দিনলিপি ০৩: হঠাৎ গরমে আম-কাঠাল ট্যুর

পরশু সন্ধ্যায় হঠাত মোস্তফা (এমসিসি) ফোন দিলো “আম খাইতে যাবি?” আমিঃ “মানে?”
মানে হইলো তোহা (এমসিসি)এর গ্রামের বাড়িতে যাবার প্লান হচ্ছে আম খাবার জন্য। প্রায় বিশ জনের মতো রাজি হয়েছে যাবার জন্য।
এরকম চান্স কে মিস করে? চাকুরি করতে করতে বোরড হয়ে গেছি। এরকম চান্স পেলে ইদানিং মিস না করার চেষ্টা করি। ঠিক আছে যাবো বলে জানালাম………
গতকাল অফিস করে বিকালে গেলাম আহসান (এমসিসি) এর অফিসে একটা কাজে। যাওয়ার সাথে সাথে জানালো বাস রেডি ট্যুর এর জন্য। কিছুখন আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে গেলাম। ভাবলাম আজকে যেহেতু অনেক সকালে উঠতে হবে তাই বাসায় গিয়ে রেস্ট নেই। রাত ১০৩০ এ বস ফোন দিলেন। কি ব্যাপার ? বললেন, রেডি হ। আমি তোরে পিক করতে আস্তেছি। আমি তো অবাক? কোথায় যাবেন?
রিজেন্সী হোটেল এ ডিজে পার্টি আছে। ইন্ডিয়ার শিল্পী “হার্ডকোর ” আসবে। উনি নাকি ব্যাপক গান গায়।
কি আর করা। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে পার্টিতে গেলাম বসের সাথে। পার্টিতে খালি চিন্তা করতে থাকি সকাল ৭টায় বাসে রিপোর্টিং। যাইতে পারবো কি না কে জানে…………
পার্টি শেষ করে বাসায় ফিরলাম ভোর ৫ টায়। চিন্তা করলাম এখন আর ঘুমিয়ে কি হবে? ৭ টায় তো যেতে হবে। কিন্তু চিন্তা করলেই তো হবে না। শরীরেরও তো একটা ইচ্ছা আছে। সারারাত লাফালাফির ফলে গেলাম ঘুমিয়ে।হটাত ফোন ভাংলো ফোনের শব্দে। আরমান (এমসিসি) এর গালি “*লা, কতোখন ধরে ফোন দিচ্ছি। তাড়াতাড়ি কাকলি মোড়ে আয়, আমরা রওয়ানা দিচ্ছি ধানমন্ডি থেকে”। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে একটা সিএনজি কে প্রায় ডাবল টাকায় রাজি করাতে পারলাম……………
মূলত এটা আমাদের ব্যাচের এমসিসি পোলাপানের ট্যুর। অতিথি হিসাবে আমি আর ইমরান (সিসি আর)।তারপর পথে পথে কয়েকজন কে উঠানোর পর যখন কোরাম পূর্ন হলো তখন লিস্ট তা এরকমঃ
আরমান(এমসিসি)
তোহা (এমসিসি)আর ভাবী
মোস্তফা(এমসিসি)
মাহমুদ(এমসিসি)
আহসান(এমসিসি)
সাজ্জাদ(এমসিসি)
জহিরুল(এমসিসি) আর টুম্পা
মাজহারুল (এমসিসি)আর শার্লী
নাহিদ (এমসিসি)আর সোমা
মাহফুজুল (এমসিসি)আর ভাবি
রাকিব (এমসিসি)আর ভাবী
ইমরান (সিসি আর)
জাহিদুল (এমসিসি)
গাজীপুর এ পড়লাম বিশাল জ্যাম এ। অনেক্ষন লাগলো। তারপর এমসিসি এর সামনে দিয়ে এগিয়ে গেলাম তোহার গ্রামের দিকে। গ্রামের কিছুটা আগে নাকি ভ্যান এ যেতে হয়। তবু গরমের ভয়ে ভ্যান না নিয়ে আমাদের এসি বাস প্রায় ওদের বাড়ির কাছাকাছি গেলো।
গিয়েই বসলাম ওদের বাড়ির পেছনে গাছতলায় । সবই ভালো ছিলো খালি গরমটাই অস্তির করে তুললো। এমন সময় তোহা নিয়ে এলো ঠান্ডা লেবুর শরবত। আহা, সেই সময় সেটার কি স্বাদ। তারপর আমাদের উপর দিয়ে খাওয়ার ঝড় বয়ে গেলো। একের পর আম্ আর কাঠাল আস্তে লাগলো। খেতে খেতে সবাই টায়ার্ড হয়ে গেলো। অনেক পরিমানে আম আর কাঠাল খেয়ে সবাই একটু গ্রাম এ হাটতে বের হলাম। কিন্তু গরমে বেশি সুবিধা হলো না।
ফিরে এসে আমরা বস্লাম কার্ড নিয়ে। বেশ কিছুখন কার্ড খেলা হলো। কিন্তু বিবাহিত লোকজনের বউদের জন্য বেশিখন খেলা গেলো না। এরপর আস্লো লাঞ্চ এর পর্ব। আরেক গাছতলায় খিচুড়ি আর গরুর মাংস। জটিল…………।।
খেতে খেতে প্ল্যান করা হলো কিছুখন রেস্ট নিয়ে তারপর এমসিসি তে একটা ভিসিট দেয়া যায় ফেরার পথে। ফেরার সময় হলো আরেক মজার কান্ড। তোহা যখন অফার দিলো কেউ যদি কাঠাল নিতে চায় নিতে পারে। দেখা গেলো ব্যাচেলর রা কেউ নিবে না। আর বিবাহিত রা নিবে এবং কিছুখন পরে বিবাহিত যারা নিবে তারা কাঠাল ঘাড়ে করে বাসের দিকে রওয়ানা হলাম।
পথের মাঝে বাজার থেকে মাহমুদ,আহসান আর আরমান মিলে ২০ কেজি আরো আম কিনলো।
যাক বিকালের দিকে আসলাম এমসিসি তে। গেট এর গার্ড বেশ মুড নিয়ে কই যাবেন ইত্যাদি প্রশ্ন যথারীতি।শেষ পর্যন্ত ভিপি আর এডজুটেন্ট কে ফোন করে এইভাবে পারমিশন পাওয়া গেলো যে,
ভিপি স্যার বললেন এডজুটেন্ট যদি পারমিশন দেয় উনার আপত্তি নাই। তারপর এডজুটেন্ট কে ফোন করে বলা হলো ব্যাপারটা ভিপি স্যারের নলেজে আছে। উনি বললেই হবে।
তারপর কলেজে গিয়ে বাস্কেটবল গ্রাউন্ড, মাঠ, একাডেমিক ভবন সব জায়গায় ঘোরা হলো। শুক্রবার হওয়াতে সুবিধা হলো। আমি আর ইমরান ছাড়া সবাই এইখানে এইটা হইছিলো, এইখানের ওই গাছটা কই গেলো ইত্যাদিতে মেতে উঠলো।
তারপর কলেজ থেকে বের হয়ে আবার আড্ডা দিতে দিতে একটি জটিল দিন কাটিয়ে আবার রোবোটিক নগর জীবনে ফেরত আসলাম আমরা কয়েকজন নষ্টালজিক ক্যাডেট। ও হ্যা, আসার পথে উত্তরাতে মোস্তফার কাছে থেকে জোর করে চটপটি ফুচকা খাওয়া হয়েছে যার ফলে ওর হার্ট এট্যাক হয়েছে কিনা এটা এখনো খবর নেয়া হয় নাই।
(খুব টায়ার্ড থাকা এবং সারারাত না ঘুমিয়ে সারাদিন ঘুরে এসে সবার সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে না পেরে ব্লগ টা লেখার কারনে বিস্তারিত লেখা সম্ভব হলো না)

