায় বিশ জনের মতো রাজি হয়েছে যাবার জন্য।
এরকম চান্স কে মিস করে? চাকুরি করতে করতে বোরড হয়ে গেছি। এরকম চান্স পেলে ইদানিং মিস না করার চেষ্টা করি। ঠিক আছে যাবো বলে জানালাম………
গতকাল অফিস করে বিকালে গেলাম আহসান (এমসিসি) এর অফিসে একটা কাজে। যাওয়ার সাথে সাথে জানালো বাস রেডি ট্যুর এর জন্য। কিছুখন আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে গেলাম। ভাবলাম আজকে যেহেতু অনেক সকালে উঠতে হবে তাই বাসায় গিয়ে রেস্ট নেই। রাত ১০৩০ এ বস ফোন দিলেন। কি ব্যাপার ? বললেন, রেডি হ। আমি তোরে পিক করতে আস্তেছি। আমি তো অবাক? কোথায় যাবেন?
রিজেন্সী হোটেল এ ডিজে পার্টি আছে। ইন্ডিয়ার শিল্পী “হার্ডকোর ” আসবে। উনি নাকি ব্যাপক গান গায়।
কি আর করা। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে পার্টিতে গেলাম বসের সাথে। পার্টিতে খালি চিন্তা করতে থাকি সকাল ৭টায় বাসে রিপোর্টিং। যাইতে পারবো কি না কে জানে…………
পার্টি শেষ করে বাসায় ফিরলাম ভোর ৫ টায়। চিন্তা করলাম এখন আর ঘুমিয়ে কি হবে? ৭ টায় তো যেতে হবে। কিন্তু চিন্তা করলেই তো হবে না। শরীরেরও তো একটা ইচ্ছা আছে। সারারাত লাফালাফির ফলে গেলাম ঘুমিয়ে।হটাত ফোন ভাংলো ফোনের শব্দে। আরমান (এমসিসি) এর গালি “*লা, কতোখন ধরে ফোন দিচ্ছি। তাড়াতাড়ি কাকলি মোড়ে আয়, আমরা রওয়ানা দিচ্ছি ধানমন্ডি থেকে”। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে একটা সিএনজি কে প্রায় ডাবল টাকায় রাজি করাতে পারলাম……………
মূলত এটা আমাদের ব্যাচের এমসিসি পোলাপানের ট্যুর। অতিথি হিসাবে আমি আর ইমরান (সিসি আর)।তারপর পথে পথে কয়েকজন কে উঠানোর পর যখন কোরাম পূর্ন হলো তখন লিস্ট তা এরকমঃ
আরমান(এমসিসি)
তোহা (এমসিসি)আর ভাবী
মোস্তফা(এমসিসি)
মাহমুদ(এমসিসি)
আহসান(এমসিসি)
সাজ্জাদ(এমসিসি)
জহিরুল(এমসিসি) আর টুম্পা
মাজহারুল (এমসিসি)আর শার্লী
নাহিদ (এমসিসি)আর সোমা
মাহফুজুল (এমসিসি)আর ভাবি
রাকিব (এমসিসি)আর ভাবী
ইমরান (সিসি আর)
জাহিদুল (এমসিসি)
গাজীপুর এ পড়লাম বিশাল জ্যাম এ। অনেক্ষন লাগলো। তারপর এমসিসি এর সামনে দিয়ে এগিয়ে গেলাম তোহার গ্রামের দিকে। গ্রামের কিছুটা আগে নাকি ভ্যান এ যেতে হয়। তবু গরমের ভয়ে ভ্যান না নিয়ে আমাদের এসি বাস প্রায় ওদের বাড়ির কাছাকাছি গেলো।
গিয়েই বসলাম ওদের বাড়ির পেছনে গাছতলায় । সবই ভালো ছিলো খালি গরমটাই অস্তির করে তুললো। এমন সময় তোহা নিয়ে এলো ঠান্ডা লেবুর শরবত। আহা, সেই সময় সেটার কি স্বাদ। তারপর আমাদের উপর দিয়ে খাওয়ার ঝড় বয়ে গেলো। একের পর আম্ আর কাঠাল আস্তে লাগলো। খেতে খেতে সবাই টায়ার্ড হয়ে গেলো। অনেক পরিমানে আম আর কাঠাল খেয়ে সবাই একটু গ্রাম এ হাটতে বের হলাম। কিন্তু গরমে বেশি সুবিধা হলো না।
ফিরে এসে আমরা বস্লাম কার্ড নিয়ে। বেশ কিছুখন কার্ড খেলা হলো। কিন্তু বিবাহিত লোকজনের বউদের জন্য বেশিখন খেলা গেলো না। এরপর আস্লো লাঞ্চ এর পর্ব। আরেক গাছতলায় খিচুড়ি আর গরুর মাংস। জটিল…………।।
খেতে খেতে প্ল্যান করা হলো কিছুখন রেস্ট নিয়ে তারপর এমসিসি তে একটা ভিসিট দেয়া যায় ফেরার পথে। ফেরার সময় হলো আরেক মজার কান্ড। তোহা যখন অফার দিলো কেউ যদি কাঠাল নিতে চায় নিতে পারে। দেখা গেলো ব্যাচেলর রা কেউ নিবে না। আর বিবাহিত রা নিবে এবং কিছুখন পরে বিবাহিত যারা নিবে তারা কাঠাল ঘাড়ে করে বাসের দিকে রওয়ানা হলাম।
পথের মাঝে বাজার থেকে মাহমুদ,আহসান আর আরমান মিলে ২০ কেজি আরো আম কিনলো।
যাক বিকালের দিকে আসলাম এমসিসি তে। গেট এর গার্ড বেশ মুড নিয়ে কই যাবেন ইত্যাদি প্রশ্ন যথারীতি।শেষ পর্যন্ত ভিপি আর এডজুটেন্ট কে ফোন করে এইভাবে পারমিশন পাওয়া গেলো যে,
