ইকরাম মিয়া সিগারেট শেষ করে সশব্দে পাশের রাস্তায় থুতু ফেলল। গলার ভেতরটা শুকিয়ে আমসি। একটু পানি খাওয়ার জন্যে এদিক ওদিক তাকালো সে। মোড়ে চায়ের দোকানের পাশে বড় একটা ফিল্টারের গায়ে হেমন্তের নাতিশীতোষ্ণ রোদ প্রতিফলিত হচ্ছে। রোদের কারুকার্য দেখে সময় নষ্ট না করে সেদিকে হাটা দিল সে। ডিউটি শুরু হতে এখনও কিছুটা বাকী আছে। তাই কি করবে সে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না। ময়লা ড্রেনের পাশে নাম না জানা পোকাগুলোর অবিরাম অত্যাচারী সঙ্গীতে কটকটে রোদের আবহাওয়া অসহনীয় লাগছে তার কাছে।
বিস্তারিত»একঘেয়েমীতায়
মহাজাগতিক ইশারায়
মহাকাশে চলে গ্রহদের
অবিরাম প্রদক্ষিণ।
বাড়ন্ত বেলায় দেখি
প্রতিশ্রুতিময় সকাল,
ক্লান্ত দুপুর -অবসন্ন বিকেল,
একাকী সন্ধ্যা আর নির্জন রাত।
গল্প:ক্ষয়
(লোকালটকের একটি নিক নার্ভাস নাইন্টিজ এর ব্লগ টাইটেল দেখে গল্পটির প্লট আমার মাথায় আসে। তাই লেখাটা লোকালটক ওরফে ফিউশন ফাইভকে উৎসর্গ করলাম)
শাহবাগের মোড়ের আলম ভাইয়ের মুড়ি ভর্তা খেতে গিয়ে মরিচ চিবিয়ে ফেলল রফিক। ঝালে মুখে দাউদাউ করে জ্বলা আগুন আর চোখ দিয়ে নামা ফসফরাস মেশানো পানির দ্বিমুখী আক্রমনে দিশেহারা হয়ে রফিক এদিক ওদিক তাকালো। ফজলে নুর তাপসের চাদখানা মুখ দেখতে পেল। ইদানিংকার সুপারস্টার তাপসের চেহারা আগে কখোনো খেয়াল করে নাই।
বিস্তারিত»দিনলিপি – ৪: বমনার্ত সময়ে প্রেম আকড়ে মহাসমুদ্র পথে টিকে থাকা
বাসে করে যাচ্ছিলাম। অচল জনপদ সাঁই সাঁই করে জানালা ছুয়ে পেছনে পরে যায়, আর অস্তগামী অগ্নিকুন্ডটা তার যৌবন অতিক্রান্ত ঠোটপালিশ দেখিয়ে আদায় করতে চায় যেন সামান্য কিছু আকর্ষণ। ডিভানের নরম প্রেক্ষাপট নয়, বলধা গার্ডেনের কাঁটাবসনো ঝোপের পেছনে সামান্য স্থায়িত্বের কিছু অনুভুতিশূন্য শিশ্ন হলেই চলে যাবে তার। এ পৃথিবী হতে উঠেই গেছে ভালোবাসার স্পর্শ, শিঁড়দাড়ায় চুমু কিংবা স্তনের বোঁটায় ফোটা ফুলে অর্ঘ্য ঢালা, কেবল ডটেড কন্ডমে পর্দা করা নপুংসক শিশ্নই যথেষ্ঠ ঐ অস্তগামী সূর্যটার।
বিস্তারিত»জনৈক বেরসিকের বিটিভি ম্যাগাজিন দর্শন
আমাদের বাসায় টিভির আগমন ঘটেছিল আমার সৌজন্যে। সেসময় টিভি সবিশেষ ছিলো না। তাই টিভি দেখতে আমাকে নিয়ে যাওয়া হতো পাশের বাসায়। তৎকালীন নেসলে কোন এক বিজ্ঞাপনের বালক মডেলের সাথে গলা মিলিয়ে “হুমমম” না বলতে পারলে নাকি আমার প্রতিক্রিয়া হতো তীব্র। তার সাথে যোগ হলো সন্ধ্যা আট টায় আমার পিতার সাহেব বিবি গোলাম (এরশাদের আমলে সংবাদকে নাকি এই নামে বলা হতো) অনুষ্ঠানটি দর্শনের আগ্রহ। টিভি আসার পরে যা হোল আমাদের সব রিলেটিভ মিলে বেশ একটা ঘরোয়া পরিবেশে টিভি দেখা হতো।
বিস্তারিত»দাদু ভাইয়ের গপ্পো
দাদু ভাই… দাদু ভাই সুর তুলে ছুটে আসে
সাত বছর বয়েসী দাদু ভাইয়ের চোখের মনি।
আহলাদী কন্ঠে সবুজ শুধায় –
আজ কোন গল্প বলবে দাদু ভাই?