বাসে মাহফুজুল এর বক্তব্য

বাসে মাহফুজুল এর বক্তব্য


এই জায়গার নামটি জটিল

এই জায়গার নামটি জটিল

লেবুর শরবত দিয়ে শুরু

লেবুর শরবত দিয়ে শুরু

বিশাল আম ভান্ডারের ছোট ঝলক

বিশাল আম ভান্ডারের ছোট ঝলক

সিংগেল লাইনে আম খাওয়া

সিংগেল লাইনে আম খাওয়া

রোদে গ্রাম ভ্রমন

রোদে গ্রাম ভ্রমন

রোদে ঘুরতে ঘুরতে টায়ার্ড

রোদে ঘুরতে ঘুরতে টায়ার্ড

এইবার কাঠাল

এইবার কাঠাল

কার্ড খেলা যেটা ভাবিদের জন্য বেশিখন হয় নাই

কার্ড খেলা যেটা ভাবিদের জন্য বেশিখন হয় নাই

এইটার নাম জানা নাই, আম কে চূলায় জ্বাল দিয়ে করা

এইটার নাম জানা নাই, আম কে চূলায় জ্বাল দিয়ে করা

its lunch time

its lunch time

খাওয়ার মাঝেও ভাব

খাওয়ার মাঝেও ভাব

বিবাহিত দের কাঠাল বহন

বিবাহিত দের কাঠাল বহন

এমসিসি এর গেইটে

এমসিসি এর গেইটে

বয়েজ ইন বাস্কেটবল গ্রাউন্ড (এমসিসি)

বয়েজ ইন বাস্কেটবল গ্রাউন্ড (এমসিসি)

গার্লস ইন বাস্কেটবল গ্রাউন্ড (এমসিসি)

গার্লস ইন বাস্কেটবল গ্রাউন্ড (এমসিসি)

আরমানের এনার্জি এখনো ওটুট, ৯ ফিট ওয়ালে

আরমানের এনার্জি এখনো ওটুট, ৯ ফিট ওয়ালে

একাডেমিক এর পিছনে

একাডেমিক এর পিছনে

ইমরান আর আমি(নন-এমসিসি)

ইমরান আর আমি(নন-এমসিসি)

৩,১৯১ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “দিনলিপি ০৩: হঠাৎ গরমে আম-কাঠাল ট্যুর”

  1. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    লেখা পড়িয়া এবং ছবি দেখিয়া বহুত আফসোস হইলো।

    ভবিষ্যতে ট্যুর মারিলে কিংবা এম সি সি তে যাওয়ার প্ল্যান থাকিলে বড় ভাইদেরও আওয়াজ দিও কইলাম।
    😀


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।