ভিপি স্যার বললেন এডজুটেন্ট যদি পারমিশন দেয় উনার আপত্তি নাই। তারপর এডজুটেন্ট কে ফোন করে বলা হলো ব্যাপারটা ভিপি স্যারের নলেজে আছে। উনি বললেই হবে।
তারপর কলেজে গিয়ে বাস্কেটবল গ্রাউন্ড, মাঠ, একাডেমিক ভবন সব জায়গায় ঘোরা হলো। শুক্রবার হওয়াতে সুবিধা হলো। আমি আর ইমরান ছাড়া সবাই এইখানে এইটা হইছিলো, এইখানের ওই গাছটা কই গেলো ইত্যাদিতে মেতে উঠলো।
তারপর কলেজ থেকে বের হয়ে আবার আড্ডা দিতে দিতে একটি জটিল দিন কাটিয়ে আবার রোবোটিক নগর জীবনে ফেরত আসলাম আমরা কয়েকজন নষ্টালজিক ক্যাডেট। ও হ্যা, আসার পথে উত্তরাতে মোস্তফার কাছে থেকে জোর করে চটপটি ফুচকা খাওয়া হয়েছে যার ফলে ওর হার্ট এট্যাক হয়েছে কিনা এটা এখনো খবর নেয়া হয় নাই।
(খুব টায়ার্ড থাকা এবং সারারাত না ঘুমিয়ে সারাদিন ঘুরে এসে সবার সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে না পেরে ব্লগ টা লেখার কারনে বিস্তারিত লেখা সম্ভব হলো না)
৩২ টি মন্তব্য : “দিনলিপি ০৩: হঠাৎ গরমে আম-কাঠাল ট্যুর”
মন্তব্য করুন
এত মজা কেন ভাই আপনার।হিংসিত।
৯ফিট ওয়াল ছোট ছোট লাগে এইটা মনে হয় ৬ ফিট।
আমারও তাই মনে হয়......... 😀 😀
😀
আমিও আম- কাঠাল খাপো :(( :((
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
কপিরাইট কই? x-(
যার জন্য চুরি করি, সেই বলে চোর। কপিরাইট দিলাম না এই ভেবে যে লোকে মনে করবে আপনি খাওয়া দাওয়ার ট্রেডমার্ক, আর সে আপনি কি না... 😕 😕 পারলেন, এমন করতে পারলেন :bash:
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
:teacup: বাদ দিয়ে আম কাঠাল এর দিকে নজর পড়লো নাকি......??? :khekz: :khekz:
=)) =)) =))
দেশে আয়। তারপর আম-কাঠাল খাইস।
:clap:
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
জব্বর হইছে.........।। :hatsoff: :hatsoff:
আমিও টুরে যাপো :((
x-( কপিরাইট কই?
আরে মিস করলাম :))
আয় হায় :)) গিয়ে 😀 দিছি :bash:
ম্যান :(( টা হবে :just: :bash:
😀 :khekz: কিরে আম কাঠাল দেইখা মাথা গরম হইলোনি 😛
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
নেক্সট টাইম
লেখা পড়িয়া এবং ছবি দেখিয়া বহুত আফসোস হইলো।
ভবিষ্যতে ট্যুর মারিলে কিংবা এম সি সি তে যাওয়ার প্ল্যান থাকিলে বড় ভাইদেরও আওয়াজ দিও কইলাম।
😀
সৈয়দ সাফী
জ্বি ভাইয়া
অনেক দিন পর অনেক বড় ভাইদেরকে এক সাথে দেখলাম,কলেজ থেকে চলে যাওয়ার পর re-union এও বোধ হয় এতো জন ছিল না! :clap:
আহেই জানতাম। খোমাখাতায় রিবিন ভিই আপডেট দিচ্ছিলেন। আমরাও আম আর কটঠাল খাপো :((
খুব মাস্তি করলি রে!!
এই তো রে
robin, likha pore khub moja paisi. but tmi zoks er spelling bhul korso..ota hobe zohurul..mofzol ek kothin chiz re bhai! jotil vdo hyse,dekhabo ne pore..
ar married der dosh dao khali,na? amr jonnoi na masti'r pocket khoshano gelo..ar kathal jeta niye ashsilam otao darun chhilo 🙂
খালি তো পাবলিককে খসায়ে গেলা, তুমি কবে খাওয়াচ্ছ?? 😛 😛
public re khoshanor mojai alada..ar masti! o to puran dhakar jamai! o khawabe na to ke khawabe?!
ar ja gorom porse..er modhhe tomar rich food khawa ekdom thik na tanvir... 😛
eita europe e vul na :)) (as per mahfuzul)
ব্যাপক দৌড়ের উপরে আছি, আর এই টাইমে আম কাঠাল খিচুড়ির লোভনীয় পোস্ট দেয়ার লাইগা রবিনের এসি বাস সহ ব্যাঞ্চাই 😡
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:)) :))
কি রে আজ যাবি নাকি 😉
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
নারে আজকে না। রবিবারে একটু দৌড়ের উপরে থাকি অফিসে।