ডায়েরী লেখা থামিয়ে চোখ তুলে তাকান বৃদ্ধ।
একটু মুচকি হেসে উত্তর দেন-
কেন দাদা ভাই; ঐ যে সেবার যুদ্ধে গেলাম…সেই টা বলি?
এদিক-ওদিক মাথা নাড়ে সবুজ।
সেতো বলেছো দাদু ভাই।
ভালো আছি, ভালো থেকো
আমার রুম থেকে বেরিয়ে করিডোরে দাঁড়িয়ে চোখ দুটো সোজা করে তাকালে সারি বাঁধা ইউক্যালিপ্টাসগুলো চোখে পড়ে সবার আগে। ওরা এমনিতে খুব চুপচাপ। শুধু হঠাৎ হঠাৎ যখন বাতাস এসে চুরি করে গায়ে এসে আছড়ে পড়ে তখন আনন্দে ওরা মাথা নাড়ে ঝিরঝিরে পাতাগুলো নাড়িয়ে । আমার এমনিতেই সচরাচর কোন কাজ কাম থাকেনা। যখন কিছুই করার থাকেনা তখন চুপচাপ করিডোরে ইউক্যালিপটাসগুলোকে সামনে রেখে দাঁড়িয়ে থাকতাম। থাকতাম বলাই ভালো।
বিস্তারিত»বিচ্ছিন্ন আবেশ
অনুভূতিহীনতা অথবা তীব্র অনুভূতিপ্রবণতা কিংবা বিচ্ছিন্ন অনুভূতির অসংলগ্ন জালে আটকে গেছি আমি। সাধারণ ভাবনা চিন্তার উর্ধ্বে মনে হচ্ছে নিজেকে। আমার কাছে সময়ের হিসাব নেই ভেবে আমি আৎকে উঠি। আমি কোথায় ছিলাম কেমন করে এখানে আসলাম সে হিসাব গুলো থাকছে না। সেটার দরকার আছে কি এখন- পরিষ্কার হয়না। আমার কানের কাছে ক্রমাগত বোঁ বোঁ শব্দ বেজে যাচ্ছে। চোখ দিয়ে তাকিয়ে চারপাশ দেখার চেষ্টা করছি। একটা বদ্ধ রুমের মাঝে আছি আমি।
বিস্তারিত»আজহার উদ্দিনের মিষ্টি খাওয়া
রাতের চাদরে ঢাকা ঘুপচি গলির ভেতর একটা নিয়ন লাইট মৃত্যু যন্ত্রনায় কাপছে। ঘোলাটে আলো একবার জ্বলে উঠেই আবার নিভে যায় আর কিছুক্ষণের জন্যে আশে পাশের সরু রাস্তা, প্লাস্টারবিহীন নগ্ন ইটের খোপের মত টিনশেড, আর থকথকে নর্দমা নির্লজ্জের মত এই সামান্য আলোটুকু চুষে চুষে খেতে থাকে। দরিদ্র এলাকার ইট পাথরও হয়ত নিজ নিজ সমাজে শ্রেনী বৈষম্যের শিকার হয়ে ছোটজাত হয়ে যায়।
আজহার উদ্দিন আস্তে আস্তে প্যাডেল মারতে মারতে গলির প্রবেশ মুখের কাছে চলে এল।
বিস্তারিত»আমার প্রায় “আকসেনভ” হওয়ার গল্প
আকসেনভ লোকটার নাম মনে হতেই নিজের অজান্তে আমি শি্উরে উঠি। কেমন এক অজানা ভয় আমার শিড়দাঁড়া দিয়ে নেমে যায়। অথচ এই আকসেনভ বুড়ো আমার কাছে যে খুব বেশি ভয়ের ব্যাপার ছিল এ দাবি করাটা অযৌক্তিক হবে। বরং একটু খোলাসা করেই বলি আকসেনভ হচ্ছে খুব ছোট বেলায় পড়া তলস্তয়ের এক ছোট গল্পের চরিত্র। আপাতত এই বুড়োকে আমলে নেবার কোন কারণ না ঘটলেও তার নামটি আমার মনে বেশ স্থায়ী ছাপ ফেলে গেছে।
বিস্তারিত»দিনলিপি-৩ : ডানার জন্যে প্রার্থনা আর বেহেশতী মিথ্যা সুখের স্বপ্ন
উর্ধ্বাকাশ হতে রাত্রির সাগরে পরা পৃথিবীকে দেখায় নক্ষত্রের অলংকারে লজ্জাবতী আকাশের মত। উড়তে থাকি আর একে একে পেড়িয়ে যাই যত ছোট শরীরে বন্দী ক্ষুধা আর প্রবনতার রসায়ন,পৃথিবী জুড়ে বেহেশতী মুখোশ নেমে আসে।
আমরা এবং আমি’রা গুটানো বৃত্ত থেকে পরিধি হিসেবে যতটা আশ্বস্ত, কিন্তু ‘কেন’ রা ততটাই হামলে পড়ে বেয়াদপ সংশয়ের পথে। সমুদ্র বালুতে যত চন্দ্রাহত ক্লীবের আনাগোনা অথবা ‘এই আমি ভালো আছি’ তে কতটুকু উৎসারন হয় কবিতা আর মিথ্যা?
বিস্তারিত»কিছু কথা : রাজনীতি ও শিক্ষা
মানুষ রাজনৈতিক জীব। যিনি এই অসাধারণ কথাটি বলেছিলেন সেই মহামনীষীর নামটি এই মুহূর্তে মনে নেই। এ্যরিস্টটল সাহেব হতে পারেন। যাই হোক তাকে এই মুহূর্তে সামনে পেলে যে আমি মোটেও খুশি হব না, তা জোর গলায় বলতে পারি। কারণটা আর কিছু না, রাজনীতি। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সরকারি দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখে ভয় পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ক্যাডেট কলেজ ব্লগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম “আমি খুব ভয় পাই”
বিস্তারিত»দিনলিপি – ২ ঘাস খেয়ে গরু হওয়ার স্বপ্ন
গুজরাতের আগুন নিয়ে শোনা গল্প মাথার চারপাশে শীতলপাটি বসিয়ে আরামে আয়েশে নিদ্রা যায়। রাজার প্রবল শখ শিকারের, দুর্বল হরিণের গায়ে একটা ধনুক বিধিয়ে দেবার আর প্রবাহিত লাল রক্তে সূর্যের প্রতিফলান দেখার। মন্ত্রী মোসাহেবী চালে তেলতেলে মুখে একটা চৈনিক হাসি ফুটিয়ে আশ্বিনের রমন তাড়িত কুত্তার মত জিভ বেড় করে রাজার সামনে পেশ করে তার মেরুদন্ডের ডারউইনী অর্জন। রাজার অন্যমনস্ক জিজ্ঞাসা
“আজ বৃষ্টি হবে?”
রাজার শিকারের ইচ্ছায় পানি ঢেলে দেয়ার ভয়েই হোক আর মাথার উপরে গনগনে মধ্যাহ্নের সূর্যটার জন্যেই হোক মন্ত্রী তড়িৎ জবাব
“না রাজমশাই,
দিনকাল -১ : মাথাও আছে, ব্যাথাও আছে কিন্তু মহাবিশ্বে নেই একটা কুড়াল
বিভিন্ন সময় আমি আক্রান্ত হই তীব্র মাথাব্যাথার। ব্যাথাটা বিস্ফোরণের মত মাথার কোন এক নৈর্বত্তিক অংশে শুরু হয়ে তীব্রতা কমে বিস্তার বাড়ে, উভয়েই এক্সপোনেনশিয়ালী। মাথা ব্যাথার ফিজিক্যাল কারন ঘাটাঘাটি না করাটাই ভালো কারন, জান্তব বা দৈবচয়নে অনেক কারনই উঠে আসতে পারে। আমি অবশ্য মাথা ব্যাথার কারন কে বিশেষ গুরুত্ব দেই না। ব্যাথার প্রকোপে যখন সিগারেটের ধোয়া কাগজের মত বিস্বাদ লাগে তখন মাঝে মাঝেই দিশেহারা লাগে। জ্বলন্ত সিগারেট টা ফেলে দেই।
বিস্তারিত»স্পর্শহীন অনুভব
একেকটি রাত কাটে নিদ্রাহীনতায়
সঙ্গোপনে ফেলি চোখের জল
আমার হৃদয়ের জ্বলন্ত আগুনটা
আমি নিভিয়ে ফেলতে চাই
দু’চোখের সমস্ত অশ্রু দিয়ে।
কিন্তু আমার অশ্রুগুলো বড় নিষ্ঠুর
আগুন না নিভিয়ে আরও বাড়িয়ে দেয়।